working to establish khilafah

Weekly ISLAMIC VIEWPOINT 131

Weekly 

ISLAMIC VIEWPOINT
….সপ্তাহের সংবাদ পর্যালোচনা 
 
১৩১ তম সংখ্যা । ৩১ ডিসেম্বর, ২০২৪
এই সংখ্যায় থাকছে :
 
“লিবিয়ার উপকূলে নৌকাডুবিতে ৮ বাংলাদেশির মৃত্যু”

“সবার নজর শহীদ মিনারে: ‘ঘোষণাপত্র’ নিয়ে জল্পনা”  
খবরঃ
২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট মাসে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানকে স্বীকৃতি দিতে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশের কর্মসূচি দিয়েছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। অন্তর্বর্তী সরকার এ ‘ঘোষণাপত্র’ তৈরির উদ্যোগ নিলেও মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ ঘোষণাপত্রের সমর্থনে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচি বহাল রেখেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।… এর আগে সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানান, অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জাতীয় ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের একটি ঘোষণাপত্র তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। ঘোষণাপত্রে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিত, ঐক্যের ভিত্তি ও জনগণের অভিপ্রায় ব্যক্ত হবে। …অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে ‘ঘোষণাপত্রে’ কী থাকে তা দেখার অপেক্ষায় জনগণ। (https://banglanews24.com/national/news/bd/1447975.details)
মন্তব্যঃ
একটি সফল বিপ্লবের প্রোক্লেমেশন বা ঘোষণাপত্র হচ্ছে বিদ্যমান রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ব্যবস্থাকে বিলুপ্ত করে নতুন ব্যবস্থার গোড়াপত্তন করা। যেমন ফরাসি বিপ্লব, রুশ বিপ্লব, চীনা বিপ্লব ইত্যাদি। ফরাসি বিপ্লবের ফলে ফ্রান্সে রাজতন্ত্রের উৎখাত হয়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯১৭ সালে রুশ বিপ্লবের ফলে রাজতন্ত্র উৎখাত হয়ে কমিউনিস্ট রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হয়। ১৯৪৯ সালে চীনা বিপ্লবের ফলে চীনে একটি সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রবর্তন হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রনেতারা কিংবা সরকার যেই প্রোক্লেমেশন অফ জুলাই রেভ্যুলেশন-এর কথা বলছেন তা কি স্বৈরাচারী হাসিনার সময়কালীন ব্যবস্থার বিলুপ্তি ঘোষণা করবে? পতিত স্বৈরাচারী হাসিনার যুলুম কিংবা যুলুমের ব্যবস্থা সেটাকে মুজিববাদ বা ফ্যাসিবাদ যে নামেই ডাকা হোক না কেন- মুলতঃ এটির উৎস হচ্ছে সেকুলারিজম, যেখানে স্রষ্টাকে সমাজ ও রাষ্ট্রীয় জীবন থেকে বিচ্ছিন্ন রাখার ফলে শাসক সার্বভৌম ক্ষমতা লাভ করে, যা তাকে স্বৈরাচারী, ফ্যাসিবাদী কিংবা যালিম শাসকে পরিণত করে। যালিম হাসিনা ছিল সেকুলারিজমের আউটপুট বা ফসল। ফলে, ৫ আগষ্ট পরবর্তী যেকোন ‘ঘোষণাপত্র’ হওয়া প্রয়োজন সেকুলারিজমের বিলুপ্তির ঘোষণাপত্র।
তাছাড়া, এটা দিবালোকের মত পরিষ্কার, জুলাই বিপ্লবে হাসিনার মারণাস্ত্রের ভয়কে জনগণ শাহাদাতের আকাঙ্ক্ষা, আল্লাহ্‌’র নিকট ফরিয়াদ, রোজা, তাহাজ্জুদ ইত্যাদি ইসলামী বিশ্বাস, আবেগ ও ইবাদত দিয়ে পরাস্ত করেছিল। এবং দেশের প্রায় ৯০ ভাগ সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম জনগণের আকাঙ্খা ও অভিপ্রায় হলো ইসলামী শাসনব্যবস্থার অধীনস্ত থাকা, কারণ ইসলাম শুধুমাত্র নামায-রোজা, দাড়ি-টুপির মত কিছু ধর্মীর আনুষ্ঠানিকতা নয়। সেই হিসেবে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্রে সেকুলারিজমের বিলুপ্তির পাশাপাশি ইসলামী শাসনব্যবস্থা বাস্তবায়নের ঘোষণার মাধ্যমে এই ঘোষণাপত্র পূর্ণতা লাভ করতো। কিন্তু, ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকে এখন পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এবং ক্ষমতার সান্নিধ্যে থাকা কতিপয় ছাত্রনেতাদের ইসলামী শাসনব্যবস্থার বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান ও কর্মকান্ড থেকে এটা নিশ্চিত করে বলা যায়, ‘জুলাই ঘোষণাপত্রে’ আর যাই থাকুক না কেন তা বাংলাদেশ রাষ্ট্রের “সেকুলার ভিত্তিকে” বাতিল করা হবে না, বরং এই ঘোষণাপত্র দিয়ে ব্যর্থ সেকুলারিজমকে আরো শক্তিশালী ও স্থায়ী করার সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা করা হবে। সুতরাং রাষ্ট্রের সেকুলার ভিত্তি ও ব্যবস্থাকে বহাল রাখার লক্ষ্যে যেকোন ঘোষণাপত্র প্রদান করা হবে জনগণের রক্তের সাথে বেঈমানির সমতূ্ল্য এবং জনগণের এই ত্যাগকে ছিনতাই করার নামান্তর।
মুসলিমদের জন্য এধরণের ঘোষণাপত্রের একমাত্র অনুসরণীয় উদাহরণ হল সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব, আমাদের প্রাণপ্রিয় রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) কর্তৃক প্রদত্ত মদীনায় ‘ইসলামী রাষ্ট্র’ প্রতিষ্ঠার ‘ঘোষণাপত্র’, যা ‘মদীনার সনদ’ নামে সর্বাধিক পরিচিত। এই ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে পুরো মানবজাতিকে মানুষদের দাসত্ব থেকে মুক্ত করে মহান সৃষ্টিকর্তার দয়া ও রহমতের মধ্যে প্রবেশ করানোর ব্লুপ্রিণ্ট উপস্থাপন করা হয়েছিল। এই ব্লুপ্রিন্টের হাত ধরেই অন্ধকারে নিমজ্জিত, অনগ্রসর ও “আনকালচার্ড” আরবরা হাজার বছরের অধিক সময় ধরে পুরো পৃথিবীর ‘সুপারপাওয়ার’ হিসেবে অধিষ্ঠিত ছিল। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ)-এর বাস্তবায়িত ব্লুপ্রিণ্টকে অবজ্ঞা করে কেউ যদি এই ‘জুলাই ঘোষণাপত্রের’ উপর ভর করে ‘বিধানদাতা’ হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার চিন্তা করে থাকে তাহলে রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ)-এর উম্মত ও আল্লাহ্‌’র বান্দা হিসেবে নিজেদেরকে পরিচয় দেওয়ার কোন অধিকার কী তাদের অবশিষ্ট থাকে!
    –    রিসাত আহমেদ
“দ্য ইকোনমিস্টকে সাক্ষাৎকার-বাংলাদেশে ইসলামী চরমপন্থার উত্থান ঘটবে না: ড. ইউনূস”
 
