working to establish khilafah

Weekly ISLAMIC VIEWPOINT 73

Weekly

ISLAMIC VIEWPOINT

….সপ্তাহের সংবাদ পর্যালোচনা

৭৩ তম সংখ্যা ২০ ডিসেম্বর, ২০২২

 

এই সংখ্যায় থাকছে:

 

  • আলোচনার কেন্দ্রে মার্কিন রাষ্ট্রদূত
  • “আইএমএফ যে ঋণ দেয়, তা চারিত্রিক সনদের মতোঃ মসিউর রহমান”
  • তল্লাশির সময় পুলিশকে মোবাইল দেখাইতে হইছে, এটা কেমন আচরণ?”
  • “যুক্তরাষ্ট্র নিলো ২৪ রোহিঙ্গা
  • দূষণ কমাতে বাংলাদেশকে ২৫ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক
  • আর কত সহ্য করব?’: স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করলেন সারিকা”
  • বিশ্বকাপের উন্মাদনায় এক মাসে ১২ মৃত্যু

 

 

  

আলোচনার কেন্দ্রে মার্কিন রাষ্ট্রদূত

খবরঃ

ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার ডি হাসকে নিয়ে বাংলাদেশে এখন তুমুল আলোচনা৷ রাজনৈতিক অঙ্গনেও আলোচনা চলছে৷ আর এই আলোচনার মূলে আছে নিখোঁজ এক বিএনপি নেতার বোনের বাসায় রাষ্ট্রদূতের গমন৷ নিখোঁজদের স্বজনদের সংগঠন “মায়ের ডাকের” সদস্যদের সঙ্গে কথা বলতে বুধবার সকালে ঢাকার শাহীনবাগের একটি বাসায় যান৷… তিনি যখন সকালে ওই বাসায়  যান তখন সেখানে “মায়ের কান্না” নামে আরেকটি সংগঠনের সদস্যরাও ঐ বাসার বাইরে অবস্থান করছিলেন তাকে স্মারক লিপি দেয়ার জন্য৷ মায়ের কান্না হলো ১৯৭৭ সালের ২ অক্টোবর বিদ্রোহ দমনের নামে বিমানবাহিনীর সহস্রাধিক সদস্য গুমের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সদস্যদের সংগঠন৷ শাহীনবাগের বাসায় মার্কিন রাষ্ট্রদূতের অবস্থান এবং বের হওয়ার পর স্মারকলিপি দেয়া নিয়ে তখন ওই এলাকায় অস্বাভাবিক ও ধ্বস্তাধস্তির মত পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়৷ রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তা কর্মীরা তাকে সেখান থেকে দ্রুত বের করে নিয়ে যান৷… বের হয়ে যাওয়ার পরে মার্কিন রাষ্ট্রদূত জরুরি ভিত্তিতে পরাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে দেখা করে তিনি তার নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগের কথা জানান৷ (https://www.dw.com/bn/আলোচনার-কেন্দ্রে-মার্কিন-রাষ্ট্রদূত)

মন্তব্যঃ

মার্কিন রাষ্ট্রদূতকে নিয়ে বাংলাদেশের শাসকগোষ্ঠীর টানাহেঁচড়া প্রমাণ করে যে, তারা সাংঘাতিকভাবে রাজনৈতিক দৈন্যদশায় ভুগছেন। আওয়ামী ও বিএনপি উভয়গোষ্ঠীই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তাদের অভিভাবক হিসেবে মেনে নিয়েছে। এই অভিভাবক কেন আমার কথা না শুনে আমার প্রতিপক্ষের কথা শুনবে? কেন আমার অভিযোগ আমলে নিয়ে বিচার না করে ওদের অভিযোগকে গুরুত্ব দিচ্ছে? এসব মান অভিমানের খেলায় এদেশের শাসকগোষ্ঠী আজ বিভক্ত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই খেলাটা খুব উপভোগ করছে। একবার Sanction দিয়ে একদলের মনরক্ষা করে, আবার না দিয়ে (১০ডিসেম্বর, ২০২২ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে প্রত্যাশিত আরেক দফা স্যাংশন না আশায়) আরেকদলের মন রক্ষা করে। কি আর করবে? দুটো গোষ্ঠীকেই তো হাতে রাখতে হয়। দুটো গোষ্ঠীই তার অনুগত দাস। তাদের কাছ থেকে অনেক কিছু নেবার আছে। বিশেষত বর্তমান বিশ্বের ভু-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এখানকার কোনো এজেন্টকেই আমেরিকা হাত ছাড়া করতে চায় না।

মানবাধিকার আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে এমন একটা ডিসকোর্স (বয়ান) যার ভিত্তিতে সহজেই একটা স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করা যায়। এই ডিসকোর্স পশ্চিমা বিশ্বেরই তৈরি, আমাদের দালাল শাসকগোষ্ঠী তাদের সেই বয়ানকে বেদবাক্য তুল্য মেনে নিয়েছে। আর তাই স্বাভাবিকভাবে তাদের বুদ্ধিভিত্তিক নেতৃত্ব চলে গেছে পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী রাষ্ট্রের কাছে। পশ্চিমাদের প্রণীত মানবাধিকারই যেন তাদের সুশাসন ও ন্যায়পরায়ণতার মূল মাপকাঠি। বিষয়টা এমন যে আমেরিকা বলেছে আমাদের মানবাধিকার পরিস্থিতি ঠিক আছে তাহলে বর্তমান শাসকের শাসন ঠিক আছে অথবা আমেরিকা বলেছে বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি ঠিক নাই তাহলে বর্তমান শাসক তার বৈধতা হারিয়েছে। আমাদের দুর্ভাগ্য যে আওয়ামী-বিএনপি’র মত নতজানু রাজনীতিবিদরা এদেশের নেতৃত্ব দিচ্ছে; তারা আমাদেরকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মত একটা ইসলামবিদ্বেষী ও স্বার্থপর পুঁজিবাদী রাষ্ট্রের পকেটে তুলে দিচ্ছে। আমেরিকা তার বর্তমান বিশ্ব নেতৃত্বের জন্য ইসলামকে একমাত্র হুমকি মনে করে, আর তাই ইসলামী জীবনব্যবস্থার উত্থান ঠেকাতে প্রকাশ্যে যুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে রেখেছে। আওয়ামী-বিএনপি গোষ্ঠীর সে দিকে কোন ভ্রক্ষেপ নেই, তারা আছে তাদের ক্ষমতার মসনদ নিয়ে কাড়াকাড়ির খেলায়।

