working to establish khilafah

Weekly ISLAMIC VIEWPOINT 128

Weekly 

ISLAMIC VIEWPOINT

….সপ্তাহের সংবাদ পর্যালোচনা 

১২৮ তম সংখ্যা । ৩০ নভেম্বর, ২০২৪

এই সংখ্যায় থাকছে :

 

“ইসকন সমর্থকদের হামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী খুন”

“আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্ন: সমাধানের পথ কী”

“চিন্ময় দাসের গ্রেফতারে উদ্বেগ জানিয়ে ভারতের বিবৃতি”

“পীর ও কমিউনিস্ট মওলানা ভাসানী”

“গণতন্ত্র ফেরাতে রূপরেখা ঘোষণা করবেন ড. ইউনূস, আশা যুক্তরাজ্যের”

“শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে ‘রণক্ষেত্র’ ডেমরা-যাত্রাবাড়ী এলাকা”

“রাজধানীর কলেজগুলোতে অস্থিরতা কেন?”

 

“ইসকন সমর্থকদের হামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী খুন”

খবরঃ

চট্টগ্রাম আদালত এলাকায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে মুক্তির দাবিতে ইসকন সমর্থকদের হামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফ নিহত হয়েছেন। অ্যাডভোকেট মোক্তার উদ্দিন সাগর নামে এক আইনজীবী জানান, আমার চোখের সামনে অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফকে কোপানো হয়েছে। এ সময় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেলও ভাঙচুর করা হয়। একই সঙ্গে আইনজীবীসহ বিভিন্ন লোকের ওপর হামলা করে চিন্ময় কৃষ্ণের অনুসারীরা। (https://dailyinqilab.com/national/news/706654)

মন্তব্যঃ

তরুণ আইনজীবি সাইফুল ইসলাম আলিফের এই হৃদয়বিদারক হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের শাসক ও রাজনীতিবিদদের ভারতের প্রতি “সংযম নীতি” অনুসরণের নির্লজ্জ নজির আমরা প্রত্যক্ষ করলাম। দুঃখজনকভাবে এই “সংযম নীতি” হতে অন্তর্বর্তী সরকার, সেকুলার কিংবা ইসলামী জাতীয়তাবাদী দলসমূহ এমনকি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কতিপয় নেতারাও বাদ যাননি। স্বৈরাচারী হাসিনার “সংযম নীতি” আমাদেরকে পিলখানা হত্যাকান্ড কিংবা কাঁটাতারে ফেলানীর লাশ উপহার দিয়েছিল। হাসিনার পতনের পর সেই একই “সংযম নীতি” আমাদের পানি আগ্রাসন, ফ্যাসিস্ট খুনী গোষ্ঠীর আশ্রয়, দেশ ও ইসলাম বিরোধী অপপ্রচার, পুলিশ ও সেনাবাহিনীর উপর ইসকন সমর্থকদের এসিড হামলা ও সর্বশেষ আইনজীবি হত্যাকাণ্ড ও মসজিদে হামলা উপহার দিয়েছে। ক্ষমতাসীন কিংবা ক্ষমতাপ্রত্যাশীদের ভারতের প্রতি আচরণ যেন “সংযম নীতি”-ই যথেষ্ট নয়, বরং উনারা আমেরিকাকে খুশী করতে একধাপ এগিয়ে “সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ নীতি”-তে উন্নীত হতে চান। কারণ, ভারত অত্র অঞ্চলে পশ্চিমাদের স্বার্থরক্ষায় চৌকিদারের ভূমিকা পালন করছে এবং ভারত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে আমেরিকার সামরিক জোট ‘QUAD’-এর সদস্য। ক্ষমতায় গেলে ভারতের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাখবে বিএনপি কিংবা ভারতবিরোধী নই, সম্মান ও সমতায় সুসম্পর্ক চাই – জামায়াতের ইসলামীর আমীরের বক্তব্যে যার ইঙ্গিত পাওয়া যায়। (তথ্যসুত্র: www.ittefaq.com.bd/696061/ক্ষমতায়-গেলে-ভারতের-সঙ্গে-ভালো-সম্পর্ক-রাখবে;  www.jugantor.com/tp-lastpage/882154)। অন্যদিকে, ভারত বাঁধ খুলে দেয়ার পর ইলিশ পাঠানো, ইসকন ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করা, পিলখানা ষড়যন্ত্রের পুণঃতদন্তে অবহেলা, প্রশাসনে ব্যাপক রদবদল না করা, ইত্যাদির সিগন্যালের মাধ্যমে সরকার সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। (সুত্র: https://dainikamadershomoy.com/details/01937357ce02 ; www.ittefaq.com.bd/707898/রাজনৈতিক-দল-নিষিদ্ধের-বিধান-থাকছে-না)।

মুলত: এই নতজানু নীতির কারণেই ভারত আমাদের উপর তার আগ্রাসনের মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি করছে। সুতরাং, সংযম ও স্বাভাবিকীকরণের নীতি প্রত্যাখ্যান না করলে ভারত তার আগ্রাসন চালিয়ে যাবে। কোন সুস্থ চিন্তা কি ক্রমাগত আগ্রাসনকারীর বিরুদ্ধে সংযম ও সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ নীতি অবলম্বন করতে পারে? তারা ভারত ও তার প্রক্সি ইসকনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের প্রস্তাব না করে, বরং জনগণকে ভারতের পাল্টা জবাব কিংবা অধিকতর ভারতীয় আগ্রাসনের ভয় দেখায়। তাদের এই আচরণ দেখে মনে হয় ভারতীয় এই আগ্রাসন যেন ভুটানের মতো একটি ক্ষুদ্র রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে। রৌমারী ও পাদুয়া যুদ্ধে আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনীর শ্রেষ্টত্বকে কি তারা ভুলে গেছেন! তারা কি ভুলে গেছেন ভারতের পেটের মধ্যে আমাদের কৌশলগত অবস্থান এবং সেভেন সিস্টার্সের বিচ্ছিন্নপ্রবণতা, আমাদের ইসলামপ্রিয় শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর কথা! সর্বোপরী, সংযম এবং স্বাভাবিকীকরণ নীতি মুসলিম হিসেবে আমাদের মর্যাদার সাথে মেলে না। এটা বাংলাদেশের ১৫০ মিলিয়ন সম্মানিত মুসলিম ও তাদের শক্তিশালী সশস্ত্র বাহিনীর জন্য অপমানজনক।

