প্রেস বিজ্ঞপ্তি
بسم الله الرحمن الرحيم
ছাত্রলীগের আগ্রাসন থেকে আমাদের মেধাবী সন্তানদের কে নিরাপত্তা দিবে?
হাসিনা সরকারের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগ ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরেবাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একটি ফেসবুক পোস্ট দেয়ায় পিটিয়ে হত্যা করে। এর প্রায় সাড়ে চার বছর পর গত ২৮ মার্চ দিবাগত মধ্যরাতে ক্যাম্পাসটিতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতাদের প্রবেশ বুয়েটের ছাত্র-ছাত্রীদের আতঙ্কিত করে এবং এর প্রতিবাদে ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে বুয়েট ক্যাম্পাস। দেশব্যাপী আলোচিত এই হত্যাকাণ্ডের পর ফুঁসে উঠা বুয়েটের শিক্ষার্থীদের দাবীর পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নিষিদ্ধ করা হয় ছাত্রলীগের অপরাজনীতি। ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগের ছাত্র সংগঠন এই ছাত্রলীগ সমগ্র বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয় সমূহে ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ রাজনৈতিক ময়দানে হাসিনা সরকারের গদি রক্ষার লাঠিয়াল বাহিনী হিসেবে জনগণের কাছে বহুল পরিচিত। বুয়েট হলো বাংলাদেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ভিত্তিক শিক্ষার সর্বশ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান, তাদের নিরাপত্তা ও পড়ালেখার পরিবেশ নিয়ে দেশের জনগণ যখন উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে তখন হাসিনা সরকারের শিক্ষামন্ত্রী ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্ব না দিয়ে এই মেধাবী ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের মধ্যে তথাকথিত জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার আভাস দিয়ে তাদের ন্যায্য দাবীকে দমন করার অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছে। সে বলে, “কিছুদিন আগেও অনেকে অভিযোগ করেছিলেন, কিছু জঙ্গিবাদী গোষ্ঠী গোপনে সেখানে (বুয়েট) কার্যক্রম চালায়। বিষয়টি নিয়েও গভীরভাবে তদন্ত করবেন” [প্রথম আলো, ৩০ মার্চ, ২০২৪]। শিক্ষামন্ত্রীর এমন হুমকি-ধামকিমূলক বক্তব্য ছাত্রছাত্রী ও অভিভাবকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে।
হে মুহাম্মাদ ইবনে মুসা আল–খারেজমির উত্তরসূরি বুয়েট ছাত্রছাত্রীগণ! আপনারা স্মরণ করুন গৌরবময় খিলাফত রাষ্ট্রের অধীনে বাগদাদ বিশ্ববিদ্যালয় আপনাদের মত মেধাবী মননশীলদের আকর্ষণের বুদ্ধিবৃত্তিক কেন্দ্র ছিল যেখানে মুহাম্মাদ ইবনে মুসা আল-খারেজমি (780-850 CE) অ্যালগরিদম ও বীজগণিতের ভিত্তি স্থাপন করে গাণিতিক জগতে এমন একটি অগ্রগতি অর্জন করেছিলেন যা শতাব্দী ধরে প্রতিধ্বনিত হয়েছিল। আর বর্তমানে হাসিনার গুন্ডা বাহিনী দ্বারা আপনাদের ক্যাম্পাস পদদলিত হচ্ছে, রাজনীতি সচেতন হওয়ার কারণে আপনাদের সহপাঠী আবরারের মত মেধাবী ছাত্রকে নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়ে মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে! যে পবিত্র দ্বীন, ইসলাম এবং ইসলামী শাসন ব্যবস্থা – খিলাফত আপনাদেরকে সযত্নে লালন-পালন করেছিল তার সাথে সংশ্লিষ্টতাকে তথাকথিত জঙ্গিবাদ আখ্যা দিয়ে আপনাদেরকে দমন-নিপীড়ন করছে। অথচ পশ্চিমা কাফির উপনিবেশবাদীদের চাপিয়ে দেয়া ধর্মনিরপেক্ষ দালাল শাসকগোষ্ঠী আপনাদের মেধাকে হয় পশ্চিমা দেশসমূহে পাচার করছে অথবা দেশে আপনাদেরকে সর্বোচ্চ আই.