working to establish khilafah

একমাত্র খিলাফত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ হাসিলের হাতিয়ার জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনসহ সকল উপনিবেশবাদী প্রতিষ্ঠানের ভিত্তি সমূলে উচ্ছেদ করে ইসলাম, দেশের জনগণের স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

بسم الله الرحمن الرحيم

একমাত্র খিলাফত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ হাসিলের হাতিয়ার জাতিসংঘের মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনসহ সকল উপনিবেশবাদী প্রতিষ্ঠানের ভিত্তি সমূলে উচ্ছেদ করে ইসলাম, দেশের জনগণের স্বার্থ সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে

সর্বস্তরের জনগণের প্রতিবাদ ও উদ্বেগ, এবং রাজনৈতিক দলসমূহের সতর্কতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে শেষপর্যন্ত বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবিত উপনিবেশবাদী প্রতিষ্ঠান ‘জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশন’-এর কার্যালয় স্থাপনে চুক্তি স্বাক্ষর করলো। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে ইসলামবিদ্বেষী নারীবাদী সংগঠন স্বাগত জানিয়েছে, যারা পশ্চিমাদের লিঙ্গসমতা (gender equality), ঘৃণ্য পতিতাবৃত্তিকে সামাজিক স্বীকৃতি প্রদান, সমাজ ধ্বংসকারী সমকামিতাসহ এলজিবিটিকিউ (LGBTQ)-এর মত তথাকথিত মানবাধিকার নিয়ে তৎপর; অথচ নারীদের ন্যায্য অধিকার ও মর্যাদা প্রতিষ্ঠা, অমানবিক শ্রম থেকে মুক্তি ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে তাদের কোন উচ্চকণ্ঠ না থাকার কারণে তারা সর্বস্তরের জনগণের নিকট বিতর্কিত ও সমালোচিত। এছাড়া, এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে দেশে সাম্প্রদায়িক উস্কানিদাতা ও সংখ্যালঘু নির্যাতনের ধোঁয়া তুলে দেশের উপর মার্কিন-ভারতের হস্তক্ষেপ আহ্বানকারী বিতর্কিত নেতৃত্ব। জনগণের জানমালের নিরাপত্তা ও দেশে বিরাজমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানে অন্তর্বর্তী সরকারের কার্যকর কোন পদক্ষেপ ও তৎপরতা না থাকলেও মার্কিনীদের স্বার্থরক্ষায় তাদের বিভিন্ন পদক্ষেপ জনগণকে ক্ষুব্ধ ও হতাশ করেছে। এমনকি তারা অতিস্বল্প সময়ে মার্কিনীদের আনুগত্যের একের পর এক নির্লজ্জ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