মুসলিম উম্মাহ্’র প্রকৃত অভিভাবক খিলাফত ব্যবস্থার অনুপস্থিতির কারণেই মুসলিম উম্মাহ্‌ প্রকৃতপক্ষে ইয়াতিম জাতিতে পরিণত হয়েছে; রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বলেছেন, “একমাত্র ইমাম (খলিফা) হচ্ছে সে ঢাল, যার পেছনে তোমরা যুদ্ধ কর এবং তোমরা নিজেকে রক্ষা কর” (মুসলিম)। একমাত্র খিলাফত রাষ্ট্রই পারবে ভারতের অত্যাচারী হস্তকে রুদ্ধ করতে এবং অত্র অঞ্চলে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে। এই শ্রেষ্ঠত্বের কারণে, আমাদের পুর্বসূরী উমাইয়া খিলাফতের বীর সেনাপতি মোহাম্মদ বিন কাসিম ৭১২ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে তৎকালীন অত্যাচারী রাজা দাহিরকে পরাজিত করে সিন্ধু জয় করে হিন্দুত্ববাদী আগ্রাসন হতে এত্র অঞ্চলের জনগণকে জুলুম থেকে মুক্ত করেন।

    –    মো: তালহা হোসেন

“আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্ন: সমাধানের পথ কী”

খবরঃ

স্বাধীন বাংলাদেশের ইতিহাসে নির্বিচার রাজনৈতিক সহিংসতা, সন্ত্রাসবাদী হামলা ও সামাজিক দাঙ্গার মধ্যে নৃশংসতম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে এ বছরের মধ্য জুলাই ও আগস্টের প্রথম ভাগে। আর্মার্ড কারের ওপর যুবকের লাশ, রিকশার পাদানিতে মৃত্যুর আগ মুহূর্তে তরুণের আকুতিময় চোখ, হেলিকপ্টার থেকে বাছবিচারহীন গুলিতে শিশুর মৃত্যু…মানুষের জীবন যেন মূল্যহীন, জীবন নেওয়া যেন ভিডিও গেমসের মতো খেলা! সে সময়ের ক্ষমতাসীন দলের প্রধান শেখ হাসিনা এবং সরকারের শীর্ষ কর্তাব্যক্তিদের প্রত্যক্ষ ও জোরালো নির্দেশ ছাড়া হাজারো মানুষকে হত্যা ও গুরুতর আহত করার সম্ভাবনা কম। তাই শেখ হাসিনা, তাঁর সরকার এবং রাজনৈতিক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের সুষ্ঠু বিচার জরুরি। এই বিচারে গাফিলতি বা ঢালাও হত্যা মামলা দেওয়া হবে, এ ঘটনাকে হালকা করে ফেলার শামিল। হাসিনা-পরবর্তী বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কী হবে, তা নিয়ে এখন বিতর্ক চলছে…(https://www.prothomalo.com/opinion/column/atynxogbll)

মন্তব্যঃ

আওয়ামী লীগ ক্ষমতার রাজনৈতিক দৃশ্যপটে না থাকলেও আমরা দেখছি আওয়ামী লীগ আমলের অনেক কিছুই এখনো চলমান রয়েছে, যেমন, চাঁদাবাজি, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে সিন্ডিকেট, ইসলাম ও মুসলিমদের প্রতি দমন-নিপীড়ন, বহিঃশক্তির প্রতি সরকারের নতজানু অবস্থান ইত্যাদি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হলে কি মানুষ তাদের সকল অধিকার ফিরে পাবে? অন্যকোন নামে ফ্যাসিবাদের উত্থান কি চিরতরে বন্ধ হবে? ফ্যাসিবাদ কেন তৈরি হচ্ছে সেটা কি কখনো খতিয়ে দেখা হবে?

এ সকল প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্য আমাদের উচিত দেশের সেক্যুলার রাজনৈতিক ধারাটি খতিয়ে দেখা। এ রাজনৈতিক ধারাটি প্রথমত, মার্কিন-ব্রিটেন-ভারত অনুগত্য নির্ভর। দ্বিতীয়ত, এখানকার শাসনব্যবস্থাটি গণতন্ত্র কিংবা স্বৈরতন্ত্র যে নামেই চলুক না কেন, এটি স্রষ্টার হুকুম বিবর্জিত একটি ব্যবস্থা। ফলে এখানকার শাসকরা জনগণের অধিকার প্রদানে সৃষ্টিকর্তার প্রতি জবাবদিহিতার চাইতে তাদের উপনিবেশবাদী প্রভুদের সন্তুষ্টি লাভেই বেশি তৎপর থাকে। এর বিনিময়ে শাসকরা অর্থ-সম্পদ, ক্ষমতা সুসংহত করার সুযোগ, ক্ষমতাচ্যুত হলে প্রভুরাষ্ট্রে আরাম-আয়েশে জীবনযাপনের সুযোগ ইত্যাদি পেয়ে থাকে। তাই ক্ষমতাসীন থাকা অবস্থায় তারা জনগণের অর্থনীতিকে আইএমএফ, ওয়ার্ল্ডব্যাংক এর মতো প্রতিষ্ঠানের নিকট জিম্মি করে ফেলে। মহামূল্যবান খনিজ সম্পদগুলো শেভরন, কনকোফিলিপস, এক্সনমোবিল ইত্যাদি উপনিবেশবাদী প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেয়। বিদ্যুতের মত কৌশলগত সম্পদ মহাদুর্নীতির মাধ্যমে আদানির মতো প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেয়। ফলে দিনশেষে জনগণের ভাগ্যে কিছুই জোটে না। তখন জনগণ সামান্য খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থানের মতো প্রয়োজন পূরণ করতে হিমশিম খায়। তারপর যখন জনগণ প্রতিবাদ করে, শাসকরা তখন সর্বশক্তি দিয়ে জনগণের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এভাবেই ফ্যাসিবাদ রূপ লাভ করে। অর্থাৎ সেক্যুলার শাসকের শাসনচক্রটি যদি আমরা দেখি, প্রথমে, পূর্ববর্তী শাসকের অধিকার হরণের কারণে জনগণ গণআন্দোলন, সশস্ত্র সংগ্রাম কিংবা সেনাঅভ্যুত্থানে সরকারের পতন ঘটায়। দ্বিতীয়ত, অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে নতুন শাসকের জন্ম হয়। তৃতীয়ত, শাসক উপনিবেশবাদের আনুগত্য ও স্রষ্টার হুকুমকে অবজ্ঞা করেই পূর্বের মতো শাসন করতে থাকে। চতুর্থত, জনগণ অধিকার বঞ্চিত হয়… এভাবে ৭১, ৭৫, ৮৯, ২৪… চলতে থাকে।

