working to establish khilafah

হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র ভারত কর্তৃক বন্দুকের মুখে মুসলিমদের বাংলাদেশে নির্বাসন অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্র ইসরায়েলের মতোই একটি প্রকাশ্য শত্রুতা

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

بسم الله الرحمن الرحيم

হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র ভারত কর্তৃক বন্দুকের মুখে মুসলিমদের বাংলাদেশে নির্বাসন অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্র ইসরায়েলের মতোই একটি প্রকাশ্য শত্রুতা

হিন্দুত্ববাদী মোদী সরকার ভারতের মুসলিমদের বাড়িঘর গুঁড়িয়ে দিয়ে বাস্তুচ্যুত করছে ও অন্যায়ভাবে জোরপূর্বক নির্বাসনে পাঠানোসহ অব্যাহত যুলুম-নির্যাতনের মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি করছে। যার মাধ্যমে মুলত তারা অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাইলের পদাঙ্ক অনুসরণ করছে। সম্প্রতি তারা শত শত মুসলিমদের ‘বন্দুকের মুখে’বাংলাদেশে পাঠাচ্ছে; এমনকি তারা তাদের তথাকথিত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক আইনী প্রক্রিয়ার তোয়াক্কা না করে ভারতীয় মুসলিমদের অবৈধ অভিবাসী আখ্যা দিয়ে পশুর মত আচরণ করছে এবং বন্দুকের নলের মুখে বাংলাদেশে ফেরত পাঠাচ্ছে। তারা আমাদের সাথে পশুর মতো আচরণ করেছিল – রহিমা খাতুন নামে একজন বলেন। আমরা প্রতিবাদ করেছিলাম যে আমরা ভারতীয়, কেন আমরা বাংলাদেশে প্রবেশ করব? কিন্তু তারা আমাদের বন্দুক দেখিয়ে হুমকি দিয়েছিল, ‘যদি তোমরা অন্য দিকে না যাও, তাহলে আমরা তোমাদের গুলি করবভারতীয় দিক থেকে চারটি গুলির শব্দ শোনার পর, আমরা খুব ভয় পেয়েছিলাম এবং দ্রুত সীমান্ত পার হয়ে হেঁটে চলে গিয়েছিলাম [এফপি প্রতিবেদন]।

অনেকে এটিকে বর্তমানে বাংলাদেশের সাথে ভারতের বৈরী সম্পর্কের ফল হিসেবে আখ্যা দিয়ে প্রকৃত সত্যকে লুকানোর অপচেষ্টা করেছে। প্রকৃতপক্ষে, এটি ভারতের মুসলিমদেরকে রাষ্ট্রহীন করা এবং ভারতে মুসলিমদের পরিচয় নিশ্চিহ্ন করার ধারাবাহিক প্রক্রিয়ার একটি অংশ, যেভাবে অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্র অব্যাহতভাবে করে যাচ্ছে ফিলিস্তিনে। বিশ কোটির বেশী মুসলিম অধ্যুষিত ভারতে, ঐতিহাসিক বাবরী মসজিদ ভেঙ্গে মন্দির নির্মাণ থেকে শুরু করে হাজার-বছরের মুসলিম শাসনের ঐতিহ্য মুছে ফেলা, আওরঙ্গজেবের কবর উপড়ে ফেলা, নতুন নাগরিকত্ব আইন (CAA) ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (NRC) প্রণয়ন করে মুসলিমদের পরিচয় নিশ্চিহ্ন করা এবং সবশেষে নতুন ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল পাশ করা মুসলিমদেরকে পদ্ধতিগতভাবে (systematically) রাষ্ট্রহীন করার অন্যতম উদাহরণ। আল্লাহ্‌ ﷻ বলেন, আপনি অবশ্যই ইহুদী এবং মুশরিকদেরকে মুসলিমদের প্রতি শত্রুতায় সমগ্র মানবমন্ডলীর মধ্যে সবচেয়ে কঠোর পাবেন[সূরা আল-মায়িদাহ্‌: ৮২]।

