ক্ষমতালোভী রাজনীতিকগোষ্ঠীই ভারতকে সন্তুষ্ট করতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে চায়, অথচ আওয়ামী সরকারের অন্যায় নিষেধাজ্ঞার শিকার নিষ্ঠাবান রাজনৈতিক দল হিযবুত তাহ্রীর-এর উপর দমন-নিপীড়নে তারা নীরব
“তাদের উপর আল্লাহ্’র লানত! তারা কিভাবে (সত্য থেকে) বিভ্রান্ত হয়?” [সূরা আল-মুনাফিকূনঃ ৪]
بسم الله الرحمن الرحيم
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
ক্ষমতালোভী রাজনীতিকগোষ্ঠীই ভারতকে সন্তুষ্ট করতে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে চায়, অথচ আওয়ামী সরকারের অন্যায় নিষেধাজ্ঞার শিকার নিষ্ঠাবান রাজনৈতিক দল হিযবুত তাহ্রীর–এর উপর দমন–নিপীড়নে তারা নীরব
“তাদের উপর আল্লাহ্’র লানত! তারা কিভাবে (সত্য থেকে) বিভ্রান্ত হয়?” [সূরা আল-মুনাফিকূনঃ ৪]
“আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার কোনো পরিকল্পনা নেই”– অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার এই বক্তব্যে জনগণের মধ্যে চরম উদ্বেগ কাজ করছে। কারণ গত ১৫ বছরেরও বেশী সময় ধরে আওয়ামী লীগ সরকার দেশের জনগণের উপর নজিরবিহীন যুলুম-অত্যাচার করেছে, গুম-খুন ও আয়নাঘরে বন্দি করে বিরোধী দলকে দমন-নিপীড়ন করেছে, দেশের সামরিক বাহিনীকে ভারতের আজ্ঞাবহ করতে পিলখানায় ভারতের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করেছে এবং দুর্নীতি ও অর্থপাচারের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। এমনকি পতিত হাসিনা ভারতে বসে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে আওয়ামী লীগকে ব্যবহার করছে এবং আবার ফিরে এসে জনগণের উপর প্রতিশোধ নেয়ার হুমকি দিচ্ছে। যখন পতিত আওয়ামী লীগের যুলুম-অত্যাচারের ট্রমা কাটে নাই, তখন ১ অক্টোবর, ২০২৪ বার্তা সংস্থা ইউএনবিকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “আওয়ামী লীগকে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণে বাধা দেয়া বা ফ্যাসিবাদী রাজনৈতিক দল হিসেবে নিষিদ্ধ করা উচিত নয়, কারণ উভয় কর্মকাণ্ডই গণতান্ত্রিক চর্চাকে দুর্বল করবে”। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর গত ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪ কুষ্টিয়ার কুমারখালীর আলাউদ্দীন নগর শিক্ষাপল্লী পার্ক অডিটোরিয়ামে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, “তারা (আওয়ামী লীগ) এদেশের মানুষ, রাজনীতি করার অধিকার সবার আছে। আমাদের রাজনীতি কেড়ে নেওয়া যেমন অন্যায় ছিল, আমরা সেটা করতে চাই না”। যেখানে জনগণ মনে করে আওয়ামী লীগ কোন রাজনৈতিক শক্তি নয়, সেখানে শুধুমাত্র মার্কিন-ভারতের প্রতি নতজানু রাজনীতির কারণে তারা আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনকে সমর্থন করছে। হাসিনা ও আওয়ামী লীগ দ্বারা গত ১৫ বছর নির্যাতিত হওয়ার পরও যারা আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন করতে চায় তাদের হাতে দেশ কীভাবে নিরাপদ হবে!