খবরঃ
বাংলাদেশে ইসলামী চরমপন্থার উত্থান ঘটবে না বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ধর্মের বিষয়ে বাংলাদেশের তরুণেরা খুবই পক্ষপাতহীন উল্লেখ করে তিনি বলেন, তরুণেরা দেশকে নতুন করে গড়তে চান।… প্যাট্রিক ফোলিস জানতে চান, বাংলাদেশে ইসলামী চরমপন্থা ফিরে আসার কিছু ঝুঁকি রয়েছে বলে সতর্ক করেছেন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের কর্মকর্তারা। বিষয়টিকে কীভাবে দেখছেন? জবাবে ড. ইউনূস আশ্বস্ত করে বলেন, বাংলাদেশে এমন কিছু ঘটতে যাচ্ছে না। দেশের তরুণেরা খুবই উদ্যমী। ধর্মের বিষয়ে তারা খুবই পক্ষপাতহীন। এ তরুণেরা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে চান।… (https://bonikbarta.com/bangladesh/GWb6YWXnNwgscyS1)
মন্তব্যঃ
‘ইসলামী চরমপন্থা’র পশ্চিমা সংজ্ঞা অনুযায়ী, ‘এটি হলো মুসলিমদের এমন একটি আন্দোলন, যেখানে বিশ্বাস করা হয়- মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশগুলোকে একটি ইসলামী রাষ্ট্রের মূলনীতিতে ফিরে আসা উচিত’ (https://bn.wikipedia.org/wiki/ইসলামি_চরমপন্থা), কিন্তু সত্য বিষয় হলো, ইসলাম এটাই চায় এবং এটাই মুসলিমদের প্রাণের দাবি। আর ডঃ ইউনুস যেটা দাবি করছেন, তরুণরা ধর্মনিরপেক্ষ – সেটা আসলে একটা জলজ্যান্ত মিথ্যাচার। কারণ ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ হল ‘জীবন থেকে ধর্মের পৃথকীকরণ’। অর্থাৎ রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র হুকুম পরিত্যাজ্য- যা ইসলামের মূল বিশ্বাসের সম্পূর্ণ বিপরীত এবং নূন্যতম ঈমানের দাবীদার কোন মুসলিমের একথা বলার কোন সুযোগ নেই। তাই ইসলামের শত্রু পশ্চিমা ক্রুসেডারদের সন্তুষ্ট করার আশায় ছাত্র-জনতার আন্দোলন পরবর্তী এই ক্ষমতাসীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধানের এধরণের অবস্থানে দেশের মুসলিম জনগণ চরমভাবে ব্যথিত ও ক্ষুব্ধ। কারণ ইসলামী জীবনব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে ‘চরমপন্থা’ বা ‘সন্ত্রাসবাদ’ আখ্যা দিয়ে বিগত হাসিনা সরকার এদেশে ও তার পশ্চিমা প্রভুরা বিশ্বব্যাপী মুসলিম নিধনে তাদের হাতকে রক্তাক্ত করেছে এবং এখনো করছে। এসব জুলুমের প্রতিক্রিয়াস্বরূপই ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে তাকে চরমভাবে অপমানিত হয়ে দেশ থেকে বিতাড়িত হতে হয়েছে। ছাত্র-জনতার সেই আন্দোলনের অন্যতম ‘স্পিরিট’ ছিল ইসলাম। কারণ আবু-সাঈদ, মুগ্ধ, ইয়ামিন থেকে শুরু করে সবাই জালিমের গুলির সামনে বুক পেতে শাহাদাতের তামান্না নিয়ে জান্নাতের আশায় ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। অথচ দুঃখজনক বিষয় হলো বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন এই সরকারও পতিত হাসিনার মতই ইসলাম এবং মুসলিমদের বিষয়ে একই অবস্থান গ্রহণ করেছে। তারা হক্ব ও বাতিলের চিরন্তন দ্বন্দ্বে (যার একপক্ষে রয়েছে নিষ্ঠাবান মুসলিমগণ, যারা ইসলামী জীবনব্যবস্থা তথা ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে চায়, অন্যদিকে রয়েছে পশ্চিমা কুফর ক্রুসেডার শক্তি) বাতিল শক্তির পক্ষাবলম্বন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সম্পর্কে আল্লাহ্‌ সুবাহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন, “যে ব্যক্তি সত্য পথ প্রকাশিত হওয়ার পরও রাসূলের বিরোধিতা করে এবং মু’মিনদের পথ বাদ দিয়ে ভিন্ন পথ অনুসরণ করে, আমি তাকে সে পথেই ফিরাব যে পথে সে ফিরে যায়, আর তাকে জাহান্নামে দগ্ধ করব, কত মন্দই না সে আবাস!’ (সুরা আন-নিসাঃ ১১৫)।
এসকল শাসকদের আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা কর্তৃক জাহান্নামের শাস্তির পাশাপাশি দুনিয়ার জীবনে জনগণের পক্ষ থেকেও রয়েছে তীব্র ঘৃণা ও অপমান। আর কোন দেশের জনগণ যে শাসককে ঘৃণা করে, তাকে সে দেশের জনগণ তো বটেই, তার পশ্চিমা প্রভুরাও টিস্যু পেপারের মত ছুড়ে ফেলে দেয়। যার প্রমাণ হলো, সাম্প্রতিককালের হাসিনা কিংবা সিরিয়ার বাশার আল আসাদ। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হাত বিসর্জন দেয়া কিশোর আতিকুল গাজীর ভাষায় এদেশের তরুণ সমাজের আবেগ ফুটে উঠেছে, ‘দেশ নিয়ে বলবা কিছুটা ছাড় দিব, ইসলাম নিয়ে বলবা টান দিয়ে জিহ্বা ছিড়ে নিব’
    –    মোঃ জহিরুল ইসলাম
 
