working to establish khilafah

Weekly ISLAMIC VIEWPOINT 57

Weekly

ISLAMIC VIEWPOINT

….সপ্তাহের সংবাদ পর্যালোচনা

৫৭ তম সংখ্যা ২১ জুন, ২০২২

 

 

 

এই সংখ্যায় থাকছে:

 

বিশেষজ্ঞ মত: সিলেটে বন্যারকারণনদীর নাব্যতাসংকট আর হাওরে অপরিকল্পিত বাঁধ

মাথাপিছু ঋণ ৯৬ হাজার টাকা

বন্ধ হচ্ছে ১৭৯টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল

রেঙ্কিংয়ের প্রতি আমাদের অ্যাটেনশন নেই: ঢাবি ভিসি

“ঢাকা: রাজধানী শহরটির বিশ্রাম কেন দরকার, এর প্রভাব কী হবে”

 

 

 

বিশেষজ্ঞ মত: সিলেটে বন্যারকারণনদীর নাব্যতাসংকট আর হাওরে অপরিকল্পিত বাঁধ

খবরঃ

সিলেটে গত কয়েক যুগের মধ্যে সবচেয়ে বড় বন্যা চলছে। ষাট থেকে সত্তরোর্ধ্ব অনেকে বলছেন, তারা বন্যার এত পানি এর আগে দেখেননি। কী কারণে এমন ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি হলো, এর ব্যাখ্যায় বিশেষজ্ঞ ও পরিবেশ সংগঠকেরা বলছেন, সিলেটের প্রতিটি নদ-নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে নাব্যতা হারিয়েছে। হাওরে অপরিকল্পিতভাবে বাঁধ, রাস্তা ও সুইসগেট নির্মাণ করা হয়েছে। নির্বিচারে কাটা হচ্ছে পাহাড়-টিলা। মূলত, ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির জন্য মোটাদাগে এসব কারণই প্রধানত দায়ী… (www.prothomalo.com/bangladesh/district/সিলেটেবন্যারকারণনদীরনাব্যতাসংকটআরহাওরেঅপরিকল্পিতবাঁধ)

মন্তব্যঃ

বর্তমান সরকার ও তার দালাল বুদ্ধিজীবিরা সরকারের দায় এড়াতে অতিবৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলকেই এই বন্যার একমাত্র কারণ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছে। তারা যুক্তি দিচ্ছে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে গত ১৫ থেকে ১৭ ই জুন তিনদিনে বৃষ্টি হয়েছে ২৪৭৫.২ মিলিমিটার যা এ যাবৎকালে তৃতীয় সর্বোচ্চ। কিন্তু আমাদের জানা আছে ১৯৯৫ সালের ১৪ থেকে ১৬ জুন বৃষ্টি হয়েছিল ২৭৯৮ মিলিমিটার কিন্তু তখন এমন বন্যার সৃষ্টি হয়নি। প্রকৃতপক্ষে এই শাসকগোষ্ঠী জনগণের সমস্যার সমাধানের কথা চিন্তা করে না, বরং জনগণের সাথে প্রতারণার রাজনীতি করে থাকে। তাইতো দেশের জলবায়ু ও পরিবেশ বিশেষজ্ঞগণ আরো দু‘সপ্তাহ পূর্বেই এই বন্যার পূর্ভাবাস দিলেও সরকার তা আমলে না নিয়ে পদ্মা সেতুর উদ্ভোবন ও সফলতার গল্প দিয়ে জাতিকে বোকা বানানোর পরিকল্পনা নিয়ে ব্যস্ত ছিল; যেমনটি তারা শেখ মুজিবের জন্মশত বার্ষিকী অনুষ্ঠানের আমেজ ধরে রাখতে বাংলাদেশে কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাবের খবরটি গোপন রেখেছিল। 

বিশেষজ্ঞদের মতে, আকস্মিক এই বন্যার পিছনে যে কয়েকটি কারণ রয়েছে তার মধ্যে প্রধান হলো কিশোরগঞ্জের হাওরের “অল ওয়েদার রোড”। এই সড়কপথ মেঘালয় পর্বত থেকে নেমে আসা বৃষ্টির পানি ও পাহাড়ি ঢলের পানির স্বাভাবিক চলাচলের জন্য বড় ধরনের প্রতিবন্ধক। এই সড়কপথের কারণে পাহাড়ি ঢলের ফলে আসা বৃষ্টির পানিবাহিত পলিমাটি বা পলিমাটিযুক্ত পানি দ্রুত নিষ্কাশনের সুযোগ না পেয়ে স্থির হয়ে আছে তিন বছর ধরে। যার কারণে হাওর এলাকার নদ-নদীর নাব্যতা কমে গেছে। দ্বিতীয়ত, ২০০৪ সালের বন্যার পর বিশেষজ্ঞগণ অতি দ্রুত সুরমা ও কুশিয়ারা নদীতে ড্রেজিং করার পরামর্শ দিলেও গত ১৬ বছরেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। যার কারণে প্রতিবছর হাজার কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি ও মানবিক বিপর্যয় দেখতে হচ্ছে।