হে দেশবাসী, আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হীন রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়নে জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল কর্তৃক প্রকাশিত প্রতিবেদন আমাদের সামরিক বাহিনীকে মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী হিসেবে উপস্থাপন করে বিশ্বব্যাপী তাদেরকে বিতর্কিত করেছে এবং তাদেরকে জনবিচ্ছন্ন করার চক্রান্ত করেছে; অথচ তারা ভারতীয় ষড়যন্ত্রে পিলখানা হত্যাকাণ্ড এবং সেনাঅফিসারদের পরিবারের উপর পৈশাচিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে উচ্চবাক্য করে নাই। এই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র RABসহ আমাদের সামরিক ও নিরাপত্তা বাহিনীর কতিপয় প্রতিষ্ঠানকে তথাকথিত জঙ্গিবাদ দমনের নামে ইসলামের দাওআহ্‌ বহনকারী এবং দেশের পক্ষে অবিচল রাজনৈতিক ব্যক্তিদেরকে দমনে প্রশিক্ষণ-প্রযুক্তি-অস্ত্র প্রদান করে তাদেরকে অমানবিক কাজে ব্যবহার করেছে। মানবাধিকারের মুখোশধারী এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ হচ্ছে, তারা আদালতসহ রাষ্ট্র কাঠামোর গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে প্রবেশাধিকার নিয়ে স্পর্শকাতর তথ্য সংগ্রহ করে, এবং যালিম শাসকের বিরুদ্ধে সক্রিয় নিষ্ঠাবান রাজনৈতিক ব্যক্তিদের ডাটা তৈরি করে এবং অতঃপর রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের লক্ষ্যে তাদের মিত্রদের সাথে তথ্য আদান-প্রদান করে। সিরিয়ায় এই প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় রয়েছে যেখান থেকে তারা যালিম শাসক বাশারের বিরুদ্ধে লড়াইরত রাজনৈতিক কর্মী এবং বিদ্রোহীদের তথ্য মার্কিন দালাল বাশার আল আসাদ ও তাদের মিত্র রাশিয়ার কাছে হস্তান্তর করে তাদেরকে দমনে সহযোগিতা করেছে। একইভাবে, ফিলিস্তিনে এই প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় রয়েছে, যেখান হতে তারা মুসলিমদের দমনে ও গণহত্যায় গোপনীয় তথ্য অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্র ইসরায়েলের নিকট হস্তান্তর করেছে, যার দৃষ্টান্ত এখন বিশ্ববাসীর নিকট স্পষ্ট। একটি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে, জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের (UNHRC) একজন মানবাধিকার আইনজীবী এমা রেইলি বলেছিলেন, চীনের কাছ থেকে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের জন্য UNHRC-এর উচ্চপদস্থ সদস্যরা সক্রিয়ভাবে উইঘুর ভিন্নমতাবলম্বীদের নাম চীনা শাসকগোষ্ঠীর কাছে হস্তান্তর করছেন অথচ পূর্ব তুর্কিস্তানের উইঘুর মুসলিমদের বিরুদ্ধে চীন গণহত্যার নীতি অনুসরণ করা সত্ত্বেও এটি ঘটছে। এরই ধারাবাহিকতায় আমাদের মুসলিম ভাই রোহিঙ্গা মুসলিমদেরকে মানবাধিকারের আড়ালে ‘মানবিক করিডোর’ বা ‘মানবিক চ্যানেল’ ইত্যাদি বাস্তবায়নে মার্কিনীরা তাদের ভূ-রাজনৈতিক হীন স্বার্থে ব্যবহার করতে এবং তাদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করতে এই প্রতিষ্ঠানকে ব্যবহার করবে এতে কোন সন্দেহ থাকা উচিত নয়। প্রকৃতপক্ষে, বিশ্বমোড়ল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবিত এই ‘জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিল’ একটি সুগার কোটেড এই দুর্বৃত্ত প্রতিষ্ঠান। তাই এই প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা যেসব দেশে কার্যক্রম পরিচালনা করে সেই দেশের সাথে চুক্তিতে ‘দায় মুক্তির’ শর্ত সংযোজন করে। আল্লাহ্‌ ﷻ বলেন, এবং যখন তাদেরকে বলা হয়ঃ তোমরা পৃথিবীতে অশান্তি সৃষ্টি করো না, তখন তারা বলেঃ আমরাতো শুধুই শান্তি স্থাপনকারী সাবধান! নিশ্চয়ই তারাই অশান্তি সৃষ্টিকারী, কিন্তু তারা বুঝেনা [সূরা আল-বাকারাহ্‌: ১১-১২]।

হে দেশবাসী, এই প্রতিষ্ঠান মুসলিম ভুখন্ডে ইসলামের বিরুদ্ধে লড়াই করে এবং ইসলামের মূল্যবোধ ধ্বংসকারী এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে তাদের দালালদের অর্থসহ সকল পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে। বিশ্ববাসীর কাছে প্রকাশ্য দিবালোকের মত স্পষ্ট, তাদের নষ্ট চিন্তা ও মূল্যবোধ দ্বারা তাদের সমাজই আজ বিপর্যস্ত। অথচ পশ্চিমারা এই মানবাধিকারের সনদের মাধ্যমে মুসলিম সমাজে লিঙ্গসমতা (gender equality), ঘৃণ্য পতিতাবৃত্তি, সমকামিতাসহ এলজিবিটিকিউ (LGBTQ)-এর প্রচলন বাধ্য করছে এবং উদার মূল্যবোধের নামে ইসলামী মূল্যবোধকে ধ্বংস করার প্রকল্প অব্যাহত রেখেছে। এর বিপরীত অবস্থানকে উগ্রবাদ হিসেবে আখ্যা দিচ্ছে এবং তাদেরকে দমন নিপীড়নে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে। আল্লাহ্‌ ﷻ বলেন, আর ইহুদী খৃষ্টানরা আপনার প্রতি কখনো সন্তুষ্ট হবে না, যতক্ষণ না আপনি তাদের মিল্লাতের (ধর্ম বা আদর্শ) অনুসরণ করেন বলুন নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌’র হেদায়াতই প্রকৃত হেদায়াত [সূরা আল-বাকারাহ্‌: ১২০]।