তাই বলা যায়, সেক্যুলার শাসনব্যবস্থার এই দুষ্টচক্র চালু রেখে, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা কিংবা না করা একই কথা। কারণ এটা চালু রাখলে, অন্য কোন সেক্যুলার দল ‘আওয়ামীলীগ’ হয়ে বারবার ফেরত আসবে। তাই সেক্যুলার ব্যবস্থাটির মূলউৎপাটন করে, ইসলামী শাসন ব্যবস্থা বাস্তবায়নেই প্রকৃত সমাধান নিহিত। কারণ, ইসলামী শাসনব্যবস্থায় খলিফাগণ উপনিবেশবাদের গোলামী করে না। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র হুকুম ব্যতীত নিজেদেরকে খেয়ালখুশি অনুযায়ী জনগণকে শাসন করে না। সর্বোপরী তাদের কর্মকাণ্ডের কারণে দুনিয়াতে জনগণের ও কেয়ামতের দিন আল্লাহ্‌’র নিকট জবাবদিহিতাকে ভয় করেন। জবাবদিহিতার অনুভূতি ও দায়িত্বজ্ঞানের তীব্রতা পূর্ববর্তী খলিফাদের মধ্যে কেমন পর্যায়ে ছিল, তা উমর ইবনুল খাত্তাব (রা.)-এর একটি ঘটনা থেকেই বোঝা যায়। একদিন তিনি প্রচণ্ড সূর্যতাপে সদকার উটের পরিচর্যা করছিলেন। এমন সময় বনু তামিম গোত্রের নেতা আহনাফ বিন কায়েস ইরাক থেকে একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে আসেন। যখন তারা তার নিকটবর্তী হলেন, তখন উমর (রা.) আহনাফ-কে ডেকে বললেন, হে আহনাফ! কাপড়-চোপড় রেখে দ্রুত এসো এবং উট পরিচর্যার ব্যাপারে আমিরুল মু’মিনিনকে সাহায্য করো। কেননা এগুলো সদকার উট। এর মধ্যে এতিম-মিসকিন ও বিধবাদের হক্ব রয়েছে। তখন একজন বলল, ‘হে আমিরুল মু’মিনিন! আল্লাহ্‌ আপনাকে ক্ষমা করুন। আপনি সদকা খাতের কোনো একজন কর্মীকে একাজের নির্দেশ দিলেইতো যথেষ্ট ছিল। জবাবে উমর (রা.) বললেন, আমার চেয়ে ও আহনাফের চেয়ে বড় গোলাম আর কে আছে? কেননা যে ব্যক্তি মুসলিমদের কোনো দায়িত্বে থাকে, তার উপর সেভাবে দায়িত্ব পালন করা ওয়াজিব, যেভাবে মনিবের প্রতি একজন গোলামের দায়িত্ব পালন করা আবশ্যক।’ এই দায়িত্ববোধ সেক্যুলার শাসনব্যবস্থার শাসকদের নিকট থেকে কল্পনাও করা যায় না। তাই আওয়ামী লীগের সাথে সাথে নিষিদ্ধ হতে হবে সেক্যুলার রাজনীতি ও শাসনব্যবস্থা। অবমুক্ত হতে হবে ইসলামী শাসনব্যবস্থা তথা খিলাফত প্রতিষ্ঠার রাজনীতি- যেটাকে আজকে নিষিদ্ধ করে রাখার চেষ্টা চলছে।

    –    মোঃ জহিরুল ইসলাম

“চিন্ময় দাসের গ্রেফতারে উদ্বেগ জানিয়ে ভারতের বিবৃতি”

খবরঃ

বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতার ও জামিন না দেয়ার ঘটনায় উদ্বেগ জানিয়েছে ভারত সরকার। গতকাল (২৬ নভেম্বর, মঙ্গলবার) এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগের কথা জানায় দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতন জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে গ্রেফতার ও জামিন আবেদন নাকচ করায় ভারত গভীর উদ্বিগ্ন। বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্য সংখ্যালঘুদের ওপর একাধিক হামলার ঘটনার ধারাবাহিকতায় এ ঘটনা ঘটেছে। …এতে আরো বলা হয়, দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো এসব হামলার পেছনে যারা জড়িত, তাদের বড় অংশকেই বাদ দিয়ে, ন্যায্য দাবী আদায়ের জন্য শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করা একজন ধর্মীয় নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। আমরা চিন্ময় দাসের গ্রেফতারের বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদকারী সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়টিও উদ্বেগের সঙ্গে পর্যবেক্ষণ করছি। (https://bonikbarta.com/bangladesh/DkXxMDonmSutR6I7)

মন্তব্যঃ

১৯৬৬ সালে আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে প্রতিষ্ঠিত আন্তর্জাতিক কৃষ্ণভাবনামৃত সংঘ (International Society for Krishna Consciousness – সংক্ষেপে ISKCON/ইসকন)-এর অফিসিয়াল লক্ষ্য হলো কৃষ্ণের প্রতি ভক্তি, বৈষ্ণব ধর্ম প্রচার ও সনাতন ধর্মের আদর্শ প্রচার করা। ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর টুইন টাওয়ার হামলার পর বিশ্ব পরিস্থিতি পাল্টে যাওয়ায় সংগঠনটির কার্যক্রম ও উদ্দেশ্যে মৌলিক পরিবর্তন ঘটে। নাইন-ইলেভেনের পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘোষিত “ওয়ার অন টেরর”-এ গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত মিত্র হিসেবে ভারত আবির্ভূত হয়। এই প্রেক্ষাপটে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক আরও মজবুত করতে “বিশ্ব হিন্দু পরিষদ আমেরিকা”-র উত্তরসূরি হিসেবে “হিন্দু আমেরিকান ফাউন্ডেশন” গঠিত হয়।  [দেখুন: https://politicalresearch.org/2024/10/15/haf-way-supremacy]। মূলত, এই ফাউন্ডেশনের লক্ষ্য ছিল ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিকদের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের কৌশলগত স্বার্থ রক্ষা করা। এরই ধারাবাহিকতায় ইসকনের মতো হিন্দু সংগঠনগুলোকেও যুক্তরাষ্ট্রে ভারতের স্ট্র্যাটেজিক স্বার্থে সম্পৃক্ত করা হয়। [দেখুন: www.hinduamerican.org/press/caste-statement-iskcon-communications]