একদিকে বন্যার কারণ অনুসন্ধান ও প্রতিকারের জন্য বাস্তবধর্মী পদক্ষেপের অভাব এবং অন্যদিকে বন্যা পরবর্তী দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার প্রতি চরম উদাসীনতা এটিই নির্দেশ করছে যে, এই ধর্মনিরপেক্ষ-গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা জনগণের কথা চিন্তা করে না, বরং উন্নয়নের নামে লুটপাটের মহোৎসবে তারা ব্যস্ত। বড় বড় উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়নকেই তারা সফলতা হিসাবে দেখাতে চায় যেখানে দেশের অধিকাংশ জনগণ চরম দারিদ্রতার মধ্যে নিদারুন কষ্ট পাচ্ছে। আধ্যাত্মিকতা বিবর্জিত এই শাসনব্যবস্থায় শাসকেরা আল্লাহ্‌’র কাছে জবাবদিহিতাকে ভয় করে না।

একমাত্র খিলাফত ব্যবস্থাই এমন শাসকের জন্ম দিবে যিনি জনগণের দেখাশুনার ব্যাপারে সদা সচেষ্ট থাকেবেন। কারণ, খলিফা এ কথা স্মরণে রাখবেন যে, কিয়ামতের দিন আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা তাকে এই মহান দায়িত্বের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বলেছেন, খলিফা হচ্ছেন অভিভাবক এবং তিনি তার নাগরিকদের ব্যাপারে দায়িত্বশীল (বুখারী/মুসলিম)। খলিফা পাহাড়ি ঢলের পানি যেন বাধাপ্রাপ্ত না হয় সেজন্য বিশেষজ্ঞ নিয়োগ করবেন এবং পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবেন। যেমনঃ খাল খনন করা, অবৈধ ও অপরিকল্পিত স্থাপনা উচ্ছেদ করা, নদী শাসন, নগর রক্ষায় বাধ নির্মাণ, পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ইত্যাদি। খলিফা ওমর (রা.) বলতেন, ইরাকের রাস্তায় যদি একটি খচ্চরও হোঁচট খায় তাহলেও আমি ভয় করি আল্লাহ্আমাকে জিজ্ঞাস করবেন হে ওমর তুমি কেন রাস্তা ঠিক করে দিলে না?

  • নাবিল আহমেদ

 

 

 

 

 

মাথাপিছু ঋণ ৯৬ হাজার টাকা

খবর:

দেশের মানুষের কাঁধে ঋণের বোঝা বাড়ছে। বর্তমানে দেশের প্রতিটি নাগরিকের মাথাপিছু ঋণের পরিমাণ ৯৫ হাজার ৬শ টাকা। আজ যে শিশুটি জন্ম নেবে, তার মাথায়ও সমপরিমাণ ঋণের দায় চাপবে। গত এক বছরে মাথাপিছু ঋণ বেড়েছে ১০ হাজার ৮৩০ টাকা। আগামী এক বছরে এটা আরও প্রায় ১৫ হাজার টাকা বাড়বে। ফলে ওই সময়ে মাথাপিছু ঋণের স্থিতি দাঁড়াবে ১ লাখ ১১ হাজার টাকা। (www.jugantor.com/todays-paper/first-page/560876) 

মন্তব্য:

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ ঋণের পরিমাণ ছিল ১৫ লাখ ৪৬ হাজার ২৪০ কোটি টাকা। আগামী অর্থবছরে আরও ২ লাখ ৪১ হাজার ৭৯৪ কোটি টাকা ঋণ নিতে যাচ্ছে সরকার। এর মধ্যে বিদেশি ঋণ ৯৫ হাজার ৪৫৮ কোটি টাকা, বিভিন্ন ব্যাংক থেকে ঋণ ১ লাখ ৬ হাজার ৩৩৪ কোটি টাকা এবং সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে ৩৫ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়া হবে। ফলে মাথাপিছু ঋণের স্থিতি আরও প্রায় ১৫ হাজার টাকা বাড়বে। ঋণ বৃদ্ধির পাশাপাশি এর সুদের পরিমাণও বাড়ছে। যেমন, ২০২২-২৩ অর্থবছরে প্রস্তাবিত বাজেটে ঋণের সুদ পরিশোধ চতুর্থ সর্বোচ্চ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। অন্যদিকে, প্রস্তাবিত বাজেটে মানুষের মাথাপিছু বরাদ্দ ৪১ হাজার ৯৩৩ টাকা। এ হিসাবে ঋণ মাথাপিছু বরাদ্দের দ্বিগুণেরও বেশি। প্রশ্ন হচ্ছে কেন সরকারকে দেশী-বিদেশী উৎস থেকে ঋণ গ্রহণ করতে হয়?

পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় রাষ্ট্রীয় আয়-ব্যয়ের হিসাব অর্থাৎ বাজেট সাজানো হয় একটি সুনির্দিষ্ট আয় ও ব্যয়ের পরিমানকে মাথায় রেখে। যেমন, বাংলাদেশের ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৬ লাখ ৭৮ হাজার ৬৪ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। এবং রাজস্ব আয় প্রাক্কলন ধরা হয়েছে ৪ লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। অর্থাৎ বাজেটে ঘাটতি ২ লাখ ৪৫ হাজার ৬৮১ কোটি টাকা। মূলত ঘাটতি বাজেটের পুরোটায় পূরণ করা হয় বিভিন্ন দেশী-বিদেশী বিভিন্ন উৎস থেকে ঋণ গ্রহন করে। ফলে প্রতিবছর বাজেটের পরিমান বড় হলে ঘাটতির পরিমানও বাড়ে এবং স্বাভাবিকভাবেই ঋণের পরিমানও বাড়ে যা দিনশেষে মাথাপিছু ঋণের পরিমানকেও বাড়িয়ে তোলে। উপরন্তু এর সাথে যোগ হয় ঋণ থেকে উদ্ভূত সুদের পরিমানও। ফলে, মূল ঋণ এবং ঋণের সুদের পরিমান বেড়ে জনগণের উপর তা বিশাল বোঝা হয়ে দাঁড়ায় এবং জনগণের কষ্টার্জিত অর্থ থেকে আয়কর-ভ্যাট ইত্যাদি বাহারি নামে সরকার অর্থ আদায় করে এসকল ঋণ ও সুদ পরিশোধ করে। অপরদিকে সাধারণ জনগণকে সঞ্চয়পত্র, বীমা, সুকুক, সার্বজনীন পেনশন ইত্যাদির নামে সুদের কারবারের সাথে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে সম্পর্ক গড়ে তোলা হচ্ছে যেখানে ইসলামে সুষ্পষ্টভাবেই সুদকে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। উপরন্তু বিশ্বব্যাংক কিংবা আই.এম.এফ এর মত প্রতিষ্ঠানের দেয়া বিদেশী ঋণের সাথে যুক্ত হয় বিভিন্ন শর্ত যা দেশের রাজনীতির উপর পশ্চিমা কাফিরদের আধিপত্য তৈরি করে এবং অর্থনীতির স্বাভাবিক প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করে দেশকে বিদেশনির্ভর করে তোলে।

ঘাটতি বাজেটের পূরণকল্পে দেশী-বিদেশী খাত থেকে সুদভিত্তিক লোনের বিকল্প হিসেবে পুঁজিবাদী অর্থনীতির বিশেষজ্ঞরা কর আদায়ের পরিমাণ বাড়াতে বলছেন যাতে লোন নিতে না হয়। কিন্তু করের পরিমাণ বৃদ্ধি করলে তা নানা রকম ট্যাক্স ও ভ্যাটের জালে জনগণকে বন্দী করে জনগণের জীবনকে আরো অতিষ্ঠ করে তুলবে। পক্ষান্তরে, ইসলামী ব্যবস্থায় অর্থাৎ খিলাফত রাষ্ট্রে আয়-ব্যয়ের ক্ষেত্রে শারীয়াহ্‌ প্রদত্ত খাতকেই খলীফা অনুসরণ করবেন। পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের মত বিভিন্ন করের আরোপন জনগণের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলবে না। যাকাত, উশর, খারাজ, জিজিয়া, যুদ্ধলব্ধ সম্পদ ইত্যাদি খাত যেমন সুনির্দিষ্ট তেমনি এ থেকে আরোহিত রাজস্ব ব্যয়ের খাতও সুনির্দিষ্ট। খিলাফত রাষ্ট্র সঞ্চয়পত্র, বন্ড, বীমা কিংবা বিদেশ থেকে লোন নিয়ে নিজেদের চাহিদা পূরণ করবে না। কারণ একদিকে সুদ হারাম এবং অপরদিকে বিদেশী রাষ্ট্রের লোন গ্রহন খিলাফত রাষ্ট্রের নীতিবিরুদ্ধ। বরং যদি যুদ্ধকালীন কিংবা দুর্যোগকালীন সময়ে অর্থের প্রয়োজন পরে তাহলে তা সংগ্রহ করা হবে রাষ্ট্রের ধনী নাগরিকদের কাছ থেকে যা তাদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত। যেমন, ‘মসজিদ-ই-নববীর’ সম্প্রসারণে জমি ক্রয়, ‘বিরেরুমা’ কূপ ক্রয়ের মাধ্যমে মদীনার পানিসংকট দূর করা, তাবুক যুদ্ধে অর্থসংস্থান, ইত্যাদিতে উসমান (রা.) ছিলেন অগ্রগামী।