 
 
 
“সংস্কারকাজে তরুণদের ভূমিকা প্রত্যাশা বদিউল আলম মজুমদারের” 
 
খবরঃ
মনোনয়ন-বাণিজ্য বন্ধ করে সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সংস্কারকাজে তরুণদের ভূমিকা প্রত্যাশা করেছেন নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান বদিউল আলম মজুমদার। মনোনয়ন কিনতে শতকোটি টাকা ব্যয় হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মনোনয়ন-বাণিজ্য যখন হয়, তখন রাজনীতিটা ব্যবসায় রূপান্তরিত হয়। কোনো আইন করে এগুলো বন্ধ করা সম্ভব নয়। আমরা যদি গণতান্ত্রিক উত্তরণ চাই, পরিস্থিতির পরিবর্তন চাই, তাহলে আমাদের ও আমাদের রাজনীতিবিদদের মানসিকতা-দৃষ্টিভঙ্গিতে পরিবর্তন আসতে হবে। বিশেষ করে আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে যদি পরিবর্তন আসে, তাহলেই এর পরিবর্তন আসবে।’ (https://www.prothomalo.com/bangladesh/m05cz8mu79)
মন্তব্যঃ
পতিত হাসিনার আমলে ‘উন্নয়নের’ চোরাবালিতে আটকে পরা জনগণের ভাগ্য এখন ‘সংস্কারের’ চোরাবালিতে আটকা পড়েছে। ‘নির্বাচনব্যবস্থা’ হলো নির্বাচন সংক্রান্ত আইন-কানুন, বিধি-বিধান ও পদ্ধতির সমন্বয় যা অনুসরণ করে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। শতকোটি টাকার ‘মনোনয়ন বাণিজ্য’ যদি আইন করে বন্ধ করা সম্ভব না হয়, তাহলে ‘নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশন’ কেন গঠন করা হলো? যদি রাজনীতিবিদদের মানসিকতা-দৃষ্টিভঙ্গিতে ও দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে পরিবর্তন আনার মধ্যেই সমাধান থেকে থাকে তাহলে সেই নতুন রাজনৈতিক মানসিকতা-দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তি (basis) কী হবে, সেকুলারিজম নাকি ইসলাম? আর যে ‘সংস্কার কমিশন’ মানসিকতা-দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের কথা বলছে সেই কমিশনের মানসিকতা-দৃষ্টিভঙ্গি কী জনগণের অভিপ্রায়ের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ? এগুলোর সদুত্তর দেওয়ার ক্ষমতা বা সত্সাহস কোনটিই এই সরকার কিংবা সংস্কার কমিশনের নেই। মূলত: ‘সংস্কার’ শব্দটি হলো একটি রাজনৈতিক পর্দা, যার অন্তরালে আমেরিকা-বৃটেনের ভূরাজনৈতিক স্বার্থের পক্ষে-বিপক্ষে বাংলাদেশের স্থানীয় রাজনীতির নিয়ামকগুলোর (factors) সমীকরণ মিলানোর খেলা চলছে এবং তরুনদেরকে এই খেলার পাহারাদার ও লাঠিয়াল হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে।
রাষ্ট্র ও শাসনব্যবস্থা হলো জীবনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে জনগণের সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি (আক্বীদা) থেকে উদ্ভুত অভিপ্রায়ের সংরক্ষণকারী ও তত্ত্বাবধানকারী। বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের জীবনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গী হলো তারা বিশ্বাস করেন আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা তাদের সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা ও বিধানদাতা। আল্লাহ্ তাদেরকে ইসলামী জীবনব্যবস্থা মান্য করার জন্য পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন এবং এই জীবনব্যবস্থাকে মান্য বা অমান্য করার প্রতিফলস্বরূপ বিচার দিবসে আল্লাহ্ তাদেরকে পুরষ্কার বা শাস্তি প্রদান করবেন। এই দৃষ্টিভঙ্গী ও বিশ্বাস থেকে উদ্ভুত জনগণের অবধারিত অভিপ্রায় হলো ইসলামী শাসনব্যবস্থার অধীনস্থ থাকা এবং কেবলমাত্র এই অভিপ্রায়কে সংরক্ষণ ও তত্ত্বাবধান করার জন্যই এদেশের জনগণ একজন শাসককে নিযুক্ত করবেন, এটাই হওয়ার কথা ছিল জনগণের স্বাভাবিক রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গী। কিন্তু নতুন বন্দোবস্তের নামে ও সংস্কারের নামে মিথ্যা আশা ছড়িয়ে প্রকৃতপক্ষে জনগণকে বিভ্রান্ত করা ও অন্ধকারে রাখার আয়োজন চলছে।
বিদেশী কাফির রাষ্ট্রসমূহ ও তাদের দেশীয় দালালগোষ্ঠী বিভিন্ন ছলচাতুরীর মাধ্যমে জনগণকে যদি বিভ্রান্ত না করত তাহলে জনগণ তাদের প্রকৃত অভিপ্রায় এতদিনে বাস্তবায়ন করে ফেলত। তাই, এখন জনগণের জন্য প্রয়োজনীয় ‘মূল সংস্কারকাজ’ হলো এই বিদেশী কাফির শত্রুরাষ্ট্রসমূহ ও তাদের দেশীয় দালালগোষ্ঠীকে রাজনীতির দৃশ্যপট থেকে সরিয়ে দেয়া যেন জনগণের স্বার্থসংশ্লিষ্ট কোন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষমতা বা এখতিয়ার দূরে থাক, জনগণের উপর তাদের নূন্যতম কোন প্রভাবও না থাকে। এটাই সংস্কারের একমাত্র পথ, রোগের একমাত্র চিকিত্সা। এই সংস্কার ও চিকিত্সা হয়ে গেলে অবধারিতভাবে জনগণ তাদের প্রকৃত অভিপ্রায়ের অতন্দ্র-প্রহরীকে (ভ্যানগার্ডকে) খুঁজে নিবে যারা শুধুমাত্র ইসলামী শাসনব্যবস্থা তথা খিলাফত ব্যবস্থার মাধ্যমে জনগণের সকল স্বার্থগুলোকে সংরক্ষণে সর্বাবস্থায় অবিচল ছিল এবং তাদের হাতে শাসনভার অর্পন করবে। এই অতন্দ্র-প্রহরী তারাই যারা রাষ্ট্রপরিচালনা ও জনগণের স্বার্থসংশ্লিষ্ট একটি বিষয়েও কুরআন, সুন্নাহ্, ইজমা আস-সাহাবা এবং ‘শরঈ ইল্লা’র মাধ্যমে কৃত কিয়াসের বাইরে অন্যকোন কিছুকে মানদন্ড হিসেবে গ্রহণ করে না। এটাই দুনিয়া ও আখিরাতে মুক্তির সেই একমাত্র পথ যা বাস্তবায়নে তরুণদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করা উচিত।
    –    রিসাত আহমেদ
 
