working to establish khilafah

সরাসরি তেলআবিব থেকে আসা যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক বিমান দুটির দেশের মাটিতে অবতরণ, অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার একটি মাইলফলক – এর মাধ্যমে হাসিনা সরকার ইসলাম ও মুসলিমদের সাথে তার বিশ্বাসঘাতকতার শেষ লজ্জাবরণটি উন্মোচন করল

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

بسم الله الرحمن الرحيم

সরাসরি তেলআবিব থেকে আসা যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক বিমান দুটির দেশের মাটিতে অবতরণ, অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার একটি মাইলফলক – এর মাধ্যমে হাসিনা সরকার ইসলাম ও মুসলিমদের সাথে তার বিশ্বাসঘাতকতার শেষ লজ্জাবরণটি উন্মোচন করল

পবিত্র ২৮ রমযান, ৭ এপ্রিল, ২০২৪ এবং বাংলাদেশে পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন, ১১ এপ্রিল, ২০২৪ যখন দেশের মানুষ নিশ্চিন্তে ছুটি পালন করছিল তখন অতি গোপনে দুটি কার্গো বহন করতে সক্ষম ন্যাশনাল এয়ার কার্গো ইনকর্পোরেটেড ইউএসএ দ্বারা নিবন্ধিত ও পরিচালিত দুটি বোয়িং বিমান ইসরায়েলের তেল আবিবের বেন গুরিয়ন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। যদিও দুটি ফ্লাইটই সরাসরি তেল আবিব থেকে ঢাকায় এসেছিল, তারা বাংলাদেশ থেকে রওনা হওয়ার পর সংযুক্ত আরব আমিরাতের শারজাহ বিমানবন্দরে তাদের পরবর্তী স্টপেজ করে। এখানে উল্লেখ্য, এই সংযুক্ত আরব আমিরাত (যেখানে বিমানটি যাত্রা বিরতি করে) এবং বাহরাইন ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় ওয়াশিংটন ডিসিতে আব্রাহাম চুক্তি সই করেছিল। এই চুক্তি অনুযায়ী অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্রের সাথে প্রথম কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করে বহু দশক ধরে ইসরায়েলকে বয়কটের যে নীতি মুসলিম দেশগুলো অনুসরণ করতো তার অবসান করে তারা মুসলিম উম্মাহ্‌’র সাথে বিশ্বাসঘাতকতার অন্যতম নজির স্থাপন করে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে মরিয়া হাসিনা সরকারও জনগণের সাথে প্রতারণা করে এসব বিশ্বাসঘাতক আরব মুসলিম শাসকদের কাতারে শামিল হচ্ছে। যখন ফিলিস্তিনের মুসলিমদের উপর অভিশপ্ত ইহুদীগোষ্ঠীর বর্বরতা বিশ্বমানবজাতির বিবেককে তাড়িত করছে, যখন মুসলিমগণ ফিলিস্তিনের পবিত্র ভুমি ও আল-আকসা মসজিদ দখলমুক্ত করতে মুসলিম সামরিক বাহিনীকে প্রেরণ করার দাবীতে বিশ্বব্যাপী সোচ্চার, যখন এই রমযান মাসে আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র নিকট মুসলিমদের ফরিয়াদ ছিল ফিলিস্তিনের মুক্তি, তখন এই অবৈধ ইসরায়েল রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে হাসিনা সরকারের এই পদক্ষেপ নজিরবিহীন।

হাসিনা হচ্ছে সেই ভন্ড শাসক যে ফিলিস্তিন মুসলিমদের জন্য মায়াকান্না করে দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করেছে; সে সাম্প্রতিক মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের নিন্দা করেছে এবং একাধিকবার প্রকাশ্যে ইসরায়েলের সমালোচনা করে বলেছে –‘ইসরায়েল আক্ষরিক অর্থে ফিলিস্তিনে গণহত্যা করছে’। অথচ তার সরকার দখলদার ইহুদীগোষ্ঠীর সাথে সম্পর্ক বজায় রেখে চলেছে। যেখানে জনগণ ফিলিস্তিন মুসলিমদের রক্ষায় দেশের সামরিক বাহিনীকে প্রেরনের দাবী জানাচ্ছে, সেখানে তার সরকার মুজাহিদদের আক্রমণ থেকে ইহুদীগোষ্ঠীকে রক্ষা করতে শান্তিরক্ষা মিশনের অধীনে লেবাননে বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীর ৭৫ সদস্যকে প্রেরণ করেছে। অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার পদক্ষেপ হিসেবে ইতিপূর্বে তার সরকার বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে “ইসরাইল ব্যাতিত” শব্দ দুটি বাতিল করেছে। যখন ইসরায়েলী গণহত্যায় অদ্যাবধি ৩৩,০০০ ফিলিস্তিনি মুসলিম প্রাণ হারিয়েছে, যার মধ্যে ২৫,০০০ শিশু ও নারী, এমন বাস্তবতায় ইসরায়েলের বিমানসমূহ দেশের মাটিতে অবতরণ করতে দিয়ে হাসিনা সরকার তার বিশ্বাসঘাতকতার তীর দিয়ে মুসলিমদের হৃদয়ে আরও রক্তক্ষরণ করলো এবং ইসলাম ও মুসলিমদের সাথে তার বিশ্বাসঘাতকতার শেষ লজ্জাবরণ উন্মোচন করল। “আল্লাহ তাদের ধ্বংস করুন; তারা কিভাবে বিভ্রান্ত হয়?” [সূরা মুনাফিকুনঃ ৪]।

