working to establish khilafah

সেকুলার রাজনীতির ফ্ল্যাগশীপ দল-আওয়ামী লীগ অধ্যায়ের সমাপ্তি দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক দল ও নতুন রাজনৈতিক মুখ সমূহের জন্য একটি ঐতিহাসিক সতর্কবার্তা

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

بسم الله الرحمن الرحيم

সেকুলার রাজনীতির ফ্ল্যাগশীপ দলআওয়ামী লীগ অধ্যায়ের সমাপ্তি দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক দল নতুন রাজনৈতিক মুখ সমূহের জন্য একটি ঐতিহাসিক সতর্কবার্তা

যালিম হাসিনার পতন ও কুখ্যাত আওয়ামী লীগের যাবতীয় কার্যক্রম আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে সেকুলার রাজনীতির ফ্ল্যাগশীপ দল-আওয়ামী লীগের রাজনীতির একটি কালো অধ্যায়ের সমাপ্তি হয়েছে। কোন বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর ক্ষমতার রাজনৈতিক সমীকরণের মারপ্যাঁচে নয়, বরং ১৯০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত ‘নিখিল ভারত মুসলিম লীগ’-এর উত্তরসূরী এই আওয়ামী লীগের অবসান একটি ঐতিহাসিক অনিবার্য বাস্তবতা। ভারতবর্ষের মুসলিমদের আকাঙ্ক্ষা ইসলামী শাসন-খিলাফত ব্যবস্থার অধীনে জীবনযাপন করা। মুসলিমদের এই আকাঙ্ক্ষাকে বিভ্রান্ত করতে মুসলিমদের স্বার্থ রক্ষার নামে বৃটিশ উপনিবেশবাদীদের দালাল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ্‌’র নেতৃত্বে পরিচালিত হয় ‘নিখিল ভারত মুসলিম লীগ’। পাকিস্তান কা মতলব কেয়া, লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ্-এই স্লোগান দিয়ে বৃটিশ দালাল জিন্নাহ্‌ এই অঞ্চলের মুসলিমদেরকে বিভক্ত করে মুসলিম জাতীয়তার ভিত্তিতে ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা করে এবং মুসলিমদের উপর ধর্মনিরপেক্ষ-পুঁজিবাদী ব্যবস্থা কায়েম করে বৃটিশদের নব্য-উপনিবেশে পরিণত করে। পরবর্তীতে আরেক বৃটিশ দালাল শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালী জাতীয়তার ভিত্তিতে ‘আওয়ামী লীগ’ প্রতিষ্ঠা করে আবারও মুসলিমদেরকে বিভক্ত করতে ভারতের সহযোগিতায় আরেক ষড়যন্ত্রের রাজনিতিতে লিপ্ত হয়।

যেহেতু ‘আওয়ামী লীগ’ তার সেকুলার পরিচয় গোপন করে নাই, সেহেতু আওয়ামী লীগ এদেশের ইসলামপ্রিয় জনগণের আস্থা ও সমর্থন অর্জন করতে ব্যর্থ হয়। এদেশের ইসলামপ্রিয় জনগণ দ্বারা প্রত্যাখ্যাত হয়ে পতিত হাসিনা ও আওয়ামী লীগ ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য অবস্থান গ্রহণ করে। ক্ষমতায় টিকে থাকতে আওয়ামী নেতৃত্ব পশ্চিমাদের বিশেষ করে মার্কিনীদের সমর্থন অর্জন করতে ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’-এর নামে ‘ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ’-এ ‘গণতান্ত্রিক ক্রুসেডার’ হিসেবে নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠিত করে, এবং দেশকে মার্কিনীদের আঞ্চলিক চৌকিদার ভারতের অধীনস্ত করতে দেশের সামরিক বাহিনীকে দুর্বল করার সকল অপচেষ্টা অব্যাহত রাখে। পিলখানা হত্যাকান্ড থেকে শুরু করে সত্যনিষ্ট-নিষ্ঠাবান রাজনীতিবিদ ও ইসলামের দাওআহ্‌ বহনকারীদের উপর অব্যাহত যুলুম-নির্যাতন যার অন্যতম উদাহরণ। আল্লাহ্‌ ﷻ বলেন, যারা জমীনে সীমালঙ্ঘনমূলক আচরণ করেছিল আর সেখানে অশান্তি বিপর্যয় সৃষ্টি করেছিল অতঃপর আপনার রব তাদের উপর শাস্তির কশাঘাত হানলেন [সূরা আল-ফাজরঃ ১১-১৩]। এভাবেই বিশ্বব্যাপী যালিম শাসকের পতন হয় এবং তার অন্ধ অনুসারী দলের উপর আল্লাহ্‌’র আযাব নাযিল হয়। এই অনিবার্য বাস্তবতা দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক দল ও নতুন রাজনৈতিক মুখ সমূহের জন্য একটি ঐতিহাসিক সতর্কবার্তা। মুসলিম অধ্যুষিত এই ভূখন্ডে যারাই ইসলামের বিরুদ্ধে পশ্চিমাদের যুদ্ধে নিজেদের শামিল করবে এবং তাদের বিদেশী প্রভুদের উপনিবেশিক স্বার্থকে জনগণের উপর চাপিয়ে দেয়ার অপচেষ্টা করবে, জনগণ তাদেরকেও পতিত আওয়ামীগোষ্ঠীর মত আবর্জনার ভাগাড়ে ছুঁড়ে ফেলবে।