বাংলাদেশে ইসকনের কার্যক্রম শুরু হয় ১৯৮০-এর দশকে। শেখ হাসিনার সরকার (২০০৯-২০২৪) আমলে ইসকনের মন্দির সংখ্যা ছিল ৩৫ থেকে বেড়ে ১০০টির বেশি হয়েছে। সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল নিজেই ইসকনের সঙ্গে তার সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছিল। [দেখুন: www.youtube.com/watch?v=j8taQDKGQDY]। তার মন্ত্রিত্বকালে বাংলাদেশের শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তকে কিছু বিতর্কিত হিন্দুত্ববাদী বয়ান অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যালিম হাসিনার শাসনামলে প্রশাসন ও পুলিশের অনেক শীর্ষ কর্মকর্তার ইসকনের সঙ্গে সম্পর্ক থাকার বিষয়টিও প্রকাশ্যে এসেছে। ইসকন নিজ নামে সরাসরি রাজনৈতিক বা অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ড করে না। বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চ, বাংলাদেশ সম্মিলিত সংখ্যালঘু জোট, সম্মিলিত সনাতনী ছাত্র সমাজ ইত্যাদি বিচিত্র নামের সংগঠনের ছদ্মাবরণে ইসকনই বাংলাদেশে ভারতের উগ্রবাদী সংগঠন আরএসএসের গেরুয়া পতাকা ব্যবহার করা শুরু করে। তথাকথিত একটি “ভাব-আন্দোলন”-কে ব্যবহার করে তারা তরুণদেরকে রেডিকালাইজ করে, তারপর বিভিন্ন ভুঁইফোঁড় সংগঠনের নামে উস্কানিমূলক বক্তব্য ও কর্মসূচি দিয়ে সংঘাত ও সংঘর্ষ সৃষ্টি করে। চট্টগ্রাম জেলা আদালতের তরুণ আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে এভাবেই ভিন্ন সংগঠনের নামে উগ্র ও সশস্ত্র তরুণদেরকে জড়ো করে হত্যা করা হয়েছে।

মার্কিন-ভারতের মদদে বাংলাদেশে ইসকনের গেরুয়া রাজনীতির মূল উদ্দেশ্য আসলে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে ধ্বংস করা এবং সর্বোপরি বাংলাদেশকে মার্কিন-ভারতের অধীনস্ত রাখা। বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী চট্টগ্রাম বিভাগ, রংপুর বিভাগ ও সিলেট বিভাগে ইসকন বেশি সক্রিয়। বাংলাদেশের এই বিভাগগুলো নিয়ে, বিশেষত চট্টগ্রাম ও রংপুর বিভাগ নিয়ে, ভারতের কোনো কোনো মহলের বিশেষ ভূ-রাজনৈতিক প্রকল্প ও বিচ্ছিন্নতাবাদের উস্কানির কথা ব্যাপকভাবে শোনা যায়।

এমতাবস্থায় ইসলামের ভিত্তিতে মতাদর্শিক রাজনীতিই পারে মার্কিন-ভারতের মদদপুষ্ট ইসকনের ধূর্ত সাম্প্রদায়িক অপরাজনীতিকে রুখে দিতে। মার্কিন-ভারতের সমর্থনের জন্য চাতক পাখির মতো চেয়ে থাকা গণতান্ত্রিক ও সেক্যুলার রাজনৈতিক দল বা সরকার কখনোই এই অপরাজনীতিকে যথাযথভাবে মোকাবিলা করতে পারবে না, যা ইতিমধ্যে তাদের রাজনৈতিক অবস্থানের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।  ছাত্র-জনতার বিপুল আত্মত্যাগে সংঘটিত গণআন্দোলনকে চূড়ান্ত পরিণতির দিকে নিয়ে যেতে হলে ইসলামের ভিত্তিতে রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তোলা ছাড়া কোনো বিকল্প নেই।

    –    রাশিদ হাসান মাহাদী

“পীর ও কমিউনিস্ট মওলানা ভাসানী”

খবরঃ

মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে বলা হয় রাজনীতির দিকপাল। আবার, লাখ লাখ ভক্তের কাছে তিনি ছিলেন কামেল পীর। মুক্তিযুদ্ধকালে মওলানা ভাসানী ছিলেন প্রবাসী মুজিবনগর সরকারের প্রধান উপদেষ্টা। কারও কারও কাছে চীনপন্থি কমিউনিস্ট হিসেবে পরিচিতি ছিল এ মজলুম জননেতা এবং তাঁকে কেন্দ্র করেই পাকিস্তান আমলে এদেশে সমাজতান্ত্রীক রাজনীতি দানা বাঁধে। দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্যি, কালের বিবর্তনে আমাদের নতুন প্রজন্মের অনেকের কাছে মওলানা ভাসানী প্রায় অজানা এক নাম। বলা হয়, বাঙালি এক অকৃতজ্ঞ জাতি। এ দেশে মওলানা ভাসানী, শেরেবাংলা এ কে ফজলুল হক, শহীদ সোহরাওয়ার্দীর মতো বিশাল মাপের নেতারা জন্মগ্রহণ করলেও তাঁরা ক্রমশ হারিয়ে যাচ্ছেন স্মৃতিপট থেকে। (www.bd-pratidin.com/editorial/2024/11/20/1051898)

