হে দেশবাসী! এই অঞ্চলে মার্কিন উপনিবেশবাদী এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ-বিএনপি যে দাসত্বের রাজনীতিতে লিপ্ত হয়েছে তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
بسم الله الرحمن الرحيم
হে দেশবাসী! এই অঞ্চলে মার্কিন উপনিবেশবাদী এজেন্ডা বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আওয়ামী লীগ-বিএনপি যে দাসত্বের রাজনীতিতে লিপ্ত হয়েছে তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান
হাসিনা সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকতে মরিয়া হয়ে উপনিবেশবাদী শক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে দেশের স্বার্থ বিকিয়ে দেয়ার নীল-নকশা অনুযায়ী অগ্রসর হচ্ছে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগে সরকার এই অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তার নব্য-উপনিবেশবাদী এজেন্ডা বাস্তবায়নের কাজে খোলাখুলিভাবে সহযোগিতা করছে। আকসা এবং জিসোমিয়া (ACSA and GSOMIA) চুক্তিতে দ্রুত স্বাক্ষর করার জন্য যুক্তরাষ্ট্র হাসিনা সরকারের উপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি অব্যাহত রেখেছে, আর এই উদ্দেশ্য সামনে রেখেই সম্প্রতি বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়াও, আগামীতে বিভিন্ন সামরিক-বেসামরিক মার্কিন কূটনীতিকদের সফরে আসার বিষয়টি কার্যতালিকায় রয়েছে। সেপ্টেম্বরের মধ্যেই যুক্তরাষ্ট্র সরকার ও হাসিনার মধ্যে ধারাবাহিক বৈঠক আয়োজনের ব্যাপারে আলোচনা চলছে। দুই দেশের মধ্যে নিয়মিত বৈঠকের অংশ হিসেবে ‘মিলিটারি-টু-মিলিটারি ডায়ালগ’ এবং ‘ট্রেড অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট কো-অপারেশন ফোরাম এগ্রিমেন্ট (TICFA)’ সম্পর্কে আলোচনা বা বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানা গেছে।
এটা স্পষ্ট যে, শেখ হাসিনা জনগণকে বিভ্রান্ত করতেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিচ্ছে, কারণ তার সরকার মার্কিনীদের সাথে একের পর এক দেশবিরোধী চুক্তি, এবং প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক সংলাপের আয়োজন করে যাচ্ছে। কিছুদিন পূর্বে হাসিনা সরকার আনুষ্ঠানিকভাবে ইন্দো-প্যাসিফিক আউটলুক ঘোষণা করে মার্কিন পরিকল্পনায় অংশীদার হয়েছে, এই অঞ্চলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রধান মিত্র জাপানের কাছে বাংলাদেশের দক্ষিণে অবস্থিত মাতারবাড়ি গভীর সমুদ্র বন্দর হস্তান্তর করেছে, মার্কিন এনার্জী জায়ান্ট কোম্পানী এক্সনমোবিলকে গভীর সমুদ্রে অবস্থিত গ্যাস ব্লকসমূহ ইজারা দিতে নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে আকসা এবং জিসোমিয়া’র মতো রাষ্ট্রবিরোধী প্রতিরক্ষা চুক্তিসমূহ স্বাক্ষর করতে রাজি হয়েছে। হাসিনা সরকারের উপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্যে তথাকথিত ‘মানবাধিকার’ ও ‘গণতন্ত্র’ রক্ষার নামে বিভিন্ন জবরদস্তিমূলক পদ্ধতি