হাসিনা সরকার মুশরিক রাষ্ট্র ভারতের পক্ষেই অবস্থান গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যখন আমাদের প্রাণপ্রিয় নবীর ﷺ সম্মান হিন্দুত্ববাদী শাসকদের আক্রমণের শিকার হচ্ছে!
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
بسم الله الرحمن الرحيم
হাসিনা সরকার মুশরিক রাষ্ট্র ভারতের পক্ষেই অবস্থান গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যখন আমাদের প্রাণপ্রিয় নবীর ﷺ সম্মান হিন্দুত্ববাদী শাসকদের আক্রমণের শিকার হচ্ছে!
হিযবুত তাহ্রীর/উলাই’য়াহ্ বাংলাদেশ, আজ শুক্রবার (১০/০৬/২০২২) বাদ জুমু‘আ রাসূলুল্লাহ্ ﷺ এবং উম্মুল মু‘মিনিন আয়েশা (রা.)-এর অবমাননার প্রতিবাদে ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন মসজিদ প্রাঙ্গণে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে।
সমাবেশে বক্তাগণ বলেন: ভারতের ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) উচ্চপদস্থ মুশরিক নেতা নরাধম নুপুর শর্মা (জাতীয় মুখপাত্র) ও নবীন কুমার জিন্দাল (দিল্লি মিডিয়া অপারেশন হেড) গত সপ্তাহে একটি টেলিভিশন বিতর্কে আমাদের প্রাণপ্রিয় নবী ﷺ এবং উম্মুল মু’মিনিন সাইয়্যিদাহ্ আয়েশা (রা.) সম্পর্কে অশ্লীল ও অমর্যাদাকর মন্তব্য করার স্পর্ধা দেখিয়েছে। এই ঘটনার পর সমগ্র বিশ্বের মুসলিমদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ শুরু হয়েছে, তবে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার মুসলিমদের কাছ থেকে এরকম নজিরবিহীন ক্ষোভ ও প্রতিক্রিয়া আশা করেনি। মুসলিম উম্মাহ্ তাদের নবীকে ﷺ নিজেদের জীবন ও পরিবারের চেয়ে বেশি ভালবাসে, এবং ধর্মান্ধ মুশরিক শাসকেরা এখন উম্মাহ্’র এই ক্রোধ দেখে ভীত হয়ে পড়েছে। রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন: “তোমাদের কেউ ঈমানদার হতে পারবে না যতক্ষণ পর্যন্ত না সে আমাকে তার পিতা, তার সন্তান এবং সমস্ত মানবজাতির চেয়ে বেশি ভালোবাসে” (বুখারী)।
বক্তাগণ হাসিনা সরকারের নীরবতার তীব্র সমালোচনা করে বলেন: আমাদের ঈমানের উপর এই আক্রমণে বাংলাদেশের মুসলিমগণ ক্ষুব্ধ হলেও তারা এবিষয়ে হাসিনা সরকারের পাথরসম নীরবতা দেখে বিস্মিত হয়নি। এদেশের জনগণ কখনই আশা করে না যে, ধর্মনিরপেক্ষ হাসিনা সরকার আমাদের প্রাণপ্রিয় নবীর ﷺ সম্মান রক্ষায় এগিয়ে আসবে, কারণ ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে হাসিনা সরকারের অবস্থান সম্পর্কে তারা অবগত রয়েছে। জনগণ বারবার ধর্মনিরপেক্ষ হাসিনা সরকারের ভণ্ডামি প্রত্যক্ষ করেছে, কপালে ‘টিপ’ পরাকে কেন্দ্র করে ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধসমূহ রক্ষায় এই সরকার সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে, ট্রেন স্টেশনে একটি তরুণীর অশ্লীল পোশাক পরার স্বাধীনতা রক্ষায় অত্যন্ত আন্তরিকতা দেখিয়েছে, এবং হাসিনার পিতা শেখ মুজিবের বিরুদ্ধে কটুক্তির জন্য দশ বছর কারাদণ্ডের বিধান রেখে আইন পাস করেছে! কিন্তু, আমাদের প্রাণপ্রিয় নবীর ﷺ সম্মান রক্ষায় এমনকি ভান করে হলেও মুশরিকদের বিরুদ্ধে একটি শব্দও উচ্চারণের প্রয়োজনবোধ করেনি। প্রকৃতপক্ষে, তারা কেবল ক্ষমতায় থাকার জন্য কাফির ও মুশরিকদের কাছে নিজেদের দ্বীনকে বিক্রি করে দিয়েছে। আর, ব্যক্তিগতভাবে ভারতীয় পণ্য বয়কট করার আহ্বান জানানো ছাড়া অসহায় মুসলিমদের আর কিইবা করার আছে, কারণ তারা জানে মুসলিম বিশ্বের মেরুদণ্ডহীন দালাল শাসকগণ কেবল নামেমাত্র কূটনৈতিক প্রতিবাদ জানানো ছাড়া অন্য কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করবে না। তাই, এই সম্মানিত উম্মাহ্ তাদের ঈমানের অংশ হিসেবে প্রিয় নবীর ﷺ সম্মান রক্ষার জন্য তাদের সাধ্যানুযায়ী কাফির-মুশরিকদের বিরুদ্ধে লড়াই করা থেকে কখনই বিরত হবে না। রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন: “মুশরিকদের সাথে যুদ্ধ কর তোমাদের সম্পদ, তোমাদের শক্তিসামর্থ্য এবং তোমাদের জিহ্বা দিয়ে” [আবু দাউদ]। যদি সাধারণ মুসলিমগণ ভারতীয় পণ্য বয়কটের আহ্বান জানাতে পারে তবে মুসলিম শাসকেরা কেন তাদের ভূমি থেকে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতদের বহিষ্কার করতে পারে না, কিংবা তাদেরকে শিক্ষা দেয়ার জন্য মুশরিক শত্রুরাষ্ট্রের উদ্দেশ্যে শক্তিশালী মুসলিম সামরিক বাহিনী প্রেরণের নিছক হুমকিও প্রদান করতে পারে না! এসব দালাল শাসকদের নিন্দা প্রস্তাব কেবল প্রতারণামাত্র, যার মাধ্যমে তারা উম্মাহ্’র আবেগকে তাদের নিজস্ব কায়েমী স্বার্থে ব্যবহার করতে চায়।
বক্তাগণ মুসলিমদের দায়িত্বের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন: হে মুসলিমগণ! আমরা আমাদের নবীর ﷺ সম্মান রক্ষা করতে পারবো না, যদি না আমরা আমাদের সত্যিকারের অভিভাবক দ্বিতীয় খিলাফতে রাশিদাহ্ ফিরিয়ে না আনি। বিংশ শতাব্দীর ইতিহাস স্মরণ করুন, যখন রাসূলুল্লাহ্ ﷺ-এর চরিত্রকে উপহাস করে ফ্রান্স ও ব্রিটেন ভলতেয়ারের লেখা অবলম্বনে “মোহাম্মদ বা ধর্মান্ধতা” শিরোনামের একটি নাটক মঞ্চস্থ করেছিল, তখন খলিফা দ্বিতীয় আবদুল হামিদকে নাটকটি সম্পর্কে অবহিত করা হলে তিনি ফ্রান্সকে একটি গুরুতর রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়ার হুমকি দিয়েছিলেন, যা ফ্রান্সকে তাত্ক্ষণিকভাবে নাটকটি বন্ধ করতে বাধ্য করেছিল। এরপর, ব্রিটেনও সুলতানের কাছ থেকে এই চরমপত্র পাওয়ার পর নাটকটি বন্ধ করে দিয়েছিল: “আমি ইসলামী উম্মাহ্’র প্রতি একটি আদেশ জারি করব, এটা ঘোষণা করে যে ব্রিটেন আমাদের নবী ﷺ-কে আক্রমণ করছে এবং অপমান করছে। আমি জিহাদ ঘোষণা করব…”, যদিও জিহাদ করার প্রয়োজন হয়নি এবং ব্রিটেনও তথাকথিত বাক-স্বাধীনতার দাবী জানানোর সাহস পায়নি। অতএব, আমরা আপনাদের প্রতি আহ্বান জানাই, হিযবুত তাহ্রীর-এর নেতৃত্বে খিলাফত রাষ্ট্র ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টাকে ত্বরান্বিত করুন।