স্বার্থপর রাজনৈতিক দলাদলি এদেশের জনগণকে বিভক্ত করেছে, যার ফায়দা নিচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মত পশ্চিমা সাম্রাজ্যবাদী পরাশক্তি। তথাকথিত গণতান্ত্রিক নেতারা তাদের বিবাদ নিরসনের জন্য পশ্চিমাদের কাছে সালিশ নিয়ে গেছেন। অথচ আমাদের উচিৎ ইসলামের কাছে ফিরে যাওয়া এবং রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ)-কে সালিশকারী হিসেবে মেনে নেয়া। ঠিক যেভাবে মদীনার আউস ও খাজরাজ গোত্র গিয়েছিল। যাদের মধ্যে শুধু যুদ্ধ ও শত্রুতাই ছিলনা বরং তারা একের অপরের রক্ত ঝরানোতে আনন্দ পেত। ইসলামের মহান তওহীদ “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্‌ মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ্‌” তাদেরকে একত্রিত করেছিল। তারা খিলাফত ব্যবস্থা কায়েমের মাধ্যমে নিজেদের মধ্যকার বহু বছরের দ্বন্দ্ব-সংঘাতের সমাপ্তি ঘটিয়ে শক্তিশালী রাষ্ট্রের সূচনা করেছিল। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা পরিষ্কার ভাষায় আমাদেরকে সতর্ক করেন, “কিন্তু না, আপনার প্রতিপালকের শপথ, তারা ততক্ষণ পর্যন্ত পূর্ণাঙ্গ মু’মিন হতে পারবেনা, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা তাদের যাবতীয় মতবিরোধের ফয়সালায় আপনাকে বিচারক হিসাবে মেনে নেয়, এবং কোনরূপ সর্ঙ্কীর্ণতা ও দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছাড়াই সন্তুষ্টচিত্তে আপনার সিদ্ধান্ত মেনে নেয়(সুরা নিসা, আয়াত ৬৫)।

-আবু যায়েদ

 

 

 

“আইএমএফ যে ঋণ দেয়, তা চারিত্রিক সনদের মতোঃ মসিউর রহমান”

খবরঃ

প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেছেন, আইএমএফ যে ঋণ দেয়, তা চারিত্রিক সনদের মতো। এ সনদ পেলে সবাই আমাদের ঋণ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করবে। উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান বলেন, আগে যেমন কোনো গেজেটেড কর্মকর্তার কাছ থেকে চারিত্রিক সনদ নিতে হতো। না চিনলেও তিনি বলে দিতেন তার চরিত্র ভালো। সে রকম আইএমএফ বাজেট সহায়তা হিসেবে ঋণ দিলে সেটি কোনো দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা সুষ্ঠু হওয়া বোঝায়। এটি হলে অন্য দেশ বা সংস্থা ঋণ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করবে সহজেই। সেই সঙ্গে বিনিয়োগও আসবে। (www.dailyinqilab.com/article/541295)

মন্তব্যঃ

দেশকে পরনির্ভরশীল করে বিদেশী ঋণের প্রতি শাসকশ্রেণীর এই ইতিবাচক মনোভাব নিঃসন্দেহে দেশের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরাধীনতাকে আরো তীব্র করে তুলবে। প্রশ্ন হচ্ছে, শাসকশ্রেণী কি এসকল সাম্রাজ্যবাদী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঋণ নেয়ার বিপদ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন? উত্তর হচ্ছে, হ্যাঁ, অবশ্যই তারা এই বিষয় সম্পর্কে সচেতন। কিন্তু নিজেদের ক্ষমতাকে টিকিয়ে রাখা এবং আর্থিক লাভের জন্যই মূলত এরা এসকল ঋণ নিয়ে থাকে। আইএমএফ কিংবা বিশ্বব্যাংকের মত প্রতিষ্ঠানগুলো মূলত বৈশ্বিক সুদি ব্যবসায়ীর মত। যারা আবার অতিরিক্ত কাজ হিসেবে স্বঘোষিত অর্থমন্ত্রী হিসেবে ঋণ গ্রহীতা দেশের অর্থনৈতিক খাতের উপর নজরদারীও রাখে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে একদিকে নিজেদের দেয়া ঋণের অর্থ সুদসমেত ফিরে পাওয়ার নিশ্চয়তা বিধান করা এবং অপরদিকে ঋণগ্রহীতা দেশকে উৎপাদনবিমুখ করে আমদানিনির্ভর রাষ্ট্রে পরিণত করে ঋণের উপর নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি করা। আর বাংলাদেশের মত দেশগুলোর শাসকরা সাম্রাজ্যবাদী প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে তাদের সাম্রাজ্যবাদী প্রভুদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের মাধ্যমে নিজেদের দেশকে সাম্রাজ্যবাদীদের হাতে তুলে দেয়। তখন দেশের তেল-গ্যাস সহ অন্যান্য সম্পদের উপর সাম্রাজ্যবাদীদের আধিপত্য বিস্তার লাভ করে। অপরদিকে ক্ষমতাসীনরা এসকল ঋণের টাকা বিভিন্ন প্রজেক্টে ব্যয়ের নামে লুটপাটের মাধ্যমে নিজেদের পকেট ভারী করে তোলে।

তবে, নির্মম বাস্তবতা হচ্ছে দিনশেষে জনগণ এই ঋণ থেকে কিছুই পায় না শুধুমাত্র মাথাপিছু ঋণ বৃদ্ধি হওয়া ও সুদ প্রদান ছাড়া। যেমন, ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সরকারকে বিদেশী ঋণ পরিশোধ করতে হয়েছিল ১১২ কোটি ডলার। পাঁচ বছর পর বিদেশী ঋণ পরিশোধের এ চাপ দ্বিগুণ হয়েছে। চলতি অর্থবছরে ঋণ পরিশোধে সরকারকে সুদসহ ২৭৭ কোটি ডলার পরিশোধ করতে হবে। আর দুই অর্থবছর পর এর পরিমাণ ৪০২ কোটি বা ৪ বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে। তবে, বিদেশী উৎস থেকে নেয়া সরকারি ঋণের পাশাপাশি এ সময়ে সরকারি কোম্পানি ও বেসরকারি খাতের নেয়া ঋণও সুদসহ পরিশোধ করতে হবে। সব মিলিয়ে আগামী অর্থবছর থেকে বিদেশী ঋণ পরিশোধের পরিমাণ ১০-১২ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকতে পারে। আর এসবই পরিশোধ করা হবে জনগণের কাছ থেকে গৃহিত ট্যাক্স দ্বারা।

