working to establish khilafah

মুশরিক রাষ্ট্র ভারতের সাথে হাসিনা সরকার কর্তৃক প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি চূড়ান্তকরণে সম্মত হওয়া ইসলাম ও মুসলিমদের সাথে একটি চরম বিশ্বাসঘাতকতা, এবং সামরিক সহযোগিতা চেয়ে এধরণের ঘৃণ্য অনুরোধ রাসূলুল্লাহ্ ﷺ- এর সতর্কবাণীর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন: “তোমরা মুশরিকদের আগুন থেকে আলোর সন্ধান করো না”

প্রেস বিজ্ঞপ্তি
بسم الله الرحمن الرحيم
মুশরিক রাষ্ট্র ভারতের সাথে হাসিনা সরকার কর্তৃক প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি চূড়ান্তকরণে সম্মত হওয়া ইসলাম ও মুসলিমদের সাথে একটি চরম বিশ্বাসঘাতকতা, এবং সামরিক সহযোগিতা চেয়ে এধরণের ঘৃণ্য অনুরোধ রাসূলুল্লাহ্ ﷺ- এর সতর্কবাণীর সুস্পষ্ট লঙ্ঘন: “তোমরা মুশরিকদের আগুন থেকে আলোর সন্ধান করো না”

শেখ হাসিনার ভারত সফরকে কেন্দ্র করে দেশবাসী যখন প্রাপ্তি ও প্রদানের চুলচেরা বিচার-বিশ্লেষণ করছে তখন অনেকেই গুরুত্বপূর্ণ এই বিষয়টি লক্ষ্য করেননি যে, হাসিনা সরকার তথাকথিত প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তিটির মাধ্যমে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর উপর সুপরিকল্পিত একটি আঘাত হেনেছে যাতে এটি একটি অকার্যকর বাহিনীতে পরিণত হয়। ২০১৮ সালে ভারত কর্তৃক বাংলাদেশে ৫০ কোটি ডলারের যে প্রতিরক্ষা ‘লাইন অফ ক্রেডিট’ (এলওসি) বাস্তবায়নের কথা ছিল তা ত্বরান্বিত করতে হাসিনা সরকার মোদী সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছে। এই সরকার আমাদের নৌবাহিনীর জন্য নিম্নমানের ভারতীয় তেলবাহী ট্যাংকার, লজিস্টিক জাহাজ, ভাসমান ডক, এবং সেনাবাহিনীর জন্য ব্রিজ লেয়ার ট্যাংক, পোর্টেবল স্টিল ব্রিজ, মাইন প্রোটেক্টিভ ভেহিকেল, ইত্যাদির মতো সরঞ্জামাদি ক্রয় করে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে পুরোপুরি পঙ্গু করে দিতে বদ্ধপরিকর; অথচ বাস্তবতা হচ্ছে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী তার অপ্রচলিত সামরিক সরঞ্জাম, আমদানির উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীলতার কারণে অপর্যাপ্ত গোলাবারুদ এবং অপ্রতুল গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যক্রমের জন্য বহুল পরিচিত (https://ukdefencejournal.org.uk/68-of-indian-military-equipment-is-vintage-say-officials/)। আমাদের সামরিক বাহিনীকে পঙ্গু করতে পিলখানা হত্যাকাণ্ডে মুশরিক শত্রুরাষ্ট্রকে সহযোগিতা থেকে শুরু করে তাদের নিম্নমানের যন্ত্রপাতি ও সরঞ্জামাদির উপর আমাদের সামরিক বাহিনীকে নির্ভরশীল করে তোলা পর্যন্ত – এই সরকার আমাদের সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে নাশকতামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে এবং এর মনোবল ধ্বংস করতে সম্ভাব্য কোন পন্থাই বাদ দিচ্ছে না। শুধুমাত্র ক্ষমতায় টিকে থাকতে হাসিনা সরকার ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আরোহণ করার পর থেকেই উম্মাহ্’র সার্বভৌমত্ব এবং কৌশলগত সম্পদ ভারতের কাছে হস্তান্তর করে যাচ্ছে। তারা যে কেবল আমাদের সামরিক বাহিনীকে দুর্বল করতে এই ঘৃণ্য শত্রুরাষ্ট্রের সাহায্য কামনা করে তা নয়, বরং তারা আমাদের সামরিক বাহিনীর নিষ্ঠাবান ও ইসলামপ্রেমী অফিসারদেরকে আমাদের প্রাণপ্রিয় রাসূলের ﷺ সুনির্দিষ্ট আদেশের বিরুদ্ধে অবস্থান নিতেও বাধ্য করছে, তিনি ﷺ বলেছেন: «لا تستضيئوا بنار المشركين» “তোমরা মুশরিকদের আগুন থেকে আলোর সন্ধান করো না” (আহমাদ এবং আন-নাসাঈ)।

