working to establish khilafah

পাঠ্যপুস্তকে শরিফার গল্পের নামে ট্রান্সজেন্ডারিজমের অন্তর্ভুক্তি হাসিনা সরকার কর্তৃক ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে তথাকথিত গণতান্ত্রিক ক্রুসেড প্রকল্পের একটি অংশ

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

بسم الله الرحمن الرحيم

পাঠ্যপুস্তকে শরিফার গল্পের নামে ট্রান্সজেন্ডারিজমের অন্তর্ভুক্তি হাসিনা সরকার কর্তৃক ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে তথাকথিত গণতান্ত্রিক ক্রুসেড প্রকল্পের একটি অংশ

 

গত ২৩ জানুয়ারী ২০২৪, নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে সপ্তম শ্রেণীর ‘ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান’ বইয়ে “শরিফার গল্প” ট্রান্সজেন্ডারিজম (বইয়ে উল্লেখিত ৩য় লিঙ্গ) অন্তর্ভুক্তি করার প্রতিবাদ করায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের চাকুরীচ্যুতির ঘটনার মাধ্যমে শেখ হাসিনা সরকার কর্তৃক মুসলিম উম্মাহ্‌’র আগামীর প্রজন্মের ইসলামী আক্বীদা ও মূল্যবোধকে ধ্বংস করার ধারাবাহিক ষড়যন্ত্র আবারও সামনে চলে এসেছে। যদিও শিক্ষামন্ত্রী জনরোষ থেকে রক্ষা পেতে আলোচ্য পাঠ্যপুস্তকের বিষয়টিকে হিজরা জনগোষ্ঠীর সাথে তুলনা করে বিষয়টিকে লোকানোর অপচেষ্টা করেছে। এই মুসলিম ভূখন্ডে কাফির উপনিবেশবাদী পশ্চিমাদের “লিবারেল ভ্যালু” প্রতিষ্ঠায় এই সরকারের ষড়যন্ত্র শুধুমাত্র পাঠ্যপুস্তকের মধ্যে সীমাবদ্ধ নাই। ইতিমধ্যে, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়  এডিবি (এশিয়ান ডেভেলোপমেন্ট ব্যাংক) এর সহায়তায় ট্রান্সজেন্ডার অধিকার সুরক্ষা আইন২০২৩ নামক একটি আইনের খসড়া প্রণয়ন করেছে, যা ২০২৪ সালের শেষের দিকে আইন হিসাবে চূড়ান্ত হবার অপেক্ষায় আছে। নির্বাচনের পূর্বে পররাষ্ট্র মন্ত্রী আব্দুল মোমেন জাতিসংঘের মহাসচিবের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে ইসলামের আক্বীদার বিরুদ্ধে হাসিনা সরকারের গণতান্ত্রিক ক্রুসেডের শপথের বিষয়টি স্পষ্ট হয়। সেই চিঠিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ‘গণতন্ত্রের একজন ক্রুসেডার’ হিসেবে উল্লেখ করেন (The Daily Star, বাংলা, ০৮ ডিসেম্বর, ২০২৩)। হাসিনা সরকার সেক্যুলার ক্রুসেড বাস্তবায়নে কতটা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ তা রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ স্তরের প্রতিনিধি প্রধানমন্ত্রীর সাথে দেশের প্রথম ট্রান্সজেন্ডার (কৃত্রিমভাবে লিঙ্গ পরিবর্তকারী) ব্যক্তির সাক্ষাতের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়। (প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ট্রান্সজেন্ডার হো চি মিনের সাক্ষাৎ, সময় নিউজ, আগস্ট ১০,  ২০২৩)।

ট্রান্সজেন্ডারিজম হচ্ছে তথাকথিত LGBTQ কমিউনিটির একটি অংশ যা ১৯৯০-এর দশক থেকে এই আদ্যক্ষরটি পূর্বতন “গে কমিউনিটি”-র সংজ্ঞাবাচক নাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। সামগ্রিকভাবে “এলজিবিটি” বলতে বোঝায় “লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল ও ট্রান্সজেন্ডার” অর্থাৎ, নারী ও পুরুষ সমকামী, উভকামী ও রূপান্তরকামী যা পশ্চিমা স্রষ্টা বিবর্জিত ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শের ব্যক্তি-স্বাধীনতা ও লিঙ্গ-সমতা নীতির উপর প্রতিষ্ঠিত। ধর্মনিরপেক্ষ বিএনপিগোষ্ঠীও প্রতারণামূলকভাবে তাদের রাষ্ট্র দর্শনে “RAINBOW NATION” নামে পশ্চিমাদের এই মূল্যবোধ গ্রহন করেছে। কারণ “RAINBOW” হলো LGBTQএর প্রতীক।  অথচ মুসলিমগণ জানেন, লুত (আঃ)-এর সময় আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা সেই গোষ্ঠীকে ধ্বংস করেছিলেন যারা লুত (আঃ)-এর সতর্কতা উপেক্ষা করে সমকামীতায় লিপ্ত ছিল। আপনারা প্রত্যক্ষ করছেন, পশ্চিমাদের সমাজব্যস্থা ও পরিবার ব্যবস্থা ভঙ্গুর এবং এসব ভ্রান্ত ধারণা ও অভ্যাসের দুর্যোগে আক্রান্ত। প্রকৃতপক্ষে, পশ্চিমাদের দালাল আওয়ামী-বিএনপি ধর্মনিরপেক্ষ শাসকগোষ্ঠী ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের যুদ্ধ পরিচালনায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। যদিও এই বিশ্বাসঘাতক শাসকগোষ্ঠী ইসলাম ও মুসলিমদের আবেগকে প্রতারণামূলকভাবে ব্যবহার করে ক্ষমতায় আরোহণ করে আর ক্ষমতায় গিয়ে সমাজ ও রাষ্ট্রে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদকে চাপিয়ে দেয়।