অপরদিকে খিলাফত ব্যবস্থায় রাষ্ট্র স্বনির্ভর অর্থনীতির হওয়ায় বিদেশী ঋণ অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়বে এবং এসকল সাম্রাজ্যবাদী প্রতিষ্ঠানের সাথে সবরকমের আর্থিক লেনদেন বন্ধ করে দেয়া হবে। ফলে তারা না পারবে আমাদের অর্থনীতির উপর ছড়ি ঘোড়াতে আর না পারবে আমাদের নিজস্ব সিদ্ধান্তে প্রভাব বিস্তার করতে। খিলাফত রাষ্ট্র জ্বালানীকে গণমালিকানাধীন সম্পত্তিকে হিসেবে ঘোষনা করে তা বিনামূল্যে জনগণকে সরবরাহের পাশাপাশি কৃষি ও শিল্পের উন্নতির জন্যে এগুলোকে ব্যবহার করবে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই কৃষি ও শিল্পের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। ফলে আমদানিনির্ভর রাষ্ট্র থেকে খুব সহজেই রপ্তানিমুখী রাষ্ট্রে পরিণত হওয়া যাবে। অপরদিকে খিলাফত রাষ্ট্রের শাসকরা ড. মসিউর রহমানদের মত সাম্রাজ্যবাদীদের পদানত গোলাম হবেন না। বরং তারা নিজেদের পলিসি বাস্তবায়ন করবেন ইসলামী হুকুম অনুযায়ী ও জনগণের কল্যাণ অনুযায়ী। যেমন, খলীফা দ্বিতীয় আব্দুল হামিদ যখন ১৯০০ সালে হেজাজ রেলওয়ের মত ব্যয়বহুল প্রজেক্টে হাত দেন তখনো তিনি বিদেশী শক্তির কাছ থেকে ঋণ নেননি যদিও তখন খিলাফত রাষ্ট্রের অবস্থা ছিল খুবই করুণ।

-মো. হাফিজুর রহমান

 

 

 

তল্লাশির সময় পুলিশকে মোবাইল দেখাইতে হইছে, এটা কেমন আচরণ?”

খবরঃ

ঘড়ির কাঁটায় সময় শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টা। রাজধানী উত্তরার কামারপাড়া মোড়ে পুলিশের তল্লাশিচৌকি। সড়কের মধ্যে এবং পাশে দাঁড়িয়ে আছেন ২৫ থেকে ৩০ জন পুলিশ সদস্য। সবাই অস্ত্রসজ্জিত। যাত্রীবাহী বাস বা মোটরসাইকেল আসতে দেখলেই দূর থেকে ‘লেজার রশ্মি’ ফেলে গতিরোধ করছেন তারা। এরপর গাড়ি থামাতেই চারদিক ঘিরে ধরে শুরু করছেন তল্লাশি।… একপর্যায়ে শুরু করেন মুঠোফোন তল্লাশি। ঢাকার প্রবেশমুখে পুলিশের এমন আচরণে হতবাক সবাই। বিরক্তি বা হতাশা থাকলেও তল্লাশির সময়টুকু বসে রইলেন চুপ করে।… (https://www.prothomalo.com/bangladesh/district/pz25nyhyns)

মন্তব্যঃ

দুই গণতন্ত্র রক্ষকের গণতন্ত্র সমুন্নত রাখার প্রচেষ্টায় আজ মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা হুমকির সম্মুখীন। একপক্ষ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চায়, অন্যপ্ক্ষ গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে চায়। এই লক্ষ্যে সরকার নিজেদের বানানোর সংবিধানের ৪৩ নং অনুচ্ছেদ (যেখানে নাগরিকের ব্যক্তিগত গোপনীয় রক্ষার অধিকারের কথা বলা হয়েছে) নিজেরাই আবার লংঘন করে। সেটাও নাকি আবার নাগরিকের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য! আরো মজার বিষয় হল পুলিশের পাশাপাশি ছাত্রলীগ ও এই মহান(?) দায়িত্ব হাতে নিয়েছে। তারাও ফোন চেক করে ১০-১২ জনকে মারধর করে পুলিশে দিয়েছে। এর আগেও আমরা দেখেছি নাগরিকদের ব্যক্তিগত ফোনে আড়ি পেতে সেগুলো আবার প্রয়োজনে ফাঁস করে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন স্বার্থন্বেষী গোষ্ঠীর স্বার্থ হাসিল করতে। এবং এই লক্ষ্যে ইসরাইলি প্রতিষ্ঠান ‘সেলেব্রাইট’ থেকে আড়ি পাতার যন্ত্রও কিনেছিল সরকার (https://www.dw.com/bn/বাংলাদেশে-ফোন-হ্যাকিংয়ের-যন্ত্র-বিক্রি-বন্ধ-করেছে- ইসরায়েলি-প্রতিষ্ঠান/a-58894351)। এভাবে তারা একের পর এক নিজেদের স্বার্থে নাগরিকের ব্যক্তিগত গোপনীয়তা রক্ষার অধিকারকে লংঘন করে যাচ্ছে। প্রকৃতপক্ষে এটাই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য (!)। গণতন্ত্রের বাস্তবিক রূপ হল ক্ষমতাসীনদের সার্বভৌম ক্ষমতা উপভোগ করা। এখানে মানুষ শুধুমাত্র নির্বাচনের মাধ্যমে তাদের সার্বভৌম প্রভুদেরকে নির্বাচন করে যাদের কাজ হলো নিজেদের খেয়াল খুশি অনুযায়ী জনগণের অধিকার নির্ধারণ করা এবং সেই অনুযায়ী জনগণকে শাসন করা। কারণ একবার ক্ষমতায় বসে গেলে শাসক যা খুশি তাই করুক না কেন জনগণের আর কিছুই করার থাকেনা। একারণে গণতন্ত্রের প্রবক্তারাও এই ব্যবস্থার উপর হতাশ। বিখ্যাত ডেমোক্রেট রবার্ট সি বার্ড, তার দেশ আমেরিকার গণতন্ত্র সম্পর্কে বলেছেন, “ধনীদের প্রশাসন, ধনীদের দ্বারা, ধনীদের জন্য… আজ আমি আমার দেশের জন্য কাঁদছি”। তাই জনগণের উপর প্রভুত্ব করার এই লোভ কি সহজে পরিত্যাগ করা যায়? যেকোন মূল্যে ক্ষমতার টিকিয়ে রাখতে তাই তাদের এই সকল প্রচেষ্টা। আর অন্যদিকে অন্যপক্ষ যেকোন মূল্যে এই ক্ষমতা নামক সোনার হরিণ পেতে চায়। ফলশ্রুতিতে সাধারণ মানুষের উপর এই আপতিত দুর্ভোগ।