আমরা জানি, ভারত ও তার হিন্দুত্ববাদী শাসকেরা মুসলিমদের স্বঘোষিত শত্রু। তারা পিলখানায় সেনা কর্মকর্তাদের হত্যার নীলনকশা তৈরী করেছিল এবং সীমান্তে নিরস্ত্র বেসামরিক লোকদের হত্যা করা থেকে কখনো বিরত হয়নি। এমনকি তারা হাসিনার ভারত সফরের সময়েও সীমান্তে একজন স্কুলছাত্রকে হত্যা করেছে (“বাংলাদেশী স্কুলছাত্র বি.এস.এফ-এর গুলিতে নিহত”, নিউ এইজ, ০৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২২)। এছাড়াও, তারা আমাদের প্রাণপ্রিয় নবীকে ﷺ এবং পবিত্র কুর‘আনকে অবমাননা করতে সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছে। তাদের কথাবার্তা এবং কাজে আমাদের প্রতি তাদের শত্রুতা এখন সুস্পষ্টভাবে প্রকাশিত, এবং আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা তাঁর কিতাবে তাদের সম্পর্কে আমাদেরকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন: “আপনি সব মানুষের মধ্যে মু’মিনদের প্রতি অধিক শত্রুতা পোষণকারী হিসেবে পাবেন ইহুদী ও মুশরিকদের” [সূরা আল-মায়িদাহ্: ৮২]। এবং এটা সত্য যে, ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রের মতো কাফির-উপনিবেশবাদী দেশসমূহ মুসলিমবিরোধী ধর্মান্ধতাকে পুঁজি করে দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতকে সেই একই ভূমিকায় নিয়োজিত করেছে, যে ভূমিকা তারা মধ্যপ্রাচ্যে অবৈধ ইহুদি রাষ্ট্রকে প্রদান করেছে।

হে মুসলিমগণ, আমরা, মুহাম্মাদ ﷺ-এর উম্মত, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাতি, এমন অকল্পনীয় লজ্জা ও অপমানের মধ্যে থাকা কোনভাবেই আমাদের প্রাপ্তি হতে পারে না। এই বিশ্বাসঘাতক ধর্মনিরপেক্ষ শাসক ও রাজনীতিবিদদের হাত থেকে আমাদের পরিত্রাণ পেতে হবে, যাদের অস্তিত্বই আমাদের মুক্তির পথে একমাত্র বাধা। এই দালালরা কাফির-মুশরিক শত্রুদের দ্বারা লালিত-পালিত, যাতে আমরা সর্বদা তাদের ভয়ঙ্কর খপ্পরে আটকে থাকি। একারণেই আমরা প্রত্যক্ষ করছি বিএনপির মতো ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোও ভারতের সঙ্গে সামরিক চুক্তির বিষয়ে নীরব ভূমিকা পালন করছে, কারণ তারাও আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ভারতের করুণা চায়। আমরা আমাদের সম্মান ও মর্যাদার প্রকৃত আবাসস্থল – নবুয়্যতের আদলে প্রতিশ্রুত দ্বিতীয় খিলাফতে রাশিদাহ্ ফিরিয়ে আনতে আর দেরী করতে পারি না। ইতিহাস সাক্ষী যে, শুধুমাত্র খিলাফতই এমন শাসক ও নেতা তৈরি করেছে যারা ক্ষমতায় আসতে কখনোই কাফির-মুশরিকদের কাছে করুণা চাননি, অথচ মুসলিম ভূ-খণ্ডসমূহের বর্তমান ধর্মনিরপেক্ষ শাসকগণ ক্ষমতায় যেতে এবং ক্ষমতায় টিকে থাকতে প্রতিনিয়ত কাফির-মুশরিকদের করুণা ভিক্ষা করে। খিলাফত রাষ্ট্র মুসা বিন নুসায়ের এবং তারিক বিন যিয়াদের মতো নেতৃত্ব তৈরি করেছিল, যারা স্পেনের অ-মুসলিমদের মর্যাদাও পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করেছিল এবং তাদেরকে হিস্পানিয়ার সর্বশেষ ভিসিগোথিক অত্যাচারী শাসক রাজা রডরিক-এর কবল থেকে রক্ষা করেছিল। স্প্যানিশ শহর সেউতার তৎকালীন গভর্নর, কাউন্ট জুলিয়ান, জনগণের উপর রাজা রডরিকের অত্যাচার এবং তাকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে চাওয়ার কারণে তার মেয়েকে অপহরণ ও ধর্ষণের প্রতিশোধ নিতে সাহায্যের জন্য উমাইয়া গভর্নর মুসা বিন নুসায়েরের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছিলেন। সেই সাহায্যের আবেদনে সাড়া দিয়ে উমায়িদ জেনারেল তারিক ইবনে যিয়াদ ও তার ৭,০০০ সৈন্যের বাহিনী ৭১১ খ্রিস্টাব্দে স্পেন আক্রমণ করেন, এবং উমাইয়া খিলাফতের অধীনে আন্দালুসকে একটি উলাইয়াহ্ (গভর্নরেট) হিসাবে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করেন। মুসলিমদের আবারও পবিত্র খিলাফতের সাহসী নেতৃত্বের অধীনে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, যারা ক্ষমতায় থাকার জন্য কাফিরদের কাছে করুনা ভিক্ষা করবে না, বরং অ-মুসলিম অধ্যুষিত দেশসমূহে সুবিচার ও সাম্যতা প্রতিষ্ঠার প্রয়োজন দেখা দিলে সেসব দেশের অত্যাচারী শাসকদেরকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করবে। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন:

*وَقَاتِلُوهُمْ حَتَّى لَا تَكُونَ فِتْنَةٌ وَيَكُونَ الدِّينُ كُلُّهُ لِلَّ*
“এবং তোমরা তাদের সাথে যুদ্ধ করতে থাক যতক্ষণ না ফিতনা শেষ হয়ে যায় এবং [যতক্ষণ না] দ্বীন সামগ্রিকভাবে আল্লাহ্’র জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়ে যায়।” [আল-আনফাল: ৩৯]

হিযবুত তাহ্রীর / উলাই’য়াহ্ বাংলাদেশ-এর মিডিয়া কার্যালয়