 
 
 
“ইকোনমিস্টের চোখে বছরের কেন সেরা দেশ বাংলাদেশ”
খবরঃ
গত পাঁচ দশকে বাংলাদেশ বেশ কয়েকবার ‘বিশ্বের ১ নম্বর দেশ’ হিসেবে সংবাদের শিরোনাম হয়েছে। কিন্তু সেসবের প্রায় সবই দুর্নীতি বা দুর্যোগের জন্য। এবার ব্রিটিশ সাপ্তাহিক দ্য ইকোনমিস্ট–এর বিবেচনায় বাংলাদেশ বিশ্বের সেরা দেশ হিসেবে বিবেচিত হয়েছে প্রোগ্রেস বা অগ্রগতির জন্য।……বাংলাদেশ ছাড়া ‘ফাইনালিস্ট’ হিসেবে যে দুটি দেশকে তারা বিবেচনায় রাখে, সেগুলো হলো সিরিয়া ও পোল্যান্ড। সিরিয়ায় বাংলাদেশের মতোই এক নাটকীয় বৈপ্লবিক পরিবর্তন অর্জিত হয়েছে, ৫৩ বছরের এক স্বৈরশাসনের অবসান হয়েছে। কিন্তু এক আসাদকে সরিয়ে তারা প্রকৃত গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সক্ষম হবে, সে দেশের মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার ফিরে পাবে, সে কথা বলার মতো সময় এখনো আসেনি।……আমরা কতটা ধনী বা কী রকম সুখী, তা হিসাব করলে বাংলাদেশ হয়তো সেরা দেশ হিসেবে বিবেচিত হতো না। ইকোনমিস্ট–এর বিবেচনায় সেসব সূচকের কোনোটাই অন্তর্ভুক্ত ছিল না। বরং গণতন্ত্রায়ণ ও সুশাসনের পথে অগ্রসর হওয়ার যে সিদ্ধান্ত বাংলাদেশের মানুষ নিয়েছে, সে কারণেই এই শিরোপা তাদের জুটেছে। https://www.prothomalo.com/opinion/column/b92w7iv7gw
মন্তব্যঃ
ইকোনমিস্টের ‘চোখে’ বাংলাদেশের মানুষ ‘প্রকৃত গণতন্ত্র’ আনয়নের জন্য স্বৈরাচার হাসিনা সরকারের পতন ঘটিয়েছে, তাই তারা বর্ষসেরা দেশ! কিন্তু জনগণের আবেগ পরিমাপের কোন সূচক তারা তৈরি করে না। তাহলে ঠিক কিসের ভিত্তিতে তারা বাংলাদেশের মানুষের আবেগকে ‘গণতান্ত্রিক’ বলে চিহ্নিত করল? শুধু তাই না, আরো হাস্যকর হচ্ছে, সিরিয়াকে এটি ‘গণতন্ত্রকামনাকারী’ দেশ হিসেবে রানার আপ নির্বাচিত করেছে। এখানে বলে রাখা দরকার যে, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণা দ্বারা প্রমাণিত যে গণতন্ত্রের ধারক-বাহক পশ্চিমা রাষ্ট্রের সাধারণ জনগণই গণতন্ত্রের আবেগকে আর ধারণ করে না। পিউ রিসার্চ-২০২৪ এর তথ্যমতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ৬৮ শতাংশ মানুষ, ব্রিটেনের ৬০ শতাংশ এবং ফ্রান্সের ৬৫ শতাংশ মানুষ গণতন্ত্রের কার্যকারিতায় আর বিশ্বাস করে না। [Rising dissatisfaction with democracy in high-income nations | Pew Research Center] এছাড়াও গ্যালাপ ইন্টারন্যাশনাল, স্ট্যানফোর্ড ইউনিভার্সিটির গণতন্ত্রের উপর করা গবেষণাও একই দিক নির্দেশনা দিচ্ছে। যেখানে গণতন্ত্রের ধারকবাহক এবং আতুড়ঘর খ্যাত রাষ্ট্রগুলোর জনমানুষই গণতন্ত্রের উপর ত্যাক্তবিরক্ত সেখানে বাংলাদেশ ও সিরিয়ার মত রাষ্ট্রগুলোর মানুষ গণতন্ত্র চাইছে- কোনরকম তথ্যউপাত্ত ছাড়া এরকম ভিত্তিহীন ন্যারেটিভ কেন ইকোনোমিস্ট দিতে চাচ্ছে? এর উত্তর পেতে আরেকটা গবেষণার তথ্য উপাত্ত আমাদের সাহায্য করবে। ২০১৩ সালে ৩৯টি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশের মুসলমানদের উপর করা গবেষণায় উঠে আসে যে দক্ষিণ এশিয়ার ৮৪ শতাংশ এবং মধ্যপ্রাচ্যের ৭৪ শতাংশ মুসলিম শরীয়াহ আইন চায় অর্থাৎ খিলাফত শাসন ব্যবস্থা। সেই সময় থেকে এখন পর্যন্ত পুরো বিশ্বজুড়ে মুসলিমদের উপর চলতে থাকা নানা অত্যাচার নানামাত্রায় বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে বর্তমান সময়ে ইসরায়েল-আমেরিকা ও পশ্চিমাদের সরাসরি সহায়তায় যে হত্যাযজ্ঞ গাজায় চলছে তা মুসলিম উম্মাহ্‌-কে অন্যান্য যেকোন সময়ের চেয়ে একতাবদ্ধ হতে সাহায্য করেছে। এরকম অবস্থায় পশ্চিমাদের ভাবাদর্শকে ধারণ করা জনবিচ্ছিন্ন একেকটা পুতুল শাসকের পতন পশ্চিমা আদর্শের থিঙ্ক ট্যাঙ্ককে গভীর দুঃশ্চিন্তায় ফেলে দিয়েছে। তাই সাধারণ জনগণের বিশ্বাস এবং আবেগ থেকে আসা খিলাফত প্রতিষ্ঠার আকাংখাকে প্রতারণার মাধ্যমে ভিন্নপথে প্রবাহিত করাই হচ্ছে ব্রিটেন-আমেরিকার ‘চোখ’খ্যাত এই ইকোনমিস্টের মত মিডিয়া প্লাটফর্মগুলোর উদ্দেশ্য।
গণতন্ত্র কাগজে-কলমে জনগণের মালিকানা ও অধিকারকে সুউচ্চে রাখলেও বাস্তবে শুধুমাত্র হাতেগোনা পুঁজিপতিদের সর্বোচ্চ সুবিধার বন্দোবস্ত করে দেয়া ছাড়া আর কিছু করতে পারে না। যার জন্য ‘প্রতারণা’ এর একটি অন্তর্নিহিত বৈশিষ্ট্য। অন্যদিকে ইসলামকে কখনোই প্রতারণার আশ্রয় নিতে হয়নি। বরং, ইসলামের তথাকথিত বিরোধীরাই ইসলামের স্বয়ংসম্পূর্ণতায় মুগ্ধ হয়েছে। উমর (রা.)-এর শাসনকালে যখন বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের হিমস শহর মুসলিমরা দখল করার পরেও বাইজেন্টাইনদের পাল্টা আক্রমনে শহর হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা ঘটে। তখন মুসলিমরা তাদের কাছ থেকে আদায় করা জিযিয়া কর ফেরত দেয়। কারণ জিযিয়া কর হল এমন একটা কর যা অমুসলিমদের কাছ থেকে আদায় করা হয় এবং বিনিময়ে তাদের জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়। তাই মুসলিমরা যখন স্থানীয়দের জান-মাল নিশ্চিত করার বিষয়ে নিশ্চয়তা দিতে পারল না, তখন তারা স্থানীয়দের জিযিয়া ফিরিয়ে দেয়। এরকম অভাবনীয় নজির স্থানীয়দের কাছে ছিল বিরল। তারা তাদের বাইজেন্টাইন শাসকদের চেয়ে মুসলিম শাসকদের সাথে থাকার আশা প্রকাশ করেছিল। এটাই ছিল ইসলামের সৌন্দর্য্য যা কখনো প্রতারণা দিয়ে প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। ইসলাম তাঁর বৈশিষ্ট্যগত সৌন্দর্য্য দিয়েই আবার দোর্দন্ডপ্রতাপে ফিরে আসবে, ইনশাআল্লাহ্‌। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বলেছেন, “নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্যে নবুয়তের যুগ থাকবে যতদিন আল্লাহ চান। তারপর তা উঠিয়ে নেওয়া হবে। তারপর খিলাফত থাকবে নবুয়তের পদ্ধতিতে যতদিন আল্লাহ চান। তারপর তা উঠিয়ে নেওয়া হবে। এরপর থাকবে অত্যাচারী রাজত্ব। এরপর থাকবে স্বৈরাচারী শাসন। তারপর আবার আসবে খিলাফত নবুয়তের পদ্ধতিতে” (মুসনাদে আহমদ: ১৮৪৩০)
 
    –    জাবির জোহান
 
 
 
 
“ড. ইউনূসকে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টার ফোন”
 