  • মো. হাফিজুর রহমান

 

 

 

 

বন্ধ হচ্ছে ১৭৯টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল

খবরঃ

অসত্য সংবাদ পরিবেশনা, গুজব রটানো ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে বেশকিছু অনলাইন নিউজ পোর্টাল। এরই মধ্যে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে বলে সংসদকে জানিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ। মন্ত্রী জানান, অনিবন্ধিতসহ জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ায়- এমন ১৭৯টি অনলাইন নিউজ পোর্টালের ডোমেইন বরাদ্দ বাতিলসহ লিঙ্ক বন্ধ করার জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে চিঠি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বেশকিছু পোর্টাল বন্ধের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে। তথ্যমন্ত্রী জানান, ঢাকা জেলা থেকে এক হাজার ১২৬টি পত্রিকা প্রকাশিত হয়। এর মধ্যে দৈনিক পত্রিকা ৪৯৯টি, সাপ্তাহিক ৩৪৫টি ও মাসিক ২৮২টি। (https://samakal.com/bpl/article/2206116785/বন্ধ-হচ্ছে-১৭৯টি-অনলাইন-নিউজ-পোর্টাল)


মন্তব্যঃ

বর্তমান শাসকগোষ্ঠী কর্তৃক দেশের মূলধারার গণমাধ্যমগুলোর উপর আধিপত্য প্রতিষ্ঠার পর, জনগণ কর্তৃক অনলাইন ভিত্তিক গণমাধ্যমগুলোর উপর আস্থা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই সরকার এখন সেটারও লাগাম টেনে ধরতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। ইতিপূর্বে গুজব ও জনমনে বিভ্রান্তি ছাড়ানোর তথাকথিত অভিযোগ তুলে দেশের আই.পি. টিভি ও ইউটিউব চ্যানেলগুলোতে খবর প্রচার বন্ধে সরকারের পক্ষ থেকে হুশিয়ারি জানানো হয়। এতে আশ্চর্যের কিছু নেই, কারণ ধর্মনিরপেক্ষ শাসকগোষ্ঠী নিজেদের দুঃশাসন ও তাদের সাম্রাজ্যবাদী প্রভুদের হীন স্বার্থ সংক্রান্ত বিষয়গুলো আড়াল করতে এবং এগুলোর উন্মোচনকারীদের দমন করতে সম্ভাব্য সকল উপায় ব্যবহার করে। তারা যে তথাকথিত বাকস্বাধীনতা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতার কথা বলে তা তাদের কাছে কিছু ফাকা বুলি মাত্র। ধর্মনিরপেক্ষ শাসকগোষ্ঠীর কাছে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা তখনই অনুমোদিত হয় যখন এটি সরকারপন্থী হয় কিন্তু যখনই শাসকগোষ্ঠীর স্বার্থ বিঘ্নিত হয় তখন তা কঠোরহস্তে দমন করা হয়। গণমাধ্যমের স্বাধীনতা তখনই প্রযোজ্য যখন এটি ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয় এবং সাম্রাজ্যবাদী শক্তি ও তাদের দালালদের এজেন্ডাকে সমর্থন করে, কিন্তু যখন এটা রাজনৈতিক ইসলামের পক্ষে ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তি বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন এবং ভারতের এজেন্ডা উন্মোচনে ব্যবহৃত হয় তখন সেটাকে জিরো টোলারেন্স হিসেবে দেখা হয়। তাইতো আমরা প্রত্যক্ষ করলাম ২০১৮ সালে জাতীয় সংসদে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নামক কালো আইন পাস করে কিভাবে জনগণের টুটি চেপে ধরা হয় যে আইনের খড়গ থেকে লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষক, ৯ম শ্রেণী পড়ুয়া শিক্ষার্থী এবং খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠার নিষ্ঠাবান রাজনৈতিক কর্মী কেউই রক্ষা পায়নি। ইতিমধ্যে ২০২২ সালের প্রথম ৫ মাসেই ১১৮ জন সাংবাদিক ডিজিটাল আইনে মামলাসহ অন্যান্য বিভিন্ন নির্যাতনের শিকার হয়েছে এবং সাংবাদিকতার লাগাম টেনে ধরতে প্রস্তাবিত নতুন প্রেস কাউন্সিল আইনে একজন সাংবাদিককে ১০ লাখ টাকার জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে। শুধুমাত্র বাংলাদেশে নয়, বর্তমান ধর্মনিরপেক্ষ ব্যবস্থার অধীনে বিশ্বের কোথাও স্বাধীন গণমাধ্যমের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না। ২০১৬ সালে তথাকথিত জঙ্গিবাদের অজুহাতে ভারত সরকার পিস টিভিকে বন্ধ করে দেয়। আমেরিকাতে ২০২১ সালে ২৯৩ জন সাংবাদিককে কারারুদ্ধ করা হয় যা গত ৬ বছরের মধ্যে ছিল সর্বোচ্চ (https://www.nytimes.com/2021/12/09/world/americas/jailed-journalists-worldwide.html)। এছাড়া Reporters Without Borders এর প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বের ১৮০টি দেশের তিন-চতুর্থাংশ দেশেই সাংবাদিকতা চরম হুমকির মুখে। কার্যত, ধর্মনিরপেক্ষবাদীরা তাদের পুজনীয় স্তম্ভগুলোকে (যেমনঃ বাকস্বাধীনতা/গণমাধ্যমের স্বাধীনতাকে) নিজেরাই নিজেদের স্বার্থে একের পর এক ভক্ষন করে ফেলছে।

