working to establish khilafah

যুলুমের ব্যবস্থা থেকে মুক্তির জন্য নব্যুয়তের আদলে খিলাফত প্রতিষ্ঠার দাবীতে বায়তুল মোকারম উত্তর গেটে হিযবুত তাহ্‌রীর-এর সমাবেশ ও মিছিল

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

بسم الله الرحمن الرحيم

যুলুমের ব্যবস্থা থেকে মুক্তির জন্য নব্যুয়তের আদলে খিলাফত প্রতিষ্ঠার দাবীতে

বায়তুল মোকারম উত্তর গেটে হিযবুত তাহ্রীরএর সমাবেশ ও মিছিল

হিযবুত তাহ্রীর, উলাই‘য়াহ্‌ বাংলাদেশ, আজ (০৯/০৮/২০২৪) শুক্রবার বাদ জুমু‘আ ঢাকার প্রাণকেন্দ্র বায়তুল মোকাররম-এর উত্তরগেটে সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করে। হিযবুত তাহ্‌রীর-এর সহস্র নেতা-কর্মী-সমর্থক ও সাধারণ মুসল্লীদের তাক্ববীর ধ্বনীতে রাজপথ প্রকম্পিত হয়, তারা যালিম হাসিনার বিচার কর, খিলাফতের জন্য লড়ো; মুক্তির একপথ, খিলাফত; রাসূলুল্লাহ্‌’র একপথ, খিলাফত; এই মুহুর্তে দরকার, খিলাফত সরকার; ইত্যাদি বিভিন্ন শ্লোগাণ দেয়।

মিছিলপূর্ব সমাবেশে বক্তাগণ তাদের বক্তব্যে যেসব বিষয়ের উপর আলোকপাত করেন তা নিম্নে তুলে ধরা হলো:

হে দেশবাসী, রাসূলুল্লাহ্‌ ﷺ বলেছেন, প্রকৃতপক্ষে, মহান আল্লাহ্ যালিমকে অবকাশ দেন যাতে তিনি (আল্লাহ্‌) তাকে (যালিমকে) এমনভাবে পাকড়াও করেন তখন সে যেন নিস্তার না পায় (সহীহ্‌ মুসলিম)। যালিম হাসিনার পতন সকল যালিম ও অত্যাচারী শাসকদের জন্য একটি সতর্কবাণী। জনগণকে দমনে হাসিনা সরকারের যুলুম-নির্যাতন কতটা পদ্ধতিগত তার প্রমান বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা বাহিনীর কাউন্টার-টেরোরিজম ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (সিটিআইবি) দ্বারা পরিচালিত “আয়নাঘর”, পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (DB) ও র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়ন (RAB)-এর কার্যালয়ের টর্চার সেল অন্যতম দৃষ্টান্ত। মার্কিন-ব্রিটেন-ভারতসহ পশ্চিমা কাফির উপনিবেশবাদী যারা এই হাসিনাকে মদদ দিয়েছিল তারা আজকে এই দালালকে টিস্যু পেপারের মত ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছে। তাই বর্তমানে যারা দেশ শাসনের দায়িত্ব নিয়েছে তাদের প্রতি জনগণের দাবী তারা যেন অনতিবিলম্বে যালিম হাসিনা ও তার দোসরদের বিচারের আওতায় নিয়ে আসে এবং জনগণের প্রতি তাদের নিষ্ঠা ও অঙ্গীকার প্রকাশ করে।  আর মনে করো না যে, যালিমরা যা করছে সে সম্পর্কে আল্লাহ্ বেখবর [সূরা ইব্রাহিমঃ ৪২]।

হে দেশবাসী, বর্তমান ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক-পুঁজিবাদী ব্যবস্থাই যালিম শাসক তৈরির কারখানা। কারণ এই ব্যবস্থায় শাসকগোষ্ঠী সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী, যারা ক্ষমতায় আসীন হয়ে নিজেদের, কতিপয় দেশী-বিদেশী পুঁজিপতির ও তাদের কাফির উপনিবেশবাদী প্রভু মার্কিন-ব্রিটেন-ভারতের স্বার্থ রক্ষা করে, এবং বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর উপর যুলুম করে। আর জনগণ যখন তাদের ন্যায্য দাবী তুলে তখন তাদেরকে দমন-নিপীড়ন করে ‘আয়নাঘর’-এ বন্দি করে। আল্লাহ্‌ ﷻ বলেন, আর যারা আল্লাহ্যা নাযিল করেছেন তদানুসারে শাসনকার্য পরিচালনা করে নাতারাই যালিম [সূরা মায়িদাহ্: ৪৫]।

