working to establish khilafah

শেখ হাসিনা, নষ্ট পুঁজিবাদী ব্যবস্থার ফসল এই বখাটে সন্তান, দেশবাসীকে প্রদীপ-হারিকেনের যুগে ফিরিয়ে নিতে চায়

প্রেস বিজ্ঞপ্তি
بسم الله الرحمن الرحيم
শেখ হাসিনা, নষ্ট পুঁজিবাদী ব্যবস্থার ফসল এই বখাটে সন্তান, দেশবাসীকে প্রদীপ-হারিকেনের যুগে ফিরিয়ে নিতে চায়

সারাদেশে চলমান অসহনীয় দিবা-রাত্রির লোডশেডিংয়ের মধ্যে শেখ হাসিনা দেশবাসীকে জ্বালানী সাশ্রয়ের জন্য হারিকেন ব্যবহারের প্রস্তুতি গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। হাসিনা জনগণকে তাচ্ছিল্য করার সুরে বলেছে: “দেশের সবাই প্রস্তুত হোন। বিশ্বব্যাপী যে অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে, তাতে শেষমেষ ভেন্না আর রেড়ির তেল দিয়ে সবাইকে চলতে হবে। সেটা দিয়ে কুপি বা হারিকেন জ্বালাতে হবে”। জনগণের দুঃখ-দুর্দশা নিয়ে হাসিনা এমনভাবে বিদ্রুপ করছিল যেন সাধারণ জনগণ নিজেরাই দেশের সমস্ত জ্বালানী নিঃশেষ করে দিয়েছে, আর এই অপরাধে সে তাদেরকে কঠোর হস্তে শাস্তি দিচ্ছে! বেশিদিন আগের কথা নয়, শেখ হাসিনা দাবী করেছিল দেশের প্রতিটি ঘরে শতভাগ বিদ্যুৎ পৌঁছে দেয়ার যে সফলতা সেটা তার সরকারের একটি ‘মাইলফলক অর্জন’। তার সরকারের জোঁকার মন্ত্রীবর্গ ও দলীয় নেতৃবৃন্দ তাকে বাংলাদেশের ‘প্রমিথিউস অব লাইট’ (!) হিসেবে আখ্যা দিয়েছিল (“শেখ হাসিনা: আলো আনয়নকারী প্রমিথিউস”, জ্বালানী উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী, দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড, ২৭শে সেপ্টেম্বর, ২০২২)। কিন্তু তার বহুল প্রশংসিত এই ‘সাফল্যের’ গালগল্প উন্মোচিত হতে বেশি সময় লাগেনি। বাস্তবতা হচ্ছে, শেখ হাসিনার তথাকথিত ‘উন্নয়ন’ আমাদের শিল্প-কারখানা ও সামগ্রিক উৎপাদনকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে, এবং জ্বালানী সংকটের কারণে ৩০টিরও অধিক বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। তার সরকারের পুঁজিবাদী জ্বালানী নীতি ও ব্যাপক দুর্নীতির কারণে দেশের প্রান্তিক ও অসহায় জনগোষ্ঠীকে এখন জ্বালানীর আকাশচুম্বী মূল্য পরিশোধ করতে হচ্ছে। মধ্যম ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের লক্ষ লক্ষ জনগণ এখন গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানির মূল্য (ইউটিলিটি বিল) পরিশোধ এবং তাদের পরিবারের জন্য খাবারের ব্যবস্থার মধ্য থেকে যেকোন একটি বেছে নিতে বাধ্য হচ্ছে। অথচ, অর্থনৈতিকভাবে অরক্ষিত এই জনগোষ্ঠীকে রক্ষা করাতো দূরের কথা, বরং পর্যাপ্ত পরিমানে বিদ্যুৎ ও জ্বালানী সরবরাহ নিশ্চিতের দাবী তোলার কারণে হাসিনা তাদের উপর ক্ষোভ প্রকাশ করেছে! এতটাই নির্লজ্জ ও নিষ্ঠুর শাসক হচ্ছে সে, যে কিনা জনগণের বেদনা ও দুঃখ-কষ্টের কোনো তোয়াক্কা করে না এবং তাদের দুর্ভোগ লাঘবের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেয় না। সাধারণ জনগণকে উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধির মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে শেখ হাসিনা কতিপয় দুর্বৃত্ত পুঁজিপতি অভিজাতদের পকেট ভর্তি করেছে, আর এখন সে জনগণকে ২০২৩ সালে আরও কঠিন পরিস্থিতি ও দুর্ভিক্ষ মোকাবিলার জন্য প্রস্তুত থাকতে বলছে। এই ধরনের নির্লজ্জ ব্যক্তিদের ব্যাপারে আল্লাহ্’র রাসূল ﷺ বলেছেন: “যদি তোমার লজ্জা না থাকে, তবে যা ইচ্ছা করো” (বুখারী)। অতএব, এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই যে হাসিনা এই নষ্ট পুঁজিবাদী ব্যবস্থার এক বখাটে সন্তান। জনগণের প্রতি সে যে ঘৃণা পোষণ করে তা অসুস্থ পর্যায়ের, আর একারণেই সে তার বিশ্বাসঘাতকতার রাজনীতি দিয়ে তাদেরকে শাসন করতে চায়। ঘৃণ্য এই ধর্মনিরপেক্ষ পুঁজিবাদী ব্যবস্থার সাথে সাথে তাকেও অপসারণ করা ছাড়া আর কি কোন সমাধান থাকতে পারে?