অন্যদিকে খিলাফত রাষ্ট্রে প্রচারমাধ্যমসমূহের কাজ করার জন্য কোনপ্রকার অনুমোদনের প্রয়োজন নেই। রাষ্ট্রের যেকোন নাগরিক   যেকোন মাধ্যম (রেডিও, টিভি, ব্লগ, ওয়েব পেজ, সামাজিক সাইট, পুরো ইন্টারনেট ব্যবস্থা, স্যাটেলাইট ব্যবস্থা, পত্রিকা বা প্রকাশনা) স্থাপন ও কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন। তবে তিনি কোন ধরণের প্রচারযন্ত্র স্থাপন করতে চান তা অবশ্যই তাকে তথ্যবিভাগে(আল-ইলা’ম) অবহিত করতে হবে। কুরআন-সুন্নাহ্‌’র আলোকে হিযবুত তাহ্‌রীর কর্তৃক প্রণীত খিলাফত রাষ্ট্রের খসড়া সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১০৪ এ বলা হয়েছে, “গণমাধ্যমের মালিকানার জন্য রাষ্ট্রের কোন নাগরিকের অনুমতির প্রয়োজন নাই; বরং তাদেরকে মিডিয়া অফিসকে কেবল অবগত করতে হবে, যাতে অফিসটি মিডিয়া সম্পর্কে জানে যা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে যেকোন মিডিয়ার মালিক সম্পাদকরা তাদের প্রকাশ করা প্রতিটি নিবন্ধের জন্য দায়ী এবং অন্য নাগরিকদের মতো একইভাবে শারীআহ্বিরোধী যেকোন কিছুর জন্য দায়ী খিলাফত রাষ্ট্রের গণমাধ্যমগুলো হবে ইসলামের ধারক, বাহক ও প্রচারক। গণমাধ্যমসমূহ পৃথিবীবাসীর সামনে ইসলামী ব্যবস্থার প্রতিটি দিক অর্থনৈতিক, সামাজিক, প্রশাসনিক এবং ন্যায়-বিচার সুউচ্চে তুলে ধরবে পাশাপাশি বর্তমান ধর্মনিরপেক্ষ-পুঁজিবাদী ব্যবস্থার অন্যায়, জুলুম, শোষণ এবং ভঙ্গুর সমাজ ব্যবস্থার তুলনামূলক চিত্র উপস্থাপন করবে। সর্বোপরি খিলাফত রাষ্ট্রের গণমাধ্যমসমূহে ইসলামের শ্বাশ্বত বাণী এবং সৌন্দর্য দ্বারা ইসলামকে একমাত্র সমাধান হিসেবে গ্রহণ করার সার্বজনীন আহবান প্রচারিত হবে যা সমগ্র মানবজাতিকে ভ্রান্ত ও অন্ধকারাচ্ছন্ন জীবনব্যবস্থা থেকে বের করে নিয়ে আসার আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করবে, ইনশাআল্লাহ্‌।

  • মোহাম্মদ সিফাত

 

 

 

 

 

