খিলাফত রাষ্ট্রের ভবিষ্যত রাজধানী আল-আকসাকে মুক্ত করতে আমাদের সামরিক বাহিনীর এখনই পদক্ষেপ নেয়া অতীব জরুরী
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
بسم الله الرحمن الرحيم
খিলাফত রাষ্ট্রের ভবিষ্যত রাজধানী আল–আকসাকে মুক্ত করতে আমাদের সামরিক বাহিনীর এখনই পদক্ষেপ নেয়া অতীব জরুরী
দখলদার ইহুদি পুলিশ বাহিনী রমজান মাসে আবারও আল-আকসা মসজিদে হামলা চালিয়ে এর পবিত্রতাকে লঙ্ঘন করেছে। গত বুধবারের প্রথম প্রহরে এই দুর্বৃত্তরা ব্যাটন, টিয়ার গ্যাস, গ্রেনেড, ও স্মোক বম্বসহ ভারি অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে মুসলিমদের প্রথম কিবলা আল-আকসা’র প্রাঙ্গণে আকস্মিকভাবে প্রবেশ করে। গত রমজানেও তারা আল-আকসা প্রাঙ্গণে হামলা চালিয়ে ৩০০ জন মুসলিমকে গ্রেপ্তার করেছিল এবং কমপক্ষে ১৭০ জনকে আহত করেছিল। অভিশপ্ত ইহুদিরা তাদের বুট দিয়ে পবিত্র এই মসজিদের নামাজের কার্পেট পদদলিত করেছে, আমাদের সম্মানিত বোনদের লাঞ্ছিত ও অপমানিত করেছে, সাহসী যুবকদের গ্রেপ্তার করেছে, এমনকি বয়স্ক নারীদেরও প্রহার করা থেকে তারা বিরত হয়নি, আর তাদের এই বর্বরতা দেখে আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে। চিকিৎসকদেরকেও তারা আল-আকসায় পৌঁছাতে বাধা প্রদান করে। ফিলিস্তিনে আল-আকসার সম্মান রক্ষার উদ্দেশ্যে আমাদের ভাই-বোনদের রক্ত ও অশ্রু ঝরানো দেখে আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, অথচ এই বরকতময় ভূমির নিকটবর্তী ও পার্শ্ববর্তী শক্তিশালী মুসলিম দেশগুলোর দালাল শাসকগণ শুধু ফাঁকাবুলি আউড়ে যাচ্ছে। বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী সামরিক বাহিনীর নেতা, মার্কিন দালাল এরদোগান গতানুগতিকভাবে আবারও এই আক্রমণকে নিন্দা জানানোর মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখে বলেছে, “আল-আকসা মসজিদে পদদলিত করার ঘটনা তুরস্কের জন্য রেডলাইন”, অথচ একই সময়ে সে তুরস্কের সাথে দখলদার ইহুদী রাষ্ট্রের দৃঢ় কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের কাজে ব্যতিব্যস্ত। আমরা দেখেছি কিভাবে আমাদের যুবকদের আটক করে মসজিদের ভিতরে মেঝেতে উপুড় করে শুইয়ে পেটানো হয়েছে, কিন্তু মেরুদণ্ডহীন আরব লীগ বলেছে এটি ‘ইসরাইল যা করছে তা প্রকাশ করার জন্য রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করবে’! আর দালাল মুসলিম শাসকেরা আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে জিহাদ করা থেকে উম্মাহ্‘কে নিবৃত্ত করে রেখেছে। এবং এতেও তারা ক্ষান্ত না হয়ে ষড়যন্ত্র করেছে, ইহুদি রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছে, এবং ফিলিস্তিনের জনগণের বীরত্বের নিন্দা জানিয়েছে। এই অধম শাসকেরা ১৯৪৮ সাল থেকে শুরু করে বিগত ৭৫ বছর যাবৎ এই নিন্দা জানানোর খেলা খেলতে খেলতে অবসন্ন হয়ে পড়েছে। আপনারা ইতিমধ্যেই প্রত্যক্ষ করেছেন, কিভাবে হাসিনা সরকার ছলচাতুরি ও লুকোচুরি করে ধাপে ধাপে এই অবৈধ ইহুদি রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করছে! আল-আকসা মুক্ত করার উদ্দেশ্যে সশস্ত্রবাহিনী প্রেরণের পরিবর্তে হাসিনা সরকার বরং উল্টো তাদেরকে অবৈধ ইহুদি রাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর সাথে সামরিক মহড়ায় যোগ দিতে বাধ্য করে তাদেরকে অপমান করতেও পিছপা হয়নি। এইভাবে মুসলিম ভূমিসমূহের শাসকদের প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতার উপর ভর করে অবৈধ ইহুদি রাষ্ট্র এখন নিশ্চিত করতে চায় যে, ফিলিস্তিনের মুসলিমগণ যেন অত্যধিক অপমান-অত্যাচারে হাল ছেড়ে দেয় এবং তাদের ভূমি মুক্ত করার পবিত্র উদ্দেশ্য পরিত্যাগ করে।
