working to establish khilafah

শুধুমাত্র অনলাইন সম্মেলনের কারণে হিযবুত তাহ্রীর-এর সদস্যকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি প্রমাণ করে, হাসিনা সরকার তার অপসারণ এবং উপনিবেশবাদীদের আধিপত্যের অবসানে সামরিক বাহিনীর প্রতি আহ্বানের ভয়ে ভীত

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

بسم الله الرحمن الرحيم

শুধুমাত্র অনলাইন সম্মেলনের কারণে হিযবুত তাহ্রীর-এর সদস্যকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি প্রমাণ করে, হাসিনা সরকার তার অপসারণ এবং উপনিবেশবাদীদের আধিপত্যের অবসানে সামরিক বাহিনীর প্রতি আহ্বানের ভয়ে ভীত

 

অত্যাচারী হাসিনা সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী গত বুধবার, ০৬/১২/২০২৩ তারিখে হিযবুত তাহ্‌রীর-এর সদস্য তৌহিদুর রহমানকে “যালিম হাসিনা এবং উপনিবেশবাদী মার্কিনীদের কবল থেকে মুক্তির উপায় শীর্ষক অনলাইন রাজনৈতিক সম্মেলনে বক্তা হওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার করেছে, যা গত ৩০শে সেপ্টেম্বর ২০২৩ তারিখে আল-ওয়াকিয়া টিভি থেকে সম্প্রচার করা হয়েছিল। সেই সম্মেলনে একজন বক্তা হিসাবে তৌহিদুর বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে হাসিনা সরকারের ষড়যন্ত্র নির্ভীকভাবে প্রকাশ করেছিলেন। তিনি ব্যাখ্যা করেছিলেন, কিভাবে সরকার আমাদের দেশে আমেরিকার আধিপত্যকে অনুমোদন করছে এবং জনগণকে প্রতারিত করে দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দিচ্ছে। তিনি স্পষ্টভাবে বলেছিলেন কিভাবে হাসিনা একদিকে বাংলাদেশে আমেরিকার হস্তক্ষেপের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার নাটক করছে এবং অন্যদিকে ক্ষমতায় টিকে থাকতে এই কাফির-উপনিবেশবাদী শক্তির সাথে গোপনে আঁতাত করছে। তাকে গ্রেফতারের ঘটনা এমন একটি সময়ে ঘটলো যখন সরকার কাফিরদের মোড়ল আমেরিকাকে তুষ্ট করতে চাইছে, তাই তারা দাওয়াহ্‌ বহনকারীদের দমন-পীড়নে নেমেছে যারা জনগণকে কাফির উপনিবেশবাদীদের আধিপত্য থেকে মুক্তির উপায় দেখাচ্ছেথে। সেসব প্রকৃত রাজনীতিবিদদের পিছু লেগেছে যারা ফিলিস্তিন ও আল-আকসা মসজিদকে মুক্ত করবে, যা স্পষ্ট ইঙ্গিত দেয় এই সরকার কাফির রাষ্ট্র আমেরিকা-বৃটেন-ইসরাইলের ভাই। এটা এখন পরিষ্কার যে তৌহিদুর সম্মেলনে যা প্রকাশ করেছেন তা সত্য, কারণ তার বক্তব্য সরকারকে ভীত করে তুলেছে। অন্যথায় কেন এই সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী সম্মেলন বক্তাদের গ্রেফতার করতে এত মরিয়া হয়ে উঠেছে! আমরা হাসিনা সরকারকে সতর্ক করে দিয়ে বলতে চাই, হিযবুত তাহ্‌রীর-এর নিষ্ঠাবান ও সত্যবাদী দাওয়াহ্ বহনকারীকে গ্রেফতার করে তারা আল্লাহ্ আল-কাহহার-এর ক্রোধ ছাড়া আর কিছুই অর্জন করছে না। আমরা হাসিনা সরকারকে সতর্ক করে দিতে চাই, যাতে তারা  দুনিয়া ও আখেরাতে আল্লাহ্’র শাস্তি অনুধাবন করে এবং তৌহিদুরসহ খিলাফতের দাওয়াহ্‌ বহনকারী হিযবুত তাহ্‌রীর-এর সকল নেতা-কর্মীদের অবিলম্বে মুক্তি প্রদান করে: “যালিমরা যা করছে সে ব্যাপারে তোমরা আল্লাহ্কে উদাসীন মনে করো না তবে তিনি তাদেরকে সেদিন পর্যন্ত অবকাশ দেন যেদিন আতঙ্কে তাদের চক্ষু হবে স্থির[সূরা ইব্রাহিম: ৪২]। সরকারের উপলব্ধি করা উচিত যে হিযবুত তাহ্‌রীর এই পৃথিবীতে সত্তর বছরেরও বেশি সময় ধরে অবিচলতার সাথে কাজ করছে, আর এসময়ের মধ্যে অনেক অত্যাচারী শাসক ও সরকার যারা হিযবুত তাহ্‌রীর-এর সদস্যদের উপর অত্যাচার করেছে তারা আল্লাহ্’র ইচ্ছায় কালের গহ্বরে হারিয়ে গেছে। সুতরাং, আমরা নিশ্চিত করছি হিযবুত তাহ্‌রীর-এর কর্মীগণ গ্রেফতার বা কারাগারবরণ দ্বারা নিবৃত্ত হবে না। বরং, প্রতিটি দিন অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথে আমরা পশ্চিমা আধিপত্য, এর শাসন ব্যবস্থা, এবং এর নিকৃষ্ট দালালদের উৎখাত করার জন্য আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হব, যতক্ষণ না ন্যায়নিষ্ঠ খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন, আমার উম্মতের মধ্যে সর্বদা এমন একটি দল (তাইফা) থাকবে যারা হক্বের উপর থাকবে, বিজয়ী হবে, এবং তাদের সাথে মতভেদকারীদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ হবে না, যতক্ষন পর্যন্ত না আল্লাহ্ আদেশ আসে (আবু দাউদ, আহমদ)।

