working to establish khilafah

ডোনাল্ড লু-এর বাংলাদেশ সফর গণতন্ত্রের প্রকৃত চেহারা এবং উপনিবেশবাদীদের প্রতি ধর্মনিরপেক্ষ শাসকগোষ্ঠীর দাসমনোবৃত্তির ধারাকে উন্মোচন করেছে

 

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

بسم الله الرحمن الرحيم

 ডোনাল্ড লু-এর বাংলাদেশ সফর গণতন্ত্রের প্রকৃত চেহারা এবং উপনিবেশবাদীদের প্রতি ধর্মনিরপেক্ষ শাসকগোষ্ঠীর দাসমনোবৃত্তির ধারাকে উন্মোচন করেছে

যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক সিনিয়র ডিরেক্টর রিয়ার এডমিরাল আইলিন লাউব্যাকার-এর বাংলাদেশ সফরের এক সপ্তাহের মধ্যেই উচ্চ-পর্যায়ের আরেকজন মার্কিন কর্মকর্তা – দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়া বিষয়ক সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোনাল্ড লু, ১৪ই জানুয়ারী থেকে শুরু করে ১৫ই জানুয়ারী পর্যন্ত দুই দিনের সফরে বাংলাদেশে আসেন। এখানকার উচ্চপদস্থ সরকারী কর্মকর্তা ও ‘সুশীল সমাজের’ প্রতিনিধিদের সাথে লু অসংখ্য বৈঠক করেন এবং আসন্ন নির্বাচন, মানবাধিকার, গণতন্ত্র, নিরাপত্তা এবং অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক সমস্যাসহ বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করেন। তবে এগুলোর মধ্যে বিশেষত প্রাধান্য পায় ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজি (IPS) এবং কুখ্যাত মার্কিন প্রতিরক্ষা চুক্তিসমূহ – জেনারেল সিকিউরিটি অব মিলিটারি ইনফরমেশন এগ্রিমেন্ট (GSOMIA) এবং এক্যুইজিশন ক্রস-সার্ভিসিং এগ্রিমেন্ট (ACSA), কারণ বঙ্গোপসাগরে মার্কিনীদের ভূ-কৌশলগত স্বার্থ ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে (আই.পি.এস (IPS) এবং অন্যান্য বিষয়াদি নিয়ে আজ পদ্মায় আলোচনায় বসবেন মোমেন এবং লু, দ্য বাংলাদেশ অবজারভার, ১৫ই জানুয়ারী, ২০২৩)। এবার লু’র সফরকে ঘিরে আমেরিকার প্রতি রাজনৈতিক দাসত্বের নির্লজ্জ প্রদর্শনী দেখা গেছে। সরকারের অত্যাচারের শিকার ধর্মনিরপেক্ষ বিরোধী রাজনৈতিক দলসমূহ তাদের ‘মার্কিন ত্রাতার’ আগমনে বিমোহিত হয়ে পড়ে। তারা এটা ভেবে উৎফুল্ল ছিল যে, হাসিনা সরকারের প্রতি লু’র কঠিন বার্তা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন নিশ্চিত করবে, কারণ ক্ষমতায় বিদ্যমান থেকে আমেরিকার স্বার্থ রক্ষায় তারা নিজেদেরকে অধিকতর যোগ্য মনে করে। অন্যদিকে, দালাল হাসিনা সরকারও আমেরিকাকে খুশি করতে প্রস্তুতিপর্ব সম্পন্ন করে রেখেছিল। ক্ষমতার মসনদ টিকিয়ে রাখতে এই সরকার লু’র সফরের আগে তাৎক্ষণিকভাবে ঘোষণা করে যে, ইউ.এস ইন্দো-প্যাসিফিক ফোরামে যোগ দিতে বাংলাদেশের কোনো আপত্তি নেই (দৈনিক যুগান্তর, ১৪ই জানুয়ারি, ২০২৩)। তাছাড়া, জঙ্গিবাদ ও ইসলামী উগ্রবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের অজুহাতে আমেরিকা ইসলামের বিরুদ্ধে যে যুদ্ধ পরিচালনা করছে তাতে হাসিনা সরকার কতটা সফলভাবে নিজেদের ভূমিকা পালন করছে তা লু-কে অবহিত করা নিয়ে সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী একজন আজ্ঞাবহ দাসের মতো গর্ব অনুভব করছিলেন!