প্রিয় দেশবাসী, আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন,

*كُنْتُمْ خَيْرَ أُمَّةٍ أُخْرِجَتْ لِلنَّاسِ تَأْمُرُونَ بِالْمَعْرُوفِ وَتَنْهَوْنَ عَنْ الْمُنكَرِ وَتُؤْمِنُونَ بِاللَّهِ وَلَوْ آمَنَ أَهْلُ الْكِتَابِ لَكَانَ خَيْرًا لَهُمْ مِنْهُمْ الْمُؤْمِنُونَ وَأَكْثَرُهُمْ الْفَاسِقُونَ*

তোমরাই সর্বোত্তম উম্মত, মানবজাতির কল্যাণের জন্য তোমাদের উদ্ভব ঘটানো হয়েছে, তোমরা সৎকাজে আদেশ করবে অসৎকাজে নিষেধ করবে এবং আল্লাহ্‌’র প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে [সূরা আলি-ইমরানঃ ১১০]। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অসিফ মাহতাব হলেন এই মুসলিম উম্মাহ্‌’র সাহসী সন্তান যিনি হাসিনা সরকারের গণতান্ত্রিক ক্রুসেডকে উন্মোচিত করতে তার অবস্থানকে কাজে লাগিয়েছেন এবং সকল মুসলিমদের কাছে হিরো হিসেবে সমাদ্রিত হয়েছেন। এই মুসলিম উম্মাহ্‌ কখনও জেনে-বুঝে কুফরকে মেনে নেয়না এটা তার একটি জ্বলন্ত প্রমাণ; রাসূলুল্লাহ্‌ ﷺ বলেছেন, “আমার উম্মতের মধ্যে এখনও খায়ের (ভালো) আছে এবং কিয়ামত পর্যন্ত তা বিদ্যমান থাকবে। হাসিনার গণতান্ত্রিক ক্রুসেডকে প্রতিহত করতে হলে সমাজ এবং রাষ্ট্র থেকে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের বিষবৃক্ষকে সমূলে উৎপাটন করতে হবে এবং ইসলামী ব্যবস্থা খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। এই লক্ষ্যে সকল মুসলিমদেরকে খিলাফতে রাশিদাহ্‌ পুনঃপ্রতিষ্ঠায় হিযবুত তাহ্‌রীর-এর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধভাবে বুদ্ধিবৃত্তিক ও রাজনৈতিক সংগ্রামে শামিল হতে হবে।

হে নিষ্ঠাবান সামরিক অফিসারগণ, আপনারা প্রত্যক্ষ করেছেন, সমাজের প্রাণ ছাত্র-শিক্ষকগণ কীভাবে ইসলামের পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। শিক্ষক মাহতাব কি আপনাদের জন্য অনুপ্রেরণা নয় যিনি হাসিনা সরকারের তথাকথিত গণতান্ত্রিক ক্রুসেডকে চ্যালেঞ্জ করেছেন এবং তার অবস্থানকে কাজে লাগিয়েছেন? আপনাদের রয়েছে সামরিক সক্ষমতা যার মাধ্যমে আপনারা হাসিনাসহ এই ধর্মনিরপেক্ষ শাসনব্যবস্থাকে সমূলে উৎপাটন করতে পারেন। তাই হিযবুত তাহ্‌রীর-এর পক্ষ থেকে আপনাদের প্রতি আমাদের আহ্বান, আপনারা হাসিনা সরকারকে অপসারণ করে খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠায় হিযবুত তাহ্‌রীর-কে নুসরাহ্‌ (ক্ষমতা) প্রদান করতে এগিয়ে আসুন। যার মাধ্যমে ইসলামের বিরুদ্ধে দালাল গোষ্ঠীর সহযোগীতায় পশ্চিমাদের ক্রুসেড চিরতরে বন্ধ হবে এবং ইসলাম বিজয়ী দ্বীন হিসেবে সমগ্র মানবজাতিকে মানবরচিত ভ্রান্ত আদর্শ ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের অন্ধকার থেকে আলোতে নিয়ে আসবে।

*الر كِتَابٌ أَنزَلْنَاهُ إِلَيْكَ لِتُخْرِجَ النَّاسَ مِنْ الظُّلُمَاتِ إِلَى النُّورِ بِإِذْنِ رَبِّهِمْ إِلَى صِرَاطِ الْعَزِيزِ الْحَمِيدِ*

আলিফ-লাম-রা; এটি একটি কিতাব, যা আমি আপনার প্রতি নাযিল করেছি-যাতে আপনি মানবজাতিকে অন্ধকার থেকে আলোর দিকে বের করে আনেন-পরাক্রমশালী, সর্বপ্রশংসার যোগ্য পালনকর্তার নির্দেশে তাঁরই পথের দিকে” [সূরা ইব্রাহীমঃ ১]।

 

হিযবুত তাহ্রীর / উলাই‘য়াহ্‌ বাংলাদেশএর মিডিয়া অফিস