প্রশ্ন হচ্ছে, মুশরিক রাষ্ট্র ভারত কি কারণে এই দুঃসাহস দেখাচ্ছে? প্রথমতঃ এই অঞ্চলের মুসলিমগণ একই বিশ্বাস ও রক্তের বন্ধনে আবদ্ধ হলেও কাফির উপবেশবাদী ব্রিটেন মুসলিমদেরকে জাতীয়তাবাদের (ভারতীয়, বাংলাদেশী, পাকিস্তানী, ইত্যাদি) ভিত্তিতে বিভক্ত করে দুর্বল করেছে, এবং আমাদের উপর তাদের ধর্মনিরপেক্ষ দালাল শাসকদের চাপিয়ে দিয়েছে যারা মুসলিমদের রক্ষায় সর্বতোভাবে কখনো এগিয়ে আসে না। যার কারণে অন্তর্বর্তী সরকারের নিরাপত্তা উপদেষ্টা বলেছে, যদি প্রমাণ হয় তারা বাংলাদেশের নাগরিক, তাহলে গ্রহণ করব, আবার দেশের সর্ববৃহৎ ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক দলের প্রধান তার অবস্থান পরিষ্কার করে বলেছে, “দিল্লি নয় পিন্ডি নয়, নয় অন্য কোন দেশ, সবার আগে বাংলাদেশ!” এছাড়া ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিক ও বুদ্ধিজীবীরা এতটাই ভন্ড এবং মুসলিমদের প্রতি ঘৃণা পোষণ করে যে, তারা বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু নির্যাতিত হলে তার বিরুদ্ধে বাঘের মত গর্জন করে, আর ভারতে ‘সংখ্যালঘু’ মুসলিমদের উপর যুলুম-নির্যাতনের বিরুদ্ধে বিড়ালের মত মেও-মেও করে কোন রকমে ইজ্জত রক্ষা করে। অথচ রাসূলুল্লাহ্‌ ﷺ বলেছেনঃ সে আমাদের দলভুক্ত নয় যে আসাবিয়্যাহ্‌’ (জাতীয়তাবাদ) কারণে মৃত্যুবরণ করে; সে আমাদের দলভুক্ত নয়, যে আসাবিয়্যাহ্‌’ দিকে আহ্বান করে; সে আমাদের দলভুক্ত নয়, যে আসাবিয়্যাহ্‌’ কারণে যুদ্ধ করে (আবু দাউদ)। দ্বিতীয়ত, ভারত বিশ্বমোড়ল আমেরিকার আঞ্চলিক চৌকিদার, বিশেষ করে ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের অন্যতম সামরিক জোট কোয়াডের সদস্য। মুসলিম উম্মাহ্‌’কে দমনে কাফির উপনিবেশবাদী আমেরিকা মধ্যপ্রাচ্যে যেমন অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্র ইসরায়েলকে ব্যবহার করে, তেমনি দক্ষিণ এশিয়ায় মুশরিক রাষ্ট্র ভারতকে ব্যবহার করে।

হে মুসলিমগণ, আল্লাহ্‌ ﷻ বলেন, আর যদি তারা দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের সাহায্য কামনা করে, তবে তাদের সাহায্য করা তোমাদের অবশ্য কর্তব্য[সূরা আল-আনফালঃ ৭২]। বিশ্বের যেকোন ভূখণ্ডে মুসলিমগণ আক্রান্ত হলে তাদেরকে সাহায্য করা অন্য মুসলিমদের উপর আবশ্য কর্তব্য। আপনারা প্রত্যক্ষ করেছেন, এসব জাতীয়তাবাদী ধর্মনিরপেক্ষ মুসলিম শাসকগোষ্ঠী ফিলিস্তিন-কাশ্মির-আরকানের মুসলিমদের সাহায্যে আমাদের সামরিক বাহিনীকে প্রেরণ করে না, অথচ আমেরিকার আহ্বানে জাতিসংঘের নেতৃত্বে সামরিক বাহিনী প্রেরণ করে এবং রক্ত ঝরায়। তারা মুসলিম উম্মাহ্’র অভিভাবক নয় বরং বিশ্বাসঘাতক। রাসূলুল্লাহ্‌ ﷺ বলেছেন, নিশ্চয়ই ইমাম (খলিফা) হচ্ছেন কমান্ডার, যার অধীনে মুসলিমরা যুদ্ধ করে এবং নিজেদের আত্মরক্ষা করে [সহীহ্‌ মুসলিম]। মুসলিম উম্মাহ্‌’র প্রকৃত অভিভাবক–খিলাফত ব্যবস্থার অনুপস্থিতির কারণে মুসলিমগণ বিশ্বব্যাপী নির্যাতিত। তাই আমাদেরকে এসব দালাল শাসকদের দিকে তাকিয়ে না থেকে খিলাফত প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। সামরিক বাহিনীতে কর্মরত মুসলিম উম্মাহ্‌’র নিষ্ঠাবান সন্তানদেরকে খিলাফত প্রতিষ্ঠায় মুসলিম উম্মাহ্‌’র নিষ্ঠাবান দল, হিযবুত তাহ্‌রীর-কে নুসরাহ্‌ (ক্ষমতা) প্রদান করার আহ্বান জানাতে হবে। আপনাদেরকে স্মরণ রাখতে হবে, এই কাজটি আপনাদের ঈমানী দায়িত্ব।

﴿فِي وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا مِنْكُمْ وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَيَسْتَخْلِفَنَّهُم فِي الأَرْضِ كَمَا اسْتَخْلَفَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ وَلَيُمَكِّنَنَّ لَهُمْ دِينَهُمُ الَّذِي ارْتَضَى لَهُمْ وَلَيُبَدِّلَنَّهُمْ مِنْ بَعْدِ خَوْفِهِمْ أَمْنًا يَعْبُدُونَنِي لاَ يُشْرِكُونَ بِي شَيْئًا وَمَنْ كَفَرَ بَعْدَ ذَلِكَ فَأُوْلَئِكَ هُمْ الْفَاسِقُونَ

তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে সৎকাজ করে আল্লাহ্ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন যে, তিনি অবশ্যই তাদেরকে যমীনে খিলাফত দান করবেন, যেমন তিনি খিলাফত দান করেছেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে এবং তিনি অবশ্যই তাদের জন্য প্রতিষ্ঠিত করবেন তাদের দ্বীনকে যা তিনি তাদের জন্য পছন্দ করেছেন এবং তাদের ভয়ভীতির পরে তাদেরকে নিরাপত্তা দান করবেন তারা আমার ইবাদত করবে, আমার সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না আর এরপর যারা কুফরী করবে তারাই ফাসিক।[সূরা আন-নুরঃ ৫৫]

হিযবুত তাহ্রীর, উলাই‘য়াহ্‌ বাংলাদেশএর মিডিয়া অফিস