হে দেশবাসী, আপনারা প্রত্যক্ষ করেছেন কিভাবে হাসিনা সরকার দেশি-বিদেশি কতিপয় পুঁজিপতি অভিজাত ও সাম্রাজ্যবাদীদেরকে সীমাহীন লুটপাটের সুযোগ দিয়ে সমগ্র জ্বালানী খাতকে পঙ্গু করে দিয়েছে। বিদ্যুৎ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের নীতি বাস্তবায়ন না করে তার সরকার বিশ্বব্যাংক, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক-এর মতো নব্য ঔপনিবেশিক প্রতিষ্ঠানসমূহের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী বিদ্যুৎ খাতকে কুইক-রেন্টালভিত্তিক প্রকল্পসমূহের উপর নির্ভরশীল করে রেখেছে। ফলস্বরূপ, ঘরে ঘরে শতভাগ গ্যাস ও বিদ্যুতায়নের দাবী করলেও জনগণকে প্রদীপ-হারিকেনের যুগে ফিরিয়ে নেয়া ছাড়া তার হাতে আর কোন বিকল্প নেই৷ এটা ইতিমধ্যেই স্পষ্ট যে, তার তথাকথিত উন্নয়ন কল্পকাহিনী এবং প্রবৃদ্ধির আখ্যান জনগণের সাথে প্রকাশ্য প্রতারণা, ভণ্ডামী ও নির্লজ্জ প্রহসন ছাড়া আর কিছুই নয়। এটা কি ধরনের উন্নয়ন যা মানুষকে আদিম অন্ধকার যুগে ফিরিয়ে নিয়ে যায়? প্রকৃতপক্ষে, সকল ধর্মনিরপেক্ষ পুঁজিবাদী সরকার সর্বদা কেবল মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয় নেয়, এবং দুর্বৃত্ত শেখ হাসিনাও এর ব্যতিক্রম নয়। সে ভালো করেই জানে, তথাকথিত উন্নয়নের নামে যে ফোলানো-ফাপানো বেলুন সে তৈরি করেছে তা শীঘ্রই ফেটে যাবে, আর তাই সে জনগণকে এখন হারিকেন-কুপি ব্যবহারের আহ্বান জানাতে শুরু করেছে।

হে মুসলিমগণ, আমাদের উপর চেপে বসা এসব পশ্চিমা মদদপুষ্ট ধর্মনিরপেক্ষ শাসকেরাই প্রকৃত অন্ধকারের বহিঃপ্রকাশ, যাদের সম্পর্কে আল্লাহ্ আজ্জা ওয়া জ্বাল আমাদেরকে সতর্ক করেছেন। তারা যে অগ্নি প্রজ্বলিত করে তা শেষ পর্যন্ত আমাদেরকে অন্ধকার ও হতাশার দিকে ধাবিত করে। দালাল এই ধর্মনিরপেক্ষ শাসকগোষ্ঠী ও তাদের মন্দ শাসনব্যবস্থাকে সহ্য করে আমরা এর পরিণতি হিসেবে নিজেদের জন্য কেবল কষ্ট আর দুর্ভোগই ডেকে এনেছি। যারা পশ্চিমা কাফির-সাম্রাজ্যবাদীদের অন্ধকারের প্রতিনিধিত্ব করে এবং তাদের জঘন্য স্বার্থরক্ষার কাজে নিয়োজিত থাকে, তাদের কাছ থেকে আপনারা প্রকৃত উন্নয়ন আশা করতে পারেন না। অতএব, এই নিদ্রা থেকে জেগে উঠুন, হে মুসলিমগণ! আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র শত্রুদের কাছ থেকে আলোর সন্ধান করবেন না। তাদের ধর্মনিরপেক্ষ পুঁজিবাদী শাসনব্যবস্থাকে সামগ্রিকভাবে প্রত্যাখ্যান করুন। আলো ও মুক্তির একমাত্র সঠিক পথ হচ্ছে আমাদের প্রকৃত আবাস- নবুয়্যতের আদলে প্রতিষ্ঠিত দ্বিতীয় খিলাফতে রাশিদাহ্-এর দিকে প্রত্যাবর্তন করা। শুধুমাত্র আসন্ন খিলাফত রাষ্ট্রই এমন শাসক তৈরি করতে সক্ষম যারা জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে তাদের নাগরিকদের প্রতি যত্নশীল এবং দায়িত্বশীল হবে। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা পবিত্র কুর‘আনে আমাদের সতর্ক করে বলেন:

*مَثَلُهُمْ كَمَثَلِ ٱلَّذِى ٱسْتَوْقَدَ نَارًۭا فَلَمَّآ أَضَآءَتْ مَا حَوْلَهُۥ ذَهَبَ ٱللَّهُ بِنُورِهِمْ وَتَرَكَهُمْ فِى ظُلُمَـٰتٍۢ لَّا يُبْصِرُونَ*
“তাদের দৃষ্টান্ত সেই ব্যক্তির মত যে আগুন জ্বালিয়েছে; এবং যখন সেই আগুন তাদের চারপাশ আলোকিত করে তুললো, ঠিক তখন আল্লাহ্ তাদের চারদিকের আলো উঠিয়ে নিলেন এবং তাদেরকে অদৃশ্য অন্ধকারে ছেড়ে দিলেন” [সূরা বাক্বারাহ্: ১৭]

 

হিযবুত তাহ্রীর / উলাই’য়াহ্ বাংলাদেশ-এর মিডিয়া কার্যালয়