অন্যদিকে ইসলামী ব্যবস্থায় মানুষের অধিকার আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা কর্তৃক সুনির্দিষ্ট। এখানে কোন শাসক বা খলিফা যতই ক্ষমতাবান হউন না কেন তার লঙ্ঘন করার কোন সুযোগ নেই। একবার খলিফা ওমর (রা.) নারীদের বিয়ের দেনমোহর নির্ধারণ করে দিতে চেয়েছিলেন, তখন এক নারী কর্তৃক সূরা নিসার চার নাম্বার আয়াত স্মরণ করিয়ে দিলে (“…আর তোমরা নারীদেরকে তাদের মোহর সন্তুষ্ট মনে দিয়ে দাও…”) তিনি এই সিদ্ধান্ত হতে ফিরে আসেন। একইভাবে ইসলামে মানুষের ব্যক্তিগত গোপনীয়তার অধিকারটিও সুনির্দিষ্ট। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, “…আর তোমরা মানুষের গোপন বিষয়ে অনুসন্ধান করো না (সুরা হুযুরাতঃ ১২)। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বলেছেন, যদি কোন শাসক তার জনগণকে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখে সে যেন তাদেরকে ধ্বংস করে দিল (আহমেদ, আবু দাউদ)। তাই ইসলামী রাষ্ট্রে মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে সকল নাগরিকের গোপনীয়তার অধিকার হরণ করা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সেটা তার ফোনে আড়ি পাতা হোক কিংবা ফোনের ফেসবুক, ইমো, হোয়াটসঅ্যাপ অথবা মেসেজ চেক করা হোক না কেন।

-মো: জহিরুল ইসলাম

 

 

 

“যুক্তরাষ্ট্র নিলো ২৪ রোহিঙ্গা”

খবরঃ

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে বলপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের থেকে ২৪ জনকে স্থায়ীভাবে পুনর্বাসন করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের জনসংখ্যা, শরণার্থী ও অভিবাসন বিষয়ক অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি জুলিয়েটা ভলস নয়েসের ৫ দিনের বাংলাদেশ সফর শেষে বিদায়ের ক’ঘণ্টার মধ্যেই পূর্ব-প্রস্তুতি মতে যুক্তরাষ্ট্রগামী ফ্লাইটে তুলে দেয়া হয় বাছাইকৃত ২৪ জন রোহিঙ্গা নারী ও পুরুষকে। কূটনৈতিক সূত্র বলছে, চলতি মাসে মোট ৬২ জনকে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে স্থানান্তরের সবুজ সংকেত পেয়েছে ওয়াশিংটন।  (https://mzamin.com/news.php?news=33186)

মন্তব্যঃ

রোহিঙ্গা মুসলিমদের নিজ দেশে ফেরানোর সত্যিকারের কোন উদ্যোগ না নিয়ে কিংবা বাংলাদেশে ক্যাম্পের বন্ধি জীবন থেকে মুক্ত করে স্বাভাবিক জীবনের জন্য চাপ প্রয়োগ না করে ক্যাম্পে তাদের পিছনে যুক্তরাষ্ট্রের এত টাকা খরচ করা, বেছে বেছে তাদের কয়েকজনকে নিজ দেশে নিয়ে যাওয়া কোনভাবেই মানবিক কারণে নয়, বরং এটা তারা করছে তাদের সাম্রাজ্যবাদী ভূ-রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জন করতে। যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী মন্ত্রীর ক্যাম্পে ঢুকেই মুহিবুল্লাহর পরিবারের খোঁজে যাওয়া, মার্কিন মিত্র দেশ কানাডাতে খুন হওয়া এই রোহিঙ্গা নেতার ৩৫ জন স্বজনকে নিয়ে পাঠানো দেখলে আরও স্পষ্ট হয় যে, তারা কিছু নির্দিষ্ট ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর প্রতি বিশেষ সহানুভূতিশীল। যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের মত নব্য-উপনিবেশবাদী রাষ্ট্র আর বাংলাদেশ-মিয়ানমারের মত রাষ্ট্রে তাদের দাস শাসকদের সাথে মিলে গঠিত প্রতারণামূলক কোয়ালিশন যারা বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে শরণার্থীদের নিয়ে নিষ্ঠুর খেলা খেলে। কেনিয়াতে সুদানী রিফিউজিদের ক্যাম্পে রেখে নানা পরিস্থিতি তৈরি করে এই পশ্চিমারা তাদের নিজেদের স্বার্থে কেনিয়ার সহযোগিতায় দক্ষিন সুদানকে মূল সুদান থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। লিবিয়াতে ক্যাম্পে থাকা বিদ্রোহীদের ব্যবহার করে NATO বিমান হামলার মাধ্যমে সরকার পতনে সহযোগিতা করে। চাদ থেকে বিদ্রোহীদের হাতে বন্দি খলিফা হাফতারকে যুক্তরাষ্ট্র নিজ দেশে নিয়ে এসে তাদের প্রয়োজনীয় সময়েই আবার লিবিয়াতে পুনর্বাসিত করে লিবিয়াকে বিভক্ত ও দুর্বল করে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করছে। “The Geopolitical Strategy of Refugee Camps” নামে Harvard University এর একটি গবেষণা অনুযায়ী দেখা যায়, “বিভিন্ন উন্নয়নশীল শরণার্থী গ্রহিতা দেশ এবং উন্নত বৈশ্বিক নেতৃত্বশীল দেশগুলো তাদের ভূরাজনৈতিক লক্ষ্যের ভিন্নতার কারণে শরণার্থীদের বর্ডারের কাছে গিঞ্জি ক্যাম্পের মধ্যে পুরে রাখে অথবা দেশজুড়ে বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখে। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই গিঞ্জি ক্যাম্পে পুরে রেখে তারা সহজেই তাদের ভূরাজনৈতিক স্বার্থরক্ষায় গৃহযুদ্ধ তৈরির মত পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে”। (দেখুনঃ https://scholar.harvard.edu/files/kara_ross_camarena/files/krc_camplocation.pdf)। বলা বাহুল্য, দুর্বল মানবগোষ্ঠীকে হীন রাজনৈতিক-অর্থনৈতিক লক্ষ্যে উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করার ফলেই নব্য উপনিবেশবাদের এই বিশ্বায়নের যুগে বিশ্বজুড়ে শরণার্থী ঝুঁকিতে পড়া মানুষের সংখ্যা হুহু করে বাড়ছে। Oxford University Press এর প্রকাশিত বই Migrant Psychiatry এর তথ্যমতে ২০৩০ সাল নাগাদ বিশ্বের গরিব জনগোষ্ঠীর ৮০% মানুষের বাসস্থান ও জীবন শরণার্থীদের মত ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে যাবে।

