“টিপ” পরা নিয়ে মিথ্যা হৈচৈ, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের আরেকটি ব্যর্থ ইসলামবিরোধী প্রয়াসকে উন্মোচিত করলো
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
بسم الله الرحمن الرحيم
“টিপ” পরা নিয়ে মিথ্যা হৈচৈ, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের আরেকটি ব্যর্থ ইসলামবিরোধী প্রয়াসকে উন্মোচিত করলো
গত শনিবার (২রা এপ্রিল, ২০২২) সকালে ক্যাম্পাসে যাওয়ার পথে ঢাকায় একজন মহিলা কলেজ শিক্ষিকাকে “টিপ” পরার কারণে একজন পুলিশ সদস্য কর্তৃক হয়রানীকে নিয়ে বাংলাদেশের ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরা ব্যাপক হট্টগোল শুরু করেছে। ধর্মনিরপেক্ষ মিডিয়া বরাবরের মতো একই পন্থায় তাদের ইসলামবিরোধী অশুভ পরিকল্পনা বাস্তবায়নে একাট্টা হয়েছে এবং অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে এমন একজন ব্যক্তি হিসেবে চিত্রিত করার চেষ্টা করছে যেন সে হঠাৎ করেই ‘ধার্মিক’ ও ‘ধর্মান্ধ’ হয়ে গেছে। অথচ, স্বাভাবিক পদক্ষেপ হিসেবে অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের ধর্মীয় বিশ্বাস বা সংস্কৃতির দিকে নজর না দিয়ে তার উপর অর্পিত নাগরিকদের নিরাপত্তা নিশ্চিতের দায়িত্ব সম্পর্কে তাকে জবাবদিহি করা উচিত ছিল। এমনকি, ‘টিপ’ নিয়ে এই উত্তেজনাকে নারীর অধিকারের গুরুতর লঙ্ঘনের ইস্যুতে পরিণত করার হীন উদ্দেশ্যে হাসিনা-সরকার এটাকে জাতীয় সংসদে টেনে এনেছে। এর মাধ্যমে তারা সরকারের সমালোচনা করা থেকে এবং নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির ক্রমাগত মূল্যবৃদ্ধিসহ জনগণের বিষয়াদি ব্যবস্থাপনা করার কাজে তাদের শোচনীয় ব্যর্থতা থেকে জনগণের দৃষ্টি অন্যত্র সরিয়ে নিতে চাচ্ছে। তুচ্ছ এই ‘টিপ’ ইস্যুতে মিডিয়ার চাঞ্চল্যকর নিউজ-কভারেজের উপর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জনগণের প্রতিক্রিয়া ও মন্তব্যসমূহ প্রমাণ করেছে, কিভাবে তারা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদেরকে এবং তাদের ইসলামবিরোধী অপপ্রচারের ব্যর্থ প্রচেষ্টাকে তাচ্ছিল্য করেছে। এই ধর্মনিরপেক্ষবাদিরা এতই বেপরোয়া যে, তাদের এই প্রচারণাকে চ্যালেঞ্জ করার কারণে অন্য একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে প্রত্যাহার করতে সরকারকে বাধ্য করেছে। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে, ‘টিপ’ পরা সবসময়ই বাংলাদেশের জনগণের জন্য সম্পূর্ণ অপ্রাসঙ্গিক একটি বিষয় ছিল, এবং বেশ কিছুদিন আগেই বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মধ্যে ‘টিপ’-এর প্রচলন উঠেই গেছে! প্রকৃতপক্ষে এসব ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরা চায়, আমাদের সমাজ ইসলাম থেকে বিচ্যুত হোক এবং তারা সংঘর্ষ ও বিশৃঙ্খলার মাধ্যমে ইসলামের বিরুদ্ধে তাদের বিদ্বেষকে বাঁচিয়ে রাখুক।
