ভারত কর্তৃক বন্দুকের মুখে মুসলিমদের বাংলাদেশে নির্বাসনের প্রতিবাদে হিযবুত তাহ্রীর, উলাই‘য়াহ্ বাংলাদেশ-এর বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
بسم الله الرحمن الرحيم
ভারত কর্তৃক বন্দুকের মুখে মুসলিমদের বাংলাদেশে নির্বাসনের প্রতিবাদে হিযবুত তাহ্রীর, উলাই‘য়াহ্ বাংলাদেশ–এর বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল
হিযবুত তাহ্রীর, উলাই‘য়াহ্ বাংলাদেশ, আজ শুক্রবার (৪ জুলাই, ২০২৫) বাদ জুমু‘আ ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন মসজিদ প্রাঙ্গণে ভারত কর্তৃক অব্যাহতভাবে বন্দুকের মুখে মুসলিমদের বাংলাদেশে নির্বাসনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করে। সমাবেশগুলোতে হিযবুত তাহ্রীর–এর বিভিন্ন সদস্য বক্তৃতা প্রদান করেন এবং সমাবেশ পরবর্তী মিছিলের মাধ্যমে শেষ।
মোদী সরকার সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের মুসলিমদের অবৈধ অভিবাসী আখ্যা দিয়ে পশুর মত আচরণ করছে, তাদের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দিয়ে বাস্তুচ্যুত করছে এবং জোরপূর্বক বাংলাদেশে নির্বাসনে পাঠাচ্ছে। বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তাগণ হিন্দুত্ববাদী ভারতের এই আচরণকে অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্র ইসরায়েলের সাথে তুলনা করেন। বক্তাগণ বর্তমান ধর্মনিরপেক্ষ শাসকগোষ্ঠী ও বুদ্ধিজীবিদের সমালোচনা করে বলেন, তারা ভারতের এই আগ্রাসী আচরণকে যালিম হাসিনার পতনের পর বাংলাদেশের সাথে ভারতের বৈরী সম্পর্কের ফল হিসেবে আখ্যা দিয়ে প্রকৃত সত্যকে লুকানোর অপচেষ্টা করছে। যদিও সীমান্ত হত্যা, পানি আগ্রাসন, ভারতের অভ্যন্তরে মুসলিমদের নির্যাতন, ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদ ভেঙ্গে মন্দির নির্মাণ থেকে শুরু করে হাজার–বছরের মুসলিম শাসনের ঐতিহ্য মুছে ফেলা, আওরঙ্গজেবের কবর উপড়ে ফেলার দাবী জানানোর মত স্পর্ধা দেখানো, নতুন নাগরিকত্ব আইন (CAA) ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (NRC) প্রণয়ন, ইত্যাদি ঘৃণ্য আচরণ অনেক আগে থেকে চলমান রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, হিন্দুত্ববাদী ভারতের এই আচরণ ভারতের মুসলিমদেরকে রাষ্ট্রহীন করা এবং তাদের পরিচয় নিশ্চিহ্ন করার ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার একটি অংশ, যেভাবে অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্র ফিলিস্তিনে অব্যাহতভাবে করে যাচ্ছে। আল্লাহ্ ﷻ বলেন, “আপনি অবশ্যই ইহুদী এবং মুশরিকদেরকে মুসলিমদের প্রতি শত্রুতায় সমগ্র মানবমন্ডলীর মধ্যে সবচেয়ে কঠোর পাবেন”[সূরা আল–মায়িদাহ্: ৮২]।
বক্তাগণ হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র ভারত কর্তৃক মুসলিম এবং ইসলামের বিরুদ্ধে এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের কারণ হিসেবে দুইটি বিষয়কে তুলে ধরেন। প্রথমতঃ এই অঞ্চলের মুসলিমগণ একই ঈমান ও রক্তের বন্ধনে আবদ্ধ হলেও কাফির উপবেশবাদী ব্রিটেন মুসলিমদেরকে দুর্বল করতে জাতীয়তাবাদের (ভারতীয়, বাংলাদেশী, পাকিস্তানী, ইত্যাদি) ভিত্তিতে বিভক্ত করেছিল, এবং এই অঞ্চলের জনগোষ্ঠীর উপর তাদের প্রক্সি হিসেবে ধর্মনিরপেক্ষ শাসকদের চাপিয়ে দিয়েছে। ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিক ও বুদ্ধিজীবীরা এতটাই ভন্ড যে, তারা বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু নির্যাতিত হলে তার বিরুদ্ধে বাঘের মত গর্জন করে, আর ভারতে ‘সংখ্যালঘু’ মুসলিমদের উপর যুলুম–নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিড়ালের মত মেও–মেও করে। অথচ রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেনঃ “সে আমাদের দলভুক্ত নয় যে আসাবিয়্যাহ্’র (জাতীয়তাবাদ) কারণে মৃত্যুবরণ করে; সে আমাদের দলভুক্ত নয়, যে আসাবিয়্যাহ্’র দিকে আহ্বান করে; সে আমাদের দলভুক্ত নয়, যে আসাবিয়্যাহ্’র কারণে যুদ্ধ করে” (আবু দাউদ)। দ্বিতীয়ত, ভারত বিশ্বমোড়ল আমেরিকার আঞ্চলিক চৌকিদার, বিশেষ করে ইন্দো–প্যাসিফিক অঞ্চলের অন্যতম সামরিক জোট কোয়াডের সদস্য। মুসলিম উম্মাহ্’কে দমনে কাফির উপনিবেশবাদী আমেরিকা মধ্যপ্রাচ্যে যেমন অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে ব্যবহার করে, তেমনি দক্ষিণ এশিয়ায় মুশরিক রাষ্ট্র ভারতকে ব্যবহার করে।
বক্তাগণ মুসলিম হিসেবে আমাদের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে বলেন: বিশ্বের যেকোন ভূখণ্ডে মুসলিমগণ আক্রান্ত হলে তাদেরকে সাহায্য করা অন্য সকল মুসলিমদের উপর আবশ্য কর্তব্য। আল্লাহ্ ﷻ বলেন, “আর যদি তারা দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের সাহায্য কামনা করে, তবে তাদের সাহায্য করা তোমাদের অবশ্য কর্তব্য” [সূরা আল–আনফালঃ ৭২]। বর্তমান জাতীয়তাবাদী ধর্মনিরপেক্ষ মুসলিম শাসকগোষ্ঠী মুসলিম উম্মাহ্’র অভিভাবক নয়; তারা ফিলিস্তিন–কাশ্মির–আরকানের মুসলিমদের সাহায্যে আমাদের সামরিক বাহিনীকে প্রেরণ করে না, অথচ আমেরিকার আহ্বানে জাতিসংঘের নেতৃত্বে সামরিক বাহিনী প্রেরণ করে এবং রক্ত ঝরায়।
পরিশেষে বক্তাগণ মুসলিমদের আহ্বান করে বলেন: মুসলিম উম্মাহ্’র প্রকৃত অভিভাবক–খিলাফত ব্যবস্থার অনুপস্থিতির কারণে মুসলিমগণ বিশ্বব্যাপী নির্যাতিত। রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন, “নিশ্চয়ই ইমাম (খলিফা) হচ্ছেন কমান্ডার, যার অধীনে মুসলিমরা যুদ্ধ করে এবং নিজেদের আত্মরক্ষা করে” [সহীহ্ মুসলিম]। তাই আমাদেরকে এসব দালাল শাসকদের দিকে তাকিয়ে না থেকে খিলাফত প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সামরিক বাহিনীতে কর্মরত মুসলিম উম্মাহ্’র নিষ্ঠাবান সন্তানদেরকে খিলাফত প্রতিষ্ঠায় মুসলিম উম্মাহ্’র নিষ্ঠাবান দল, হিযবুত তাহ্রীর–কে নুসরাহ্ (ক্ষমতা) প্রদান করার আহ্বান জানাতে হবে।
হিযবুত তাহ্রীর, উলাই‘য়াহ্ বাংলাদেশ–এর মিডিয়া অফিস