খবরঃ
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভানের ফোনালাপ হয়েছে। ফোনালাপে তারা ধর্ম নির্বিশেষে সব মানুষের অধিকার রক্ষার প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) হোয়াইট হাউসের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান আজ বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে কথা বলেছেন। একটি চ্যালেঞ্জিং সময়ে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সুলিভান প্রধান উপদেষ্টা ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এতে আরও বলা হয়েছে, উভয় নেতা ধর্ম নির্বিশেষে সব মানুষের মানবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখানো ও তা সুরক্ষার বিষয়ে নিজেদের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেছেন। একটি সমৃদ্ধ, স্থিতিশীল ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেছেন জ্যাক সুলিভান। বাংলাদেশ যেসব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হবে, সেগুলো মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন অব্যাহত থাকবে বলেও জানান তিনি। (https://www.jugantor.com/national/894603)
মন্তব্যঃ
জ্যাক সুলিভানের ফোনের মাধ্যমে বাংলাদেশের বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন অব্যাহত থাকার বিষয়টি প্রকাশিত হলে বাংলাদেশের কতিপয় বুদ্ধিজীবি ও রাজনীতিবিদ এই বিষয়টিকে ইতিবাচক হিসেবে তুলে ধরে জনগণকে প্রতারিত করার চেষ্টা করছে। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে ‘যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা’র পদে যেই আসীন হোক না কেন তার মূল উদ্দেশ্যই থাকে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ আদায়ে যেকোন কিছু করা। তাই এই পদে আসীন কারো ফোনকল নিছক আড্ডাবাজির জন্যে না, বরং এটার গভীরতা অনেক বেশি। সারা দুনিয়ার নিরাপত্তাকে ভূলণ্ঠিত করে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থ সুনিশ্চিত করতে এই পদে আসীন ব্যক্তি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের সাথে সরাসরি কাজ করে। সুতরাং তার ফোনকল মানে যুক্তরাষ্ট্রের স্বার্থের ব্যাপারে তারা সুপরিকল্পিতভাবে এখানে কাজ করতে চাচ্ছে। সুতরাং এই ব্যক্তির ফোনকলে আনন্দিত হওয়ার কিছু নেই, বরং তা উদ্বেগের ব্যাপার।
যেহেতু মুসলিম বিশ্বের দেশসমূহ যুক্তরাষ্ট্রের জন্য আদর্শিক হুমকি, তাই সেসকল দেশসমূহে তারা সজাগ দৃষ্টি রাখে এবং সে অনুযায়ী পলিসি বাস্তবায়ন করে। এই জ্যাক সুলিভান ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে সৌদি যুবরাজ মুহাম্মাদ বিন সালমানের সাথে বৈশ্বিক জ্বালানী সংকট, ইয়েমেনে সৌদি নেতৃত্বাধীন আক্রমণ এবং অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েলের সাথে সৌদি আরবের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরনের ব্যাপারে কথা বলে। ইরান যাতে পারমানবিক অস্ত্র তৈরী করতে না পারে সেজন্যে তার নেতৃত্বে পরিকল্পনা করা হয়। গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন ও গণহত্যা বন্ধের সম্ভাবনাকে সে নাকচ করে দেয় এবং ইসরায়েলের ‘রাইট টু ডিফেন্ড’কে জাস্টিফাই করে। ২০২৪-এর মে মাসে যখন আয়ারল্যান্ড, নরওয়ে ও স্পেন ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয় তখন সে তার সমালোচনা করে। এর পাশাপাশি রাশিয়া ও চীনের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রের নীতি নির্ধারনও তার অফিস থেকে করা হয়। জ্যাক সুলিভানের মত একই দায়িত্ব পালন করতে দেখা যায় ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভালের ক্ষেত্রেও। ভারতে হাসিনার পলায়নে তার ছিল সরাসরি হস্তক্ষেপ। সুতরাং যাদের হাতে মুসলিমদের রক্ত লেগে আছে তাদের ফোনকলে মুসলিম শাসকরা আনন্দিত ও আন্দোলিত হলেও মুসলিম উম্মাহ্‌’র এতে কিছুই পাওয়ার নেই।
আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন, “হে মুমিনগণ, তোমরা তোমাদের ছাড়া অন্য কাউকে অন্তরঙ্গ বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা তোমাদের সর্বনাশ করতে ত্রুটি করবে না। তারা তোমাদের মারাত্মক ক্ষতি কামনা করে। তাদের মুখ থেকে তো শত্রুতা প্রকাশ পেয়ে গিয়েছে। আর তাদের অন্তরসমূহ যা গোপন করে তা অধিক ভয়াবহ। অবশ্যই আমি তোমাদের জন্য আয়াতসমূহ স্পষ্ট বর্ণনা করেছি। যদি তোমরা উপলব্ধি করতে” (সূরাঃ আলি-ইমরানঃ ১১৮)। সুতরাং মুসলিম হিসেবে আমাদেরকে অবশ্যই কাফির-মুশরিকদেরকে আমাদের অভিভাবক বা বন্ধু বা মিত্র হিসেবে গ্রহণ করা যাবে না। কারণ আমরা যতই চাই তাদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করতে, তারা চায় আমরা যাতে ক্ষতির মধ্যেই থাকি। এখনই সময় জ্যাক সুলিভান কিংবা অজিত দোভালদের হস্তক্ষেপ থেকে নিজেদের মুক্ত করে ইসলামী হুকুম বাস্তবায়নকারী খলিফাকে বা’আত প্রদান করার যিনি আমাদেরকে জ্যাক সুলিভান আর অজিত দোভালদের মত নব্য রবার্ট ক্লাইভদের (বৃটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর সেনাপতি ও উপনিবেশবাদী) হাত থেকে রক্ষা করবেন। রাসূলুল্লাহ্‌ ﷺ বলেন, “নিশ্চয়ই ইমাম (খলীফা) হচ্ছে ঢাল, যার অধীনে মুসলিমরা যুদ্ধ করে এবং নিজেদেরকে রক্ষা করে” (সহীহ্‌ বুখারী)।
    –    মো. হাফিজুর রহমান
 
 
 
“সরকারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক সালিশিতে যাওয়ার নোটিশ এস আলমের”
 