অন্তর্বর্তী সরকারের নিকট জনগণের প্রশ্ন, যখন ইসলাম, মুসলিম ও দেশের সার্বভৌমত্বের পক্ষে শক্ত অবস্থান নেয়ায় ও আপোষহীন থাকার কারণে যালিম হাসিনা সরকার নিষ্ঠাবান রাজনৈতিক দল হিযবুত তাহ্‌রীর-কে নিষিদ্ধ করেছিল এবং দলটির নেতাকর্মীদের উপর অমানুষিক যুলুম-নির্যাতন চালিয়েছিল, তখন সেই যালিমের বিদায়ের পরও কেন এখন পর্যন্ত হিযবুত তাহ্‌রীর-এর উপর অবৈধ নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হচ্ছে না? বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দের নিকট প্রশ্ন, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের ব্যাপারে আপনারা সোচ্চার, কিন্তু হিযবুত তাহ্‌রীর-এর উপর আওয়ামী সরকারের অন্যায় নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে কেন আপনারা নিশ্চুপ? তাহলে আপনাদের স্লোগাণসমূহ “আপোষ না সংগ্রাম – সংগ্রাম, সংগ্রাম” “দালালী না রাজপথ – রাজপথ, রাজপথ” কি সত্যি, নাকি ফাঁকা বুলি? আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, হিযবুত তাহ্‌রীর দেশের স্বনামধন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ তরুণদের সমন্বয়ে গঠিত একটি নেতৃত্বশীল রাজনৈতিক দল, তাই আপনাদেরকে অবশ্যই তরুণদের পালস বুঝতে হবে। আপনারা যদি ‘আপোষ’ ও ‘দালালি’ (‘Young Turk’)-এর পথ বেছে নেন, তবে তরুণ প্রজন্ম আপনাদেরকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করবে। তরুণ প্রজন্ম যখন “কালেমার পতাকা” বহন করছে, তখন আপনারা যদি পতিত ‘আওয়ামী লীগ’-এর সেকুলার ফ্ল্যাগশীপ-এর স্থলাভিষিক্ত হন তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন এর পরিণতি কি হতে পারে? আর আপনি উপদেশ দিতে থাকুন, কারণ নিশ্চয়ই উপদেশ মুমিনদের উপকারে আসে [সূরা আয-যারিয়াতঃ ৫৫]।

হে নিষ্ঠাবান রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ বুদ্ধিজীবী এবং সামরিক বাহিনীতে কর্মরত অফিসারগণ, স্যুপ যদি নোনতা হয়, তাহলে চামচ পরিবর্তন করলে কোন কাজ হবে না’-এই আরবি প্রবাদটির অর্থ হচ্ছে, সমস্যার মূল কারণ না জেনে ভাসা ভাসা বা অস্থায়ী সমাধান অকার্যকর ও অর্থহীন। সেকুলার-পুঁজিবাদ বিশ্বব্যাপী একটি ব্যর্থ ব্যবস্থা, যা এর সূতিকাগার খোদ পশ্চিমা বিশ্বেই এখন প্রশ্নবিদ্ধ। তাই এই ব্যবস্থাকে অটুট রেখে শুধু চেহারা পরিবর্তন করে গত দশকের পর দশক ধরে যেমন পরিবর্তন আসে নাই, তেমনি ভবিষ্যতেও প্রকৃত পরিবর্তন আসবে না। রাসূলুল্লাহ্‌ ﷺ বলেছেন, “…তারপর যুলুমের শাসনের অবসান হবে, অতঃপর আবারও ফিরে আসবে খিলাফতনব্যুয়তের আদলে (হাদিস: মুসনাদে আহমদ)। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, মুসলিম উম্মাহ্‌’র মুক্তির জন্য দেশের সকল স্তরের ইসলামপ্রিয় জনগণ খিলাফত প্রতিষ্ঠার প্রহর গুনছে। তাই আপনাদের নিকট উদাত্ত আহ্বান, জনবিচ্ছিন্ন রাজনীতির ফাঁদে পা না দিয়ে, জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণে হিযবুত তাহ্‌রীর-এর সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে খিলাফত প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসুন।

﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَجِيبُوا لِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُحْيِيكُمْ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ يَحُولُ بَيْنَ الْمَرْءِ وَقَلْبِهِ وَأَنَّهُ إِلَيْهِ تُحْشَرُونَ

হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ্ তাঁর রাসূলের সেই আহ্বানে সাড়া দাও, যখন তোমাদেরকে এমন কিছুর দিকে আহ্বান করা হয় যা তোমাদের মধ্যে প্রাণের সঞ্চার করে [সূরা আল-আনফালঃ ২৪]।

 

হিযবুত তাহ্রীর, উলাই‘য়াহ্‌ বাংলাদেশএর মিডিয়া অফিস