হে দেশবাসী, আপনাদেরকে কুর‘আন-সুন্নাহ্‌’র আলোকে প্রণীত ইসলামী রাষ্ট্রের সংবিধান অনুযায়ী শাসনকার্য পরিচালনা করার দাবী তুলতে হবে। রাসূলুল্লাহ্‌ ﷺ বলেন:যে ব্যক্তি তার দিনটি এমনভাবে শুরু করলো যে, তার ঐ দিনের খাবারের বন্তোবস্ত আছে, তার নিরাপত্তা এবং সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা আছে, বিষয়টি এমন যেন সে সমগ্র পৃথিবী পেল” (সহীহ্‌ তিরমিযী)”। একমাত্র শারী‘আহ্‌ আইন বাস্তবায়নের মাধ্যমে ধর্ম-বর্ণ-জাতি নির্বিশেষে সকল নাগরিকের জন্য “অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান, শিক্ষা-চিকিৎসা-নিরাপত্তা” নিশ্চিত করা সম্ভব। তেল-গ্যাস-বিদ্যুৎসহ জ্বালানী খাত থেকে দেশী-বিদেশী কোম্পানীসমূহ উচ্ছেদ করে এগুলোকে গণমালিকানাধীন সম্পত্তি ঘোষণা করে রাষ্ট্রীয় পরিচালনায় নিয়ে আসতে হবে এবং এগুলো থেকে প্রাপ্ত রাজস্ব জনগণের কল্যাণে ব্যবহার করতে হবে। কারণ শারী‘আহ্‌ অনুযায়ী এগুলো হচ্ছে জনগণের সম্পদ (গণমালিকানাধীন সম্পত্তি) যা ইজারা দেয়া বা বেসরকারীকরণ হারাম অর্থাৎ নিষিদ্ধ। ইবনে আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্‌ ﷺ বলেছেন, মুসলিমরা (জনগণ) পানি, চারণভূমি এবং আগুনএই তিনটি জিনিসের অংশীদার (আবু দাউদ)। আনাস (রাঃ) ইবনে আব্বাস থেকে বর্ণনা করেছেন, এবং এর মূল্য গ্রহন করা হারাম (নিষিদ্ধ)”। কাফির উপনিবেশবাদী রাষ্ট্রের সাথে জলে-স্থলে সকল কৌশলগত চুক্তি (যেমন, ট্রানজিট, মাতারবারী গভীর সমুদ্র বন্দর, ইন্দো-প্যাসিফিক কৌশল সংশ্লিষ্ট, ইত্যাদি) এবং সামরিক চুক্তিসমূহ বাতিল করতে হবে। আল্লাহ্‌ ﷻ বলেন, যদি তারা তোমাদের উপর আধিপত্য বিস্তার করতে পারে, তাহলে তারা তোমাদের বিরুদ্ধে শত্রুতায় লিপ্ত  হবে, এবং তাদের হস্ত রসনাসমূহ প্রসারিত করে তোমাদের ক্ষতি সাধন করবে, এবং তাদের আকাংখা তোমরা যেন কাফিরদের কাতারে শামিল হও [সূরা মুমতাহিনা: ০২]।

হে দেশবাসী, রাসূলুল্লাহ্‌ ﷺ বলেছেন, “…তারপর যুলুমের শাসনের অবসান হবে, অতঃপর আবারও ফিরে আসবে খিলাফতের শাসননব্যুয়তের আদলে (মুসনাদে আহমদ)। এই হাদিস থেকে স্পষ্ট, একমাত্র আল্লাহ্‌ প্রতিশ্রুত খিলাফতের শাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই এই যুলুমের শাসন থেকে মুক্তি আসবে। এবং দেশ কাফির উপনিবেশবাদীদের কবল থেকে মুক্ত হবে। তাই খিলাফত প্রতিষ্ঠার দাবী তোলা প্রতিটি মুসলিমের জন্য ঈমানী দায়িত্ব।  সর্বশেষ বক্তা, হিযবুত তাহ্রীর-এর নেতৃত্বে  নব্যুয়তের আদলে খিলাফত প্রতিষ্ঠায় সর্বস্তরের জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তার বক্তব্য সমাপ্ত করেন।

 

 

হিযবুত তাহ্রীর / উলাই‘য়াহ্‌ বাংলাদেশএর মিডিয়া অফিস