খিলাফত রাষ্ট্র কখনই কোন জনগোষ্ঠীকে মানবিক বিপর্যয়ে ফেলে দিয়ে তার ভু-রাজনৈতিক লক্ষ্য অর্জন করতে সচেষ্ট হয় না। খলিফা ইসলামের দৃষ্টিতে মুসলিম বাস্তুচ্যুতদের ভাই হিসেবে গণ্য করে তাদের জান, মাল, সম্মান সর্বাত্মকভাবে রক্ষায় কাজ করবেন। রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মত অমানবিক ও অনিরাপদ ক্যাম্প খিলাফত রাষ্ট্রে কখনই থাকবে না। খিলাফত রাষ্ট্র মানবিক রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলের এই ধরনের শরণার্থীদের কখনোই জিম্মি করে হীন স্বার্থ চরিতার্থ করবে না বরং তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করবে। ১৪৯২ সালে অটোমান খলিফা বায়েজিদ(২) স্পেন থেকে বের করে দেয়া ইহুদিদের জন্য নিজ দেশের দরজা খুলে দেন এবং সমাজের মধ্যে একিভূত করেন। তিনি বলেন, যেই আমাদের ভুমিতে আমাদের নিরাপত্তায় থাকতে চায় সেই যেন নির্বিঘ্নে দেরি না করে চলে আসে এবং বসবাস করতে থাকে”।

আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন,আর যদি মুশরিকদের কেউ তোমার কাছে আশ্রয় চায়, তাহলে তাকে আশ্রয় দাও, যাতে সে আল্লাহ্‌’র কালাম শুনে, অতঃপর তাকে পৌঁছিয়ে দাও তার নিরাপদ স্থানে। তা এই জন্য যে, তারা এমন এক কওম, যারা জানে না(সুরা আত-তওবাঃ ৬)।

-মোহাম্মদ তালহা হোসেন

 

 

 

“দূষণ কমাতে বাংলাদেশকে ২৫ কোটি ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক”

খবরঃ

বাংলাদেশের জন্য ২৫ কোটি ডলারের ঋণ অনুমোদন করেছে বিশ্বব্যাংক। দূষণ কমাতে ও পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগে বেসরকারী খাতের অংশগ্রহণকে উৎসাহ জোগাতে এই ঋণ দিচ্ছে সংস্থাটি। ‘বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্টাল সাসটেইনেবিলিটি অ্যান্ড ট্রান্সফর্মেশন’ প্রকল্পের আওতায় এ তহবিলের অর্থ সরকার ব্যয় করবে দূষণ হ্রাস এবং পরিবেশ আইন কার্যকর করার প্রশাসনিক ও কারিগরি সক্ষমতা বৃদ্ধির কাজে। নির্দিষ্ট কিছু খাতে পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগ এবং বায়ুদূষণ কমিয়ে আনতে একটি পরিবেশবান্ধব ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিম গড়ে তুলতেও এ ঋণের অর্থ ব্যবহার করা হবে। ঋণের অর্থে সফলভাবে এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে পারলে দূষণ কমবে এবং ঢাকা ও আশপাশের এলাকার ২ কোটি ১০ লাখ মানুষ উপকৃত হবেন বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করে বিশ্বব্যাংক। (www.jugantor.com/economics/bank/621450)

মন্তব্যঃ

বিশ্বব্যাংকের ভাষ্যমতে, ‘দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও নগরায়ণের জন্য বাংলাদেশকে দূষণ আর পরিবেশগতভাবে চড়ামূল্য দিতে হচ্ছে। দূষণ শুধু স্বাস্থ্য সমস্যাই বাড়াচ্ছে না, অর্থনৈতিকভাবে দেশের প্রতিযোগিতা সক্ষমতাও কমিয়ে দিচ্ছে। এ তহবিলের অর্থ দিয়ে বাংলাদেশে পরিবেশ সংরক্ষণে কাজ করা প্রতিষ্ঠানগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আরও কার্যকরভাবে দূষণ নিয়ন্ত্রণ এবং টেকসই উন্নয়ন এগিয়ে নেওয়া সহজ হবে।’ আপাতদৃষ্টিতে পরিবেশ দূষণ এবং বাংলাদেশের উন্নয়ন নিয়ে বিশ্বব্যাংকের এই উদ্বেগ আমাদের মনে বিশ্বব্যাংক সম্বন্ধে এক ধরণের ইতিবাচক ধারণার জন্ম দিতে পারে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে বিশ্বব্যাংকের এই ঋণের শর্ত পূরণে দেশীয় আইন-কানুনে অনেক পরিবর্তন আনতে হবে এবং কলকারখানার দূষণ ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা আধুনিকায়ন করতে হবে। আর আধুনিকায়ন করতে গেলে অবশ্যই ‘Clean-Energy Technology-এর দ্বারস্থ হতে হবে। আর এগুলোর প্রধান উৎপাদক হচ্ছে আমেরিকা আর ইউরোপের শিল্পোন্নত দেশসমূহ। ফলে বাংলাদেশ পরিণত হবে সাম্রাজ্যবাদী দেশসমূহের এই নতুন টেকনোলোজির ভোক্তা হিসেবে। ফলে যে টাকা ঋণ হিসেবে দেয়া হবে তার অনেকটাই চলে যাবে এই ধরণের টেকনোলোজি ক্রয়ের জন্যে।

