ভারত সফরকালে তুলসী গ্যাবার্ড তার বক্তব্যে ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মার্কিন-ভারতের অংশীদারিত্ব এবং তাদের দৃঢ় প্রতিজ্ঞার বার্তা দিয়েছে
بسم الله الرحمن الرحيم
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
ভারত সফরকালে তুলসী গ্যাবার্ড তার বক্তব্যে ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে মার্কিন–ভারতের অংশীদারিত্ব এবং তাদের দৃঢ় প্রতিজ্ঞার বার্তা দিয়েছে
ভারত সফরে এসে বিশ্ব সন্ত্রাসী ক্রুসেডার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গ্যাবার্ড বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন ও ‘ইসলামী খিলাফত’ নিয়ে মন্তব্য রাজনৈতিকভাবে সচেতন ও এদেশের ইসলামপ্রিয় জনগণকে হতবাক না করলেও, এদেশে মার্কিন দালালদের শেষ লজ্জাবরণ অপসারণ করে দিয়েছে। কারণ এই দালালগোষ্ঠীই ভারতকে মোকাবেলায় আমেরিকাকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করাকে অনিবার্য হিসেবে প্রচার করেছিল এবং আমেরিকা “ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ” নীতি ত্যাগ করেছে বলে এদেশের ইসলামপ্রিয় জনগণকে আশ্বস্থ করেছিল। প্রকৃতপক্ষে, আমেরিকার নেতৃত্ব পরিবর্তন হলেও তাদের ‘বিদেশনীতি’ পরিবর্তন হয় না। বরং, অহংকারী ট্রাম্প বা তার প্রশাসন তার দালালদেরকে অপমান করতে পছন্দ করে এবং তাদের ‘বিদেশনীতির’ আড়ালে থাকা উদ্দেশ্য প্রকাশ করে দেয়। যার জন্য সে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে দালালদেরকে যে ২৯-মিলিয়ন ডলার প্রদান করেছে তার হিসাব চেয়েছে, অথচ একটি সার্বভৌম দেশের রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে এজাতীয় অর্থ ব্যবহার চরম অপরাধ এবং অন্য একটি দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের শামিল। মার্কিন দালালগোষ্ঠী জনগণকে সবসময় বিভ্রান্ত করেছিল, ফিলিস্তিনের মুসলিমদের গণহত্যা ও বাস্তুচ্যুত করতে আমেরিকা অভিশপ্ত ইহুদিগোষ্ঠীকে মদদ দিলেও ভারতের আগ্রাসন মোকাবিলায় এদেশের পাশে দাঁড়াবে। প্রকৃতপক্ষে, আমেরিকা আরব অঞ্চলে যেমন অবৈধ ইহুদি রাষ্ট্রকে সন্ত্রাসে মদদ দিয়ে ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে, তেমনি এই অঞ্চলে আমেরিকা ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ভারতকে তার আঞ্চলিক চৌকিদার হিসেবে ব্যবহার করছে। আল্লাহ্ ﷻ এই বিষয়ে স্পষ্টভাবে আমাদেরকে কাফির উপনিবেশবাদী ও তাদের দালালদের বিষয়ে সতর্ক করেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা ইহুদি ও খ্রিষ্টানদেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করো না, তারা একে অপরের বন্ধু। তোমাদের মধ্যে কেউ তাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করলে সে তাদেরই অন্তর্ভুক্ত হবে। আল্লাহ্ যালিমদেরকে সৎপথে পরিচালিত করেন না [সূরা আল-মায়িদাঃ ৫১]। কারণ আমেরিকা জানে, মুসলিমরা হচ্ছে অবৈধ ইহুদি রাষ্ট্র ইসরায়েল এবং মুশরিক রাষ্ট্র ভারতের চরম শত্রু; “ঈমানদারদের বিরুদ্ধে শত্রুতায় সমগ্র মানবমন্ডলীর মধ্যে অবশ্যই তুমি ইহুদি ও মুশরিকদের সর্বাধিক কঠোর পাবে” [সূরা আল-মায়িদাঃ ৮২]।
