বিদ্যমান ধর্মনিরপেক্ষ পুঁজিবাদী শাসনব্যবস্থা দুর্নীতি ও অন্যায়কে আইন করে বৈধতা দেয়, আর দায়িত্বশীলতা ও ন্যায়পরায়নতার টুঁটি চেঁপে ধরে
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
بسم الله الرحمن الرحيم
বিদ্যমান ধর্মনিরপেক্ষ পুঁজিবাদী শাসনব্যবস্থা দুর্নীতি ও অন্যায়কে আইন করে বৈধতা দেয়, আর দায়িত্বশীলতা ও ন্যায়পরায়নতার টুঁটি চেঁপে ধরে
অন্যায্য ক্যাপাসিটি চার্জ, অতিউচ্চ মূল্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ ও বেসরকারী বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকদের জন্য দায়মুক্তি আইনের সমন্বয়ে তৈরী দেশের জ্বালানী ও বিদ্যুৎ খাতের সরকারী নীতিকে ‘লুটপাটের মডেল’বলে অভিহীত করে গবেষণা রিপোর্ট প্রকাশ করার কারণে পরিকল্পনা মন্ত্রনালয়ের IMED (Implementation, Monitoring and Evaluation Division) বিভাগের প্রধান (যুগ্ম-সচিব) এস এম হামিদুল হক এবং একই বিভাগের পরিচালক (উপ-সচিব) মোহাম্মাদ মাহিদুর রহমানকে প্রথমে ওএসডি ও পরে চাকরি থেকে অপসারণের করা হয়েছে। এই ঘটনা প্রমাণ করে বিদ্যমান ধর্মনিরপেক্ষ পুঁজিবাদী শাসনব্যবস্থা দুর্নীতি ও অন্যায়ের রক্ষাকবচ, কেননা জ্বালানী ও বিদ্যুৎ খাতে ‘গিগা’লুটপাটকারীদেরকে সরকার আইন করে দায়মুক্তি দিচ্ছে (Electricity and Energy Supply (Special Provision) Act-2010), অপরদিকে এই সত্য প্রকাশ করে জনগণের স্বার্থের পক্ষে অবস্থান নেওয়ার কারণে এই দুইজন শীর্ষ কর্মকর্তাকে চাকুরী থেকে অপসারণ করা হয়েছে। এই শাসন-ব্যবস্থায় জনগণের স্বার্থের পক্ষে অবস্থান নিয়ে সত্য তথ্য প্রকাশ করা অসদাচরণ (misconduct), যা আবার ‘সরকারি কর্মচারী শৃঙ্খলা ও আপিল বিধিমালা-২০১৮’নামক আইন দ্বারা সিদ্ধ! মূলত বিদ্যমান ধর্মনিরপেক্ষ পুঁজিবাদী শাসনব্যবস্থা হলো ক্ষুদ্র একটি রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক গোষ্ঠীর স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার যেখানে জনসাধারণকে নিষ্পেষণ ও পদদলীত করে মুনাফার রাস্তা তৈরী করা হয় এবং এই রাস্তাকে টিকিয়ে রাখার জন্য জাতীয়-সংসদকে ব্যবহার করে সকল প্রকার অন্যায় ও অন্যায্য আইন জারি করা হয়। ফলে এই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সকল অন্যায়কারী ও জুলুমবাজরা আজ শক্তিশালী এবং ন্যায়পরায়ন ও সত্যনিষ্ঠরা দুর্বল।
মুসলিম উম্মাহ্’র নিষ্ঠাবান সন্তান, জনাব হামিদুল হক (যুগ্ম-সচিব) ও জনাব মোহাম্মাদ মাহিদুর রহমান (উপ-সচিব) IMED-এর শীর্ষ পদ-পদবীতে থেকে তাদের দায়িত্বের অংশ হিসেবে দেশের জ্বালানী ও বিদ্যুৎ খাতের পর্যবেক্ষক ও নিরীক্ষক হিসেবে যে সত্য উদঘাটন ও প্রকাশ করেছেন তা নিঃসন্দেহে একটি প্রশংসনীয় কাজ এবং এই কাজ করে তারা তাদের ঈমানী দায়িত্ব পালন করেছেন। রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেন, “নিশ্চয়ই তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেককেই যার যার দায়িত্বের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। শাসক তার জনগণের ব্যাপারে দায়িত্বশীল, পুরুষ তার পরিবারের ব্যাপারে দায়িত্বশীল এবং নারী তার স্বামীর সংসারের ব্যাপারে দায়িত্বশীল। নিশ্চয়ই তোমাদের প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল এবং তোমাদের প্রত্যেককেই যার যার দায়িত্বের ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করা হবে” (সহীহ আল-বুখারী: ৭১৩৮)। এটি নিঃসন্দেহে জনগণের জন্য অত্যন্ত আনন্দের যে উম্মাহ্’র মধ্যে এখনো এমন সাহসী ও দায়িত্ববান মানুষ রয়েছেন যারা জালিমের রক্তচক্ষুকে পরোয়া না করে তাদের স্বীয় অবস্থান থেকে তাদের উপর অর্পিত ইসলামী দায়িত্ব পালন করছেন। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা অবশ্যই যথা সময়ে তাদেরকে পুরষ্কার ও মর্যাদা দান করবেন। আর যারা দায়িত্বশীল পদ-পদবীতে থেকে আমানতের খেয়ানত করছেন, জনগণের স্বার্থের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন এবং জালিমের হাতকে শক্তিশালী করছেন তাদের উচিত লজ্জিত ও আল্লাহ্’র শাস্তির ভয়ে ভীত হওয়া; কারণ আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা অবশ্যই তাদেরকে তাদের উপর অর্পিত দায়িত্বের ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করবেন।
যতদিন ধর্মনিরপেক্ষ পুঁজিবাদী শাসনব্যবস্থা বহাল তবিয়তে থাকবে ততদিন জনগণের দুর্ভোগ-দুর্দশা চলতেই থাকবে, শাসনক্ষমতায় যে-ই থাকুক না কেন। সুতরাং শাসক পরিবর্তনের খেলায় অংশগ্রহণ করে কোন পরিত্রাণ আসবে না; অংশগ্রহণ করতে হবে শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের খেলায়। রাসূলুল্লাহ ﷺ-এর দেখানো পথ অনুসরণ করে খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই কেবলমাত্র্র এই জুলুমবাজ ধর্মনিরপেক্ষ-পুঁজিবাদ থেকে মুক্তি মিলবে। খলিফা আল্লাহ্’র দেয়া বিধান অনুসরণ করে রাষ্ট্রের সকল পর্যায়ে ন্যায়পরায়নতা প্রতিষ্ঠা করবেন এবং তার কাছে অধিকার ও সেবার প্রশ্নে দুর্বলরা হবে সবল ও সবলরা হবে দুর্বল, ঠিক যেমনটি হয়েছিল খলীফা আবু-বক্বর (রা.) ও উমার (রা.) এর সময়ে। কারণ খলিফা আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা-এর দরবারে জবাবদিহীতাকে ভয় করবেন।
হিযবুত তাহ্রীর/উলাই’য়াহ্ বাংলাদেশ–এর মিডিয়া কার্যালয়