অর্থাৎ এই ঋণ দিয়ে দেশের কোন উৎপাদন খাতের উন্নয়ন হবে না বরং পশ্চিমাদের নব্য উপনিবেশবাদের নতুন উপকরণ অর্থাৎ ‘জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা’র মাধ্যমে এদেশে নতুনভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে। এই আধিপত্য বাস্তবায়নে শুধুমাত্র বিশ্বব্যাংকই নয় বরং এর ভ্রাতৃপ্রতিম সংস্থা আইএমএফ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে জলবায়ু সুরক্ষা তহবিলের জন্য অর্থ ঋণ দিচ্ছে। যেমন, সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশকে দেয়া ৪.৫ বিলিয়ন ডলারের ঋণের প্রতিশ্রুতির মধ্যে ১.৫ বিলিয়ন ডলার দেয়া হচ্ছে জলবায়ু সংক্রান্ত তিনটি শর্তে, যেমন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি কাটাতে প্রতিষ্ঠানগুলোকে শক্তিশালী করে তোলা, পরিবেশের উন্নতির পদক্ষেপ নেয়া এবং জলবায়ু সংক্রান্ত খাতে আরও বিনিয়োগ ও আর্থিক সরবরাহ নিশ্চিত করা মূলত এসকল শর্ত পূরণ করতে গেলে স্বাভাবিকভাবেই কার্বন নিঃসরণ হয় এমন জ্বালানী ব্যবহার হ্রাস করতে হবে। ফলে, তেল, গ্যাস, কয়লা ইত্যাদিকে জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করার উপর বাধা আসবে। ফলে দেশে শিল্পায়ন বাধাগ্রস্ত হবে। পাশাপাশি যাতে কার্বন নিঃসরণ কম হয় সেজন্যে তেল-গ্যাসের ব্যবহার কমাতে এর উপর ভর্তুকি কমানো হবে ফলে অবধারিতভাবেই তেল-গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি পাবে এবং জনগণের দৈনন্দিন জীবন পরিচালনা করা কঠিন হবে এবং শিল্প কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হবে। উন্নয়নশীল দেশসমূহকে উৎপাদন কমিয়ে আমদানিনির্ভর করে তোলাও এই জলবায়ু রাজনীতির আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। ফলে, এসকল দেশের Balance of Payment এর সমস্যা সমাধানে আইএমএফ কিংবা বিশ্বব্যাংক এর মত প্রতিষ্ঠানের কাছে অধিকহারে নির্ভরশীল হতে হবে।

এখন প্রশ্ন জাগতে পারে এই যে পশ্চিমারা পরিবেশ নিয়ে এত সচেতন এবং প্রতি বছরই বিভিন্ন সভা-সেমিনার করছে এগুলোর কি সবকিছুই লোক-দেখানো? এর জন্যে আমাদেরকে পশ্চিমাদের আদর্শের দিকে মনোনিবেশ করতে হবে। তাদের জীবনাদর্শ হচ্ছে পুঁজিবাদ। যার মূল কথা হচ্ছে মুনাফা অর্জন। মুনাফা ছাড়া তারা কোন কাজেই হাত দেয় না। পরিবেশ ও জলবায়ু বিষয়েও তাদের একই অবস্থান। তারা যদি সত্যিকার অর্থেই পৃথিবীর জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে চিন্তিত থাকত তাহলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ যারা ‘Clean-Energy Technology’ উৎপাদন করতে জানে না তাদেরকে তা বিনামূল্যে প্রদান করত। এবং ‘Low-carbon power’ যেমন wind power, solar power, nuclear power এবং hydropower ইত্যাদির প্রযুক্তি তারা বিনামূল্যে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বিতরণ করত। উপরন্তু তারা ‘Carbon Emission Trading’ এর মাধ্যমে নিজেদের উৎপাদন ঠিক রেখে উন্নয়নশীল দেশের শিল্পায়নকে বাধাগ্রস্ত না করে বরং নিজেদের কার্বন নিঃসরণকে কমিয়ে আনার চেষ্টা করত। অপরদিকে, তারা নিজেরা কোন পদক্ষেপ গ্রহণ না করে উন্নয়নশীল দেশসমূহকে ঋণ প্রদানের মাধ্যমে আরও পরনির্ভরশীল করে তুলছে। নিঃসন্দেহে এধরনের জলবায়ু রাজনীতি পশ্চিমাদের অন্যান্য সকল প্রতারণামূলক প্রজেক্টের মতই আরেকটি প্রজেক্ট যার মাধ্যমে ঋণ গ্রহনকারী দেশের কোন উপকার হয়না বরং উৎপাদন হ্রাস পায় এবং অধিক ঋণের জালে আবদ্ধ হয়।

শুধুমাত্র ইসলামী আদর্শের উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠা খিলাফত ব্যবস্থাতেই পৃথিবীর জলবায়ু ও পরিবেশকে রক্ষা করা সম্ভব। ইসলামের রয়েছে এমন সব নীতি যা পৃথিবীর সম্পদসমূহকে এমনভাবে সংরক্ষন ও ব্যবস্থাপনা করবে যা প্রকৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে এবং এর পাশাপাশি মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতি ও প্রগতিকেও নিশ্চিত করবে। আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন, “মানুষের কৃতকর্মের দরুন স্থলে ও সাগরে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে; ফলে তিনি তাদেরকে তাদের কোন কোন কাজের শাস্তি আস্বাদন করান, যাতে তারা ফিরে আসে।

-মো. হাফিজুর রহমান

 

 

 

আর কত সহ্য করব?’: স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা করলেন সারিকা”

খবরঃ

যৌতুকের দাবিতে নির্যাতনের অভিযোগে স্বামী বদরুদ্দিন আহমেদ রাহীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন প্রখ্যাত অভিনেত্রী সারিকা। অভিনেত্রীর ভাষ্যমতে, ‘আমি এটা আর সহ্য করতে পারছিনা, তিনি প্রতিটি জিনিসের জন্য আমার ওপর নির্ভরশীল ছিলেন। এমনকি আমাদের বিয়ের খরচও আমি দিয়েছি। একজন মানুষ আর কতটা বহন করতে পারে? আপাতত এর বেশি আর কিছুই বলতে চাই না।’

(https://www.thedailystar.net/entertainment/tv-film/news/how-much-more-can-i-bear-sarika-files-case-against-husband-3181726)

মন্তব্যঃ

হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালার গল্প আমরা সবাই শুনেছি – শহরের সমস্যা সমাধান করতে এসে বাঁশির সুরে বিমোহিত করে চিরকালের মত ছিনিয়ে নিয়ে যায় হ্যামিলনের শিশুদের। সেক্যুলার নারীবাদীদের ‘জেন্ডার ইক্যুয়ালিটি বা লিঙ্গসমতা’, ‘লিঙ্গভিত্তিক ন্যায়বিচার’, ‘নারী ক্ষমতায়ন’, ‘নারীর অর্থনৈতিক স্বনির্ভরতা’ ইত্যাদির মত শব্দগুলোও ঠিক বাঁশিওয়ালার সুরের মতই; এর সম্মোহনী শক্তিতে অবহেলিত, নির্যাতিত, নিষ্পেষিত নারীদের মুক্তির আশায় ঘর থেকে রাস্তায় বের করে আনে। কিন্তু নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন কি সেই শোষন ও নিপীড়ন, যা থেকে নারী মুক্তি চেয়েছিল তা আদৌ কি দিতে পেরেছে? তাহলে সারিকার মত স্বাবলম্বী শিক্ষিত নারীদের কেন ডিভোর্সের পথ বেছে নিতে হচ্ছে? ‘আত্মনির্ভরশীলতার’ বাঁশির সুর শুনিয়ে, সুকৌশলে নারীর উপর অর্থনৈতিক, সামাজিক, সামগ্রিক নিরাপত্তার দায় সবকিছু চাপিয়ে দেয়া হচ্ছেনাতো?