হে নিরাপত্তা বাহিনীর অফিসারগণ, আমরা আপনাদের প্রতি জোরালোভাবে আহ্বান জানাই, মুসলিম হিসেবে এটা আপনাদের দায়িত্ব যে আপনারা ইসলামী দাওয়াহ্’র পক্ষে থাকবেন। অত্যাচারের অশুভ পরিণামকে ভয় করুন, যেমনটি রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন, কিয়ামতের দিন জুলুম হবে অন্ধকার। খিলাফত প্রতিষ্ঠায় নিয়োজিত হিযবুত তাহ্‌রীর-এর নিষ্ঠাবান কর্মীদের হয়রানি, গ্রেফতার, ও নির্যাতনের সরকারি অন্যায় আদেশ অমান্য করুন। রাসূলুল্লাহ্‌ ﷺ-এর নির্দেশ স্মরণ করুন: “আল্লাহ্‌’র আনুগত্যের বাইরে গিয়ে সৃষ্টির প্রতি কোন আনুগত্য নেই [আহমাদ]। ভুলে যাবেন না যে জনগণের উপর অত্যাচারের কাজে আপনাদের সহযোগী ভূমিকার জন্য আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা আপনাদেরকে জবাবদিহি করবেন: যারা মুমিন পুরুষ নারীকে যুলুমনিপীড়ন রেছে, অতঃপর তওবা করেনি, তাদের জন্যে রয়েছে জাহান্নামের শাস্তি, এবং আগুনে দগ্ধ হওয়ার যন্ত্রণা [সূরা আল-বুরুজ: ১০]। আপনাদের মধ্যে অনেকেই যুক্তি দিয়ে থাকেন যে আপনারা আপনাদের সিনিয়রদের আদেশ মানতে বাধ্য, কিন্তু এই যুক্তি আপনাদেরকে শাস্তি থেকে রেহাই দেবে না, কারণ আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন: আর তারা বলবে, হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা আমাদের নেতাদের আমাদের প্রধানদের  আনুগত্য করেছিলাম, এবং তারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল[সূরা আল-আহযাব: ৬৭]। তিনি (সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা) আরও বলেন: বিভ্রান্ত অনুসারীরা বলবে, ‘হায়! যদি একটিবার (পৃথিবীতে) ফিরে যাবার সুযোগ আমাদের ঘটত, তাহলে আমরাও তাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতাম, যেমন তারা আমাদের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করল!’ এভাবে আল্লাহ্ তাদের কার্যাবলীকে তাদের জন্য আক্ষেপরূপে দেখাবেন, এবং তারা কখনও জাহান্নাম থেকে বের হতে পারবে না [সূরা বাকারা: ১৬৭]।