রেঙ্কিংয়ের প্রতি আমাদের অ্যাটেনশন নেই: ঢাবি ভিসি

খবরঃ

বিশ্ববিদ্যালয়ের র‌্যাংকিংয়ের দিকে নিজেদের অ্যাটেনশন নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি। অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘র‌্যাংকিংয়ের দিকে আমাদের অ্যাটেনশন নেই। আমরা চাচ্ছি, শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন, মৌলিক গবেষণার ক্ষেত্র সম্প্রসারণ এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে র‌্যাংকিংয়ের যে প্যারামিটারগুলো আছে— গবেষণা, বিদেশি শিক্ষার্থী, বিদেশি শিক্ষক, শিক্ষার সামগ্রিক পরিবেশ, শিক্ষার্থীদের জীবনমান সেগুলো আমাদের এখন আ্যড্রেস করা খুব জরুরি।’ তিনি বলেন, ‘এসব সূচকের আলোকে বিশ্ববিদ্যালয় বিনির্মাণ করতে পারলে তখনই মূলত আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে আমাদের প্রত্যাশার জায়গাটা আরও স্পষ্ট হবে। যে প্যারামিটারগুলো দিয়ে র‌্যাংকিংয়ের করা হয় সেগুলোর নিরসন না ঘটিয়ে, সেগুলোর যথাযথ প্রতিফলন না করিয়ে র‌্যাংকিংয়ের প্রত্যাশা করা খুবই দুরূহ।’ (https://www.jugantor.com/campus/561097/ র%E2%80%8C্যাংকিংয়ের-প্রতি-আমাদের-অ্যাটেনশন-নেই-ঢাবি-ভিসি

 

মন্তব্যঃ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) উপাচার্য পশ্চিমাদের নির্ধারিত প্যারামিটারগুলোর উপর ভিত্তি করা এই র‌্যাংকিংকে মেনে নিয়ে সেক্যুলার বুদ্ধিজীবিদের চিন্তার দৈন্যতাকে আবারও জাতির সামনে প্রকাশ করে দিলেন। পশ্চিমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হচ্ছে বিশ্বব্যাপী তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক ও আদর্শিক কর্তৃত্ব বজায় রাখার গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। তারা বিভিন্ন ধরণের স্কলারশিপ ও প্রোগ্রামের মাধ্যমে তথাকথিত অনুন্নত দেশসমূহ থেকে সম্ভাবনাময় তরুণদের তাদের দেশে নিয়ে যায় যাকে “মেধা পাচার” বলে। পশ্চিমারা একদিকে এই সকল তরুণদের ব্যবহার করে অর্থনৈতিক সুবিধা অর্জন করছে, অন্যদিকে তাদেরকে পশ্চিমা চিন্তা-চেতনা দ্বারা গ্রুম-আপ করে। মুসলিম তরুণদের আকৃষ্ট করার জন্য পশ্চিমা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এই সকল তথাকথিত র‌্যাংকিংয়ের আশ্রয় নেয়। যদিও র‌্যাংকিংয়ের প্যারামিটারগুলো অসম্পূর্ণ, বিতর্কিত ও ভিত্তিহীন। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, পাঁচটি প্রধান প্যারামিটারগুলোর মধ্যে তিনটিতে (বিদেশি শিক্ষার্থী, বিদেশি শিক্ষক, শিক্ষার সামগ্রিক পরিবেশ) পশ্চিমাদেশগুলো ছাড়া অন্য দেশগুলো ভাল স্কোর পাবার সুযোগ নাই। কারণ পশ্চিমাদের নব্যসাম্রাজ্যবাদী নীতি ও তাদের পুতুল-দালাল শাসকদের মাধ্যমে পুঁজিবাদী অর্থনীতি বাস্তবায়নের ফলে মুসলিম দেশগুলোতে চরম অর্থনৈতিক নৈরাজ্য বিদ্যমান। তাই এই সকল দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে যেমন নেই পর্যাপ্ত অবকাঠামো তেমনি উচ্চ শিক্ষিত তরুণদের জন্য নাই কাজের সুযোগ। তাই বিদেশী থেকে শিক্ষার্থী বা শিক্ষকরা এই সকল দেশে আসার চিন্তাই করে না। বরং, এই সকল দেশের তরুণরা পশ্চিমাদেশগুলোতে যেতে উন্মুখ হয়ে অপেক্ষা করে। এছাড়া, পশ্চিমা বিশ্ববিদ্যালয়গুলো গবেষণা প্রোটফোলিওর বড় অংশ হচ্ছে বিভিন্ন কর্পোরেট কোম্পানিগুলোর ফরমায়েশি গবেষণা যেগুলোর ফলাফল কোম্পানিগুলো কপিরাইটের মাধ্যমে কুক্ষিগত করে রাখে। তাই, এই সকল অর্জনগুলো থেকে জনগণের সুবিধা পাওয়ার সুযোগ খুব সীমিত। তাই সেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মাপকাঠি হিসাবে এই সকল প্যারামিটারের ব্যবহার প্রশ্নবিদ্ধ। অন্যদিকে, শিক্ষার একটি মৌলিক উদ্দেশ্য হলো উন্নত চরিত্রের মানুষ তৈরি এবং গবেষণা থেকে জনকল্যাণে নিশ্চিত করার মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো তাদের প্যারামিটারে অনুপস্থিত। তাই বিশ্ববিদ্যালয় র‌্যাংকিংয়ের পশ্চিমাদের পদ্ধতিকে কোনভাবে সঠিক বলার সুযোগ নাই।

