প্রেস বিজ্ঞপ্তি
بسم الله الرحمن الرحيم
বাংলাদেশে অপ্রতিরোধ্য নদী দখল সমস্যা কেবলমাত্র খিলাফত রাষ্ট্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই থামানো সম্ভব
বাংলাদেশে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতের জন্য নদ-নদীসমূহকে অত্যাবশ্যকীয় প্রাকৃতিক সম্পদ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। বিশ্বের বৃহত্তম ব-দ্বীপ হিসেবে বাংলাদেশে সর্বদাই বাণিজ্য বৃদ্ধি ও খাদ্য নিরাপত্তা শক্তিশালী করার বিপুল সম্ভাবনা বিদ্যমান। অথচ, ব্যাপক সরকারী দুর্নীতির মাধ্যমে আশীর্বাদপুষ্ট কতিপয় পুঁজিপতিদের অবৈধ ও অবিরাম নদী দখল কার্যক্রম আমাদের দেশে বহমান ৭০০ নদ-নদীর প্রায় সবগুলোকেই ধীরে ধীরে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে। এবং, সম্প্রতি কোন বিচার-বিবেচনা ছাড়াই খুলনার পাইকগাছায় মিনহাজ নদীর জমি দখলের সুযোগ দেয়া হয়েছে, ফলে দেশের নদী তীরবর্তী অঞ্চলসমূহে বসবাসরত জনগোষ্ঠীর দুর্বিষহ জীবন-জীবিকা ও আর্থ-সামাজিক অবস্থার সঙ্গে নতুন আরেকটি দুর্দশা যুক্ত হতে যাচ্ছে। সরকার এই নদীর ২.৫২ একর জমি মৎস্য ব্যবসার জন্য ইজারা হিসেবে বেসরকারি খাতে হস্তান্তর করেছে, যদিও এই নদী গণ–মালিকানাধীন সম্পদ এবং এর পানির উপর কৃষির সেচর জনগণ নির্ভরশীল। ফলে নদী ও খালের নাব্যতা হ্রাস পাওয়ায় এতে প্রবাহিত পানির উপর নির্ভরশীল দুই উপজেলার অন্তত ৭০টি গ্রামের ড্রেনেজ ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই ভেঙে পড়েছে। তার উপরে, এই বেসরকারি মাছ চাষীদের অপরিকল্পিত বাঁধ গ্রামে বসবাসরত মানুষের জীবিকা ধ্বংস করছে এবং বর্ষাকালে কৃত্রিম বন্যা ও তীব্র জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করছে।
যে সমাজে পুঁজিবাদী মতাদর্শ গৃহীত হয় এবং ধর্মনিরপেক্ষ শাসনব্যবস্থা বাস্তবায়িত হয়, সেখানে গণ–মালিকানাধীন সম্পদের বিনাশ এবং জীবন-জীবিকার এরূপ কৃত্রিম সংকট খুবই স্বাভাবিক। কারণ, পুঁজিবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের অশুভ সম্পর্ক কেবল বস্তুগত সুবিধার চারপাশে আবর্তিত হয় এবং জনস্বার্থকে উপেক্ষা করা হয়। গুটিকয়েক পুঁজিপতির স্বার্থে জনগণের সম্পদের একচেটিয়াকরণ ও লুটপাটই পুঁজিবাদের প্রকৃত মূলমন্ত্র। আর, দুর্নীতি নিশ্চিত করতেই অকার্যকর ও নীতিহীন এই ধর্মনিরপেক্ষ শাসনব্যবস্থা বলবৎ রয়েছে। তাই আমরা প্রত্যক্ষ করি, একদিকে বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ সরকার নদী দখলকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে ঘোষণা করে, আর অন্যদিকে তার দায়িত্বশীল কর্মকর্তাগণ দায়মুক্তির ছত্রছায়ায় অভিজাত-শ্রেণীর হাতে আমাদের নদ-নদীকে তুলে দেয়।
হে দেশবাসী, আপনারা যদি ধর্মনিরপেক্ষ-গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার অবসান না ঘটান, তবে এসব দুর্নীতিগ্রস্থ পুঁজিপতি কর্তৃক অবৈধ নদী দখল ও অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদ লুন্ঠন বন্ধ হবে না। এসব সম্পদ রক্ষায় এবং এগুলো হতে সুবিধা পেতে আপনাদেরকে অবশ্যই নবু্য়্যতের আদলে প্রতিশ্রুত দ্বিতীয় খিলাফত রাশিদাহ্ ফিরিয়ে আনতে হবে। নদ-নদীর মতো প্রাকৃতিক সম্পদসমূহ প্রকৃতপক্ষে জনগণের আমানত, যা আসন্ন খিলাফত ভালোভাবেই ওয়াকিবহাল, এবং আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রের দায়িত্ব হচ্ছে উম্মাহ্’-এর স্বার্থে এ ধরনের সম্পদসমূহের সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করা। রাসূলুল্লাহ্ ﷺ স্পষ্টভাবে বলেছেন: “তিনটি জিনিসে মালিকানার বিষয়ে কাউকে অস্বীকার করা যাবে না: পানি, চারণভূমি এবং আগুন” (ইবনে মাজাহ্)। রাসূলুল্লাহ্ ﷺ তাঁর সাহাবী আল-আবিয়াদ বিন হাম্মাল (রাঃ)-কে একটি জমি দেয়ার পরে যখন জানতে পেরেছিলেন যে সেটির মধ্যে খনিজ পদার্থের উত্স রয়েছে, তখন তিনি ﷺ তা ফেরত নিয়েছিলেন। এরপর তিনি ﷺ অবিলম্বে সেই জমিকে গণ–মালিকানাধীন সম্পদ হিসেবে ঘোষণা করেন এবং কোন ব্যক্তি কর্তৃক এটির মালিকানাকে নিষিদ্ধ করেন। সুতরাং, আমরা আপনাদের প্রতি আহ্বান জানাই আপনারা খিলাফত রাষ্ট্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার কাজকে আরও বেগবান করুন, যে রাষ্ট্র ইসলামকে পরিপূর্ণভাবে বাস্তবায়ন করবে এবং ধর্মনিরপেক্ষ-পুঁজিবাদ কর্তৃক সৃষ্ট চলমান সংকটের চির অবসান ঘটাবে।
হিযবুত তাহ্রীর / উলাই’য়াহ্ বাংলাদেশ–এর মিডিয়া কার্যালয়