মন্তব্যঃ

ভাসানী বন্দনাকারীদেরকে আমাদের প্রশ্ন করা উচিত শেখ মুজিবের সেকুলার রাজনৈতিক মতাদর্শের সাথে ভাসানীর “শুনো, ধর্ম আর দেশ মিলাইতে যাইও না” মতাদর্শের পার্থক্য কী? মূলত ভাসানী হল সেকুলারিজম বা ধর্মনিরপেক্ষতার আদর্শ-চরিত্র, যেখানে ব্যক্তিজীবন হবে ‘কামেল পীরের’ মত আর রাষ্ট্র ও শাসনব্যবস্থার প্রশ্নে তার অবস্থান হবে “ইসলাম আর দেশ মিলাইতে যাইও না”, অর্থাৎ ইসলাম কোন পরিপূর্ণ জীবনব্যবস্থা নয় যেখানে কোন শাসনব্যবস্থা রয়েছে। ভাসানীর ‘পালনবাদ’ নীতি হল একটি দ্বি-চারী নীতি; কারণ, এখানে তিনি দেশ ও ইসলামকে মিলিয়ে বুঝাতে চেয়েছেন- দেশ চলবে মানবরচিত আইন-সংবিধান দিয়ে যেখানে আল্লাহ্‌’র বিধানকে মাইনাস রাখা হবে, কিন্তু শাসককে হতে হবে আল্লাহ্‌ভীরু ও আল্লাহ্‌’র প্রতিনিধি!

ইতিহাসের মুজিব-কেন্দ্রীক আওয়ামী ভাষ্য ও বর্তমান সরকারের ভাসানী-কেন্দ্রীক ভাষ্য কোনটিই ইতিহাসের প্রকৃত বাস্তবতা নয়। বরং, উভয় ভাষ্যই প্রকৃত বাস্তবতাকে আড়াল করে মূল সমস্যা এবং সমাধানকে মুসলিম জনসাধারনের দৃষ্টি থেকে সরিয়ে রাখার অপপ্রয়াস। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী বাস্তবতায় বৃটিশদের ভারত ত্যাগ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নব্য-সাম্রাজ্যবাদী সেকুলার পুঁজিবাদী আগ্রাসন এবং সোভিয়েত রাশিয়া ও চীনের নাস্তিক্যবাদী সমাজতান্ত্রীক আগ্রাসনের প্রেক্ষিতে এদেশের তৎকালীন রাজনীতিবিদরা বিভিন্ন দলে-উপদলে ভাগ হয়ে এই স্বার্থান্বেষী রাষ্ট্রগুলোর দালাল ও ক্রীড়ানক হিসেবে আবির্ভূত হয়। তারা এদেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করেছিল এবং জনগণকে সস্তা আবেগ দিয়ে ফলহীন-সংগ্রামে জড়িত করে জনগণের জীবন-সময়-শ্রমকে নষ্ট করেছিল যার সুবিধাভোগী ছিল এই স্বার্থান্বেষী রাষ্ট্রগুলো। যার মাধ্যমে পরবর্তী কয়েকটি প্রজন্মকে এই মুজিব, ভাসানী, শেরেবাংলা ও সোহরাওয়ার্দীরা দাসত্বের শৃঙ্খলে আবদ্ধ করেছিল। তখন মুসলিম উম্মাহ্‌’র প্রয়োজন ছিল রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ)-এর নিজ হাতে প্রতিষ্ঠিত ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা তথা খিলাফত পুন:প্রতিষ্ঠার রাজনীতি চালু করা, কিন্তু তথাকথিত এই বিশাল মাপের (!) নেতারা খিলাফত পুন:প্রতিষ্ঠার মহান রাজনীতি না করে ‘স্বাধীনতা ও জাতীয়তাবাদের’ আফিম খাইয়ে পুরো জাতিকে ঘুম পাড়িয়ে রেখে কাফিরদের নিয়ন্ত্রণকে আমাদের উপর চিরস্থায়ী করতে তাদের জীবন-যৌবন সঁপে দিয়েছিল!

তাদের ‘প্রজন্মান্তর’ (পরবর্তী প্রজন্মের ধারা) ক্রমাগত এবং এখনো আমাদেরকে ইতিহাসের ভুল পাঠ দিয়ে যাচ্ছে। ১৯৪৭, ১৯৫২, ১৯৬৯, ১৯৭১, ১৯৯১, ২০২৪ এই সালগুলোকে আমাদের মনের মধ্যে গেঁথে দিয়ে আমাদেরকে আমাদের আত্মপরিচয় ভুলিয়ে রাখাই তাদের মূল কাজ। মুসলিম হিসেবে আমাদেরকে ইতিহাসের পাঠ নিতে হবে ১৯২৪ সালের সেই হৃদয়বিদারক ঘটনা থেকে যখন বৃটিশরা খিলাফত রাষ্ট্রব্যবস্থাকে ধ্বংস করে ইসলামী রাষ্ট্রের ধ্বংসস্তুপের উপর সেকুলারিজম প্রতিষ্ঠা করে এবং আমাদের উপর দালাল শাসকদের চাপিয়ে দেওয়ার প্রচলন শুরু করে। তারাই আমাদের প্রকৃত ও মহান পূর্বপুরুষ যারা এই উপমহাদেশে বৃটিশদের বিরুদ্ধে লড়াই-সংগ্রাম করে শহীদ হয়েছিলেন এবং খিলাফত ধ্বংসের বৃটিশ ষড়যন্ত্র আগেভাগে টের পেয়ে ১৯২০ সালের মহান ‘খিলাফত আন্দোলন’ গড়ে তুলেছিলেন, যারা নিজেদেরকে কখনোই বাদ বাকি মুসলিম ভুখন্ডগুলো থেকে আলাদা বা বিছিন্ন মনে করতেন না। আমাদের পূর্বপুরুষরা খিলাফত ধ্বংস ঠেকানোর আন্দোলনে পুরো মুসলিম উম্মাহ্‌’র মধ্যে ছিলেন অগ্রগামী; আর এখন আমাদের সামনে রয়েছে এদেশে খিলাফত রাষ্ট্রকে পুন:প্রতিষ্ঠা করে উম্মাহ্‌-কে ঐক্যবদ্ধ করার কাজে পুরো উম্মাহ্‌’র মধ্যে অগ্রগামী হওয়ার ঐতিহাসিক সুযোগ। মহা-পরাক্রমশালী আল্লাহ্‌ বলেন: “আর যারা মুহাজির ও আনসারদের মধ্যে অগ্রগামী এবং যারা আল্লাহ্‌’র সন্তুষ্টিলাভের আশায় (মুহাজির ও আনসারদের স্থাপিত দৃষ্টান্তের) অনুসরণকারী- আল্লাহ্‌ তাদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং তারাও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট (হবে)। তাদের জন্যই তিনি প্রস্তুত করেছেন জান্নাতসমূহ যার তলদেশ দিয়ে প্রবাহিত হয় ঝর্ণা, যেখানে তারা চিরস্থায়ী হবে। আর এটাই মহাসাফল্য। (সূরা আত-তওবা: ১০০)।