একটি সমাজে নারী-পুরুষের অধিকার, দায়িত্ব ও কর্তব্যের সংজ্ঞায়ন সুষ্ঠুভাবে হওয়া জরুরী। যার মাধ্যমে নারী ও পুরুষ পরিপূরকভাবে তাদের চাহিদা পূরণ করার মাধ্যমে পরিবার গড়ে তুলে, যা সামাজিক সুশৃংখলায় পরিণতি পায়। বর্তমান নারীবাদপুষ্ঠ  ধর্মনিরপেক্ষ ব্যবস্থায় নারী অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর হওয়াকেই দেখানো হয় নারী মুক্তির একমাত্র উপায়। কিন্তু বাস্তবতা হলো নারীর তথাকথিত স্বনির্ভরতা বাড়লেও, এই ধর্মনিরপেক্ষ সমাজ নারীকে সত্যিকার অর্থে নির্যাতন নিষ্পেষণ থেকে মুক্তি দিতে পারেনি। উপরন্তু সন্তান প্রতিপালন ও সংসারের যাবতীয় দায়িত্বের পাশাপাশি পরিবারের অর্থনৈতিক প্রয়োজন, সামগ্রিক নিরাপত্তাসহ সমস্ত দায়-দায়িত্ব নারীর উপর চাপিয়ে নারীকে নাভিশ্বাসের জীবনের দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে। যার ফলে নারীর ক্ষমতায়নই এখন নারীর উপর আরেক প্রস্থ নির্যাতন!!! উপরন্তু, ধর্মনিরপেক্ষ এই ব্যবস্থা পুরুষদের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে; ফলে কিছু পুরুষ দায়িত্ব নেওয়ার বদলে উল্টো স্ত্রীর উপার্জনের উপর নির্ভরশীল এবং সুকৌশলে পরিবারের সমস্ত চাহিদা পূরণের দায়িত্ব নারীর উপর চাপিয়ে দায়সারা। গরিব গার্মেন্টস কর্মী থেকে শুরু করে শিক্ষিত ধনী সমাজ সব জায়গায় দায়িত্ব ভাগাভাগির দ্বন্দ্ব থেকে অসহনীয় হয়ে উঠেছে দাম্পত্য জীবন, তেমনি ভেঙ্গে পড়ছে পারিবারিক ও সামাজিক ব্যবস্থা। এর প্রতিফলন হিসেবে আমরা দেখতে পাই, বাংলাদেশে গত এক দশকে বিবাহ বিচ্ছেদের হার আশঙ্কাজনকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং প্রতিবছরই বিগত বছরের তুলনায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে বিবাহ বিচ্ছেদের ঘটনা।

আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা কর্তৃক মনোনীত সত্য দ্বীন ইসলামে স্বেচ্ছাচারিতার ভিত্তিতে বা অন্যের উপর জোর খাটানোর অভিপ্রায়ে নারী-পুরুষের অধিকার ও কর্তব্য সংজ্ঞায়িত হয়না। বরঞ্চ, সমস্ত মাখলুকাতের সৃষ্টিকর্তা বিচক্ষণ আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামিন ঠিক যেভাবে একটি জঙ্গলে মৌমাছি, পাখি, গরু, কিংবা বাঘ থেকে শুরু করে প্রত্যেকটা জীবের চাহিদা এবং সেটি পূরণের উপায় বাতলে দিয়েছেন; একইভাবে আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামিন একটি পরিবারে নারী ও পুরুষ উভয়ের অধিকার ও দায়িত্ব সুনির্দিষ্ট করে দিয়েছেন। একজন স্বামীর দায়িত্ব সে যেমন স্ত্রী ও পরিবারের ভরণপোষণ করবে, একজন নারীর দায়িত্ব সে তার স্বামীর ও পরিবারের দেখাশোনা করবে, সন্তানদের লালনপালন ও সুশিক্ষা দিবে। এখানে নারীর উপর পুরুষের অভিভাবকত্ব পুরুষকে নারী নির্যাতনের ক্ষমতা দেয়না, বরং পুরুষকে দায়িত্বশীল করে। তেমনি নারীকেও পুরুষের তত্ত্বাবধানে রাখে নিরাপদ এবং তাকে করে তোলে পরিবার ও সন্তানের প্রতি দায়িত্বশীল। এভাবে পরিবারের কাজে ভারসাম্য রক্ষা হয়। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, পুরুষগণ নারীদের উপর কর্তৃত্বশীল, কারণে যে, আল্লাহ্‌ তাদের একজনকে অন্যের উপর মর্যাদা দান করেছেন, আর এজন্য যে, পুরুষেরা স্বীয় ধনসম্পদ হতে ব্যয় করে সুতরাং পুণ্যবতী স্ত্রীরা (আল্লাহ্‌ ও স্বামীর প্রতি) অনুগত থাকে এবং পুরুষের অনুপস্থিতিতে তারা হিফাযত করে ঐসব বিষয়ের, যা আল্লাহ্‌ হিফাযত করতে আদেশ দিয়েছেন (সুরা আন-নিসাঃ ৩৪)।

-যয়নব মায়সূরা

 

 

 

“বিশ্বকাপের উন্মাদনায় এক মাসে ১২ মৃত্যু

খবরঃ

বিশ্বকাপ ফুটবল উন্মাদনার খেসারতে জীবন দিয়ে দিলেন ১২ জন। ফুটবল নিয়ে তর্ক-বিতর্কের জের ধরে সংঘর্ষে, পতাকা টানাতে গিয়ে ছাদ থেকে পড়ে কিংবা বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে, খেলা দেখার সময় হৃদ্‌রোগে আক্রান্ত হয়ে ১২ জন মারা গেছেন। এদের বেশির ভাগই কিশোর ও তরুণ। (www.prothomalo.com/bangladesh/u3ltj9gs38)

