যালিম হাসিনাকে অপসারণ করে খিলাফত প্রতিষ্ঠায় হিযবুত তাহ্রীর-কে নুসরাহ্ (ক্ষমতা) প্রদান করতে সামরিক অফিসারদের নিকট দাবী তুলুন
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
“…তারপর যুলুমের শাসনের অবসান হবে,
অতঃপর আবারও ফিরে আসবে খিলাফত — নব্যুয়তের আদলে” (হাদিস: মুসনাদে আহমাদ)
যালিম হাসিনাকে অপসারণ করে খিলাফত প্রতিষ্ঠায় হিযবুত তাহ্রীর–কে নুসরাহ্ (ক্ষমতা) প্রদান করতে
সামরিক অফিসারদের নিকট দাবী তুলুন
হে দেশবাসী!
- শিক্ষার্থীদের কোটাসংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে একদিকে জনগণের প্রতি হাসিনার শত্রুতা ও দমন-নিপীড়নের হিংস্রতা, অন্যদিকে বুকের তাজা রক্ত দিয়ে তরুণদের প্রতিরোধ সর্বস্তরের জনগণকে নাড়া দিয়েছে।
- হাসিনার নির্দেশে পুলিশ-বিজিবি-র্যাব অ্যাসল্ট রাইফেল ব্যবহার করে, এমনকি হেলিকপ্টার থেকে নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে দেশব্যাপী ভীতি সঞ্চার করতে জনগণের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। এই হামলায় অনেক শিশুসহ সহস্রাধিক নিহত হয় এবং হাজার হাজার আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়। সরকার এই হতাহতের সংখ্যা গোপন করতে হাসপাতালগুলো থেকে রেজিস্টার বই সরিয়ে নিয়ে যায় এবং হতাহতদের পরিবারদেরকে হুমকি ও ভয়-ভীতি দেখাচ্ছে।
- গত ১৫ বছরে পশ্চিমাদের দালাল হাসিনা সরকার দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করেছে, দুর্নীতি ও লুটপাটের রাজত্ব কায়েম করেছে, ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে এবং দেশের সার্বভৌমত্ব ও কৌশলগত সম্পদ ইঙ্গ-মার্কিন-ভারতের হাতে তুলে দিচ্ছে। তাই হাসিনা সরকারের যুলুম-অত্যাচার ও দুর্নীতি-দুঃশাসনে ত্যাক্ত-বিরক্ত হয়ে সর্বস্তরের জনগণ তার অপসারণ দাবী করছে।
- পশ্চিমাদের আরেক দালাল বিএনপিগোষ্ঠী হাসিনা সরকারের পদত্যাগ দাবী করছে ও তথাকথিত গণতন্ত্র পুনঃরুদ্ধারে জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছে, যদিও এদের দুঃশাসনও আপনারা অতীতে প্রত্যক্ষ করেছেন।
- ফিলিস্তিনে গণহত্যার মদদ দাতা পশ্চিমা ক্রুসেডার রাষ্ট্রসমূহের এবং উপনিবেশবাদীদের সংস্থা জাতিসংঘের উদ্বেগ প্রকাশ ও তদন্ত দাবী করা মায়াকান্না ছাড়া আর কিছু না! আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন, “মুমিনগণ যেন মুমিনগণ ছাড়া কাফেরদেরকে মিত্র (সাহায্যকারী বা রক্ষাকারী) হিসেবে গ্রহণ না করে। আর যে কেউ এরূপ করবে তার সাথে আল্লাহ্’র কোন সম্পর্ক থাকবে না” [সূরা আলি-ইমরান : ২৮]। সুতরাং, আমাদের রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানে পশ্চিমা উপনিবেশবাদীদের মুখাপেক্ষী হওয়া আত্মঘাতী।
- পশ্চিমাদের প্রদত্ত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ইসলামের আক্বীদা পরিপন্থী এবং যালিম তৈরির কারখানা, যেখানে শাসকগোষ্ঠীই সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী। দেশের মানুষ দশকের পর দশক ধরে গণতান্ত্রিক শাসন প্রত্যক্ষ করেছে, যেখানে পরিবর্তনের নামে শুধু চেহারাই পরিবর্তন হয় কিন্তু জনগণের উপর যুলুমের কোন পরিবর্তন হয় না। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন, “আর যারা আল্লাহ্ যা নাযিল করেছেন তার দ্বারা শাসনকার্য পরিচালনা করে না, তারাই যালিম” [সূরা আল-মায়িদাহ্ : ৪৫]।
