দেশের ইসলামপ্রিয় জনগণ পশ্চিমাদের ভ্রান্ত ধর্মনিরপেক্ষবাদ ও গণতন্ত্রের ভিত্তিতে তৈরি জুলাই সনদ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং তাদের বিশুদ্ধ ইসলামী বিশ্বাসের ভিত্তিতে মদিনা সনদ দাবী করছে
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
بسم الله الرحمن الرحيم
দেশের ইসলামপ্রিয় জনগণ পশ্চিমাদের ভ্রান্ত ধর্মনিরপেক্ষবাদ ও গণতন্ত্রের ভিত্তিতে তৈরি জুলাই সনদ প্রত্যাখ্যান করেছে এবং তাদের বিশুদ্ধ ইসলামী বিশ্বাসের ভিত্তিতে মদিনা সনদ দাবী করছে
১৭ অক্টোবর ২০২৫ পশ্চিমা কাফির উপনিবেশবাদী শক্তি বিশেষ করে মার্কিন–ব্রিটেনের ভ্রান্ত ধর্মনিরপেক্ষ-গণতান্ত্রিক বিশ্বাস ও জীবন ব্যবস্থার আলোকে রচিত রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ‘জুলাই সনদ’-এ স্বাক্ষর করে দেশের ক্ষমতালোভী রাজনৈতিকগোষ্ঠী ইসলাম এবং মুসলিমদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা এবং পশ্চিমাদের আনুগত্যের আরেকটি ঘৃণ্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। মানব রচিত এই ধর্মনিরপেক্ষ-পুঁজিবাদী ব্যবস্থা বিশ্বব্যাপী সকল দেশে ব্যর্থ হয়েছে। এই বিষয়টি প্রকাশ্য দিবালোকের মত সত্য, এই যুলুমের ব্যবস্থা শাসকগোষ্ঠী, কতিপয় পুঁজিপতি ও পশ্চিমা উপনিবেশবাদীদের স্বার্থ রক্ষা করে এবং বৃহত্তর জনগণকে শোষণ করে। আপনারা প্রত্যক্ষ করছেন, দেশে দেশে জেন-জি (Gen-Z) পুঁজিবাদী শাসকগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে একের পর এক বিদ্রোহ করছে এবং শাসকদের পতন ঘটাচ্ছে। দেশের ক্ষমতালোভী রাজনৈতিকগোষ্ঠী চব্বিশের গণ-অভ্যুত্থান পরবর্তীতে জনগণের শারী’আহ্ শাসনের আকাঙ্খকা, ইসলামী বিশ্বাস ও আবেগ-অনুভুতিকে তোয়াক্কা না করে, বরং তারা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে মার্কিনীদের নেতৃত্বে জোরপুর্বক বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ (forced marriage) হয়েছে এবং পচনশীল ধর্মনিরপেক্ষ-গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক বন্দোবস্ত তথাকথিত ‘জুলাই সনদ’-এ স্বাক্ষর করেছে। আল্লাহ্ﷻ বলেন, “তবে কি তারা জাহেলিয়াতের আইন–কানুন কামনা করে? আর দৃঢ় বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য আইন প্রণয়নে আল্লাহ’র চেয়ে আর কে শ্রেষ্ঠতর?” [সূরা আল-মায়িদাঃ ৫০]। এই রাজনৈতিক বন্দোবস্ত জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন করাতো দূরের কথা, বরং বর্তমান জুলমের শাসনের ধারাবাহিকতা রক্ষা করবে। ফলে এসব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক সার্কাসের উপর জনগণের আস্থা নাই এবং এসব বিষয়ে জনগণের আগ্রহও নাই।
হে দেশবাসী, আপনারা নিশ্চয়ই প্রত্যক্ষ করেছেন, আরব-বসন্তের মধ্য দিয়ে যালিম শাসকদের পতনের ঢেউ শুরু হয়েছিল, কিন্তু পশ্চিমাদের নেতৃত্বে রাষ্ট্র সংস্কার ও নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের মোড়কে ব্যর্থ ও পতনশীল ধর্মনিরপেক্ষ-পুঁজিবাদী ব্যবস্থাই বিদ্যমান রয়েছে। ফলে এসব দেশে জনগণের দুরবস্থার পরিবর্তন হয় নাই, বরং পশ্চিমাদের আধিপত্য বৃদ্ধি পেয়েছে। এদেশেও আপনারা প্রত্যক্ষ করছেন, মার্কিন-ব্রিটেন কীভাবে তাদের দালালগোষ্ঠীর মাধ্যমে আমাদের রাজনীতি, অর্থনীতি ও সামরিক বাহিনীকে নিয়ন্ত্রণ করার অপচেষ্টা করছে। সর্বোপরী, যে জুলাই সনদ এমনকি এই দালাল রাজনৈতিক গোষ্ঠীকেও ঐক্যবদ্ধ করতে পারে নাই, তখন এই সনদ কীভাবে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করবে?