হে সামরিক বাহিনীর নিষ্ঠাবান অফিসারগণ! এই যালিম সরকারের কবল থেকে মুক্তি লাভের জন্য দেশের মানুষ কিভাবে ব্যাকুল হয়ে আছে তা আপনারা ভালোভাবেই জানেন। এছাড়াও আপনারা প্রত্যক্ষ করছেন, কিভাবে এই অত্যাচারীরা নিষ্ঠাবান দাওয়াহ্ বহনকারীদেরকে গ্রেফতার করছে, কেবলমাত্র কাফির-উপনিবেশবাদীদের কবল থেকে দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পক্ষে কথা বলার জন্য। তৌহিদুর এবং তার মতো ব্যক্তিগণ দাওয়াহ্ বহনকারী হিসাবে তাদের নিজেদের অবস্থান থেকে সাধ্যমত সর্বোচ্চ চেষ্টা করছে। রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন, তোমাদের মধ্য হতে যে কেউ কোন মন্দ কাজ হতে দেখে, সে যেন তা হাত দিয়ে পরিবর্তন করে; আর যদি সে তা করতে সমর্থ না হয়, তবে যেন সে তার জিহ্বা দিয়ে [সেটার প্রতিবাদ করে]; এবং যদি সে তা করতে সক্ষম না হয়, তবে সে যেন তার হৃদয় দিয়ে [ঘৃণা করে]- আর এটি ঈমানের দুর্বলতম অবস্থা [মুসলিম]। আমাদের উপদেশের প্রতি মনোযোগ দিন, হে অফিসারগণ! বেসামরিক নাগরিক হিসেবে আমরা কেবল আমাদের বক্তব্যের মাধ্যমে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করতে পারি। কিন্তু আপনাদের আছে সামরিক শক্তি এবং হাত দিয়ে পরিবর্তন আনার সামর্থ্য, কারণ আপনাদের রয়েছে নিপীড়ন দূর করার জন্য প্রয়োজনীয় সামরিক সক্ষমতা। অতএব, খিলাফতের আহ্বানকারীদের সংগ্রাম ও ত্যাগ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে তাদের উপর সরকারের নিপীড়ন দূর করতে এগিয়ে আসুন। আজকের জামানার সা‘দ বিন মুয়ায (রা.)-এর ভূমিকা পালন করুন, এবং অত্যাচারী শাসনের অবসান ঘটাতে ও খিলাফতে রাশিদাহ্ পুনঃপ্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে হিযবুত তাহ্রীর-এর হাতে নুসরাহ্ প্রদানের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন, যা আমাদের নবী ﷺ-এর ওয়াদা। রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন: নবুয়্যত তোমাদের সাথে ততদিন টিকে থাকবে যতদিন আল্লাহ্ চান অতঃপর আসবে নবুয়্যতের আদলে খিলাফত, এবং তা ততদিন টিকে থাকবে যতদিন আল্লাহ্ চান, তারপর তিনি চাইলে তা তুলে নেবেন অতঃপর আসবে বংশানুক্রমিক শাসন, এবং তা ততদিন টিকে থাকবে যতদিন আল্লাহ্ চান, তারপর তিনি চাইলে তা তুলে নেবেন অতঃপর আসবে অত্যাচারের শাসন, এবং আল্লাহ্ যতদিন চান ততদিন তা চলবে, তারপর তিনি চাইলে তার অবসান ঘটাবেন অতঃপর আসবে খিলাফত, নবুয়্যতের আদলে এরপর তিনি নীরব হয়ে গেলেন (আহমাদ কর্তৃক বর্ণিত)।

 

হিযবুত তাহ্রীর / উলাই‘য়াহ্‌ বাংলাদেশএর মিডিয়া অফিস