হে দেশবাসী, আপনারা আজ যা প্রত্যক্ষ করছেন এটাই গণতন্ত্রের আসল চেহারা, যা আমেরিকা মুসলিমভূমিসমূহে ফেরি করে বেড়ায়। পশ্চিমা কাফিরদের অধীনস্ত এদেশের ধর্মনিরপেক্ষ শাসক ও রাজনীতিবিদেরা এই গণতন্ত্রেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ। এই সেই তথাকথিত ‘স্বাধীনতা’ যা আমেরিকা অন্যান্য ‘স্বাধীন’ দেশসমূহে রপ্তানী করে, যেখানে সস্তা ও আজ্ঞাবহ রাজনীতিবিদগণ তাদের প্রভুর (আমেরিকা) হস্তক্ষেপের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে। আর ক্ষমতায় টিকে থাকতে শাসকেরা আমেরিকার দাবীর কাছে হার মানতে বাধ্য হয়। হে দেশবাসী, এসব ধর্মনিরপেক্ষ শাসক ও রাজনীতিবিদেরা ক্ষমতার জন্য অন্তহীন প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়ে উম্মাহ্’র সার্বভৌমত্ব ও সম্পদসমূহ কাফির-সাম্রাজ্যবাদীদের নিকট বিকিয়ে দিচ্ছে। ডোনাল্ড লু’র সফরকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট রাজনৈতিক পরিস্থিতি গণতন্ত্রের প্রকৃত স্বরূপকে উন্মোচিত করেছে, যা মুলতঃ আইপিএস (IPS), আকসা (ACSA) ও জিসোমিয়া (GSOMIA)-এর মোড়কে আমেরিকার আধিপত্য ছাড়া আর কিছুই নয়। আর, ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের উদ্দেশ্যে সাম্রাজ্যবাদী আমেরিকা বাংলাদেশকে চাপে ফেলতে ‘মানবাধিকার’ ও ‘গণতন্ত্র’ রক্ষার নামে বিভিন্ন চাপপ্রয়োগ পদ্ধতি প্রয়োগ করছে। আমেরিকার গণতন্ত্রে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের নিপীড়ন ও দুর্দশা থেকে মুসলিমদের মুক্তির কোন স্থান নেই। মহান এই উম্মাহ্’র জন্য এধরনের দালাল ও বিশ্বাসঘাতক ধর্মনিরপেক্ষ শাসকদের অধীনে শাসিত হওয়া কখনোই কাম্য হতে পারে না। অতএব, মুসলিমদের অবশ্যই নবুয়্যতের আদলে প্রতিশ্রুত খিলাফতে রাশিদাহ্’র অধীনে নতুন একটি বিশ্বব্যবস্থার জন্য সংগ্রাম করতে হবে, যা তাদেরকে পশ্চিমা সভ্যতার অন্ধকার থেকে মুক্ত করে আলোর দিকে নিয়ে যাবে। এবং, আল্লাহ্ আজ্জা ওয়া জ্বাল পবিত্র কুর‘আন-এ এই প্রতিশ্রুতিই দিয়েছেন:

*وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا مِنكُمْ وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَيَسْتَخْلِفَنَّهُمْ فِي الْأَرْضِ كَمَا اسْتَخْلَفَ الَّذِينَ مِن قَبْلِهِمْ وَلَيُمَكِّنَنَّ لَهُمْ دِينَهُمُ الَّذِي ارْتَضَىٰ لَهُمْ وَلَيُبَدِّلَنَّهُم مِّن بَعْدِ خَوْفِهِمْ أَمْنًا ۚ يَعْبُدُونَنِي لَا يُشْرِكُونَ بِي شَيْئًا ۚ وَمَن كَفَرَ بَعْدَ ذَٰلِكَ فَأُولَٰئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ*

“তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে, আল্লাহ্ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে তিনি অবশ্যই তাদেরকে পৃথিবীতে খিলাফত (শাসনকর্তৃত্ব) দান করবেন। যেমন তিনি শাসনকর্তৃত্ব দান করেছেন তাদের পূর্ববতীদেরকে; এবং তিনি অবশ্যই তাদের জন্য শক্তিশালী ও সুপ্রতিষ্ঠিত করবেন তাদের দ্বীনকে, যা তিনি তাদের জন্য মনোনীত করেছেন; এবং অবশ্যই তাদের ভয়কে নিরাপত্তায় পরিবর্তিত করবেন – তবে শর্ত হচ্ছে যে তারা আমার ইবাদত করবে এবং আমার সাথে কাউকে শরীক করবে না। কিন্তু এই প্রতিশ্রুতির পর যারা কুফরী করবে, তারাই অবাধ্য।” [সূরা আন-নূর: ৫৫]

হিযবুত তাহ্‌রীর / উলাই’য়াহ্ বাংলাদেশ-এর মিডিয়া কার্যালয়