    –    রিসাত আহমেদ

“গণতন্ত্র ফেরাতে রূপরেখা ঘোষণা করবেন ড. ইউনূস, আশা যুক্তরাজ্যের”

খবরঃ 

বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফেরাতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস একটা রূপরেখা ঘোষণা করবেন বলে আশা করছেন যুক্তরাজ্যের ভারত-প্রশান্ত মহাসাগর বিষয়ক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ক্যাথরিন ওয়েস্ট। ঢাকা সফররত ক্যাথরিন ওয়েস্ট রোববার (১৭ নভেম্বর) পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের সামনে এমন প্রত্যাশার কথা জানান। বৈঠকের বিষয়ে ক্যাথরিন ওয়েস্ট বলেন, পররাষ্ট্র উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশে গণতন্ত্র ফেরাতে ড. ইউনূস রূপরেখা ঘোষণা করবে এমন আশা করছে ব্রিটেন। সেইসঙ্গে রাজনীতিতে সব দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রত্যাশা করে যুক্তরাজ্য। (https://dailyinqilab.com/national/news/704294)

মন্তব্যঃ

বৃটেন পতিত হাসিনা সরকারের গত ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনামলে বাংলাদেশে তথাকথিত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য সোচ্চার না থাকলেও, হাসিনার বিদায়ের পর বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার বিষয়ে বেশ তৎপর। বৃটেন তৎপরতার অংশ হিসাবে তার ভারত-প্রশান্ত মহাসাগর বিষয়ক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরে প্রেরণ করেছে। সফরের সময় বৃটিশ মন্ত্রী বাংলাদেশে রাজনৈতিক সমঝোতার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের জন্যও সমান সুযোগ সৃষ্টির উদ্যাগকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছে। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বৃটিশ মন্ত্রী বলেছে, “অবশ্যই এবং আমরা চাই, সবকিছু কীভাবে এগিয়ে যাবে, সেটার রূপরেখা অধ্যাপক ইউনূস সরকার দেবে এবং পরবর্তী ধাপে যাওয়ার যাত্রায় যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের জনগণকে সহায়তা করতে চাইবে।” (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম, ১৭ নভেম্বর, ২০২৪।

অন্যদিকে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পতিত হাসিনা সরকারের মেয়াদের বিভিন্ন সময়ে সরকারের একতরফা নির্বাচন নিয়ে সমালোচনায় মুখর থাকলেও, অনির্বাচিত ইউনুস সরকারকে নিঃশর্ত সহায়তার আশ্বাস দিচ্ছে যা প্রধান উপদেষ্টার প্রেসউইং থেকে পাঠানো প্রেসনোটে দাবী করা হয়েছে, “ড. ইউনূসকে বাইডেন বলেছেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পূর্ণ সমর্থন করবে যুক্তরাষ্ট্র”। (ডয়েচে ভেলে বাংলা, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪)।

পশ্চিমা উপনিবেশবাদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বৃটেন কর্তৃক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবীর এই পরিবর্তন দৃষ্টিকটু হলেও অস্বাভাবিক নয়। বরং, তারা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে স্বৈরাচারী একনায়ক যেমনঃ বাশার আল-আসাদ এবং গোষ্ঠীতন্ত্র যেমনঃ মক্কা-মদিনাতে আল সাউদ পরিবারের মত দুর্বৃত্ত গোষ্ঠীর সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখে, এবং সেখানে তারা কদাচিৎ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবী তোলে। অর্থাৎ, গণতন্ত্র হচ্ছে পশ্চিমা উপনিবেশবাদীদের একটি trojan horse যার মাধ্যমে তারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ছদ্মাবরণে তাদের উপনিবেশবাদী স্বার্থ হাসিল করে। তাই, গণতন্ত্র ছাড়া যদি তাদের উপনিবেশিক স্বার্থ হাসিল হয় তখন তারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার দাবী ত্যাগ করতে কুন্ঠাবোধ করে না। কারণ স্বার্থই হচ্ছে পশ্চিমা উপনিবেশবাদীদের শেষ কথা।

আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা মুসলিমদের সৃষ্টি করেছেন সর্বশ্রেষ্ট উম্মত হিসাবে যাদের দায়িত্ব মানবজাতির কল্যাণ নিশ্চিত করা: “তোমরাই শ্রেষ্ঠ জাতি, তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে মানবজাতির জন্য” (সুরা আলি ইমরান: ১১০)। তাই, ইসলামে উপনিবেশবাদী চিন্তার কোন ঠাঁই নাই। মানবজাতির কল্যাণ নিশ্চিত করা মুসলিমদের উপর আল্লাহ্‌ প্রদত্ত মহান দায়িত্ব। মুসলিমদের প্রতিনিধি হিসাবে খলিফা মানবজাতির কল্যাণে কাজ করেন। ইতিহাস সাক্ষী, পশ্চিমারা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে উপনিবেশ স্থাপন করে সম্পদের ব্যাপক লুণ্ঠন চালিয়েছে, শুধু ভারত উপমহাদেশ থেকে বৃটিশরা ৪৫ট্রিলিয়ন ডলার লুট করে নিয়ে গেছে এবং ‍বৃটিশ মিউজিয়ামে এখনো তাদের লুণ্ঠনের বহু নমূণা বিদ্যমান। অন্যদিকে, একই সময়ে বহু ভূখণ্ড ইসলামী খিলাফতের অধীনে শাসিত হয়েছে এবং খিলাফত কখনোই সম্পদকে  রাজধানীতে সম্পদ পুঞ্জিভূত করে নাই। প্রতিটি উলাই’য়াহ্‌’র নাগরিকরা ইসলাম অনুযায়ী সমান সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন। শুধুমাত্র খিলাফত ব্যবস্থার নেতৃত্বেই পশ্চিমা উপনিবেশবাদী জুলুমের বিশ্বব্যবস্থার বিপরীতে ন্যায়নিষ্ঠ ও কল্যাণকরণ বিশ্বব্যবস্থা গড়ে তোলা সম্ভব।

