তারেক-ইউনুস লন্ডন সমঝোতা মার্কিনীদের কর্তৃত্ব ও তাদের দুর্নীতিগ্রস্ত ধর্মনিরপেক্ষ পুঁজিবাদী ব্যবস্থার ধারাবাহিকতা রক্ষার অপচেষ্টা
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
بسم الله الرحمن الرحيم
তারেক–ইউনুস লন্ডন সমঝোতা মার্কিনীদের কর্তৃত্ব ও তাদের দুর্নীতিগ্রস্ত ধর্মনিরপেক্ষ পুঁজিবাদী ব্যবস্থার ধারাবাহিকতা রক্ষার অপচেষ্টা
গত ১৩ জুন, ২০২৫ তারিখে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. ইউনুস লন্ডনে বসে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সাথে রাজনৈতিক সমঝোতা করে জনগণকে হতাশ করেছেন। কারণ বিএনপিগোষ্ঠীর দুঃশাসন এবং দুর্নীতির ইতিহাস জনগণ ভুলে যায় নাই। প্রকৃতপক্ষে, ইউনুস-তারেক রাজনৈতিক সমঝোতা ও ক্ষমতা ভাগাভাগি মার্কিন পরিকল্পনারই একটি অংশ, যার মাধ্যমে মার্কিনীরা তাদের উপনিবেশবাদী প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হবে। আপনারা প্রত্যক্ষ করেছেন, এই সমঝোতাকে সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মোজেনা, বার্নিকাট ও পিটার হাস স্বাগত জানিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে, এবং বিএনপি’র পক্ষ থেকে ড. ইউনুসকে রাষ্ট্রপতি করার প্রস্তাবও করা হয়েছে বলে খবর প্রকাশিত হয়েছে। যালিম হাসিনার পতনের মধ্য দিয়ে এদেশের জনগণ অত্যাচারী-যুলুমের পুঁজিবাদী ব্যবস্থা ও পশ্চিমা কাফির উপনিবেশবাদীদের আধিপত্য থেকে মুক্তির যে আকাঙ্খা প্রকাশ করেছিল, এই জাতীয় সমঝোতা দেশের জনগণের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা ছাড়া আর কিছুই নয়।
আমরা, হিযবুত তাহ্রীর-এর পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকার ও দেশের রাজনৈতিক মহলকে সতর্ক করতে চাই, এই মুসলিম ভুখন্ডে কাফির-মুশরিক রাষ্ট্রসমূহের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করার কোন ষড়যন্ত্র এদেশের জনগণ কখনো বরদাস্ত করবে না। তাদের উচিত ঘৃণ্য শাসক হাসিনার পতন থেকে শিক্ষা নেয়া। আল্লাহ্ ﷻ বলেন, “যারা মু‘মিনদের পরিবর্তে কাফিরদেরকে বন্ধু হিসেবেগ্রহণ করে, তারা কি তাদের নিকট হতে [ক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমে] সম্মান কামনা করে? কিন্তু প্রকৃতপক্ষে, সম্মানতো সম্পূর্ণরূপে আল্লাহ্’র হাতে” [সূরা আন-নিসাঃ ১৩৯]। তাই, অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত সঠিক রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করা যাতে ইসলাম, জনগণের সার্বিক স্বার্থ ও দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষাকে ভিত্তি করে দেশে রাজনৈতিক সমঝোতা তৈরি হয় এবং এদেশের জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রকৃত প্রতিফলন ঘটে। আল্লাহ্ ﷻ বলেন, “মুমিনগণ তো পরস্পর ভাইভাই; সুতরাং তোমরা তোমাদের ভাইদের মধ্যে মীমাংসা করবে এবং আল্লাহ্‘কে ভয় করবে যাতে তোমরা (আল্লাহ্’র) রহমত প্রাপ্ত হও” [সূরা আল-হুজুরাতঃ ১০]। সুতরাং, আমাদের উচিত নিজেদের মধ্যে ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করা এবং কাফির-মুশরিকদের প্রত্যাখ্যান করা।
হে দেশবাসী, দীর্ঘ পনের বছরের আন্দোলন-সংগ্রাম ও অনেক ত্যাগের বিনিময়ে আপনারা ধর্মনিরপেক্ষ-পুঁজিবাদী ব্যবস্থা নামক বিষবৃক্ষের ফল যালিম হাসিনার পতন ঘটিয়েছেন। আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন, “মুমিন একই গর্তে দু’বার দংশিত হয় না” [সহীহ বুখারী ও মুসলিম]। তাই, আপনারা পশ্চিমাদের বিশেষ করে মার্কিনীদের অনুগত শাসকগোষ্ঠীর মধ্যে রাজনৈতিক সমঝোতা ও ক্ষমতার ভাগাভাগির মাধ্যমে ধর্মনিরপেক্ষ-পুঁজিবাদী ব্যবস্থার সেই একই গর্তে আর দংশিত হবেন না। আমাদেরকে তথাকথিত রাষ্ট্র সংস্কারের সার্কাসকে প্রত্যাখ্যান করে, রাষ্ট্রের সামগ্রিক পরিবর্তনে সক্রিয় হতে হবে। রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন, “…তারপর যুলুমের শাসনের অবসান হবে; অতঃপর আবারও ফিরে আসবে খিলাফত নবুয়তের আদলে” [মুসনাদে আহমদ]। আমাদেরকে রাসূলুল্লাহ্ ﷺ-এর এই সুসংবাদকে বাস্তবায়নের লক্ষ্য সামনে রেখে নবুয়তের আদলে খিলাফত প্রতিষ্ঠার রাজনৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। খিলাফত প্রতিষ্ঠার মাধ্যমেই ইসলাম, মুসলিম উম্মাহ্’র স্বার্থ এবং মুসলিম ভূখণ্ডের সার্বভৌমত্ব রক্ষিত হবে, ইনশা‘আল্লাহ্।
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَجِيبُوا لِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُحْيِيكُمْ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ يَحُولُ بَيْنَ الْمَرْءِ وَقَلْبِهِ وَأَنَّهُ إِلَيْهِ تُحْشَرُونَ﴾
“হে মু’মিনগণ! তোমরা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের সেই আহ্বানে সাড়া দাও, যখন তোমাদেরকে এমন কিছুর দিকে আহ্বান করা হয়, যা তোমাদের মধ্যে প্রাণের সঞ্চার করে।” [সূরা আল-আনফালঃ ২৪]
হিযবুত তাহ্রীর, উলাই‘য়াহ্ বাংলাদেশ–এর মিডিয়া অফিস