আসন্ন খিলাফত রাষ্ট্র পশ্চিমাদের এই সকল ভ্রান্ত র‌্যাংকিং সর্বস্ব বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থার বিপরীতে একটি আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থাপনার মডেল উপস্থাপন করবে। খিলাফত রাষ্ট্রের পৃষ্টপোষকতায় খিলাফত রাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুধুমাত্র ইসলামী আদর্শে বলীয়ান আলীমই বের হবে না বরং পদার্থ বিদ্যা, রসায়ন, কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তাসহ সকল উদীয়মান জ্ঞান-বিজ্ঞানের শাখাগুলোতে কাজ করার মত মানবসম্পদ তৈরি হবে যারা জ্ঞান-বিজ্ঞানের সকল শাখায় কাজ করবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণালব্দ জ্ঞান ও ফলাফলকে কপিরাইট-পেটেন্ট ব্যাতিরেকে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে দিবে কারণ ইসলামে কপিরাইট-পেটেন্টর মত কৌশলের মাধ্যমে জ্ঞানকে সীমিত করা বৈধ নয়। সুতরাং, খিলাফত রাষ্ট্রের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে শুধুমাত্র মুসলিম উম্মাহ উপকৃত হবে না, বরং সমগ্র মানবজাতি উপকৃত হবে। মানব জাতির এই কল্যাণ নিশ্চিত করা খিলাফত রাষ্ট্রের অন্যতম দায়িত্ব। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, “তোমরাই শ্রেষ্ঠ উম্মত, মানবজাতির কল্যানের জন্য তোমাদের উদ্ভব করা হয়েছে; তোমরা সৎকাজের আদেশ দিবে, অসৎকাজে নিষেধ করবে” [সূরা আলি ইমরান: ১১০]।

  • মোঃ সিরাজুল ইসলাম

 

 

 

 

“ঢাকা: রাজধানী শহরটির বিশ্রাম কেন দরকার, এর প্রভাব কী হবে”

খবরঃ

যানজট ও নির্মাণ কাজে বিপর্যস্ত ঢাকা শহরকে স্বস্তি আর বিশ্রাম দিতে আগামী পহেলা জুলাই থেকেই রেস্তোরাঁ ও ঔষধের দোকানের মতো জরুরি বিষয়গুলো ছাড়া অন্য বাণিজ্যিক স্থাপনা রাত আটটার পর বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন। পরিকল্পনা অনুযায়ী, রাত আটটার পর দোকানপাট শপিংমলসহ যেসব জায়গায় জরুরি সেবা দেয়া হয় না সেগুলো বন্ধ হয়ে যাবে এবং এর ফলে রাত্রিকালীন যানজট ছাড়াও দূষণ কমবে বলে আশা করা হচ্ছে। (https://www.bbc.com/bengali/news-61770915)

