প্রেস বিজ্ঞপ্তি
بسم الله الرحمن الرحيم
হাসিনা-বাইডেন ‘সেলফি’ ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির ‘নৈতিক ট্র্যাজেডির’ চিত্রকে উন্মোচিত করেছে
সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ছবি ভাইরালের পর বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গন দ্রুত তোলপাড় হয়ে ওঠে, যাতে দেখা যায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে জি-২০ সম্মেলন চলাকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সেলফি তুলছেন। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সেলফি দেখে বিএনপির ঘুম আসছে না। তিনি আরও বলেন, এটি বিএনপির জন্য একটি বড় ধাক্কা, কারণ তারা খুবই মর্মাহত হয়েছে। তিনি মনে করেন যুক্তরাষ্ট্র আর বিএনপির সঙ্গে নেই।
অন্যদিকে, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে শেখ হাসিনার সেলফি নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের ব্যাপক উচ্ছ্বাসের তীব্র সমালোচনা করেছেন এবং এই সেলফি তাদের গলায় ঝুলিয়ে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে শেখ হাসিনার সেলফি সরকারকে ক্ষমতায় থাকতে সাহায্য করবে না।
এই ‘সেলফি মুহুর্ত’ বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দের প্রকৃত দেউলিয়া চরিত্রকে উন্মোচিত করেছে। ক্ষমতাসীন দলের নেতৃবৃন্দ তাদের পশ্চিমা প্রভুদের নেতার সাথে সেলফি তোলার মুহূর্তটি পেয়ে নিজেদেরকে ধন্য মনে করছে, আর অন্যদিকে প্রধান বিরোধী দলের নেতৃবৃন্দ আসন্ন নির্বাচনের আগে তাদের প্রভুর করুণা থেকে বঞ্চিত হওয়ার ভয়ে ভীত হয়ে হাহাকার করছে।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে, এই সেলফির ঘটনা ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাজনীতির নৈতিক ট্র্যাজেডির চিত্রকে উন্মোচিত করেছে। জনগণ জানে যে, বাংলাদেশে ‘গণতন্ত্রের পশ্চাদপসরণের’ জন্য “গণতন্ত্রের চ্যাম্পিয়ন” তথাকথিত মুক্ত বিশ্বের নেতা জো বাইডেনের কুমিরের কান্না কেবল প্রতারণা মাত্র। বাইডেন বিভিন্ন অধিকার লঙ্ঘনের দায়ে হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে নানা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে, আবার এর পাশাপাশি যালিম হাসিনার সঙ্গে হৃদয়গ্রাহী সেলফিও তুলছে! অন্যদিকে, সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতন্ত্রের অজুহাতে বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরির জন্য শেখ হাসিনা প্রায়শই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অভিযুক্ত করছে এবং বলছে যে, এর মাধ্যমে তারা ভারত মহাসাগর ও বঙ্গোপসাগরকে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে চায়, অথচ আক্ষরিক অর্থেই শেখ হাসিনা বাইডেনের সাথে এই সেলফির জন্য ভিক্ষা করছিল যাতে সে জনগণকে দেখাতে পারে যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে তার সম্পর্ক আর টানাপোড়নের নয়। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক খেলোয়াড়েরা তাদের ভণ্ডামিকে এমন পর্যায়ে উন্নীত করেছে যা আগে কখনো দেখা যায়নি।
হে দেশবাসী, এটাই ধর্মনিরপেক্ষ গণতন্ত্রের মূল ভিত্তি যার মূলে রয়েছে কেবল প্রতারণা ও কপটতা। এই ব্যবস্থায় দাসসুলভ শাসকেরা রাজনৈতিক সুবিধা লাভের জন্য নিজেদের আত্মা তাদের পশ্চিমা প্রভুদের কাছে বিক্রি করতে সদাপ্রস্তুত থাকে। এবং, গণতন্ত্রের বৈশ্বিক মূল্যবোধের মোড়ল আমেরিকা এবং অন্যান্য পশ্চিমারা তাদের হীন ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে নিজেদের দাবিকৃত গণতান্ত্রিক ও মানবিক মূল্যবোধকে বিসর্জন দিতে কখনই দ্বিধাবোধ করে না। এই দাসত্বের রাজনীতি ও পশ্চিমা আধিপত্যের কবল থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো আমাদের ভূমি থেকে বিদ্যমান ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে সমূলে উৎপাটন করে মুসলিমদের প্রকৃত অভিভাবক নবুয়্যতের আদলে প্রতিশ্রুত খিলাফতে রাশিদাহ্ ফিরিয়ে আনা। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা পবিত্র কুর‘আন-এ বলেন:
* هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَى وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ *
“তিনিই তাঁর রাসূলকে হিদায়াত ও সত্য দ্বীন সহ প্রেরণ করেছেন, যাতে তিনি এই দ্বীনকে অন্য সকল দ্বীনের উপর বিজয়ী করতে পারেন, যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে [সূরা আত-তাওবা: ৩৩]।
হিযবুত তাহ্রীর / উলাই’য়াহ্ বাংলাদেশ-এর মিডিয়া কার্যালয়