working to establish khilafah

ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ হাসিনা সরকার কর্তৃক লালিত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ নামক বিষবৃক্ষের বিষফল

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

بسم الله الرحمن الرحيم

ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ হাসিনা সরকার কর্তৃক লালিত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ নামক বিষবৃক্ষের বিষফল

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের ইডেন কলেজ শাখার শীর্ষ নারী নেত্রীদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ আজ দেশের সকল মানুষকে হতবাক করে দিয়েছে! তাদের নিজ দলের কর্মীরা মিডিয়া-র সামনে দাবি করেছে যে, তাদের নেত্রীরা সংগঠনের নারী কর্মীদের নগ্ন ভিডিও রেকর্ড করে, এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের মনোরঞ্জনে নিয়োজিত হতে তাদেরকে বাধ্য করে ও যৌন হয়রানি করে। ছাত্রলীগ নেতৃবৃন্দের এই জঘন্য যৌন ব্যবসা রাজধানীর নামকরা এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে, এবং ৩৫,০০০-এর বেশি সাধারণ ছাত্রীদেরকে সামাজিকভাবে ও মানসিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করেছে। এটা ইতিমধ্যেই প্রমাণিত সত্য যে, শেখ হাসিনার মদদপুষ্ট ছাত্রলীগ এখন ধর্ষক ও যৌন নিপীড়কদের সংগঠন। এবং এসব দুর্বৃত্তদেরকে কোন অবস্থাতেই হাসিনার ধর্মনিরপেক্ষ পুঁজিবাদী শাসন থেকে আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই। বরং তারা শেখ হাসিনা কর্তৃক লালিত-পালিত ধর্মনিরপেক্ষ পুঁজিবাদ নামক বিষবৃক্ষের বিষাক্ত ফল। পশ্চিমা উদারনৈতিক মূল্যবোধ গ্রহণের মাধ্যমে আমাদের সমাজে তথাকথিত গুণগত পরিবর্তন আনয়নের লক্ষ্যে হাসিনা বছরের পর বছর ধরে চাপ দিয়ে আসছে। মুসলিম যুবকদের মধ্যে যৌনতার প্রতি উদার মনোভাব প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে হাসিনা সরকার নাটক, সিনেমা, ওয়েব সিরিজ, ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে অবাধ যৌনাচার, ব্যভিচার ও প্রতারণার ধ্বংসাত্মক পশ্চিমা সংস্কৃতি বিস্তারের সুযোগ করে দিয়েছে। তথাকথিত নারী স্বাধীনতার নামে মিডিয়ায় নারীকে যৌনতার প্রতীক হিসেবে তুলে ধরা হচ্ছে। তাদেরকে পণ্যে পরিণত করা হচ্ছে এবং সমগ্র সমাজে তীব্র যৌন উত্তেজনার পরিবেশ সৃষ্টির জন্য তাদেরকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। হাসিনা সরকার জনগণকে দুর্নীতিগ্রস্ত করতে পশ্চিমা ভোগবাদী জীবনধারার দিকে প্ররোচিত করার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। ইন্দ্রিয়গত পরিতুষ্টিকে সর্বদা সুখের সর্বোচ্চ মানদন্ড হিসাবে উপস্থাপিত করা হচ্ছে। হাসিনা সরকার যে কেবল দেশে মদ ও জুয়ার লাইসেন্স দিয়েই ক্ষান্ত হয়েছে তা নয়, বরং দেশের ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের তীব্র ক্ষোভ উপেক্ষা করে সানি লিওনের মতো পর্ণ তারকাসহ হলিউড-বলিউড তারকাদের একের পর এক কনসার্ট ও স্টেজ শো করার অনুমতি দিচ্ছে। মুসলিম তরুণদেরকে পশ্চিমা হিপ-হপ সংস্কৃতির সাথে পরিচিত করানোর উদ্দেশ্যে সম্প্রতি দেশের ৫৪ জন যুবককে ঢাকাস্থ মার্কিন দূতাবাস কর্তৃক আয়োজিত একটি হিপ-হপ ও ব্রেক-ড্যান্স কনসার্টে এবং প্রশিক্ষণ কর্মশালায় পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও, তরুণদের মধ্যে অসুস্থ কোরিয়ান কে-পপ সংস্কৃতি জনপ্রিয় করে তুলতে ঢাকায় নিয়মিত কে-পপ প্রতিযোগিতা ও উৎসবের আয়োজন করা হচ্ছে। হাসিনা সরকার একদিকে হলিউড-বলিউড ও কোরিয়ান সংস্কৃতি আমদানি করছে এবং অন্যদিকে ইসলামের বিরুদ্ধে পরিচালিত চলমান যুদ্ধে সামনের সারির যোদ্ধা হিসেবে কাজ করছে, কারণ দেশের কোন স্থানেই ইসলামের রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক আলোচনায় অংশগ্রহণের সুযোগ মুসলিমদের নেই।

ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধ আরোপের বিষয়টি সবসময়ই শেখ হাসিনা ও তার পিতা শেখ মুজিবের আজন্ম লালিত স্বপ্ন ছিল! কিন্তু এদেশের মানুষ শেখ হাসিনার পঁচে যাওয়া অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধকে প্রত্যাখ্যান করেছে, যদিওবা কেউ কেউ ধর্মনিরপেক্ষ আদর্শের উদার দর্শনে বিমোহিত হয়ে আছে। ইসলামের বিরুদ্ধে পরিচালিত তার নিরন্তর ক্রুসেড এবং সারাদেশে পশ্চিমা সংস্কৃতির ভয়াবহ আগ্রাসন ইসলামী উম্মাহ্-কে ইসলামের মহৎ আদর্শ থেকে বিচ্যুত করতে ব্যর্থ হয়েছে। কিন্তু, এই ক্ষয়িষ্ণু পশ্চিমা হেডোনিস্টিক (আনন্দবাদী) সংস্কৃতি চর্চার দিকে প্ররোচিত করে সে তার নিজ দলের নেতা-কর্মীদের জন্য ধ্বংসের দরজা খুলে দিয়েছে। একারণেই ক্ষমতাসীন দলের মন্ত্রী ও নেতৃবৃন্দের একের পর এক যৌন কেলেঙ্কারি ও নির্যাতনের ঘটনা প্রকাশ পাচ্ছে। আমরা দেখেছি যে সাবেক মন্ত্রী মুরাদের মতো যৌন-নিপীড়ক কিভাবে হাসিনার কাছ থেকে সুরক্ষা লাভ করেছে এবং একজন অভিনেত্রীকে ধর্ষণের হুমকি দেয়ার পরেও তার সংসদ সদস্য (এম.পি) পদে বহাল রয়েছে! এই ইডেন কলেজ ছাত্রলীগের নেত্রীরা পাপিয়া ও হেলেনা জাহাঙ্গীরের মতো হাসিনার অন্যান্য কলঙ্কিত নেতাদের ঐতিহ্য বহন করে চলেছে, যারা হাসিনা কর্তৃক লালিত এই উদারনৈতিক ব্যবস্থার একই গর্ভে জন্ম নিয়েছে।

হে মুসলিমগণ! হাসিনা সরকার কর্তৃক আরোপিত পঁচে যাওয়া এই পশ্চিমা ধর্মনিরপেক্ষ উদারনৈতিক মূল্যবোধের প্রতি আপনাদের আত্মরক্ষামূলক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করা উচিত নয়, কারণ এটি আমাদের সমাজের নৈতিক অবকাঠামো ধ্বংস করছে। হাসিনার পশ্চিমা-সমর্থিত ধর্মনিরপেক্ষ সরকার এবং এর পাশাপাশি এই ধর্মনিরপেক্ষ পুঁজিবাদী রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করার মাধ্যমে নির্লজ্জ হাসিনা সরকার কর্তৃক গৃহীত পশ্চিমা সাংস্কৃতিক আগ্রাসন প্রকল্পের বিরুদ্ধে আপনাদের রুখে দাঁড়াতে হবে, যা এদেশে বেহায়াপনা ও অশ্লীলতা আমদানি করে চলেছে। আমরা আপনাদেরকে নবুয়্যতের আদলে খিলাফতে রাশিদাহ্ প্রতিষ্ঠার পবিত্র দায়িত্ব গ্রহণের আহ্বান জানাই। আসন্ন খিলাফত নারীর মর্যাদাকে সমুন্নত রাখবে এবং সামগ্রিকভাবে সমাজের ইসলামী চিন্তাধারা ও আবেগ রক্ষা করবে, এবং পশ্চিমা সংস্কৃতি অনুপ্রবেশের সকল পথ রুদ্ধ করবে। আমাদের সমাজ এবং ভবিষ্যত প্রজন্ম পশ্চিমাদের মতো অধঃপতিত ও নরকের আগুনের জ্বালানীতে পরিণত হওয়ার আগেই প্রতিশ্রুত দ্বিতীয় খিলাফতে রাশিদাহ্ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে বিশ্বস্ত ও ন্যায়নিষ্ঠ দল হিযবুত তাহ্‌রীর-এর সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করুন। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা পবিত্র কুর‘আনে বলেন:

*يَـٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوا۟ قُوٓا۟ أَنفُسَكُمْ وَأَهْلِيكُمْ نَارًۭا وَقُودُهَا ٱلنَّاسُ وَٱلْحِجَارَةُ*

“হে ঈমানদারগণ, তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে সেই আগুন থেকে রক্ষা কর যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর” [সূরা আত-তাহরীম: ৬]

হিযবুত তাহ্‌রীর / উলাই’য়াহ্ বাংলাদেশ-এর মিডিয়া কার্যালয়