বি.এ-তে পড়ার সুযোগ দিয়ে বহুজাতিক কোম্পানীর সেবক বানাচ্ছে। তাই আপনাদেরকে ঘুরে দাড়াতে হবে। আপনারা নিশ্চয়ই অনুভব করেন, তরুণ শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে আপনাদের বুদ্ধিবৃত্তিক নেতৃত্ব রয়েছে। এই প্রভাবকে কাজে লাগিয়ে আপনাদেরকে গৌরবময় খিলাফত ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার প্রকল্পকে এগিয়ে নিতে হবে যার মাধ্যমে আপনাদের মেধার প্রকৃত লালন-পালন ও মূল্যায়ন হবে। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, “কেউ সম্মান–সুখ্যাতি চাইলে (আল্লাহ্‘কে উপেক্ষা করে তা লাভ করা যাবে না), সে জেনে নিক যাবতীয় সম্মান–সুখ্যাতির অধিকারী হলেন আল্লাহ্” (সূরা ফাতিরঃ ১০)।
হে সামরিক অফিসারগণ, হে আল্লাহ্’র সৈনিক! আপনারা নিশ্চয়ই ভুলে যান নাই, দেশ ও দেশের জনগণের বিরুদ্ধে হাসিনার বিশ্বাসঘাতকতার কারণে হাসিনা সরকারের মদদে পিলখানায় মেধাবী সামরিক অফিসারদের হত্যার মাধ্যমে আমাদের সামরিক প্রতিষ্ঠানের মেরুদণ্ড ভেঙ্গে দেয়া হয়, যার ফলে আমরা দেখছি ভারতীয় সীমান্তে বিএসএফ প্রতিনিয়ত আমাদের নাগরিকদের হত্যা করছে এমনকি তারা আমাদের বিজিবি সদস্যকেও হত্যা করার সাহস দেখিয়েছে। আর একইভাবে প্রকৃত “Statesman” মেধাবী ছাত্র আবরারকে হত্যা করেছে এবং বুয়েটে মেধাবী শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছাত্রলীগের অপরাজনীতি প্রবেশ করিয়ে দেশকে মেধাশূন্য করার চক্রান্ত করছে। আপনাদের নিশ্চয়ই স্মরণ আছে, মোহাম্মদ বিন কাশিম হাজার হাজার মাইল দূর থেকেও মুসলিম কাফেলাকে রক্ষা করতে এগিয়ে এসেছিল। অথচ আপনারা কেন হাতের নাগালেই জনগণের নিরাপত্তা ও দেশের সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করতে পারছেন না? আপনারা নিশ্চয়ই জানেন একজন শাসক যদি অভ্যন্তরীণভাবে এবং বহিঃশক্তির হাত থেকে জনগণের নিরাপত্তা দিতে না পারে, তাহলে সেই শাসক সার্বজনীন মানদন্ডে অবৈধ। তাই আপনাদের উচিত অবৈধ শাসক হাসিনাকে অপসারণে অগ্রগামী হওয়া এবং হিযবুত তাহ্রীর-কে নুসরাহ্ প্রদান করে গৌরবময় খিলাফত ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা।
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَجِيبُوا لِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُحْيِيكُمْ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ يَحُولُ بَيْنَ الْمَرْءِ وَقَلْبِهِ وَأَنَّهُ إِلَيْهِ تُحْشَرُونَ﴾
“হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের সেই আহ্বানে তোমরা সাড়া দাও যখন তোমাদেরকে এমন কিছুর দিকে আহ্বান করা হয় যা তোমাদের মধ্যে প্রাণের সঞ্চার করে।” [সূরা আনফালঃ ২৪]
হিযবুত তাহ্রীর / উলাই‘য়াহ্ বাংলাদেশ–এর মিডিয়া অফিস