পিলখানা হত্যাকাণ্ড ছিল দেশের সামরিক বাহিনীকে দুর্বল করার ভারতীয় ষড়যন্ত্র – জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের দেয়া এই প্রতিবেদন, ১৬ বছর পূর্বে হিযবুত তাহ্রীর যেই সত্য সাহসের সাথে জাতির সামনে উপস্থাপন করেছিল তারই সত্যতা প্রমাণিত হলো আমরা দেশবাসীকে আবারও আহ্বান করছি, আমাদের সামরিক বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করার মার্কিন পরিকল্পনার বিরুদ্ধে সতর্ক হউন
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
بسم الله الرحمن الرحيم
পিলখানা হত্যাকাণ্ড ছিল দেশের সামরিক বাহিনীকে দুর্বল করার ভারতীয় ষড়যন্ত্র – জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশনের দেয়া এই প্রতিবেদন, ১৬ বছর পূর্বে হিযবুত তাহ্রীর যেই সত্য সাহসের সাথে জাতির সামনে উপস্থাপন করেছিল তারই সত্যতা প্রমাণিত হলো
আমরা দেশবাসীকে আবারও আহ্বান করছি, আমাদের সামরিক বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করার মার্কিন পরিকল্পনার বিরুদ্ধে সতর্ক হউন
২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারী, বিডিআর সদর দপ্তর পিলখানায় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন তাদের তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তদন্তে দেশের সেনাবাহিনীকে দুর্বল করার ভারতীয় ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নে পতিত হাসিনা ও তার সহযোগী তাপস গং-এর সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হয়েছে। আমরা ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত এই অপরাধীদের দ্রুত শাস্তি এবং ভারতকে শত্রুরাষ্ট্র ঘোষণার জোর দাবী জানাচ্ছি। আপনাদের নিশ্চয়ই স্মরণে আছে, বিচক্ষণ ও নিষ্ঠাবান রাজনৈতিক দল, হিযবুত তাহ্রীর সর্বপ্রথম এই সত্যটি জাতির সামনে সাহসের সাথে তুলে ধরে (২৮ ফেব্রুয়ারী, ২০০৯ হিযবুত তাহ্রীর, উলাই‘য়াহ্ বাংলাদেশ কর্তৃক ইস্যুকৃত লিফলেটের শিরোনাম ছিল: “সেনাবাহিনী ও বিডিআরকে ধ্বংস করার ভারতীয় ষড়যন্ত্র এবং সরকারের নিষ্ক্রিয়তার প্রতিবাদ করুন”)। যার ফলে বিশ্বাসঘাতক হাসিনার এই ষড়যন্ত্র অংকুরেই বাধাপ্রাপ্ত হয়, এবং ঠিক তখনই হাসিনার পতনের ভিত্তি রচিত হয়। হৃদয়বিদারক এই পিলখানা ট্র্যাজেডির পরপরই আমরা কেবল মূল চক্রান্তকারী ও তাদের উদ্দেশ্যকেই চিহ্নিত করিনি, বরং আমরা সেইসব নিষ্ঠাবান সেনাকর্মকর্তাদের পাশে ঢাল হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম, যাদেরকে পরবর্তীতে যালিম হাসিনা সরকার জঙ্গি বলে আখ্যায়িত করেছিল। ফলশ্রুতিতে, পতিত হাসিনা সরকার নিয়মতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল হিযবুত তাহ্রীর-এর উপর অন্যায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে এবং নেতা-কর্মীদের উপর যুলুম-নির্যাতন অব্যাহত রাখে। কিন্তু আমরা পতিত হাসিনার রক্তচক্ষু এবং দমন-নিপীড়নকে তোয়াক্কা না করে নিষ্ঠাবান সামরিক অফিসারদের উপর হাসিনা সরকারের চলমান গ্রেফতার-গুম-খুন-বরখাস্তের বিরুদ্ধে জনগণকে রুখে দাঁড়ানোর আহ্বান জানাই এবং জনগণও এই আহ্বানে ব্যাপক সাড়া দেয় (০৭ জানুয়ারী, ২০১২ খ্রীষ্টাব্দ, আমাদের ইস্যুকৃত লিফলেটের শিরোনাম ছিল: “হে মুসলিমগণ! মার্কিন-ভারতের নির্দেশে বিশ্বাসঘাতক হাসিনা কর্তৃক দেশের নিষ্ঠাবান সেনাঅফিসারদেরকে অব্যাহত গুপ্ত অপহরণ, গ্রেফতার এবং বরখাস্তের প্রতিবাদ করুন”)।
