working to establish khilafah

রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকায় নৃশংসভাবে সোহাগের হত্যাকাণ্ড আল্লাহ্‌দ্রোহী ও উন্মাদ- ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির অনিবার্য ফল

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

بسم الله الرحمن الرحيم

রাজধানীর মিটফোর্ড এলাকায় নৃশংসভাবে সোহাগের হত্যাকাণ্ড আল্লাহ্‌দ্রোহী ও উন্মাদ ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির অনিবার্য ফল

রাজধানীর পুরান ঢাকার মিটফোর্ড এলাকায় সোহাগ (৩৯) নামে চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় এক ভাঙ্গারী ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে এবং বড় পাথরখণ্ড দিয়ে উপর্যুপরী আঘাত করে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে দেশের সর্ববৃহৎ ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দল বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন যুবদলের কতিপয় স্থানীয় নেতৃত্ব। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, শুধু হত্যা করেই থেমে থাকেনি সন্ত্রাসীরা, সোহাগের মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পরও লাশের উপর চলতে থাকে পৈশাচিকতা। রক্তাক্ত নিথর দেহটি রাস্তার মাঝখানে ফেলে লাশের উপর দাঁড়িয়ে চলে উন্মত্ত উল্লাস। একজন নয়, একাধিক যুবক মৃত ব্যক্তির নাক-মুখে এবং বুকের উপর আঘাত করে যেতে থাকে। দশকের পর দশক ধরে ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির ছত্রছায়ায় এরকম হত্যাকাণ্ড ও উন্মাদনা নিত্যনৈমিত্তিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে।

সোহাগের এই হত্যাকাণ্ডটি ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির বিরুদ্ধে জনগণের জেগে উঠার তাগিদের আরেকটি দৃষ্টান্ত হয়ে রইল। ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির ফ্লাগশিপ দল-আওয়ামী লীগ পতিত হাসিনার নেতৃত্বে বিগত পনের বছরের শাসনামলে বিশ্বজিত, আবরার ফাহাদের নৃশংস হত্যাকাণ্ডসহ অসংখ্য উন্মাদনার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছিল। বর্তমানে বিএনপিগোষ্ঠী ইতিমধ্যেই হাসিনার পদাঙ্ক অনুসরণের যথেষ্ট পরিমাণে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছে। কারণ, পশ্চিমাদের উদ্ভাবিত এই ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির মূল লাইফ-লাইন হচ্ছে অর্থ-পেশিশক্তি ও ক্ষমতা, যার কারণে ক্ষমতালোভী, উন্মাদ ও দূর্নীতিগ্রস্থ নরপিশাচরাই এই রাজনীতির চারপাশ ঘিরে থাকে। ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি মানেই স্বার্থের রাজনীতি- যেখানে আল্লাহ্‌ ﷻ-কে ভয় করা, পরকালে বিচারের মুখামুখি হওয়া এবং আল্লাহ্‌’র সন্তুষ্টি অর্জন করে জান্নাত অর্জন করার কোন সম্পর্ক নাই। যার কারণে গত দশকের পর দশক ধরে শাসকগোষ্ঠীর চেহারা পরিবর্তন হলেও জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি।