খবরঃ
এস আলম গ্রুপের মালিক মো. সাইফুল আলম তার সম্পদ ও বিনিয়োগ নিয়ে বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য বাংলাদেশের সরকারকে ছয় মাসের সময় বেঁধে দিয়েছে। এদিকে গত অক্টোবরে বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছিলেন, “ডিজিএফআইয়ের (বাংলাদেশের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা) সহায়তায় কয়েকটি ব্যাংক দখলের পর ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলমের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার সহযোগীরা ‘অন্তত’ ১০ বিলিয়ন বা ১ হাজার কোটি ডলার ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে বের করে নিয়েছেন।” এছাড়া দুদক আদালতকে জানিয়েছে “এস আলম গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাইফুল আলম ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে সিঙ্গাপুর, ব্রিটিশ ভার্জিন আইল্যান্ড, সাইপ্রাস ও অন্যান্য দেশে এক বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগের অনুসন্ধান হচ্ছে।”
মন্তব্যঃ
এস আলম, সামিট, বেক্সিমকো ইত্যাদি গ্রুপগুলো পতিত স্বৈরাচারের সহযোগীতায় দেশের বিপুল সম্পদ লুট করেছে, কিন্তু হাসিনা বিদায়ের পরও তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া যাচ্ছে না, যা আবারও প্রমাণ করলো যে, শুধু শাসক পরিবর্তনই যথেষ্ট নয়, বরং চাই শাসনব্যবস্থার পরিবর্তন। বৃটিশদের রেখে যাওয়া পশ্চিমাদের রচিত সম্পদ ও বিনিয়োগ বিধিমালায় বাংলাদেশ পরিচালিত হয়, যার মূলনীতি হচ্ছে ব্যক্তির সম্পদ অর্জন ও ভোগের স্বাধীনতা। আর রাষ্ট্রীয় আইনকানুন কিংবা আইনপ্রয়োগকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের কাজ হচ্ছে সম্পদের স্বাধীনতার সুরক্ষা দেয়া। যার কারণে আইনগত সুবিধা নিয়েই শক্তিশালী গোষ্ঠী রাষ্ট্রের জ্বালানী, বিদ্যুৎ, ব্যাংক, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের আমদানী-রফতানী ও বাজার ব্যবস্থাপনায় একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হয়ে যায়। এই ব্যবস্থায় নীতি নৈতিকতার কোন স্থির মানদন্ড নেই। বরং যেহেতু সম্পদের অর্জনের এই অবাধ স্বাধীনতা ক্ষমতাধর গোষ্ঠী ও পশ্চিমা দেশসমূহকে সুবিধা দেয় সেজন্য তারা এমন একটা আন্তর্জাতিক ব্যবস্থা তৈরি করে যাতে এসব অবৈধ সম্পদ তাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে। এজন্য তারা সিংগাপুর, দুবাই, সুইজারল্যান্ড ইত্যাদির মত নানা অফশোর বিনিয়োগ হেভেন তৈরি করেছে। এসব হয়ে বিশ্বের বেশিরভাগ সম্পদ বা সম্পদের মালিকানাস্বত্ব দিনশেষে লন্ডন, নিউইয়র্ক ইত্যাদি ফাইন্যান্সিয়াল ক্যাপিটালে গিয়ে পৌঁছে। এই পুঁজিবাদী আন্তর্জাতিক শক্তির বলেই এস আলম ও সাইফুজ্জামানের মত লোকেরা যারা দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে এবং এখন তারা পশ্চিমাদের আশ্রয়ে গিয়ে দাঁত কিলিয়ে হাসছে ও দেশের বিরুদ্ধে হুমকি দিচ্ছে!
পশ্চিমাদের প্রণীত পুঁজিবাদী ব্যবস্থা আল্লাহ্‌ নির্ধারিত সম্পদের যথাযথ বন্টন ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে সকল প্রকার সম্পদকে ক্ষুদ্র পুঁজিপতি গোষ্ঠীর হাতে কুক্ষিগত করে বিশ্বের ফাইন্যান্সিয়াল ক্যাপিটাল সমূহে আটকে দিচ্ছে। আল্লাহ্‌ ﷻ সুস্পষ্টভাবে বলেন, “……যাতে ধন-সম্পদ কেবল তোমাদের বিত্তশালীদের মাঝেই আবর্তিত না হয়…” (সুরা হাশর ৭)। ইসলামী অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় সম্পদ অর্জন ও বন্টনের একটি পূর্ণাংগ রুপরেখা আছে যার মাধ্যমে সম্পদের যথাযথ মালিকানা ও ব্যবহার নিশ্চিত হয়। তাছাড়া, ইসলামে একটি বিশেষ আদালত আছে যার নাম ‘মাহাকামাতুল মাজালিম’। এটি একটি শক্তিশালী আদালত যেটি শাসক, তার কর্মকর্তা, কর্মচারী কিংবা তার আত্মীয় কিংবা সুবিধাভোগী ইত্যাদির বিরুদ্ধে অভিযোগ আনতে পারে ও বিচার করতে পারে। এই আদালত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ব্যবহার করে অবৈধভাবে অর্জিত সম্পদতো বটেই অযৌক্তিক ও অন্যায্যভাবে অর্জিত সম্পদকেও ‘মাল আল গুলুল’ বা ‘অবৈধ সম্পদ’ হিসেবে সাব্যস্ত করতে পারে। ফলে খিলাফত ব্যবস্থায় অতি অল্প সময়ে এস আলম, সালমান এফ রহমান ইত্যাদির মত অবৈধ অন্যায্য সম্পদকে আইনি প্রক্রিয়ায় ‘মাল আল গুলুল’ বা ‘অবৈধ সম্পদ’ হিসেবে ঘোষণা করা যাবে। আর ‘মাল আল গুলুল’ বাইতুল মালে চলে যাবে। অতঃপর খলিফা অর্থনীতিকে সচল রাখার লক্ষ্যে দ্রুততম সময়ে এসব সম্পদ বা ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সাথে সৎ ও সামর্থবান ব্যবসায়ীদেরকে যুক্ত করে উৎপাদন ও ব্যবসা অব্যাহত রাখতে পারবেন।
 
    –    মোহাম্মদ তালহা হোসেন
 
 
 
 
“লিবিয়ার উপকূলে নৌকাডুবিতে ৮ বাংলাদেশির মৃত্যু”
 