“জনপদগুলোর লোকেরা যদি ঈমান আনত আর তাক্বওয়া অবলম্বন করত তাহলে আমি তাদের জন্য আসমান ও যমীনের যাবতীয় কল্যাণ উন্মুক্ত করে দিতাম…” (সূরা: আল আ’রাফ, আয়াত ৯৬)

    –    মো: সিরাজুল ইসলাম

“শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে ‘রণক্ষেত্র’ ডেমরা-যাত্রাবাড়ী এলাকা”

খবরঃ

শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ এবং ড. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের (ডিএমআরসি) শিক্ষার্থীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ায় রাজধানীর ডেমরা-যাত্রাবাড়ী এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েছে স্থানীয় লোকজনও। এর আগে সংঘর্ষ ও হামলায় সোহরাওয়ার্দী কলেজ, কবি নজরুল কলেজ এবং ঢাকা ন্যাশনাল মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট হাসপাতালের ভেতরে ব্যাপক ভাঙচুর চালানো হয়েছে। ন্যাশনাল মেডিক্যাল ইনস্টিটিউট হাসপাতালে চিকিৎসকের গাফিলতির কারণে ডা. মাহবুবুর রহমান মোল্লা কলেজের ডেঙ্গু আক্রান্ত শিক্ষার্থী অভিজিতের মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ ওঠে, যাকে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। (www.banglatribune.com/others/capital-city/874405/শিক্ষার্থীদের-সংঘর্ষে-‘রণক্ষেত্র’-ডেমরা-যাত্রাবাড়ী)

মন্তব্যঃ

ছাত্র-জনতার অসীম সাহসীকতা ও ব্যাপক হতাহতের মধ্য দিয়ে বৃটেন-ভারতের দালাল হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর গঠিত এই অন্তর্বর্তী সরকার শুরু থেকেই অত্যন্ত দূর্বল ভিত্তির উপর দাঁড়িয়ে আছে। এর অন্যতম কারণ হলো দ্রব্যমূল্য, নিরাপত্তার মত জনগণের বিষয়গুলোর দিকে মনযোগ দেয়নি এবং তারা জনআকাঙ্খার বিপরীতে গিয়ে বিদেশী শক্তিগুলোর স্বার্থ ও মুখ রক্ষার অবিরাম প্রচেষ্টা করেছে। তাই, তারা এই দূর্বলতা কাটাতে ছাত্রসমাজের অমিত শক্তিতে যাচ্ছেতাইভাবে ব্যবহার করার পথ বেঁছে নেয়। ছাত্রদের দিয়ে আনসার ষড়যন্ত্র দমন, সুবিধামত প্রশাসনিক ও বিচারিক কাজে হস্তক্ষেপ, জনগুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো থেকে দায়মুক্তি নেয়া ও বিদেশীদের স্বার্থগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে। অন্তর্বর্তী সরকার জাহিলী যুগের বর্বর উন্মত্ততাকে ‘মব জাস্টিস’-এর মত সুন্দর নাম দিয়ে সবকিছু জায়েজ করেছে। যার সুযোগ নিয়ে শত্রুরাষ্ট্র ভারত ও তার দালাল হাসিনা দেশের অভ্যন্তরে নানামূখী ষড়যন্ত্র লিপ্ত হয়েছে। তাই, ‘মব জাস্টিস’-এর নামে সংঘটিত সকল অন্যায়-অপকর্ম ও ক্ষয়ক্ষতির দায় প্রকৃতপক্ষে সরকারের কাঁধেই বর্তায়। “কোমলমতি ছাত্রদেরকে ‘ব্যবহার’ করা হচ্ছে” বা “সরকারের ‘শরিকানা’ না পেয়ে কেউ কেউ উন্মত্ত আচরন করছে”- এসব কথা বলে ‘মব জাস্টিস’-কে রাজনৈতিক হাতিয়ার যারা ব্যবহার করেছে তার কেউই বর্তমান এই অরাজকতার দায় এড়াতে পারে না।

তুচ্ছ বিষয় নিয়ে প্রজন্মের পর প্রজন্ম রক্তক্ষয়ী সংঘাতে লিপ্ত হয়ে আরবরা যখন প্রায় নি:শেষ হয়ে যাচ্ছিল, তখন তাদের মুক্তির বার্তা নিয়ে এসেছিল ইসলাম। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) ও তাঁর প্রাণপ্রিয় সাহাবা (রা.)-দের সঠিক নেতৃত্ব এবং আল্লাহ্‌ প্রদত্ত আসমানী কিতাবের সমাধানের সম্মিলনে জাহিলিয়াতের সংঘাতে লিপ্ত পুরো আরব ইসলামের এক পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হয়, যার ফলে পৃথিবীর রাজনীতি ও ইতিহাসের গতিপথ চিরদিনের জন্য পরিবর্তন হয়ে যায়। কিছুদিন আগেও কালিমার পতাকা নিয়ে রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) এর সম্মান রক্ষায় এবং ফিলিস্তিনী মুসলিমদের পক্ষে রাজপথে নেমে খিলাফতের দাবীতে স্লোগান তুলে এই তরুণ সমাজ জানান দিয়েছিল তারা ইসলামের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হতে প্রস্তুত। অমিত শক্তির অধিকারী এই তরুণদের জন্য প্রয়োজন শুধুমাত্র একটি সঠিক ও দুরদর্শী নেতৃত্ব যারা নিজেদের মনগড়া সমাধান নয় বরং আল্লাহ্‌’র দেয়া সমাধান দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনা করে দল-মত নির্বিশেষে ছাত্রজনতাকে ঐক্যবদ্ধ করবে। ইতিহাস রচনার সেই মাহেন্দ্রক্ষন খুবই সন্নিকটে, ইনশা’আল্লাহ্‌। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন: “তোমরা আল্লাহ্‌’র হাবল-কে (something like umbilical cord; implying Qur’an) আকড়ে ধর এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। স্মরণ কর: তোমরা ছিলে পরষ্পরের জানের দুশমন, অত:পর আল্লাহ্‌’র অনুগ্রহে তোমরা পরষ্পরের ভাই হয়ে গেলে। তোমরা তো ছিলে জাহান্নামের প্রান্তসীমায় এবং যেখান থেকে আল্লাহ্‌ তোমাদেরকে রক্ষা করলেন (সূরা আলি ইমরান: ১০৩)

    –    রিসাত আহমেদ

“রাজধানীর কলেজগুলোতে অস্থিরতা কেন?”