সেই সময় হত্যাকাণ্ড অনুসন্ধানে স্থানীয় তদন্তকারীদেরকে সহায়তা করতে যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল ব্যুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (FBI) এবং যুক্তরাজ্যের স্কটল্যান্ড ইয়ার্ডের কর্মকর্তারা তদন্ত কাজে সম্পৃক্ত হয়, এবং আন্তর্জাতিক মান ও দক্ষতাসম্পন্ন এই সংস্থাগুলোর নিকট এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন নিশ্চয়ই কোন জটিল বিষয় ছিলনা। কিন্তু, তারা এই ঘটনাকে ধামাচাপা দিয়েছে, কারণ হাসিনা ছিল বৃটিশ দালাল এবং ভারত হচ্ছে এই অঞ্চলে মার্কিন-বৃটেন এর স্বার্থ রক্ষার আঞ্চলিক চৌকিদার। এছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সম্পর্কের নয়া সমীকরণ (ভারতের চোখে বাংলাদেশকে দেখা) বাস্তবায়নে সামরিক বাহিনী থেকে মেধাবী ও নিষ্ঠাবান অফিসারদের অপসারণ প্রয়োজন ছিল বিধায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই সংস্কারে সম্মত ছিল। আমরা দেশবাসীকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, পরিবর্তিত পরিস্থিতেতে মার্কিনীদের মুখোশ পরিবর্তন হয়েছে, কিন্তু মার্কিন-ভারতের সম্পর্কের কোন পরিবর্তন হয় নাই। আমরা আবারও সতর্ক করছি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই ঘটনাকে ব্যবহার করে আমাদের সামরিক বাহিনীর মনোবল ক্ষুন্ন করতে চায় এবং সে আমাদের সামরিক বাহিনীর উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে মরিয়া হয়ে আছে। এই উদ্দেশ্যে, সে তার দালাল গোষ্ঠীকে সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত করেছে। জুলাই বিপ্লব থেকে জন্ম নেয়া বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার, যারা প্রকৃত পরিবর্তনের জনআকাঙ্ক্ষার উপর ভর করে ক্ষমতায় বসেছে, তারা কেন পতিত হাসিনার অন্যায় নিষেধাজ্ঞা বহাল প্রত্যাহার করে নাই? তাহলে কি শুধু মুখোশ আর চেহারার বদলিয়েছে, কিন্তু ষড়যন্ত্র অব্যাহত রয়েছে? প্রকৃতপক্ষে, পিলখানা হত্যাকাণ্ড নিয়ে মার্কিনীদের অনুগত রাজনৈতিক দলসমূহের মায়াকান্না ও ভারত বিরোধিতা, তাদের রাজনৈতিক ফায়দা হাসিলের কৌশল ছাড়া আর কিছুই না। কারণ তারা মার্কিন-ভারতের সম্পর্কের বিষয়ে খুব ভালোভাবেই অবহিত এবং তাদের কাফির-উপনিবেশবাদী প্রভুর নির্দেশিত সীমারেখা মেনে চলতে বাধ্য।
হে দেশবাসী! হিযবুত তাহ্রীর, এমন একটি রাজনৈতিক দল যে তার জনগণকে মিথ্যা বলে না, এবং মুসলিম উম্মাহ্‘কে কাফির-উপনিবেশবাদী রাষ্ট্রসমূহের কবল থেকে মুক্ত করতে বুদ্ধিবৃত্তিক ও রাজনৈতিক সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। এবং আমরা আবারও দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলছি, একমাত্র আল্লাহ্ ﷻ ও তাঁর রাসূল ﷺ-এর প্রতিশ্রুত নবুয়তের আদলে খিলাফত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই মুসলিম উম্মাহ্ কাফির-উপনিবেশবাদী মার্কিন–বৃটেন ও তাদের আঞ্চলিক চৌকিদার অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েল ও হিন্দুত্ববাদী ভারত থেকে মুক্তি আসবে, ইনশা‘আল্লাহ্। তাই, গণঅভ্যুত্থানের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য জনগণের এই প্রকৃত মুক্তি অর্জন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলমান থাকবে এবং আমরা দেশবাসীকে হিযবুত তাহ্রীর-এর সাথে ঐক্যবদ্ধ থাকতে উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। আল্লাহ্ ﷻ পবিত্র কুর‘আন-এ বলেন:
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اتَّقُوا اللَّهَ وَكُونُوا مَعَ الصَّادِقِينَ﴾
“হে মু‘মিনগণ, তোমরা আল্লাহ্‘কে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের সঙ্গী হও” (সূরা আত-তাওবা: ১১৯)
হিযবুত তাহ্রীর, উলাই‘য়াহ্ বাংলাদেশ–এর মিডিয়া অফিস