হে দেশবাসী! আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, হিযবুত তাহ্রীর গত ১৫ বছর ধরে আওয়ামী সরকারের দুর্নীতি-যুলুম-অত্যাচার ও দেশবিরোধী চক্রান্তের বিরুদ্ধে সোচ্চার এবং রাজনৈতিক সংগ্রামের আপোষহীন ছিল। সচেতন ব্যক্তিবর্গ স্বাক্ষী আছেন, হিযবুত তাহ্রীর ২০০৯ সালে পিলখানা হত্যাকান্ডে হাসিনা ও ভারতের ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সাহসের সাথে রুখে দাঁড়িয়েছিল এবং পতিত হাসিনা সরকারের নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়েছিল। বাংলাদেশের উপর আমেরিকার উপনিবেশবাদী প্রকল্প এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের নামে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধের মুখোশ উন্মোচন করে আসছে। মুসলিম অধ্যুষিত এই ভূখন্ডের জনগণের শারীআহ্ শাসনের আকাঙ্ক্ষা তথা খিলাফত প্রতিষ্ঠার নেতৃত্ব দিয়ে আসছে। হে দেশবাসী, ১৫-বছরের দীর্ঘ রাজনৈতিক সংগ্রাম এবং সর্বশেষ ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের ফলে যালিম হাসিনা সরকারের পতনের পরও, কার স্বার্থে এখনও হিযবুত তাহ্রীর-এর কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে? যখন ফ্যাসিস্ট রাজনীতি পুনর্বাসনের প্রশ্নই আসেনা তখন ফ্যাসিস্ট রাজনীতিকে পুর্নবাসনের চেষ্টা চলছে, অথচ শুধুমাত্র মার্কিন-ভারতের প্রতি নতজানু না হওয়ার কারণে হিযবুত তাহ্রীর-উপর অন্যায় নিষেধাজ্ঞা এখনো বলবৎ রাখা হচ্ছে, এটা কি জনগণ ও দেশের সাথে হঠকারীতা নয়। আসলে তথাকথিত বাকস্বাধীনতা, ভিন্নমত, বহুত্ববাদ গণতন্ত্রের ফেরীওয়ালাদের নিকট মিথ্যা প্রচারণা আর প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়? আল্লাহ্ ﷻ বলেন, “আল্লাহ্ সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, মুনাফিকরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী” [সূরা আল-মুনাফিকূনঃ ১]।
হে দেশবাসী, গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলসমূহ কাফির উপনিবেশবাদী মার্কিন-ব্রিটেন ও তাদের আঞ্চলিক চৌকিদার ভারতকে তাদের অভিভাবক ও বন্ধু গ্রহণ করেছে, যারা মুলত ফ্যাসিবাদের মাস্টারমাইন্ড। পতিত হাসিনা সরকার যেভাবে আমাদের সেনাবাহিনী ও বিডিআরের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করে ভারতের ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করেছিল, ঠিক একইভাবে আমেরিকার স্বার্থেই তার দালালেরা আমাদের সামরিক বাহিনীর মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টির অপচেষ্টা করছে। অথচ সবাইকে ইতিহাস থেকে শিক্ষা গ্রহন করা উচিত, উপনিবেশবাদী গোষ্ঠীসমূহ তাদের অর্থনৈতিক ও ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিল করতে এসব দালালগোষ্ঠীকে টিস্যু পেপারের মত ব্যবহার করে, অতঃপর যখন দালালগোষ্ঠী জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে তখন তারা দালালদের চেহারা পরিবর্তন করে। আমরা বিপ্লবী তরুণশক্তিকে সতর্ক করতে চাই, এসব আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উপর নির্ভর করে রাজনীতি করা আত্মঘাতী, কারণ তারা তাদের প্রয়োজনে আপনাদেরকে ত্যাগ করে যেকোন ফ্যাসিবাদী শক্তিকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর। ইতিমধ্যে নিশ্চয়ই আপনারা তুলসী গ্যাবার্ডের ভারত সফর থেকে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগকে পুনবাসনের ইঙ্গিত পেয়েছেন। তাই আপনাদেরকে উপনিবেশবাদী মার্কিনীদের পদানত সৈনিক না হয়ে জনগণের শক্তির উপর নির্ভর করে যেকোন ফ্যাসিবাদী শক্তি ও তাদের মাস্টারমাইন্ডদের মোকাবেলা করতে হবে। দালালী না রাজপথ- রাজপথ, রাজপথ; আপোষ না সংগ্রাম- সংগ্রাম, সংগ্রাম; আপনাদেরকে এই চেতনা ধরে রাখতে হবে।
সর্বোপরি, সচেতন জনগণ ও তরুণ সমাজ, নিষ্ঠাবান রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবী, এবং সামরিক বাহিনীর প্রতি হিযবুত তাহ্রীর–এর উদাত্ত আহ্বান, আপনাদেরকে যেকোন ফ্যাসিবাদী শক্তির রাজনৈতিক পুনর্বাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে হবে এবং দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় তাদের মাস্টারমাইন্ড মার্কিন-ব্রিটেন-ভারত নেক্সাস যাতে দেশের উপর আধিপত্য বিস্তার করতে না পারে সে লক্ষ্যে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এবং ইসলাম এবং দেশের বিরুদ্ধে মার্কিন-ব্রিটেন-ভারতের যেকোন ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আল্লাহ্ ﷻ বলেন,
﴿لاَ يَتَّخِذْ الْمُؤْمِنُونَ الْكَافِرِينَ أَوْلِيَاءَ مِنْ دُونِ الْمُؤْمِنِينَ وَمَنْ يَفْعَلْ ذَلِكَ فَلَيْسَ مِنْ اللَّهِ فِي شَيْءٍ إِلاَّ أَنْ تَتَّقُوا مِنْهُمْ تُقَاةً وَيُحَذِّرُكُمْ اللَّهُ نَفْسَهُ وَإِلَى اللَّهِ الْمَصِيرُ﴾
“মুমিনগণ যেন মুমিনগণ ছাড়া কাফিরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে। আর যারা এরূপ করবে তাদের সাথে আল্লাহ্’র কোন সম্পর্কে থাকবে না” [সূরা আলি-ইমরানঃ ২৮] ।
হিযবুত তাহ্রীর / উলাই‘য়াহ্ বাংলাদেশ–এর মিডিয়া অফিস