আপনারা প্রত্যক্ষ করেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার তার লজ্জাবরণ ঢাকতে তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্যের নামকাওয়াস্তে নিন্দা জ্ঞাপন করলেও মুসলিম অধ্যুষিত এদেশের জনগণের ইসলামী শাসনের দাবীকে ‘ইসলামী সন্ত্রাসবাদ’ তকমা দিয়ে মুসলিমদেরকে দমনে তাদের প্রতিজ্ঞাকে পুনর্ব্যক্ত করেছে। এই দালালগোষ্ঠী এতটাই নতজানু ও নির্বোধ যে, তাদের প্রতিবাদে আমেরিকাকে একটি প্রশ্নও করার সাহস করে নাই! ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমরা কেন রাষ্ট্রীয় মদদে ধারাবাহিকভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছে সে বিষয়ে তুলসী গ্যাবার্ড কেন উদ্বেগ প্রকাশ করে নাই? তুলসী যে মুহূর্তে ভারতে অবস্থান করছে, সেই মুহূর্তে ভারতে উগ্র হিন্দুত্ববাদীদের হাতে কীভাবে সংখ্যালঘু মুসলিমরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন, তা বিশ্ববাসী প্রত্যক্ষ করেছে। ভারত ‘ফ্যাসিস্ট হাসিনা’-কে কেন আশ্রয় দিয়েছে, সে বিষয়ে তারা টুঁশব্দও করে নাই? মার্কিনীদের দালালরা এসব প্রশ্ন করে নাই কারণ তারা এই অঞ্চলে মার্কিন–ভারত নেক্সাস সম্পর্কে অবহিত। হে দেশবাসী, আপনারা নিজ বিবেককে জিজ্ঞেস করুন, দেশের জনগণের বিরুদ্ধে মার্কিন–ভারতের এমন অবস্থানের পরও কাফির উপনিবেশবাদী আমেরিকা ও তার আঞ্চলিক দোসর ভারতকে মুসলিম উম্মাহ্’র শত্রু হিসেবে গণ্য না করার আর কি অজুহাত থাকতে পারে? এমনকি অনেকেই তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্যে যালিম হাসিনাকে পুনর্বাসনের গন্ধ পাচ্ছে। সুতরাং, সচেতন জনগণ, নিষ্ঠাবান রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবী, এবং সামরিক বাহিনীর সদস্যগণের প্রতি হিযবুত তাহ্রীর-এর পক্ষ থেকে উদাত্ত আহ্বান জনগণকে ঐক্যবদ্ধভাবে যালিম হাসিনার প্রত্যাবর্তনের বা তার জায়গায় অন্য কোন দালালকে প্রতিষ্ঠা করার মার্কিন-ভারতের এজেন্ডাকে প্রতিহত করতে হবে এবং ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে মার্কিন-ভারতের ষড়যন্ত্রকে রুখে দিতে হবে।
হে দেশবাসী, আপনারা জানেন ধর্মনিরপেক্ষ-পুঁজিবাদী ব্যবস্থার ফেরিওয়ালা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখন ‘sick man’ এবং ধর্মনিরপেক্ষ-পুঁজিবাদী ব্যবস্থা ভ্রান্ত ও বিশ্বব্যাপী একটি যুলুম মূলক ব্যবস্থা হিসেবে ধিকৃত। তাই বিশ্বমোড়ল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ন্যায়পরায়ণ শাসন-খিলাফত ব্যবস্থার প্রত্যাবর্তনের ভয়ে ভীত। এই অঞ্চলে মুসলিমদের শাসনের সাতশ বছরের ইতিহাসে যেখানে মুসলিম-অমুসলিমগণ শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করেছিল, সেখানে মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলসী কর্তৃক ইসলামী খিলাফতের উত্থানে অমুসলিমদের উপর নেতিবাচক প্রভাবের ‘narrative’-একটি মস্তবড় মিথ্যা এবং তাদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের বহিঃপ্রকাশ। প্রকৃতপক্ষে, একমাত্র আসন্ন খিলাফত ব্যবস্থা এই অঞ্চলকে পশ্চিমা উপনিবেশবাদী রাষ্ট্রসমূহের ভূ-রাজনৈতিক অপকৌশল ও অত্যাচারী রাজা দাহিরের উত্তরসূরী হিন্দুত্ববাদী শাসকগোষ্ঠীর কবল থেকে সকল জনগণকে মুক্ত করে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা ফিরিরে আনবে, ইনশা‘আল্লাহ্। তাই, সকল স্তরের জনগণকে হিযবুত তাহ্রীর-এর সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে নবুয়তের আদলে খিলাফত প্রতিষ্ঠার কাজকে এগিয়ে নিতে হবে।
﴿وَكَذَلِكَ جَعَلْنَاكُمْ أُمَّةً وَسَطًا لِتَكُونُوا شُهَدَاءَ عَلَى النَّاسِ وَيَكُونَ الرَّسُولُ عَلَيْكُمْ شَهِيدًا﴾
“এভাবে আমি তোমাদেরকে একটি ন্যায়পরায়ণ উম্মত (সর্বোত্তম জাতি) বানিয়েছি, যেন তোমরা মানবজাতির জন্য সাক্ষী হও এবং রাসূলও তোমাদের জন্য সাক্ষী হয়” [সূরা আল-বাকারাঃ ১৪৩]।
হিযবুত তাহ্রীর / উলাই‘য়াহ্ বাংলাদেশ–এর মিডিয়া অফিস