মন্তব্যঃ

পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় বহুজাতিক দৈত্যাকার কোম্পানীগুলো বাজার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে লাভের পাগলা ঘোড়া ছোটানোর জন্য মানুষের আবেগের উপর ভর করে। তারা মিডিয়া, বিভিন্ন খেলা ও অনুষ্ঠান আয়োজনে এসোসিয়েশন, ক্লাব ইত্যাদি ব্যবহার করে একের পর এক মেগা আয়োজন ছাড়তে থাকে। সরকারগুলোও এগুলোকে শুধুমাত্র পৃষ্ঠপোষকতা দেয় তা নয় নিজেরাও সক্রিয়ভাবে এইসব আয়োজনের জন্য জনগণের অর্থ ব্যয় করে। এতে একদিকে তাদের ভ্যাট-ট্যাক্স আদায় ও দূর্নীতির সুযোগ যেমন বাড়ে অন্যদিকে লোকদের এসবে ব্যস্ত রাখতে পারলে তাদের শোষন-জুলুম দীর্ঘায়িত করা সহজ হয়ে পড়ে। বাস্তব বিষয়াদি ও সমস্যাগুলো নিয়ে গভীর আলোচনা ও চিন্তা করায় উৎসাহ দেয়ার পরিবর্তে এই ব্যবস্থায় শিক্ষা, মিডিয়া ও আয়োজনগুলোর মূল লক্ষ্য থাকে মানুষকে একধরনের হাল্কা আনন্দ বা মজাকেন্দ্রীক আবেগে জড়িয়ে রাখা। আমাদের দেশের এবং বিশ্বের বিভিন্ন মূলধারার পত্রিকা ও মিডিয়ার দিকে তাকালে আমরা দেখবো প্রথম পাতা থেকে শেষপাতা পর্যন্ত খেলাধুলা, এন্টারটেইনমেন্ট, লাইফস্টাইল, হালকা সহজে দৃষ্টি ও আবেগ আকর্ষণ করার মত বিষয়াদিতে ভরা। খেলা, এন্টারটেইনমেন্ট ইত্যাদি হিরো হিরোইনদের চরিত্রে নানা অতিমানবীয় গুণাবলী ঢুকিয়ে এসব মিডিয়া সারাদিনরাত প্রচার করতে ক্রেজ। এসব ক্রেজের কাল্পনিক লক্ষ্য ছুতে একদল তরুণ সব বাস্তবতা, দায়িত্ব ইত্যাদি বিষর্জন দিয়ে ছুটতে থাকে আর বাকিরা নতুন নতুন উপায়ে এসব ভার্চুয়াল বানানো তারকাদের বন্দনা ও খ্যাতি উদযাপন করে তৃপ্তি খোজে। এসবেই পুজিপতিদের ব্যবসার ব্যারোমিটার উপরে উঠতে থেকে আর জুলুমবাজ শাসকদের শাসনকাল দীর্ঘায়িত হতে থাকে।

খেলাধুলা, শরীর চর্চা, মানুষের আবেগ অনুভূতি প্রকাশ করার আয়োজন সমাজে থাকবে এটা স্বাভাবিক। কিন্তু পুঁজিবাদ এটাকে ব্যবসা বৃদ্ধির উপকরণ হিসেবে মুক্তভাবে ব্যবহার করে। এই ব্যবস্থা মানুষের সামনে এমন অতিরঞ্জন করে এগুলোকে নিয়ে আসে যা সংবেদনশীল মানুষগুলোকে ভয়ানকভাবে প্রভাবিত করে বিপদের দিকে ঠেলে দেয়। তাই ব্যবস্থাকে দায়ী না করে শুধু এই সংবেদনশীল মানুষগুলোকে দায়ী করা, কিছু উপায়-উপকণকে দায়ী করা শুধু ভুল হবে তা নয় বরং অপরাধ হবে। কারণ আশ্চর্যজনকভাবে ধর্মনিরপেক্ষ পুঁজিবাদী ব্যবস্থা বিশ্বজুড়ে বিস্তার লাভ করার পূর্বে বিশেষত ইসলামী খিলাফতের সুদীর্ঘ শাসনামলে এর বিস্তির্ণ জনগোষ্ঠীতে এই ধরনের সমস্যার তেমন নজির পাওয়া যায় না।

কারণ ইসলাম মানুষের আনন্দ, আবেগ-অনুভূতিকে সুন্দর এক ব্যবস্থাপনায় নিয়ে আসে। ইসলাম আক্বিদা গ্রহণের জন্য চিন্তাশীল মনের সর্বোচ্চ ব্যবহারকে বাধ্যতামূলক করার মাধ্যমে সমাজে অনিয়ন্ত্রিত আবেগকে নয় বরং চিন্তাকে চালকের আসনে বাসায়। আর চিন্তাশীলতার জায়গা থেকেই মানুষ তার আবেগকে শাসক বা ব্যবসায়ীর ইচ্ছা বা পরিকল্পনার উপর ছেড়ে না দিয়ে আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র উপর অর্পণ করে। আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে ছূটে চলাতে আছে প্রকৃত প্রাণ উদ্দীপনা প্রকৃত প্রশান্তি। রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “সেই সত্তার শপথ যার হাতে আমার প্রাণ, আমার কাছে অত্যন্ত পছন্দনীয় হলো, আমি আল্লাহর পথে নিহত হই, অতঃপর জীবন লাভ করি। আবার নিহত হই আবার জীবন লাভ করি এবং আবার নিহত হই তারপর আবার জীবন লাভ করি। আবার নিহত হই। (বুখারী ও মুসলিম)। অর্থাৎ ইসলাম আল্লাহর দ্বীনের জন্য সংগ্রাম করাকে সর্বোচ্চ অর্জন ও পরিতৃপ্তির জায়গায় রেখেছে যেখানে মৃত্যুও তুচ্ছ। এপথে মৃত্যু আলিজ্ঞনই সর্বোচ্চ সফলতা। আবার আমরা দেখি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) উনার স্ত্রী  আয়েশা (রাঃ) এর সাথে খেলা-ধুলা, হাসি-ঠাট্টা ইত্যাদিতে অংশ গ্রহণ করতেন। কোন এক সফরে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার সাথে দৌড় প্রতিযোগিতায়ও অংশ নেন। আয়েশা (রাঃ) বর্ণনা করেন, “আল্লাহর শপথ, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখেছি, তিনি আমার ঘরের দরজায় দাঁড়াতেন, হাবশিরা যুদ্ধাস্ত্র নিয়ে খেলা-ধুলা করত, আর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে তার চাদর দিয়ে ঢেকে নিতেন, যেন আমি তাদের খেলা উপভোগ করি তার কাঁধ ও কানের মধ্য দিয়ে। অতঃপর তিনি আমার জন্য দাঁড়িয়ে থাকতেন, যতক্ষণ না আমিই প্রস্থান করতাম”। (আহমদ)

-মোহাম্মদ তালহা হোসেন