হে মুসলিমগণ! অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক স্থাপনকারী শাসকগোষ্ঠীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা প্রত্যেক ঈমানদার ব্যক্তির উপর ফরজ দায়িত্ব
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
بسم الله الرحمن الرحيم
হে মুসলিমগণ! অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক স্থাপনকারী শাসকগোষ্ঠীর সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করা প্রত্যেক ঈমানদার ব্যক্তির উপর ফরজ দায়িত্ব
বিশ্বাসঘাতক হাসিনা সরকার এমন এক সময়ে দখলদার ইহুদী রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার দিকে মনোযোগ দিয়েছে যখন এটি অধিকৃত ফিলিস্তিনের বরকতময় ভূমির জেনিন শরণার্থী শিবিরে নৃশংস অভিযান চালাচ্ছে। ৫ই মার্চ, ২০২৩ তারিখে ঢাকা ট্রিবিউন অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্র ইসরায়েলের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের এশিয়া ও ইউরো-এশিয়া বিষয়ক প্রাক্তন পরিচালক জোসেফ রোজেনের একটি নিবন্ধ (ব্যক্তিগত মতামত) প্রকাশ করেছে, যা মূলত ‘দ্য জেরুজালেম পোস্ট’-এ প্রকাশ করা হয়েছিল (“আব্রাহাম অ্যাকর্ড ইসরাইল–বাংলাদেশ সহযোগিতার সুযোগ এনে দিয়েছে”)। এ ধরনের মিডিয়া রিপোর্টের উদ্দেশ্য পরিষ্কার। বিভিন্ন গণমাধ্যম ব্যবহার করে হাসিনা সরকার অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্র ইসরায়েলের সাথে মার্কিন নেতৃত্বাধীন সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ চুক্তি তথা ‘আব্রাহাম অ্যাকর্ডস’ মেনে নেয়ার জন্য বাংলাদেশের মুসলিমদেরকে প্রলুব্ধ করতে চায়। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ইসরায়েলের সহায়তা নিয়ে বাংলাদেশ এখন আন্তঃআঞ্চলিক অর্থনৈতিক ও ভূ-কৌশলগত খেলোয়াড় হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, সুদান এবং মরক্কোর পর মার্কিনীরা এখন বাংলাদেশের দিকে নজর দিয়েছে, কারণ তারা জানে যে শেখ হাসিনার মতো ক্রীতদাসতুল্য শাসক তার ক্ষমতা সুরক্ষিত রাখার জন্য সকল সীমা অতিক্রম করতে বদ্ধপরিকর। এই স্বাভাবিকীকরণ চুক্তিটি বর্তমানে উপনিবেশবাদী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় এগিয়ে গেলেও ইহুদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রকল্পটি ছিল মূলত হাসিনার ঔপনিবেশিক প্রভু ব্রিটেনের। তাই হাসিনা সরকার ইতিমধ্যেই ফিলিস্তিনের বরকতময় ভূমি দখলকারীর কাছ থেকে গণ-নজরদারি সরঞ্জাম ক্রয় করে অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্রের সাথে একটি গোপন সম্পর্ক স্থাপন করেছে (বাংলাদেশ ইসরায়েলি কোম্পানির কাছ থেকে গণ–গুপ্তচরবৃত্তির সরঞ্জামাদি ক্রয় করেছে”, আল–জাজিরা, ২রা ফেব্রুয়ারি, ২০২১)। এবং এর আগে তার সরকার আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার অজুহাতে বাংলাদেশের পাসপোর্ট থেকে ‘ইসরায়েল ব্যতীত’ ধারাটি বাদ দিয়েছে। বিশ্বাসঘাতক এই সরকার এখন এই ধরনের মিডিয়া রিপোর্টের মাধ্যমে সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণের ক্ষেত্র প্রস্তুত করছে, এবং প্রকাশ্যে ইহুদী রাষ্ট্রের সাথে অবৈধ সহযোগিতা চুক্তি সম্পাদনের ঘোষণা দেয়ার আগে বাংলাদেশের মুসলিমদের সংবেদনশীলতা পরীক্ষা করছে।
