working to establish khilafah

নতুন ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র ভারত কর্তৃক মুসলিমদেরকে পদ্ধতিগতভাবে রাষ্ট্রহীন করার আরও একটি নগ্ন পদক্ষেপ

بسم الله الرحمن الرحيم

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

নতুন ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র ভারত কর্তৃক মুসলিমদেরকে পদ্ধতিগতভাবে রাষ্ট্রহীন করার আরও একটি নগ্ন পদক্ষেপ

ভারতে হাজার-বছরের মুসলিম শাসনের ঐতিহ্য মুছে ফেলতে এবং মুসলিমদেরকে পদ্ধতিগতভাবে (systematically) রাষ্ট্রহীন করতে হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র ভারত বাবরী মসজিদ ভেঙ্গে মন্দির নির্মাণ, আওরঙ্গজেবের কবর উপড়ে ফেলা, নতুন নাগরিকত্ব আইন (CAA) ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (NRC) প্রণয়ন এবং সবশেষে নতুন ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল পাশ করেছে। ইসলামী শারী‘আহ্‌ মতে ‘ওয়াকফ’ হলো আল্লাহ্‌’র রাস্তায় দানকৃত সম্পত্তি যা ইসলামের প্রসার ও মুসলিম জনগোষ্ঠীর বৃহত্তর কল্যানে মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানা, কবরস্থান ও অন্যান্য ইসলামী স্থাপনায় ব্যবহৃত হয়। এই সম্পত্তি ওয়াকফকারীর পক্ষ থেকে মুসলিম উম্মাহ্‌’র নিকট আমানতস্বরূপ যা কেয়ামত পর্যন্ত ওয়াকফকৃত সম্পত্তি হিসেবে গণ্য করতে হবে এবং ওয়াকফকারীর ওসিয়ত অনুসারে এই সম্পত্তি ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক। ভারতে বিদ্যমান ৮ লাখ ৭২ হাজারের বেশি ওয়াকফ সম্পত্তি অব্যাহতভাবে হিন্দুত্ববাদী আক্রমনের মুখে থাকা ভারতের অসহায় মুসলিমদের জন্য সামাজিকভাবে কিছুটা হলেও রক্ষাকবচ হিসেবে কাজ করে। কিন্তু ভারতে সরকারী ও রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায় দীর্ঘদিন ধরেই হিন্দুরা ওয়াকফ সম্পত্তিতে বিদ্যমান বিভিন্ন স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিচ্ছে ও জবরদখল করে আসছে। ২০২৫ সালের জানুয়ারী মাসেও মধ্যপ্রদেশ ওয়াকফ বোর্ডের অধীনে থাকা ২৫০টি স্থাপনা গুঁড়িয়ে দিয়েছে হিন্দুত্ববাদী মোদি সরকারের স্থানীয় প্রশাসন। আর এখন কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিল ও রাজ্য ওয়াকফ বোর্ডে বাধ্যতামূলকভাবে দুইজন করে হিন্দু সদস্য নিয়োগ ও এমনকি তারা বোর্ডের প্রধান নির্বাহীও হতে পারবে বলে আইন জারী করে মুসলিমদের ওয়াকফ সম্পত্তিতে হিন্দুদের আইনী নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এই আইনের মাধ্যমে হিন্দুত্ববাদী শাসনের অধীনে থাকা মুসলিমদের আরো দুর্বল, অসহায় ও আর্থ-সামাজিকভাবে নিরাপত্তাহীন করে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। এটি ভারতের নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন-২০১৯ (CAA) ও জাতীয় নাগরিক পঞ্জির (NRC) মতো মুসলিমবিরোধী কালো আইনের ধারাবাহিকতা মাত্র যার মাধ্যমে ভারতের হিন্দুত্ববাদী সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ও আইনী কাঠামোর সর্বোচ্চ অপব্যবহার করে পদ্ধতিগতভাবে (systematically) মুসলিমদেরকে রাষ্ট্রহীন ও ভূমিহীন উদ্বাস্তুতে পরিণত করার চেষ্টা করছে।