খবরঃ
লিবিয়া উপকূলে নৌকাডুবিতে গত সপ্তাহে ৮ বাংলাদেশির মৃত্যু হয়েছে।… পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম বলেন, ‘বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, ১২১ জন অভিবাসী বহনকারী একটি নৌকা ১৮ ডিসেম্বর লিবিয়ার উপকূলে ভূমধ্যসাগরে বিধ্বস্ত হয়েছে। লিবিয়ার নৌবাহিনী ঘটনাস্থল থেকে ৮২ জনকে জীবিত উদ্ধার করে এবং কমপক্ষে ১৫ জনের মরদেহ উদ্ধার করে। ঘটনার পর লিবিয়ার ত্রিপলিতে অবস্থিত আমাদের দূতাবাসের কর্মকর্তারা দ্রুততার সঙ্গে বেশ কয়েকটি সূত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। স্থানীয় রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির একজন স্বেচ্ছাসেবক তাঁদের নিশ্চিত করেছেন যে নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ৮ বাংলাদেশি রয়েছেন। এ ছাড়া যাঁদের উদ্ধার করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যেও ৩২ বাংলাদেশি রয়েছেন।’ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আরও বলেন, জীবিতদের বর্তমানে ত্রিপলি থেকে ৮০ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত জাওয়াইয়া সিটিতে রাখা হয়েছে এবং মরদেহগুলো জাওয়াইয়া হাসপাতালে রাখা হয়েছে। ওই নৌকাডুবিতে যাঁরা নিখোঁজ হয়েছেন, তাঁদের মধ্যে আরও বাংলাদেশি নাগরিক থাকতে পারেন বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। (www.prothomalo.com/bangladesh/669vusrrsg )
মন্তব্যঃ
চাকুরীতে বৈষম্যকে কেন্দ্র করে যে জুলাই আন্দোলনের সূচনা হলো তা সফল হওয়ার পর চাকুরীর জন্য এখনো তরুণদের ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপ যাত্রায় মর্মান্তিক মৃত্যুর ঘটনা খুবই দুঃখজনক। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পরেও বেকারত্ব সমস্যা দূরীকরণে বিশেষ কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ না নেওয়ায় তরুণ ও যুবক শ্রেণির মধ্যে এই ঝুঁকিপূর্ণ বিদেশ যাত্রার প্রবণতাটি রয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশে ১৫ বছর থেকে ২৯ বছর বয়সী তরুণের সংখ্যা প্রায় পাঁচ কোটি। বাংলাদেশে পতিত স্বৈরাচারের আমলে দেশের বিপুল তরুণ জনশক্তির জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির যথাযথ উদ্যোগ নেয়া হয়নি। অন্তর্বর্তী সরকারও পূর্বের সরকারের মত তরুণরা চাকুরীর জন্য ছুটবে না, বরং চাকুরী দিবে- এজাতীয় ফাঁকা বুলি দেয়া ছাড়া কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি।
যে খিলাফত ব্যবস্থা মুসলিমদের গৌরবোজ্জল সময় এনে দিয়েছিল, তা ধ্বংসের পর পশ্চিমারা তাদের দালাল শাসক ও সেকুলার (স্রষ্টাহীন) জীবনাদর্শ আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়ে এটা নিশ্চিত করে যাতে আমরা জাতি হিসেবে আমাদের স্বতন্ত্র সত্তা নিয়ে মাথা তুলে দাঁড়াতে না পারি। ব্রিটিশ আমলে ঔপনিবেশিক শাসন কাঠামো ও শিক্ষাব্যবস্থা প্রণীত করা হয়েছিল আমাদের মধ্যে কেরাণী তৈরি ও পশ্চিমা ভোগবাদী জীবনদর্শনের বীজ বপনের জন্য। ব্রিটিশরা চলে গেলেও সেকুলার শাসকদের মাধ্যমে তার ধারাবাহিকতা তারা ধরে রেখেছে। তাই তাদের কাছ থেকে কিছু ফাঁকা বুলি ছাড়া জনগণের কিছু পাওয়ার নেই। বরং তারা পশ্চিমা ভোগবাদী জীবনদর্শনের অনুকরণে আমাদের মধ্যে সমাজ, রাষ্ট্র বা জাতি গঠনের সামগ্রিক চিন্তা বাদ দিয়ে ব্যক্তিকেন্দ্রীকতা ও আত্মকেন্দ্রীকতা শেখায়। তাই, কর্মসংস্থানের আশায় কিংবা পশ্চিমা সমাজের তথাকথিত উন্নত জীবনের আশায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিদেশ পাড়ি দেয়া এসব তরুণদের মৃত্যুর দায় কোনমতেই সেকুলার শাসকরা এড়াতে পারেনা।
রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বলেছেন: “তোমরা সকলেই দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেককেই অধীনস্থদের (দায়িত্ব) সম্বন্ধে জিজ্ঞেস করা হবে। ইমাম (রাষ্ট্রপ্রধান) একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি, তাঁকে তাঁর অধীনস্থদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে।” [সহিহ বুখারি: ৮৯৩]। ইসলামী রাষ্ট্র তরুণদের কর্মসংস্থানের দায়িত্ব নিবে এটা স্বাভাবিক বিষয়, কারণ এটি রাষ্ট্রপ্রধানের (খলিফার) অন্যতম প্রধান দায়িত্ব। বরং ইসলাম তরুণ ও যুবক শ্রেণীকে আরো সূদুরপ্রসারী চিন্তা ও ভিশন দিয়ে তৈরি করে। সেটা হচ্ছে ইসলামী জীবনাদর্শকে পুরো পৃথিবীতে ছড়িয়ে দেয়া। এই লক্ষ্য নিয়ে ইসলামী রাষ্ট্র তরুণ সমাজকে জ্ঞান-বিজ্ঞান, গবেষণা, শিল্প ও সামরিক ক্ষেত্রসহ সকল ক্ষেত্রে নিজ নিজ জায়গায় দক্ষ হিসেবে গড়ে তোলে, যাতে তারা ইসলামী রাষ্ট্রকে পৃথিবীর শীর্ষ পরাশক্তিকে রুপান্তরে তাদের দক্ষতাকে কাজে লাগাতে পারে। খিলাফতের সময়কালে তৎকালীন তরুণদের জন্য যেমন আমরা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হতে দেখেছি, ঠিক তেমনি আমরা তৈরি হতে দেখেছি মুহাম্মদ বিন কাসিম, তারেক-মুসা ও মুহাম্মদ আল-ফাতিহের মতো বীর তারুণ্য কিংবা জ্ঞান-বিজ্ঞান ও গবেষণায় অগ্রপথিক অসংখ্য তরুণকে, যারা বিশ্বের প্রান্তে প্রান্তে ইসলামের মহত্ব ও ন্যায়বিচারকে প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং নিজেরাও মানুষের সম্মান ও শ্রদ্ধা অর্জন করতে পেরেছেন। বাংলাদেশের তারুণ্যের জন্যও খিলাফত ব্যবস্থা অচিরেই মুক্তির বার্তা নিয়ে আসছে: “….তারপর আবার ফিরে আসবে খিলাফত নবুয়তের আদলে” [মুসনাদে আহমাদ]
    –    রাশিদ হাসান মাহাদি