হে মুসলিমগণ! এই অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্রের সাথে গোপন সম্পর্ক বজায় রেখে হাসিনা সরকার ইতিমধ্যেই উম্মাহ্’র সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। এখন এই দখলদার রাষ্ট্রের সাথে যেকোনো ধরনের সম্পর্ক গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে এই সরকার কর্তৃক গৃহীত সকল পদক্ষেপসমূহ আপনাদেরকে প্রতিহত করতে হবে। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র শত্রুদের পক্ষে অবস্থান গ্রহণকারী এসব বিশ্বাসঘাতক শাসকগোষ্ঠীর প্রতি আপনাদের যে আনুগত্য রয়েছে তা প্রত্যাহার করতে হবে। ভুলে যাবেন না যে অভিশপ্ত ইহুদীদের হাত থেকে ফিলিস্তিনকে মুক্ত করা উম্মাহ্’র দায়িত্ব। তাদের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করাতো দূরের বিষয়, বরং এই বরকতময় ভূমিকে দখলদার ইহুদীদের নোংরা কবল থেকে পবিত্র করা আমাদের জন্য ফরজ দায়িত্ব। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন:
*يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا لاَ تَخُونُوا اللَّهَ وَالرَّسُولَ وَتَخُونُوا أَمَانَاتِكُمْ وَأَنْتُمْ تَعْلَمُونَ*
“হে মু’মিনগণ! বিশ্বাসঘাতকতা করো না আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের সাথে এবং বিশ্বাসঘাতকতা করো না পারস্পরিক আমানতে জেনে–বুঝে [আল-আনফাল: ২৭]। এবং যদি আমরা এসব বিশ্বাসঘাতক শাসকদেরকে সহ্য করতে থাকি, যারা ইহুদী প্রকল্প বজায় রাখার জন্য ঔপনিবেশিক কাফেরদের সঙ্গে মিত্রতা করেছে, তবে তা হবে অবশ্যই আল্লাহ্ আজ্জা ওয়া জ্বাল ও তাঁর রাসূলের ﷺ সাথে বিশ্বাসঘাতকতায় তাদেরকে সহায়তা করা। এই দালাল শাসকগোষ্ঠী, যারা বাধা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে ফিলিস্তিনের মুক্তি ও সমগ্র মুসলিম বিশ্বের সংকটসমূহের একমাত্র সমাধান নবুয়্যতের আদলে প্রতিশ্রুত খিলাফত রাশিদাহ্ পুনঃপ্রতিষ্ঠার পথে, তাদেরকে অপসারণের জন্য আপনাদেরকে অবশ্যই জেগে উঠতে হবে। খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে হিযবুত তাহ্রীর-কে নুসরাহ্ (ক্ষমতা) প্রদানের জন্য আমাদের সামরিক বাহিনীর নিষ্ঠাবান অফিসারদের প্রতি আহ্বান জানান, যে খিলাফত রাষ্ট্র সমস্ত মুসলিম ভূ-খণ্ডসমূহকে পুনরায় একত্রিত করবে এবং ফিলিস্তিনসহ অন্যান্য দখলকৃত মুসলিম ভূমি মুক্ত করার লক্ষ্যে তার শক্তিশালী সামরিক বাহিনী প্রেরণ করবে। অন্যথায় রোজ কিয়ামতে আমাদের এই নিষ্ক্রিয়তা ও নীরবতা আমাদের জন্য বিশাল যন্ত্রণার কারণ হবে। রাসূলুল্লাহ্ ﷺ আমাদেরকে এসব ঘৃণ্য শাসকদের আনুগত্য করার পরিণতি সম্পর্কে সতর্ক করেছেন, যারা সেটাই অনুমোদন করে যা আল্লাহ্ তা‘আলা অপছন্দ করেন: “আল্লাহ্ তোমাদেরকে রুওয়ায়বিদাহ (মূর্খ) নেতাদের থেকে রক্ষা করুন”। তিনি (রা.) জিজ্ঞাসা করলেন: “রুওয়ায়বিদাহ নেতা কি?” তিনি ﷺ বলেন: “আমার পরে এমনকিছু নেতা আসবে, তারা আমার দিক–নির্দেশনা অনুযায়ী নেতৃত্ব দেবে না, তারা আমার সুন্নাহ্ গ্রহণ করবে না। যেকেউ তাদের মিথ্যার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্যায় কাজে তাদেরকে সাহায্য করে সে আমার দলভুক্ত নয়, এবং আমিও তার দলভুক্ত নই, এবং সে আমার হাউজে কাওসারে আমার নিকট আসবে না। আর যে ব্যক্তি তাদের মিথ্যা বিশ্বাস করে না এবং তাদের অন্যায় কাজে তাদেরকে সাহায্য করে না, সে আমারই, এবং আমিও তার, এবং সে আমার হাউজে কাওসারে আমার নিকট আসবে” [ইবনে হাজার কর্তৃক সহীহ্ হিসেবে বর্ণিত]।
হিযবুত তাহ্রীর / উলাই’য়াহ্ বাংলাদেশ–এর মিডিয়া কার্যালয়