মুসলিম বিশ্বের দালাল শাসকদের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে মার্কিনীদের দুই দানব- আরব ভূমিতে অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েল এবং দক্ষিন এশিয়ায় হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র ভারত – মুসলিম ভূখণ্ডের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করার স্পর্ধা দেখাচ্ছে
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
بسم الله الرحمن الرحيم
মুসলিম বিশ্বের দালাল শাসকদের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে মার্কিনীদের দুই দানব– আরব ভূমিতে অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েল এবং দক্ষিন এশিয়ায় হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র ভারত – মুসলিম ভূখণ্ডের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করার স্পর্ধা দেখাচ্ছে
হিযবুত তাহ্রীর, উলাই‘য়াহ্ বাংলাদেশ, আজ (২০ জুন, ২০২৫) শুক্রবার বাদ জুমা ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন মসজিদ প্রাঙ্গণে অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েল কর্তৃক গাযায় খাদ্য অবরোধসহ অব্যাহত গণহত্যা এবং ইরানে আক্রমণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিলের আয়োজন করে। সমাবেশে বক্তাগণের বক্তব্যের সার সংক্ষেপ নিম্নে দেয়া হলো:
বিশ্ববাসীর ক্ষোভ, ঘৃণা ও বিবেককে তোয়াক্কা না করে, এযুগের ফেরাউনী শক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ মদদে অভিশপ্ত ইহুদীগোষ্ঠী গাযায় গত ২০ মাস যাবৎ মুসলিমদের উপর ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে; বাড়িঘর ও হাসপাতালসমূহ গুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, অগণিত সাংবাদিক, চিকিৎসক এবং ত্রাণকর্মী নিহত হয়েছেন। চলমান অবরোধের মধ্যে খাদ্যসহ মানবিক সাহায্য ইচ্ছাকৃতভাবে বন্ধ করে গাজায় কৃত্রিম দুর্ভিক্ষ সৃষ্টি করা হয়েছে এবং ত্রাণ বিতরণের নামে জড়ো করে ক্ষুধার্ত গাযার অধিবাসীদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। বিশ্বব্যাপী মুসলিমদের বিক্ষোভ এবং গাযার মুসলিমদের উদ্ধারে সামরিক বাহিনীর প্রতি আহ্বান, কিংবা বিশ্ব মানবাধিকার সংগঠনগুলোর মার্চ-ফর-রাফা অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্রকে ঘিরে থাকা আরব দেশগুলোর নির্বোধ মুসলিম শাসকদের টনক একটুও নাড়াতে পারে নাই। আল্লাহ্ ﷻ বলেন, “তাদের হৃদয় আছে, কিন্তু তা দিয়ে তারা উপলব্ধি করে না, তাদের চক্ষু আছে, কিন্তু তা দিয়ে তারা দেখে না এবং তাদের কর্ণ আছে, কিন্তু তা দিয়ে তারা শ্রবণ করে না। এরা চতুষ্পদ জন্তুর ন্যায়; বরং তা অপেক্ষাও অধিক বিভ্রান্ত!” [সূরা আল-আ’রাফঃ ১৭৯]।
মুসলিম বিশ্বের দালাল শাসকদের বিশ্বাসঘাতকতার কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্পর্ধা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং মার্কিনীরা মুসলিমদের বিরুদ্ধে তাদের যুদ্ধকে প্রসারিত করছে। আপনারা নিশ্চয়ই প্রত্যক্ষ করেছেন, দখলদার ইসরায়েলের যুদ্ধবিমানগুলো মুসলিম দেশগুলোর শাসকদের আকাশসীমা অতিক্রম করে ইরানে হামলা চালিয়ে ধ্বংসযজ্ঞ ও হত্যাকাণ্ড সম্পন্ন করে নিরাপদে দখলকৃত ভূমিতে (ইসরায়েল) ফিরে গেছে। সিরিয়া, ইরাক, মিসর, তুরস্ক বা আশেপাশের কোনো শাসকই এই বিমানগুলোর বিরুদ্ধে একটি গুলিও ছুড়েনি! আর অন্যদিকে, ইরান দখলদার ইসরায়েলকে লক্ষ্য করে যেসব মিসাইল নিক্ষেপ করেছে, জর্ডানের বিশ্বাসঘাতক শাসক তার আকাশসীমায় সেগুলোকে ভুপাতিত করে ইহুদীগোষ্ঠীর রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করেছে। তারা নির্বিঘ্নে আক্রমণ চালিয়ে ফিরে যায়, আর মুসলিম দেশগুলোর শাসকরা নিষ্ক্রিয় দর্শকের মতো তা প্রত্যক্ষ করে। এসব শাসকরা ভুলে গেছে—অথবা ইচ্ছাকৃতভাবে উপেক্ষা করেছে—এই নিষ্ক্রিয়তার ভয়াবহ পরিণতি।