এদেশের ধর্মনিরপেক্ষতার অনুসারীর “ইয়াং তুর্ক”রা বিএনপিকে নব্য-ফ্যাসিস্ট আখ্যা দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির কুৎসিত চেহারাকে আড়াল করতে চায় এবং রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে চায়। প্রশ্ন হচ্ছে, ধর্মনিরপেক্ষ বিএনপি কীভাবে ধর্মনিরপেক্ষ আওয়ামী লীগ থেকে আলাদা হবে? এবং তাদের ধর্মনিরপেক্ষ দলও কীভাবে ভিন্ন কিছু হবে? ইতিমধ্যে তাদের কর্মকাণ্ডে আওয়ামী-বিএনপি এর চিরাচরিত রাজনীতি হতে ভিন্ন কিছু জনগণ প্রত্যক্ষ করেনি। একজন বহুল আলোচিত সাংবাদিক এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে বিএনপি’র অভ্যন্তরীণ কোন্দল বলে আখ্যা দিয়ে, ঘটনাটিকে জনগণের ইস্যু থেকে বিএনপি’র ইস্যু গণ্য করে জনগণের ক্ষোভকে আড়ালের অপচেষ্টা করেছে; ঠিক যেমন বিএনপি এটিকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে নিন্দা জানিয়েছে। অথচ গত একবছরে তাদের শত শত নেতা-কর্মী ক্ষমতার দ্বন্দ্বে নিহত হয়েছে। যে রাজনীতি নেতা-কর্মীদের মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি করতে পারে না, সে রাজনীতি কীভাবে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করবে? যে রাজনীতি উন্নত চরিত্রের নেতৃত্বের পরিবর্তে দূর্নীতিগ্রস্থ নেতৃত্ব তৈরি করে, সে রাজনীতি কীভাবে জনগণের দেখভাল করবে? এভাবেই ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিক ও বুদ্ধিজীবি গোষ্ঠী তাদের রাজনৈতিক দর্শন ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের দেউলিয়াত্বকে ধামাচাপা দিয়ে যাচ্ছে। জনগণ অনেক ত্যাগের বিনিময়ে যালিম হাসিনার পতন ঘটিয়েছে; যখন জনগণ নতুন বাংলাদেশে ইসলাম, জনগণের স্বার্থ রক্ষা এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষাকে ভিত্তি করে রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দাবী করছে, তখন পশ্চিমাদের অনুগত রাজনীতিক ও বুদ্ধিজীবি গোষ্ঠী সংস্কারের নামে সেই একই নষ্ট ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক বন্দোবস্তকে জনগণের উপর অব্যাহত রাখতে তৎপর। আল্লাহ্‌ ﷻ বলেন, ﴿وَإِذَا قِيلَ لَهُمْ لاَ تُفْسِدُوا فِي الأَرْضِ قَالُوا إِنَّمَا نَحْنُ مُصْلِحُونَআর যখন তাদেরকে বলা হয়, তোমরা দুনিয়ার বুকে ফাঁসাদ সৃষ্টি করো না, তারা বলে, ‘আমরাতো কেবল সংস্কারকারী [সূরা আল-বাকারাহ্‌: ১১]।

ইসলামে রাজনীতি একটি পবিত্র দায়িত্ব, যাকে বলা হয় ‘সিয়াসাত’। যার উদ্দেশ্য হচ্ছে ইসলামী সংবিধান বাস্তবায়নের মাধ্যমে জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করা, ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা, বিদেশী শক্তির সামরিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক আধিপত্য থেকে মুসলিম উম্মাহ্‌-কে রক্ষা করা; সর্বোপরি ইসলামের সত্য আদর্শকে পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেয়া। রাসূলুল্লাহ্‌ ﷺ বলেছেন, বনী ইসরাঈলদেরকেসিয়াসাতকরতেন নবীগণ যখনই একজন নবী মারা যেতেন তার স্থলে অপর নবীর আগমন ঘটত তবে আমার পরে আর কোনো নবী নেই আমার পরে খলীফাগণ আসবেন, আর তাদের সংখ্যা হবে অনেক [বুখারী ও মুসলিম]। পশ্চিমা কাফির উপনিবেশবাদীদের চাপিয়ে দেয়া ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি মুসলিম উম্মাহ্‌’র উপর বিপর্যয়। এই ব্যবস্থার অধীনে বসবাস করে আমরা একদিকে সোহাগের মত আমাদের অসংখ্য ভাই-বোনের নৃশংস মৃত্যুর সাক্ষী হচ্ছি এবং প্রতিনিয়ত আমাদের প্রতি আল্লাহ্‌ ﷻ-এর ক্রোধকে বৃদ্ধি করছি। জগণকে খিলাফত প্রতিষ্ঠার রাজনীতিতে নিষ্ঠাবান দল হিযবুত তাহ্রীর-এর সাথে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। একমাত্র ইসলামী রাজনীতি (সিয়াসাত) মুসলিমদেরকে হানাহানী-মারামারী এবং চাঁদাবাজি-স্বার্থের রাজনীতি থেকে মুক্ত করে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করবে।

 

 

 

হিযবুত তাহ্রীর, উলাই‘য়াহ্‌ বাংলাদেশএর মিডিয়া অফিস