প্রকৃতপক্ষে, হাসিনা সরকার তার শেষ লজ্জাবরণ ত্যাগ করে মার্কিন “দুই রাষ্ট্র নীতি” অনুযায়ী অবৈধ ইসরায়েল রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে উঠে পড়ে লেগেছে। হাসিনা সরকার জনগণের আবেগ অনুভূতি তোয়াক্কা না করে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইসরায়েলী বিমানকে গোপনে দেশের মাটিতে অবতরণ করিয়ে অবৈধ ইহুদি রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার মাইলফলক স্থাপন করেছে এবং ইসলাম ও মুসলিম উম্মাহ্‌’র সাথে বিশ্বাসঘাতকতার পথ বেছে নিয়েছে। এসব বিশ্বাসঘাতক শাসকগোষ্ঠীকে প্রত্যাখ্যান করা মুসলিমদের ঈমানী দায়িত্ব কারণ তারা দুনিয়ার বিনিময়ে পরকালকে বিক্রি করেছে এবং আল্লাহ্’র ক্রোধ অর্জন করেছে। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, “হে মুমিনগণ! আল্লাহ্ যে জাতির প্রতি রাগান্বিত, তোমরা তাদের সাথে বন্ধুত্ব করো না। তারা পরকাল সম্পর্কে নিরাশ হয়ে গেছে যেমন কবরস্থ কাফিররা নিরাশ হয়ে গেছে [আল-মুমতাহিনাঃ ১৩] । 

প্রিয় দেশবাসী, ব্রিটেন সমর্থিত জায়নিস্ট সোসাইটির প্রতিনিধি হারজল (Herzl) ১৮ মে ১৯০১ খ্রিস্টাব্দে খলিফা আব্দুল হামিদের কাছে অর্থের বিনিময়ে ফিলিস্তিন ভূমি ক্রয়ের প্রস্তাব করেছিল। এর জবাবে খলিফা আব্দুল হামিদ উত্তর দিয়েছিলেন, “আমি ফিলিস্তিনের এক ইঞ্চি জমিও ছাড়তে পারব না, কারণ এটা আমার সম্পত্তি নয়, বরং এটি মুসলিম উম্মাহ্‌’র সম্পত্তি। আমার লোকেরা এই ভূমির জন্য লড়াই করেছে এবং তাদের রক্ত দিয়ে এটিকে সিক্ত করেছে। ইহুদিরা তাদের মিলিয়ন মিলিয়ন অর্থ রাখুক, আর যদি একদিন খিলাফত ধ্বংস হয়ে যায়, তারপর তারা বিনামূল্যে ফিলিস্তিন নিয়ে যেতে পারবে, কিন্তু আমি বেঁচে থাকতে তা হবে না…”। মুসলিম উম্মাহ্‌ প্রত্যক্ষ করেছে কীভাবে ১৯২৪ খ্রিস্টাব্দে খিলাফত ধ্বংসের পর পশ্চিমা কাফির উপনিবেশবাদীদের মদদে ইহুদীগোষ্ঠী ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমি দখল করেছে, মুসলিম উম্মাহ্‌’র উপর চাপিয়ে দেয়া দালাল ধর্মনিরপেক্ষ শাসকদের নীরবতায় এই পবিত্র ভূমিকে আঁকড়ে থাকা ফিলিস্তিন মুসলিমদের উপর বর্বরতা চালিয়ে যাচ্ছে এবং মুসলিমদের প্রথম কিবলা আল-আকসা মসজিদকে প্রতিনিয়ত অপবিত্র করছে। তাই ফিলিস্তিনকে মুক্ত করার একমাত্র উপায় খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠার রাজনৈতিক সংগ্রামে হিযবুত তাহ্রীর-এর সাথে ঐক্যবদ্ধ হওয়া এবং আমাদের সন্তানদের মধ্যে যারা সামরিক বাহিনীতে কর্মরত তাদেরকে খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠায় হিযবুত তাহ্রীর-কে নুসরাহ্‌ প্রদানে অনুপ্রাণিত করা, যে খিলাফত রাষ্ট্র সামরিক অভিযানের মাধ্যমে ফিলিস্তিনকে মুক্ত করবে, ইনশা‘আল্লাহ্‌।

﴿فِي بِضْعِ سِنِينَ لِلَّهِ الأَمْرُ مِنْ قَبْلُ وَمِنْ بَعْدُ وَيَوْمَئِذٍ يَفْرَحُ الْمُؤْمِنُونَ*بِنَصْرِ اللَّهِ يَنصُرُ مَنْ يَشَاءُ وَهُوَ الْعَزِيزُ الرَّحِيمُ

“আর সেদিন মুমিনগণ (বিজয়ের) আনন্দ উপভোগ করবে, (সে বিজয় অর্জিত হবে) আল্লাহ্র সাহায্যে। তিনি যাকে ইচ্ছা বিজয় দান করেন এবং তিনি পরাক্রমশালী, বড়ই দয়ালু [সূরা আর-রুমঃ ৪-৫] ।

 

 

হিযবুত তাহ্রীর / উলাই‘য়াহ্‌ বাংলাদেশএর মিডিয়া অফিস