হে দেশবাসী, আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, ইসলামী আক্বীদাহ্’র ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ‘মদিনা সনদ’ কীভাবে মদিনায় ইসলামী রাষ্ট্রের ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করেছিল। ইসলামী রাষ্ট্রের অধীনে নাগরিকগণ ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে ন্যায়পরায়ণ শাসনের অধীনে ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল এবং সমৃদ্ধশালী জীবন যাপন করেছিল। পরবর্তীতে খলিফাগণ ইসলামের এই ন্যায়পরায়ণ শাসন সাড়া বিশ্বে ছড়িয়ে দিয়েছিল। অথচ পশ্চিমাদের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অতি অল্প সময়ে বিশ্বব্যাপী শোষণ, যুলুম ও যুদ্ধ ছড়িয়ে দিয়েছে। তাই আমাদের গৌরব ও মর্যাদাকে ফিরিয়ে আনতে মদিনা সনদের ভিত্তিতে রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দাবী তুলতে হবে এবং খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
হে সামরিক বাহিনীর নিষ্ঠাবান অফিসারগণ, দেশের এই রাজনৈতিক সন্ধিক্ষণে আমরা আপনাদেরকে আকাবার দ্বিতীয় শপথের বিষয় স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, যখন সাদ বিন মোয়াজ (রা.)-এর নেতৃত্বে সামরিক বাহিনী একমাত্র আল্লাহ্ ছাড়া বিশ্বের কোন শক্তিকে তোয়াক্কা না করে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় রাসূলুল্লাহ্ ﷺ নুসরাহ্ (ক্ষমতা) প্রদান করেছিলেন। ইবনে ইসহাক বলেন: “যখন তারা শপথের জন্য একত্রিত হয়েছিল, তখন আল–আব্বাস বিন উবাদাহ বিন নাদলাহ বললেন: “তুমি কি জানো যে এই ব্যক্তির সাথে তুমি কি চুক্তিতে আবদ্ধ হচ্ছো? তুমি আসলে ঘোষণা করছো যে তুমি বিভিন্ন লোকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে। যদি তুমি আশঙ্কা করো যে তোমার সম্পত্তি ঝুঁকির মুখে পড়বে অথবা তোমার অভিজাতদের জীবন বিপদের মুখে পড়বে, তাহলে তাকে এখনই ছেড়ে দাও, কারণ শপথের পরে যদি তুমি এটা করো, তাহলে এটা তোমার জন্য দুনিয়া এবং আখেরাতে উভয় জায়গাতেই অপমানজনক হবে। কিন্তু যদি তুমি মনে করো যে মূল্যবান জীবন ও সম্পদের ক্ষতি সত্ত্বেও তোমাকে যা করতে বলা হয়েছে তা পালন করতে পারবে, তাহলে এই ভারী দায়িত্ব গ্রহণ করো, এবং আল্লাহর শপথ, এর মধ্যেই এই দুনিয়া এবং আখেরাতের কল্যাণ নিহিত।” তারা উত্তর দিল, ‘আমরা ইতিমধ্যেই আমাদের সম্পত্তির ক্ষতি এবং আমাদের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের হত্যার কথা বিবেচনা করেছি, তবুও আমরা তার কাছে আনুগত্য প্রকাশ করছি। কিন্তু এই চুক্তির সমস্ত বিষয় মেনে চললে আমাদের পুরষ্কার কী হবে?’ নবী ﷺ উত্তর দিলেন, ‘তোমার জন্য জান্নাত নির্ধারিত।’ তারা বলল, ‘তোমার হাত বাড়িয়ে দাও, তারপর তিনি হাত বাড়িয়ে দিলেন এবং তারা তার কাছে আনুগত্য প্রকাশ করলেন। তাই নবুয়তের আদলে খিলাফত প্রতিষ্ঠায় হিযবুত তাহ্রীর-এর সাথে ঐক্যবদ্ধ হউন এবং মার্কিন-ব্রিটেন-ভারতের রক্তচক্ষুকে ভয় না করে হিযবুত তাহ্রীর-কে নুসরাহ্ (ক্ষমতা) প্রদান করুন। আপনাদেরকে আমরা নিশ্চিত করতে চাই, দালালগোষ্ঠী ছাড়া সমগ্র মুসলিম উম্মাহ্ অধীর আগ্রহে খিলাফতের আবির্ভাবের অপেক্ষায় আছে, এবং তারা আপনাদের সাথে আছে। এছাড়া দালালগোষ্ঠীকে বিচ্ছিন্ন করলে এসব পরাশক্তি আমাদের ভূখণ্ডের উপর হস্তক্ষেপের কোন উপায়ই পাবে না, ইনশা’আল্লাহ্।
﴿وَعَدَ اللَّهُ الَّذِينَ آمَنُوا مِنْكُمْ وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ لَيَسْتَخْلِفَنَّهُم فِي الأَرْضِ كَمَا اسْتَخْلَفَ الَّذِينَ مِنْ قَبْلِهِمْ …﴾
“তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে ও সৎকাজ করে আল্লাহ্ তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন যে, তিনি অবশ্যই তাদেরকে পৃথিবীতে খিলাফত (শাসন কর্তৃত্ব) দান করবেন, যেমন তিনি খিলাফত (শাসন কর্তৃত্ব) দান করেছিলেন তাদের পূর্ববর্তীদেরকে…”
[আন-নূরঃ ৫৫]
হিযবুত তাহ্রীর, উলাই‘য়াহ্ বাংলাদেশ–এর মিডিয়া অফিস