“নারীর অধিকার” নিয়ে এসকল ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের চিৎকারে দেশের মানুষ বিরক্ত, কারণ তাদের ভণ্ডামি এখন সর্বজনবিদিত। জনগণ প্রত্যক্ষ করেছে, যখন হিজাব পরার কারণে মহিলা শিক্ষার্থীদেরকে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশে বাধা দেয়া হয়েছিল তখন তারা সম্পূর্ণ নীরব ছিল। দুর্বৃত্ত হাসিনা সরকারের পুলিশ বাহিনী কর্তৃক অসহায় নারীদেরকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার ও কারারুদ্ধ করার বহু নজির রয়েছে, অথচ এসব ধর্মনিরপেক্ষ তথাকথিত সমাজকর্মীদের কাউকেই তখন ভুক্তভোগীদের পক্ষে একটি শব্দও উচ্চারণ করতে দেখা যায়নি। যদিওবা তারা তাদের বিদ্বেষপূর্ণ এজেন্ডাকে আরও এগিয়ে নিতে কোন ঘটনায় ইসলামকে আক্রমণের উপাদান খুঁজে পেলে সেটার ফায়দা হাসিলের সুযোগকে কখনোই হাতছাড়া করেনি। প্রকৃত বিষয় হলো, রাষ্ট্র হিসেবে সূচনার পর থেকেই বাংলাদেশে এসব হতাশাগ্রস্ত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরা বৈধতার সংকট ও অকার্যকরতা অনুভব করে আসছে। তাদের হতাশা প্রতিবারই আরও ঘনীভূত হয়, যখন তারা প্রত্যক্ষ করে এখানকার মানুষ ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধসমূহের ব্যাপারে অত্যন্ত নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করে, এমনকি এখানে বামপন্থীদেরকেও বৈধতা অর্জনের জন্য জাতীয় নির্বাচনের আগে জনগণকে ইসলামের প্রতি আহ্বান জানাতে হয়। ইতিমধ্যে তারা টের পেয়ে গেছে, পশ্চিমা বিশ্বে খ্রিস্টধর্ম যেই পথ অনুসরণ করেছে ইসলাম সেই পথ অনুসরণ করবে না। সুতরাং, তারা কোনরূপ বিশ্বাসযোগ্যতা ছাড়াই ইসলামের বিরুদ্ধে এই কঠিন যুদ্ধে নেমেছে। তাদের ভন্ডামীর জন্য তাদের স্বরূপ এখন উন্মোচিত হয়ে গেছে এবং তাদের সামনে আর কোন পথ খোলা নেই।
হে দেশবাসী, ধর্মনিরপেক্ষ-পুঁজিবাদী ব্যবস্থা এবং এর দুর্নীতিগ্রস্থ ধর্মনিরপেক্ষ মূল্যবোধসমূহ ইসলামী আক্বীদাহ্’র সাথে সাংঘর্ষিক এবং এটি সর্বদা সমাজকে ধাবিত করে নারী নির্যাতনের দিকে। আসন্ন খিলাফত একটি ঐক্যবদ্ধ সমন্বয়পূর্ণ সমাজ গঠন নিশ্চিতে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের অকৃত্রিম সংহতি ও সমৃদ্ধির নিশ্চয়তা দেবে। কুরআন-সুন্নাহ্’র ভিত্তিতে হিযবুত তাহ্রীর কর্তৃক প্রণীত খিলাফত রাষ্ট্রের খসড়া সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৬ – “রাষ্ট্রের সকল নাগরিকের সাথে জাতি–ধর্ম–বর্ণ নির্বিশেষে সমান আচরণ করতে হবে। রাষ্ট্র তার নাগরিকদের মধ্যে শাসনকার্যে, বিচার ফায়সালাতে কিংবা বিভিন্ন বিষয়াদির ব্যবস্থাপনায় কোন ধরনের বৈষম্য করতে পারবে না”। অতএব, ধর্মনিরপেক্ষ-গণতন্ত্রের ক্রমবর্ধমান অত্যাচার ও অবিচার থেকে নারী ও সমাজকে পুরোপুরি মুক্তি দিতে আপনাদেরকে অবশ্যই নবুয়্যতের আদলে খিলাফতে রাশিদাহ্ ফিরিয়ে আনার জন্য জরুরী ভিত্তিতে কাজ করতে হবে।
হিযবুত তাহ্রীর / উলাই’য়াহ্ বাংলাদেশ–এর মিডিয়া কার্যালয়