হে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর নিষ্ঠাবান অফিসারগণ! আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র এই আহ্বান স্মরণ করুন, “হে ঈমানদারগণ! তোমাদের কি হয়েছে যে যখন তোমাদেরকে আল্লাহ্’র পথে বের হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয় তখন তোমরা আরো জোরে মাটি কামড়ে ধর? তোমরা কি আখেরাতের স্থলে দুনিয়ার জীবনকেই বেশি পছন্দ কর? অথচ, আখেরাতের তুলনায় পার্থিব জীবনের ভোগ সামগ্রী অতি সামান্য” [আত-তওবা: ৩৮]। আপনারা ফিলিস্তিনের মুসলিমদের পরাজিত হতে দিতে পারেন না। আমাদের প্রাণপ্রিয় নবীর (সাঃ) ‘ইসরা ও মিরাজ’-এর ভূমি আল-আকসাকে মুক্ত করার বিষয়টি শুধুমাত্র ফিলিস্তিনের জনগণের নয়, বরং সকল মুসলিমের আক্বীদার সাথে সংযুক্ত। প্রাথমিকভাবে এই দায়িত্ব মূলত ফিলিস্তিনের বরকতময় ভূমির পার্শবর্তী দেশসমুহের সক্ষম মুসলিম সামরিক বাহিনীগুলোর উপর বর্তায়। তাদের পাথরসম নীরবতার কারণে এখন বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সাহসী ও শক্তিশালী মুসলিম সামরিক বাহিনীকে একত্রিত হতে হবে, পৃথিবীতে নির্মিত আল্লাহ্ (আজ্জা ওয়া জ্বাল)-এর দ্বিতীয় ঘর আল-আকসা মুক্ত করার উদ্দেশ্যে, যে বরকতময় ভূমি বহু নবীর (আঃ) জন্মস্থান এবং যেখানে শত শত নবী-রাসূলের (আঃ) কবর রয়েছে। হে নিষ্ঠাবান অফিসারগণ! এই পবিত্র উম্মাহ্ এর আগেও এধরনের বহু প্রতিকুল অবস্থা ও চরম দুর্দশা সহ্য করেছে। এবং প্রতিটি সংকটময় পরিস্থিতি আমাদের মধ্যকার শ্রেষ্ঠ সামরিক জেনারেলকে বের করে এনেছে। আমরা জেরুজালেমে ক্রুসেড গণহত্যার সম্মুখীন হয়েছিলাম, যেখানে সিরিয়া-তুরস্ক সীমান্তে বিশ্বাসঘাতক মুসলিম শাসকেরা ক্রুসেডারদের খাদ্য ও অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছিল। অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও বিশ্বাসঘাতক শাসকদের কারণে মুসলিম বিশ্ব তখন খণ্ডিত, দুর্বল ও বিশৃঙ্খলার মধ্যে ছিল; আজকের মুসলিম বিশ্ব ও তার শাসকদের মতোই, যারা কেবল কাফেরদেরই সেবা করতে চায়। কিন্তু সেই হতাশাজনক পরিস্থিতিতেও আমরা আপনাদের সত্যিকারের পূর্বসূরি সালাহ্উদ্দিন আইয়্যুবীর উত্থান দেখেছি, যিনি আল-কুদসকে ঘিরে থাকা বিশ্বাসঘাতক শাসকদের অপসারণ করে তার নেতৃত্বে সিরিয়া, মিশর এবং অতঃপর ইরাককে একত্রিত করেছিলেন এবং অবশেষে এটিকে মুক্ত করেছিলেন। হে সাহসী অফিসারবৃন্দ, আপনাদের মধ্যকার আজকের সালাহ্উদ্দিনগণ কোথায় আছেন যারা আল-আকসা মুক্ত করার জন্য বর্তমান দুনিয়ার দালাল শাসকদের একইভাবে অপসারণ করবেন! আপনারা জানেন যে ফিলিস্তিনে সামরিক দখলদারিত্বের প্রকৃত এবং একমাত্র সমাধান হচ্ছে প্রতিশ্রুত খিলাফত রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে সামরিক বাহিনী প্রেরণ। পশ্চিমাদের দালাল এসব দুর্বৃত্ত শাসকদের শৃঙ্খল থেকে নিজেদেরকে মুক্ত না করলে এবং নবুয়্যতের আদলে খিলাফতে রাশিদাহ্ পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমে উম্মাহ্’র পাশে অবস্থান না নিলে আপনারা কখনই আপনাদের উপর অর্পিত ফরয দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না এবং ফিলিস্তিনের মুসলিমদের সম্মান ও মর্যাদা ফিরিয়ে আনতে পারবেন না। সুতরাং, কালবিলম্ব না করে বাংলাদেশে খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে সঠিক ও যোগ্য দল হিযবুত তাহ্রীর-কে আপনাদের আনুগত্য ও নুসরাহ্ (সামরিক সহায়তা) প্রদানের জন্য দ্রুত অগ্রসর হোন। জেরুজালেমকে মুক্ত করে এটিকে আল্লাহ্’র ইচ্ছায় দ্বিতীয় খিলাফতে রাশিদাহ্-এর রাজধানী বানানোর উদ্দেশ্যে খিলাফত রাষ্ট্র পাকিস্তান এবং আশেপাশের অন্যান্য ভূ-খণ্ডগুলোর সাথে পুনরায় একত্রিত হবে। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা পবিত্র কুর‘আনে বলেন:
* يٰۤـاَيُّهَا الَّذِيۡنَ اٰمَنُوۡۤا اِنۡ تَـنۡصُرُوا اللّٰهَ يَنۡصُرۡكُمۡ وَيُثَبِّتۡ اَقۡدَامَكُمۡ*
“হে মুমিনগণ, যদি তোমরা আল্লাহ্‘কে সাহায্য কর তবে আল্লাহ্ও তোমাদেরকে সাহায্য করবেন এবং তোমাদের পদসমূহ সুদৃঢ় করে দেবেন” [সূরা মুহাম্মাদ: ৭]
হিযবুত তাহ্রীর / উলাই’য়াহ্ বাংলাদেশ–এর মিডিয়া কার্যালয়