খবরঃ 

নিজ নিজ কলেজের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে রাজধানীর উচ্চ মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা স্তরের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অস্থিরতা চলছে। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীরা মূলত এই আধিপত্য বিস্তারে সক্রিয়। এ পরিস্থিতির জন্য দায়ী করা হচ্ছে জুলাই অভ্যুত্থানের সমন্বয়কদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল ও উসকানিকে। সংশ্লিষ্টদের অনেকেই বলছেন, অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টিতে অন্য পক্ষের উসকানি রয়েছে। আবেগ সামলাতে না পেরে সহিংসতা ও নাশকতায় জাড়াচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। তবে একটার পর একটা ঘটনা ঘটলেও প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষের কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। আর অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। (www.banglatribune.com/others/874547/রাজধানীর-কলেজগুলোতে-অস্থিরতা-কেন)

মন্তব্যঃ

যে ছাত্রদেরকে আমরা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সম্মুখ সমরে দেখেছিলাম, তাদের একাংশকে আজ বিভিন্ন কারণে নিজেদের মধ্যে তীব্র বিবাদে লিপ্ত হতে দেখা যাচ্ছে যা খুবই দুঃখজনক। অথচ, , তারাই আজ স্ব স্ব প্রতিষ্ঠানের পরিচয় বহন করে একে-অপরের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছে। ঠিক যেন আরবের অন্ধকারাচ্ছন্ন সময়ের গোত্রগুলোর মত অবস্থা।

২০২৪-এর মত শেষ গণঅভ্যুত্থান হয়েছিল ১৯৯০ সালে। সে সময়ে এক স্বৈরাচারের পতনের পর গণতন্ত্রের নামে নতুন নতুন স্বৈরাচারের আবির্ভাব হয়, যা তরুণসমাজকে হতাশ করে। তরুণসমাজকে বাঙ্গালী ও বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ ও বিপক্ষের শক্তি, মৌলবাদী ও লিবারাল নানারকম জাতীয়তাবাদী চিন্তা দ্বারা বিভক্ত করে রাখা হয়। সেই হতাশা কেটে নতুন আরেকটি প্রজন্ম প্রস্তুত হতে দীর্ঘ ৩৪ বছর লেগেছে। এখন আবার সেই ৩৪ বছর আগের একই চক্রান্ত শুরু হয়েছে। তরুণসমাজকে জাতীয়তাবাদের ‘কলেজ ভার্সনে’র মাধ্যমে হানাহানিতে লিপ্ত করা হচ্ছে। কারণ যুবসমাজ রাজনীতিবিমুখ হয়ে যদি আবার “আই হেট পলিটিক্স”-এর গর্তে একবার ঢুকে পড়ে, তাহলে ওই গর্ত থেকে বের হতে আবারো কয়েক দশক লেগে যাবে। এতে করে কোনরকম বাঁধা ছাড়াই বিদেশী শক্তি ও তাদের নিয়োজিত শাসকেরা আবার জোট বেঁধে অন্যায্য চুক্তিসমূহ বাস্তবায়ন, দুর্নীতি ও দুঃশাসন শুরু করতে পারে।

ইতিহাসের দিকে তাকালে দেখা যায়, স্বৈরশাসক অপসারণের মত বহু অভ্যুত্থান পূর্বেও সংঘটিত হয়েছে। কিন্তু পরবর্তী শাসকের স্বৈরাচার হয়ে উঠতে খুব বেশী সময় লাগেনি। ফরাসী বিপ্লবে রাজা ষোড়শ লুইয়ের পতনের পর স্বৈরাচার নেপোলিয়নের আবির্ভাব হয়, জার্মানিতে জার কাইজার উইলহেমের পর এডলফ হিটলারের আবির্ভাব হয়। একইভাবে, বাংলাদেশে এরশাদের পতনের পর একই ধারাবাহিকতা দেখা গিয়েছে, যেখানে কেউই স্বৈরাচার হওয়া থেকে বিরত হয়নি। কারণ, ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ঔপনিবেশিক শক্তিদের ছত্রছায়ায় স্বৈরাচার তৈরির কারখানা। যতদিন তরুণসমাজ এই কারখানা না ভেঙ্গে শুধু ম্যানেজার বদলাতে থাকবে ততদিন দূরাবস্থার পরিবর্তন হবে না। দূরাবস্থা পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজন সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক প্রকল্প। ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে সমাজ, রাষ্ট্র ও আইন-আদালত গড়ে তোলার লক্ষ্যে খিলাফত ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাই হচ্ছে সেই রাজনৈতিক প্রকল্প। আরবের আইয়ামে জাহেলিয়া যুগে গোত্রবাদ তথা জাতীয়তাবাদের নামে সমাজে যখন বিভেদ চরমে উপনীত হয়েছিল, তখন সেখানে রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) ইসলামের মাধ্যমে সকল ধর্ম, বর্ণ ও গোত্রের মাঝে একতা সৃষ্টি করতে পেরেছিলেন। মদিনায় ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে যেভাবে আউস ও খাজরাজ গোত্রের দীর্ঘকালীন বিভেদ ঐক্যে পরিণত হয়েছিল। ঠিক একইভাবে বর্তমান তরুনরাও ইসলামের পতাকাতলেই নিজেদের ঐক্য খুঁজে পাবে, যার নমূণা আমরা কিছুদিন আগেই দেখেছি, যেখান আজকে বিবাদমান স্কুল-কলেজগুলোর ছাত্ররা ঐক্যবদ্ধভাবে রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ)-এর অবমাননা ও ইসরাইলী গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিল।

    –    জাবির জোহান