- একমাত্র আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা প্রতিশ্রুত ইসলামী শাসনব্যবস্থা তথা নব্যুয়তের আদলে খিলাফত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই এই যুলুম-অত্যাচারের শাসনের বিলুপ্ত ঘটবে। একমাত্র খিলাফতই পারে হাসিনার মত দালাল শাসকদের যুলুম থেকে চিরতরে মুক্ত করতে এবং যালিমদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে।
- হিযবুত তাহ্রীর দেশের নেতৃত্ব গ্রহণ এবং খিলাফত রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য সর্বতোভাবে প্রস্তুত। হিযবুত তাহ্রীর-ই একমাত্র দল যারা মুসলিম উম্মাহ্-কে একটি নেতৃত্বশীল জাতিতে পরিণত করতে পারে। খিলাফত প্রতিষ্ঠায় হিযবুত তাহ্রীর-কে নুসরাহ্ (ক্ষমতা) প্রদান করতে সামরিক বাহিনীতে কর্মরত অফিসারদের নিকট জোর দাবী জানাতে হবে। সামরিক অফিসারদের সাথে হিযবুত তাহ্রীর-এর সদস্যদের পরিচয় করিয়ে দিতে হবে। আপনারা জানেন, হিযবুত তাহ্রীর-এর সদস্যগণ সামরিক অফিসারদের ঐক্যবদ্ধ করছে এবং সামরিক অফিসারগণও খিলাফত প্রতিষ্ঠায় সাড়া দিচ্ছেন।
হে সামরিক বাহিনীর নিষ্ঠাবান অফিসারগণ! আপনারা লক্ষ্য করেছেন কীভাবে নিরস্ত্র তরুণরা বুকের তাজা রক্ত দিয়ে হাসিনার যুলুম-অত্যাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে, অথচ আপনাদের হাতে সামরিক ক্ষমতা থাকা সত্বেও আপনারা কি করেছেন? আপনারা জনগণের পক্ষে অবস্থান নেন নাই; বরং হাসিনার দুর্বৃত্ত বাহিনী কর্তৃক জনগণকে নির্বিচারে হত্যা, গুম, নির্যাতন ও গণগ্রেফতার করার সুযোগ করে দিয়েছেন। যার কারণে জনগণ আপনাদেরকে ধিক্কার দিচ্ছে এবং আপনাদের সাহস নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। আপনাদের সামরিক শক্তিকে মজলুমের বিপক্ষে ব্যবহার না করে যালিমকে অপসারণ করতে ব্যবহার করুন। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেন, “…তারপর যুলুমের শাসনের অবসান হবে, অতঃপর আবারও ফিরে আসবে খিলাফত — নব্যুয়তের আদলে” (মুসনাদে আহমাদ)। একমাত্র নব্যুয়তের আদলে খিলাফত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই বর্তমান এই যুলুমের অবস্থার অবসান হবে। আর কাল বিলম্ব না করে হাসিনাকে অপসারণ করে আল্লাহ্ প্রতিশ্রুত খিলাফত প্রতিষ্ঠায় হিযবুত তাহ্রীর-কে নুসরাহ্ (ক্ষমতা) প্রদান করতে অগ্রগামী হউন।
“হে ঈমানদারগণ! তোমাদের কি হল যে, যখন তোমাদেরকে আল্লাহ্’র পথে অভিযানে বের হতে বলা হয়, তখন তোমরা দুনিয়াকে আঁকড়ে পড়ে থাক। তাহলে কি তোমরা পরকালের বিনিময়ে পার্থিব জীবনের উপর পরিতুষ্ট হয়ে গেলে? বস্তুতঃ পার্থিব জীবনের ভোগ-বিলাসতো আখিরাতের তুলনায় কিছুই নয়, অতি সামান্য” [সূরা আত-তাওবাহ্ : ৩৮]।
০৩ আগস্ট, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
২৮ মহররম, ১৪৪৬ হিজরি
হিযবুত তাহ্রীর, উলাই’য়াহ্ বাংলাদেশ