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আরব ভূমিতে অভিশপ্ত ইহুদী গোষ্ঠীকে এবং এশিয়ায় হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র ভারতকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়েছে। কারণ তারা জানে, এই ইহুদী এবং মুশরিক গোষ্ঠী মুসলিমদের চির শত্রু। আল্লাহ্ ﷻ বলেন, “আপনি অবশ্যই ইহুদী এবং মুশরিকদেরকে মুসলিমদের প্রতি শত্রুতায় সমগ্র মানবমন্ডলীর মধ্যে সবচেয়ে কঠোর পাবেন” [সূরা আল-মায়েদাঃ ৮২]। যখন মুসলিম সামরিক বাহিনী এসব দুর্বল-দুর্বৃত্ত কাফির গোষ্ঠীকে পর্যদুস্ত করতে অগ্রগামী হয় এবং মুসলিম উম্মাহ্ বিজয় উদযাপন করে, তখন দালাল শাসকগোষ্ঠী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধ বন্ধ করে মুসলিম উম্মাহ্‘কে পরাজিত করতে সামরিক বাহিনীর লাগাম টেনে ধরে। এসব দালাল শাসকগোষ্ঠীর উপর কতটা নিয়ন্ত্রণ ও আস্থা থাকলে ট্রাম্প তার ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে পোস্ট দিয়ে বলতে পারে যে, “ইরান এবং ইসরায়েলের একটি চুক্তিতে পৌঁছানো উচিত এবং তারা তা করবেই, ঠিক যেমন আমি ভারত এবং পাকিস্তানকে একটি চুক্তিতে পৌঁছাতে বাধ্য করেছিলাম… এবং তিনি আরও বলেছেন: একইভাবে, শীঘ্রই ইসরায়েল এবং ইরানের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হবে, এখন অনেক ফোন কল এবং বৈঠক চলছে” [স্কাই নিউজ, ১৫/৬/২০২৫]।
পশ্চিমা কাফির উপনিবেশবাদীদের দালাল শাসকগোষ্ঠীর প্রকৃত চেহারা মুসলিম উম্মাহ্’র নিকট উন্মোচিত হয়ে পড়েছে। বিশ্বব্যাপী মুসলিম উম্মাহ্, ফিলিস্তিনের পবিত্র ভূমিসহ আরাকান-কাশ্মিরকে অবৈধ দখল মুক্ত করতে সামরিক বাহিনীতে কর্মরত তাদের নিষ্ঠাবান সন্তানদেরকেই আহ্বান করছে এবং তারাও মুসলিম উম্মাহ্’র আহ্বানে সাড়া দিচ্ছেন। রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন, “নিশ্চয়ই ইমাম (খলিফা) হচ্ছেন কমান্ডার, যার অধীনে মুসলিমরা যুদ্ধ করে এবং নিজেদের আত্মরক্ষা করে” [সহীহ্ মুসলিম]। একমাত্র খলিফা হচ্ছেন মুসলিম উম্মাহ্’র কমান্ডার, যার নেতৃত্বে মুসলিম সামরিক বাহিনী অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্র ইসরায়েল এবং হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র ভারতকে প্রতিহত করার মাধ্যমে কাফির উপনিবেশবাদী মার্কিনীদের এই দুই হাতকে কেটে দিবে, ইনশা‘আল্লাহ্। আল্লাহ্ ﷻ বলেন, “তারা তোমাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না, কেবল [কিছু] কষ্ট দেয়া ছাড়া। আর যদি তারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে, তাহলে তারা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে (পালিয়ে যাবে), এরপর তারা কোনো সাহায্যও পাবে না” [সূরা আলি-ইমরানঃ ১১১]। সর্বোপরী, হিযবুত তাহ্রীর-এর পক্ষ থেকে আপনাদের প্রতি আমাদের আহ্বান, আপনারা মুসলিম উম্মাহ্’র পরাক্রমশালী রাষ্ট্র, নবুয়তের আদলে খিলাফত প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হউন এবং সামরিক বাহিনীতে কর্মরত আপনাদের সন্তানদের নিকট খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় হিযবুত তাহ্রীর-কে নুসরাহ্ (ক্ষমতা) প্রদান করতে জোর দাবী জানান।
﴿فِي بِضْعِ سِنِينَ لِلَّهِ الأَمْرُ مِنْ قَبْلُ وَمِنْ بَعْدُ وَيَوْمَئِذٍ يَفْرَحُ الْمُؤْمِنُونَ*بِنَصْرِ اللَّهِ يَنصُرُ مَنْ يَشَاءُ وَهُوَ الْعَزِيزُ الرَّحِيمُ﴾
“সেদিন মু‘মিনরা আনন্দিত হবে; আল্লাহ্’র সাহায্যে অর্জিত বিজয়ে। তিনি যাকে ইচ্ছা সাহায্য করেন, আর তিনি পরাক্রমশালী, পরম দয়ালু” [সূরা আর-রুমঃ ৪-৫]।
হিযবুত তাহ্রীর, উলাই‘য়াহ্ বাংলাদেশ–এর মিডিয়া অফিস