পরিশেষে বক্তাগণ সামরিক বাহিনীর নিষ্ঠাবান অফিসারদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন: যখন আপনাদের প্রাণপ্রিয় নবীকে ﷺ ভারতের ধর্মান্ধ মুশরিক শাসকগণ অপমান করছে তখন আপনারা ভারতের সামরিক বাহিনীর সাথে ‘সম্প্রীতি’ (পারস্পরিক ভালোবাসা) নামক যৌথ সামরিক মহড়ায় নিয়োজিত রয়েছেন! আপনাদের ঈমান কিভাবে আপনাদেরকে মুশরিক শত্রুরাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর প্রতি ‘পারস্পরিক ভালোবাসা’ প্রদর্শন করতে দেয়, যে রাষ্ট্র আপনাদের প্রিয় নবীকে ﷺ অপমান করে! আপনারা কি বুঝতে পারছেন না যে, আপনাদেরকে মুশরিকদের প্রতি ভালোবাসা জানাতে বাধ্য করে আপনাদের বিক্রি হয়ে যাওয়া জেনারেলরা আপনাদের ঈমানের পরীক্ষা নিচ্ছে, যখন আপনাদের উচিত তাদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হওয়া? এই ‘সম্প্রীতি’ মহড়াসমূহ কেবল মুশরিকগণ কর্তৃক আপনাদের বিশ্বাসের প্রতি সুস্পষ্ট বিদ্রূপ মাত্র। সতর্ক হোন, হে অফিসারগণ! আল্লাহ্ আজ্জা ওয়া জ্বাল বলেন যে, এই যুদ্ধভাবাপন্ন মুশরিকগণ কখনই আপনাদের সাথে লড়াই করা হতে বিরত হবে না, অথচ আপনারা বিক্রি হয়ে যাওয়া শাসক ও জেনারেলদের আদেশে আল্লাহ্ ও মুসলিমদের শত্রুকে ভালোবাসার সাথে আলিঙ্গন করছেন! আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন:
*يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَتَّخِذُوا عَدُوِّي وَعَدُوَّكُمْ أَوْلِيَاءَ تُلْقُونَ إِلَيْهِمْ بِالْمَوَدَّةِ وَقَدْ كَفَرُوا بِمَا جَاءَكُمْ مِنْ الْحَقِّ*
“হে মু‘মিনগণ! তোমরা আমার ও তোমাদের শত্রুদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, তোমরা তো তাদের প্রতি বন্ধুত্বের বার্তা পাঠাও, অথচ যে সত্য তোমাদের কাছে আগমন করেছে তা তারা অস্বীকার করেছে” [সুরা মুমতাহিনাহ্: ১]
হে মুহাম্মাদ বিন কাসিমের উত্তরসূরীগণ! নিদ্রা এবং পরাজিত মানসিকতা থেকে জেগে উঠুন, কারণ কেবল আপনারাই ক্ষমতার চাবিকাঠি ধারণ করেন। খিলাফতে রাশিদাহ্ পুনঃপ্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে ধর্মনিরপেক্ষ শাসকগোষ্ঠীকে অপসারণ করে সত্যবাদী ও সাহসী দল হিযবুত তাহ্রীর-কে ‘নুসরাহ্’ (ক্ষমতা) প্রদান করুন। কেবল খিলাফতই মুশরিক রাষ্ট্র ভারতকে উপযুক্ত জবাব দিতে পারে, এবং তার সমস্ত আগ্রাসন ও ধৃষ্টতার উপযুক্ত শাস্তি দিতে পারে। সুতরাং, নিম্নোক্ত ভবিষ্যদ্বাণীর বাস্তব রূপদান করার জন্য এবং নিজেদেরকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষার জন্য আপনারা আপনাদের উপর অর্পিত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করুন:
“আমার উম্মাহ্’র দু‘টি দলকে আল্লাহ্ জাহান্নামের আগুন থেকে সুরক্ষা দিয়েছেন: একটি দল যেটি ভারত জয় করবে, এবং একটি দল যেটি ‘ঈসা ইবনু মারিয়াম–এর সাথে থাকবে” [আহমাদ এবং আন-নিসা’ঈ]
হিযবুত তাহ্রীর / উলাই’য়াহ্ বাংলাদেশ-এর মিডিয়া কার্যালয়