হে সামরিক বাহিনীতে কর্মরত নিষ্ঠাবান অফিসারগণ, আপনারা প্রত্যক্ষ করছেন, জনগণের আবেগ-অনুভুতি এবং প্রতিবাদ বিক্ষোভকে উপেক্ষা করে মার্কিন অনুগত শাসকগোষ্ঠী একের পর এক মার্কিন এজেন্ডা বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নিচ্ছে। তারা ইসলাম, মুসলিম ও দেশের বিরুদ্ধে মার্কিনীদের প্রকল্প বাস্তবায়নে জনগণের বিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছে। জনগণের প্রতিবাদ ও ক্ষোভ যখন কাজে আসছে না, তখন জনগণের শেষ আশ্রয়স্থল হচ্ছে সামরিক বাহিনীতে কর্মরত ক্ষমতার অধিকারী সন্তানগণ। আপনারা যেভাবে ‘মানবিক করিডোর’-এর বিরুদ্ধে চোখ রাঙিয়ে এই সরকারকে পিছু হটতে বাধ্য করেছেন এবং জনগণের প্রশংসা অর্জন করেছেন। ঠিক একইভাবে তথাকথিত জাতিসংঘ মানবাধিকারবিষয়ক হাইকমিশনের কার্যালয় স্থাপন, মার্কিনীদের সাথে যৌথ সামরিক মহড়াসহ কাফির উপনিবেশবাদী শক্তি মার্কিনীদের আধিপত্য প্রতিষ্ঠার সকল প্রকল্প প্রতিহত করতে সক্রিয় হউন। রাসূলুল্লাহ্‌ ﷺ বলেছেন, নিশ্চয়ই ইমাম (খলিফা) হচ্ছেন কমান্ডার, যার অধীনে মুসলিমরা যুদ্ধ করে এবং নিজেদের আত্মরক্ষা করে [সহীহ্‌ মুসলিম]। আমাদের প্র্রাণপ্রিয় নবী রাসূলুল্লাহ্‌ (ﷺ)-এর এই হাদিস থেকে স্পষ্ট একমাত্র খিলাফত ব্যবস্থা মুসলিম উম্মাহ্‌’র প্রকৃত অভিভাবক। একমাত্র খিলাফত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ হাসিলের হাতিয়ার জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলসহ সকল উপনিবেশবাদী প্রতিষ্ঠানের ভিত্তি সমূলে উচ্ছেদ করে ইসলাম, দেশের জনগণের স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করবে। তাই, মার্কিনীদের অনুগত এসব নির্বোধ শাসক ও রাজনৈতিক গোষ্ঠীর দিকে তাকিয়ে না থেকে- ইসলাম, জনগণের স্বার্থ ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় খিলাফত প্রতিষ্ঠায় সক্রিয় হউন, এবং এই লক্ষ্যে নিষ্ঠাবান ও মেধাবী রাজনৈতিক দল হিযবুত তাহ্রীর-কে নুসরাহ্‌ (ক্ষমতা) প্রদান করুন।

﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَجِيبُوا لِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُحْيِيكُمْ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ يَحُولُ بَيْنَ الْمَرْءِ وَقَلْبِهِ وَأَنَّهُ إِلَيْهِ تُحْشَرُونَ

হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ্ তাঁর রাসূলের সেই আহ্বানে সাড়া দাও যখন তোমাদেরকে এমনকিছুর দিকে আহ্বান করা হয় যা তোমাদের মধ্যে প্রাণের সঞ্চার করে আর জেনে রেখ, আল্লাহ্ মানুষ তার অন্তরের অন্তরালে থাকেন, পরিশেষে তাঁর কাছেই তোমাদেরকে সমবেত করা হবে [সূরা আল-আনফালঃ ২৪]।

 

 

 

হিযবুত তাহ্রীর, উলাই‘য়াহ্‌ বাংলাদেশএর মিডিয়া অফিস