ব্যবহার করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই অঞ্চলে তার নব্য-উপনিবেশবাদী এজেন্ডাসমূহ এগিয়ে নিচ্ছে, যাতে এটি চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবেলা করতে পারে এবং দ্বিতীয় খিলাফতে রাশিদাহ্’র আসন্ন প্রত্যাবর্তন প্রতিরোধ করতে পারে। এবং, উন্মত্ত হাসিনা সরকার মার্কিন এই চাপের কাছে নতি স্বীকার করেছে, এবং ক্ষমতায় টিকে থাকতে দেশের সার্বভৌমত্ব বিকিয়ে দিতেও প্রস্তুত। এছাড়াও, আমরা প্রধান বিরোধী দল বিএনপির কাছ থেকেও অনুরূপ বিশ্বাসঘাতকতা প্রত্যক্ষ করছি, যারা মার্কিন আধিপত্যের হুমকির বিষয়ে কোনো প্রতিবাদ না করে সম্পূর্ণ নীরব ভূমিকা পালন করছে।
হে দেশবাসী! ধর্মনিরপেক্ষ দালাল শাসকদের মাধ্যমে আমরা অচিরেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভয়াল থাবায় পড়তে যাচ্ছি। তাদের নেতৃত্বের অধীনে থেকে আমরা কখনোই মার্কিন আধিপত্য থেকে নিজেদেরকে মুক্ত করতে পারব না। আওয়ামী-বিএনপি গোষ্ঠীর পশ্চিমা-দাসত্বের এই রাজনীতির অনিবার্য পরিণতি হচ্ছে দেশের উপর কাফির-উপনিবেশবাদী শক্তিসমূহের আধিপত্য ও নিয়ন্ত্রণ সুসংহত হওয়া। মুসলিম হিসেবে আমরা কখনোই এই ঘৃণ্য রাজনৈতিক দাসপ্রথার অধীনে শাসিত হতে পারি না। যতদিন না আমরা পশ্চিমা-সমর্থিত এই ধর্মনিরপেক্ষ শাসকগোষ্ঠী এবং তাদের শাসনব্যবস্থা থেকে পরিত্রাণ লাভ করতে পারবো, ততদিন পর্যন্ত আমরা এই অঞ্চল থেকে উপনিবেশবাদীদের প্রভাব নিশ্চিহ্ন করতে সক্ষম হবো না। এই নব্য-উপনিবেশবাদী আধিপত্য থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় হচ্ছে নবুয়্যতের আদলে প্রতিশ্রুত খিলাফতে রাশিদাহ্ ফিরিয়ে আনা। সুতরাং, আওয়ামী-বিএনপি গোষ্ঠীর প্রতি আপনাদের রাজনৈতিক সংহতি পরিত্যাগ করুন, এবং আমাদের উপর উপনিবেশবাদীদের যে আধিপত্য রয়েছে তার চির অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে হিযবুত তাহ্রীর -এর নেতৃত্বে খিলাফতে রাশিদাহ্ পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনে যোগ দিন। আসন্ন খিলাফত রাষ্ট্র নিজেকে অত্যন্ত দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করবে, এবং শারী‘আহ্ দ্বারা নির্ধারিত একটি শক্তিশালী পররাষ্ট্রনীতির মাধ্যমে এই অঞ্চলসহ সমগ্র বিশ্বব্যাপী মার্কিন আধিপত্যকে ধ্বংস করবে, এবং ক্রুসেডার মার্কিনীদেরকে এই অঞ্চল থেকে চিরতরে বিতাড়িত করবে। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা পবিত্র কুর‘আনে এ ব্যাপারে আমাদেরকে সতর্ক করে বলেন:
* إِن يَثْقَفُوكُمْ يَكُونُوا۟ لَكُمْ أَعْدَآءًۭ وَيَبْسُطُوٓا۟ إِلَيْكُمْ أَيْدِيَهُمْ وَأَلْسِنَتَهُم بِٱلسُّوٓءِ وَوَدُّوا۟ لَوْ تَكْفُرُونَ *
“তোমাদেরকে করতলগত করতে পারলে তারা তোমাদের শত্রু হয়ে যাবে এবং অনিষ্ট সাধনের উদ্দেশ্যে তোমাদের প্রতি বাহু ও রসনা প্রসারিত করবে এবং চাইবে যে, কোনরূপে তোমরাও কাফের হয়ে যাও” [সূরা মুমতাহিনা: ২]
হিযবুত তাহ্রীর / উলাই’য়াহ্ বাংলাদেশ-এর মিডিয়া কার্যালয়