মন্তব্যঃ

শহর কোন মানুষের শরীর না, যে কাজ করলে তার বিশ্রামের প্রয়োজন হবে। আসলে বর্তমান মানবরচিত পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় যেকোনো সমস্যাকে বিচ্ছিন্নভাবে বিবেচনা করা হয়। তখন এর সমাধানগুলো হয় ‘কসমেটিক’-এর মত সমাধান। কসমেটিক্স যেমন মানুষের ত্বককে ভেতর থেকে ফর্সা না করে এর উপরিভাগে একটি সাদা প্রলেপ লাগিয়ে দেয়, তেমনি পুঁজিবাদী চিন্তাবিদরা যেকোন সমস্যার মূলে না গিয়ে এর উপর থেকে লোকদেখানো কতগুলো সমাধান হাজির করে, যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ মেয়রসাহেবের এই ‘শহরের বিশ্রামতত্ত্ব’। এটাকে তারা কখনোই কম্প্রিহেন্সিভ বা সার্বিকভাবে দেখেনা। প্রকৃতপক্ষে, যেকোন সমস্যা একটি বড় সমস্যার অংশ। সেই বড় সমস্যাটি হল মানবজাতি পরিচালনার জন্য সঠিক ব্যবস্থাটি কি হবে? সেই ব্যবস্থাটি আবার একটি ‘মূল বিশ্বাস’ থেকে আসে। যেমন, ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ বিশ্বাস থেকে উৎসারিত পুঁজিবাদী ব্যবস্থা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে মালিকানার স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। এ ব্যবস্থায় মানুষের জন্য অতি প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো যেমন, বিদ্যুৎ, পানি, পয়ঃনিষ্কাষণ, এমনকি বর্জ্য সংগ্রহের মত খাতগুলোকে একচেটিয়া মুনাফালাভের বেসরকারী খাতে জন্য ছেড়ে দেয়া হয়। ফলে পুঁজিপতিরা বেশি লাভের আশায় বেশি মানুষকে এক জায়গায় পাওয়ার জন্য সেবাসমূহকে রাজধানী কিংবা শহরকেন্দ্রিক করে তোলে। তখন জীবিকাসহ অন্যান্য মৌলিক প্রয়োজনগুলোর জন্য মানুষ রাজধানী কিংবা শহরমুখী হয়। যেমন, ঢাকা শহরে প্রতিদিন ১৫ হাজার মানুষ ঢুকছে। (ঢাকা টাইমস; ১৬ জুন, ২০২১)। আর একজায়গায় এত মানুষের জন্য প্রয়োজনীয় সেবাসমূহ নিশ্চিত করা সম্ভব হয় না। তখন যানজটসহ বিভিন্ন অব্যবস্থাপনার সৃষ্টি হয়। তখন এ ব্যবস্থায় শাসকেরা সমাধান হিসেবে মূল সমস্যা হতে বিচ্ছিন্ন কিছু সমাধান হাজির করে। এর ফলে আরো নতুন কিছু সমস্যা তৈরি হয়। যেমন, রাত আটটায় দোকানপাট-বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো সব বন্ধ হয়ে গেলে সবাই যখন একযোগে বাড়ি ফিরবে সেটার জন্য পর্যাপ্ত যানবাহনের অভাবে ও যানজটে ভোগান্তির কথা চিন্তা করে জনমনে তীব্র আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। আবার, চায়ের দোকান, মার্কেট এবং কাঁচাবাজারগুলোতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের যাদের মূল বেচাকেনা হয় রাত আটটার পরে, তাদের জীবিকার বিষয়টিও এই সমাধানে বিবেচনায় রাখা হয়নি। এভাবে পুঁজিবাদী ব্যবস্থার অধীনে বাস্তবায়িত ‘Trial & error’ বা ক্ষনে ক্ষনে পরিবর্তিত সমাধানগুলো জনগণের ভোগান্তিই শুধু বৃদ্ধি করে।

অন্যদিকে ইসলামী জীবনব্যবস্থা মহাবিশ্বের পালনকর্তা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র কাছ থেকে উৎসারিত। এটি সকল সমস্যাকে একটি সঠিক ও ত্রুটিমুক্ত ব্যবস্থার মাধ্যমে সমাধান করে। ইসলামী খিলাফত রাষ্ট্র ব্যবস্থায় গ্রাম-শহর নির্বিশেষে সকল মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা হয়। এখানে খলিফা অভিভাবক হিসেবে প্রত্যেকটি মানুষের মৌলিক প্রয়োজন পূরণে বাধ্য। রাসুল (সঃ) বলেছেন, খলীফা হচ্ছেন অভিভাবক এবং তিনি তার জনগনের ব্যপারে দায়িত্বশীল। তিনি গুরুত্বপূর্ন সেবাখাতগুলোকে কিংবা মানুষের মৌলিক প্রয়োজনগুলোকে মুনাফালোভীদের নিকট একচেটিয়া ব্যবসা করার জন্য সম্পূর্ণরূপে ছেড়ে দেন না। তখন সকল সেবাসমূহও শহরমুখী হয় না। ফলে এই ব্যবস্থায় বর্তমানের মতো ব্যাপকভাবে মানুষকে গ্রাম থেকে শহরে পাড়ি জমানোর প্রয়োজন পড়ে না। শহরেও অতিরিক্ত মানুষের চাপ পড়ে না। শহরগুলো হয় নিরাপদ, স্বাস্থ্যকর ও সমৃদ্ধশালী। খিলাফতের ১৪শত বছরের ইতিহাস বাগদাদ, জেরুজালেম, ইস্তাম্বুল, কায়রোসহ এরকম আরও বহু সমৃদ্ধ শহরের সাক্ষী।

  • মো: জহিরুল ইসলাম