অবৈধ রাষ্ট্র ইসরায়েল যেভাবে আইন করে কলমের খোঁচায় ফিলিস্তিনের মুসলিমদেরকে ভূমিহীন ও রাষ্ট্রহীন করার অপচেষ্টা করেছে এবং রাসূলুল্লাহ্‌ (ﷺ) ও খলীফা ওমর (রা.) এর ওয়াকফ করা ভূমিতে হাত দিয়েছে, হিন্দুত্ববাদী ভারতও ঠিক একই ঘৃণ্য প্রক্রিয়া অনুসরণ করছে। ইহুদিবাদী ইসরায়েল যেভাবে মিসাইল ও বুলডোজার দিয়ে ফিলিস্তিনের শত শত মসজিদ ও হাজার বছরের ঐতিহাসিক মুসলিম স্থাপনা মাটির সাথে মিশিয়ে দিয়ে মুসলিমদের বসবাস ও মালিকানার সকল চিহ্নকে মুঁছে ফেলার অপচেষ্টা করছে, হিন্দুত্ববাদী ভারতও ঠিক একই পথ বেঁছে নিয়েছে। আল্লাহ্‌ (ﷻ) বলেন, মুসলিমদের বিরুদ্ধে শত্রুতায় সমগ্র মানবমন্ডলীর মধ্যে তুমি ইহুদি মুশরিকদের সর্বাধিক কঠোর পাবে [সূরা আল-মায়িদাঃ ৮২]।

মুসলিম উম্মাহ্‌’র নিকট এই বিষয়টি স্পষ্ট যে, কাফির উপনিবেশবাদী শক্তিসমূহ বিশেষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যক্ষ মদদে এবং তাদের দালাল মুসলিম শাসকদের পাথরসুলভ নীরবতায় বিশ্বব্যাপী মুসলিমদের উপর এই যুলুম-অত্যাচার হচ্ছে। আপনারা নিশ্চয়ই প্রত্যক্ষ করেছেন, পশ্চিমাদের দালালগোষ্ঠী মিয়ানমারের ভূমিকম্পে সহায়তা করতে তাৎক্ষণিক সেনাবাহিনী প্রেরণ করেছে, কিন্তু ফিলিস্তিনের মুসলিমদের রক্ষা করতে সেনাবাহিনী প্রেরণে নীরব থাকছে। কারণ এসব দালালগোষ্ঠী মুসলিম উম্মাহ্‌’র প্রকৃত অভিভাবক নয়। রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ) বলেছেন, নিশ্চয়ই ইমাম (খলিফা) হলেন একটি ঢাল যার অধীনে তোমরা যুদ্ধ করো এবং যার দ্বারা নিজেদের রক্ষা করো(সহীহ্ মুসলিম)। তাই আমাদেরকে অনতিবিলম্বে মুসলিম উম্মাহ্‌’র প্রকৃত অভিভাবক-খিলাফত প্রতিষ্ঠায় অগ্রগামী হতে হবে এবং নবুয়তের আদলে খিলাফত প্রতিষ্ঠার নেতৃত্বদানকারী দল হিযবুত তাহ্রীর-এর সাথে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আসন্ন খিলাফত রাষ্ট্র মুসলিম সামরিক বাহিনীগুলোকে একত্রিত করে ফিলিস্তিন, আরাকানসহ অধিকৃত মুসলিম ভূমিগুলোকে মুক্ত করবে এবং রাসূলুল্লাহ্ (ﷺ)-এর সুসংবাদ (গাজওয়াতুল হিন্দ) অনুযায়ী ভারতকে অত্যাচারী রাজা দাহিরের উত্তরসূরী হিন্দুত্ববাদী শাসকদের কবল থেকে মুক্ত করে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে নিয়ে আসবে, ইনশাআল্লাহ্‌।

﴿ وَيَرْزُقْهُ مِنْ حَيْثُ لاَ يَحْتَسِبُ وَمَنْ يَتَوَكَّلْ عَلَى اللَّهِ فَهُوَ حَسْبُهُ إِنَّ اللَّهَ بَالِغُ أَمْرِهِ قَدْ جَعَلَ اللَّهُ لِكُلِّ شَيْءٍ قَدْرًا

নিশ্চয়ই আল্লাহ্ তাঁর উদ্দেশ্য পূরণ করবেনই আল্লাহ্ সবকিছুর জন্য স্থির করেছেন নির্দিষ্ট মাত্রা (দিনক্ষণ)” [সূরা আত তালাকঃ ৩]।

হিযবুত তাহ্রীর / উলাইয়াহ্বাংলাদেশএর মিডিয়া অফিস