Weekly
ISLAMIC VIEWPOINT
….সপ্তাহের সংবাদ পর্যালোচনা
১০৯ তম সংখ্যা । ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৩
এই সংখ্যায় থাকছে :
“এক রাতে সব নেতাকে মুক্তির প্রস্তাবেও রাজি হয়নি বিএনপি- ড. রাজ্জাক”
“বাংলাদেশে আরব বসন্তের মত অবস্থা করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র: রাশিয়া”
“আসন ভাগাভাগি শেষ, প্রচার শুরু”
“শতকোটি টাকার ‘তালগাছ কৌশল’ ব্যর্থ, এবার আসছে হাজার কোটির বজ্রনিরোধক দণ্ড”
“এই নৌকা নূহ নবীর নৌকা: শেখ হাসিনা”
“আবির হাসান, ভারতীয় সামরিক একাডেমি থেকে স্নাতক হওয়া প্রথম বাংলাদেশি”
“বহুজাতিক কোম্পানির কর্মকর্তা থেকে জঙ্গি নেতা”
“আইএমএফ ও এডিবির ঋণে বেড়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ”
“এক রাতে সব নেতাকে মুক্তির প্রস্তাবেও রাজি হয়নি বিএনপি- ড. রাজ্জাক”
খবরঃ
দেশকে স্থিতিশীল রাখার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বিএনপি নেতাদের জেলে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আবদুর রাজ্জাক। বলেছেন, বিএনপিকে ভোটে আনতে সব চেষ্টাই করেছে আওয়ামী লীগ। এমনকি এক রাতে সব নেতাকে জেল থেকে মুক্তির প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। বিএনপি এতে রাজি হয়নি। নির্বাচনে এলে ছাড় পেতো বিএনপি।…(https://mzamin.com/news.php?news=88829)
মন্তব্যঃ
কৃষিমন্ত্রীর এই বক্তব্য আবারও প্রমাণ করল, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় বিচারবিভাগ কখনোই স্বাধীন ও সুষ্টভাবে পরিচালিত হয়না। এই ব্যবস্থায় শাসকগোষ্ঠী সবসময় তাদের স্বার্থে রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান আইন, প্রশাসন এবং বিচারবিভাগকে প্রভাবিত করে। যদিও ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় বলা হয়ে থাকে, শাসকগোষ্ঠী যাতে একনায়কতন্ত্র কিংবা স্বৈরতন্ত্র কায়েম করতে না পারে তাই এখানে ক্ষমতাকে বিকেন্দ্রীকিকরণ করা হয়েছে অর্থ্যাৎ ক্ষমতার উৎসকে তিনভাগে ভাগ করা হয়েছে। (১) আইনপ্রণয়ন, (২) প্রশাসন এবং (৩) বিচারবিভাগ। যেখানে ক্ষমতার এক উৎস আরেক উৎসকে চেক এ্যান্ড ব্যালেন্সের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখবে। ফলে, শাসকগোষ্ঠী স্বৈরাশাসক হিসেবে আবির্ভূত হতে পারবেনা। আর এই যুক্তিতেই ধর্মনিরপেক্ষ শাসকগোষ্ঠী গণতন্ত্রকে জনগণের শাসনব্যবস্থা বলে। যেখানে, আইন, প্রশাসন এবং বিচারবিভাগ স্বাধীন বলে জনগণের অধিকার সুরক্ষিত হয়। কিন্তু, তাদের এই যুক্তির যে কোন বাস্তবতা নেই তা আমরা কৃষিমন্ত্রীর বক্তব্যেই বুঝতে পারছি। আসলে এই যুক্তি সীমাবদ্ধ চিন্তা-ক্ষমতার অধিকারী মানুষের খোঁড়া যুক্তি মানব-রচিত রাষ্ট্রব্যবস্থাকে সঠিক প্রমাণিত করার। বরঞ্চ, আমরা যদি প্রকৃত চিত্রের দিকে লক্ষ্য করি তাহলে দেখবো, প্রশাসন যে আইন বাস্তবায়ন করে আর বিচার বিভাগ যে আইন দ্বারা বিচার করে তা নির্ধারিত হয় আইনপ্রণেতাদের মাধ্যমে এবং আইনপ্রণেতারা প্রভাবিত হয় সংসদ-দলীয় প্রধানের মাধ্যমে; অর্থ্যাৎ, আইনপ্রণেতাদের এবং সংসদ দলের প্রধানের সুযোগ থাকে প্রশাসন এবং বিচারবিভাগকে প্রভাবিত করার। এবং এটিই আমরা দেখে আসছি গণতান্ত্রিক শাসকগোষ্ঠী বারংবার করছে বিরোধী মতকে দমন করতে কিংবা তাদের নিজেদের স্বার্থে। এর কিছু নমুনা যেমন- প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, আইনপ্রণেতারা সবসময় আইনের ঊর্ধ্বে থাকবে সংবিধান অনুযায়ী। মতামত, বিশ্বাস এবং ব্যক্তিস্বাধীনতার কথা বলে ফেনাতোলা বর্তমান সরকার কিছুদিন আগেও হিযবুত তাহ্রীর দুইজন সম্মানিত নেতাকে গ্রেপ্তার করে শুধুমাত্র সরকারের জুলুম এবং দেশদ্রোহীতার সমালোচনা করে ঊম্মাহ্কে ইসলাম তথা খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আহবান জানানোর কারণে। আবার, কিছুদিন আগেও দেশের অন্যতম ঋণ খেলাপী সালমান এফ রহমানকে বিশেষ বিবেচনায় ২২ হাজার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয় শুধুমাত্র শাসকগোষ্ঠীর একজন হওয়াতে। এছাড়াও এই রাষ্ট্রব্যবস্থায় বিচারবিভাগ কিংবা সুপ্রিমকোর্ট যে চূড়ান্ত রায় দেয় তাও চূড়ান্ত নয়। এটি শাসকগোষ্ঠীর ইচ্ছায় যেকোন সময় পরিবর্তনযোগ্য। আমরা অনেকবারই দেখেছি রাষ্ট্রপতি ফাঁসির আসামির ফাঁসি মওকুফ করে দিচ্ছেন। সরকার রাজনৈতিক স্বার্থে বিরোধীদলীয় নেত্রীর সাঁজা মওকুফ করছেন কিংবা তাকে আলাদা সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছেন। এথেকে এটি স্পষ্ট প্রমাণিত যে বিচারবিভাগ তথা সরকারের প্রতিষ্ঠানগুলো গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় শাসকগোষ্ঠীর প্রভাবমুক্ত নয়।
প্রকৃতপক্ষে, বিচারবিভাগ কিংবা অন্যান্য রাষ্ট্রীয় কাঠামো শুধুমাত্র খিলাফাহ্ রাষ্ট্রে শাসকগোষ্ঠীর প্রভাব মুক্ত থাকে। কেননা, এই ব্যবস্থায় শাসক, প্রশাসক কিংবা বিচারক বাধ্য আল্লাহ্’র দেওয়া বিধান অনুযায়ী শাসন এবং বিচারকার্য পরিচালনা করতে। এখানে, পূর্ণাংজ্ঞ অথরিটি থাকে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা’র হাতে, “সৃষ্টি করা এবং আদেশ তাঁর জন্যই(সংরক্ষিত)” (সূরা-আরা’ফঃ৫৪)। যেহেতু, খিলাফত রাষ্ট্র আল্লাহ্’র আইন দ্বারা পরিচালিত হয়। তাই এইখানে, আর কারো ক্ষমতা থাকেনা আল্লাহ্’র কোন বিধান কিংবা আইনকে প্রভাবিত করার। খিলাফত রাষ্ট্রে খোদ খলিফা, কিংবা শাসকগোষ্ঠীর কেউই আইনের ঊর্ধ্বে না। ওনাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আসলে তাঁদেরকেও খিলাফত রাষ্ট্রের মাজালিম কোর্টের বিচারকের কাঠগোড়ায় দাঁড়াতে হয়। আবার, মাজালিম কোর্টের বিচারকের উপরও কোন অভিযোগ আসলে তাকেও খলিফার সামনে বিচারের কাঠগোড়ায় দাঁড়াতে হয়। এই রাষ্ট্রে ইচ্ছে হলে কাউকে গ্রেপ্তার করলাম আবার ইচ্ছে হলে কাউকে নিজের স্বার্থে ছেড়ে দিলাম এমন কোন অরাজকতার সুযোগ নেই। কাউকে গ্রেপ্তার করতে হলেও তাকে যেমন ইসলামি শরীয়াহ্ দ্বারা অপরাধী প্রমাণিত করতে হবে আবার কাউকে সাঁজা থেকে মুক্তি দিতেও শরীয়াহ্ মোতাবেক নির্দোষ প্রমাণিত হতে হবে। আর ইসলামে তো “বিধান একমাত্র আল্লাহ্রই” (সূরা-ইউসুফঃ ৪০)।
– আসাদুল্লাহ্ নাঈম
“বাংলাদেশে আরব বসন্তের মত অবস্থা করতে পারে যুক্তরাষ্ট্র: রাশিয়া”
খবরঃ
জাতীয় নির্বাচনের ফলাফল নিজেদের মনঃপুত না হলে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে আরব বসন্তের মত পরিবেশ সৃষ্টি করতে পারে বলে সতর্ক করেছে রাশিয়া। উল্লেখ্য, ২০১০ সালের শুরু থেকে আরব বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গণ-আন্দোলনের ঢেউ বয়ে যায়। সে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে তিউনিসিয়া, মিশরে, লিবিয়া, সিরিয়া, ইয়েমেনসহ বিভিন্ন দেশে। হোসনি মুবারক, মুয়াম্মার গাদ্দাফির মত দীর্ঘদিনের শাসকদের পতন ঘটে। পশ্চিমা সাংবাদিকদের লেখায় ওই আন্দোলন ‘আরব-বসন্ত’ নাম পায়। বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের ইউরোপীয় মিত্রদের প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় ‘আরব-বসন্ত’ সফল হয়। (https://bangla.bdnews24.com/bangladesh/yapcwsrlqt)
মন্তব্যঃ
মুসলিম বিশ্বের প্রতিটি শাসক পশ্চিমাদের মদদপুষ্ট দালাল। এই দালালদেরকে পশ্চিমারা ক্ষমতায় আনে তাদের স্বার্থকে সংরক্ষন করার জন্য। এরদোগান, বিন সালমান, বাদশা আব্দুল্লাহ, বিন রশিদ আল মাকতুম, তামিম বিন হামাদ, বাশার আল আসাদ এবং পতিত গাদ্দাফি, বেনআলি ও হোসনি মোবারক ছিল এমনি দালাল যাদেরকে পশ্চিমারা ৩০-৪০ বছরের অধিক সময় ধরে পালনপোষন করেছে। এই সুদীর্ঘ সময়ে তাদের জুলুমের শাসন ও ইসলামের বিরুদ্ধে তাদের দমন-পীড়নের ফলে মুসলিমরা তাদের বিরুদ্ধে রুখে দাড়ায় এবং এক অভূতপূর্ব গণ-আন্দোলনের সূচনা করে। ইসলামী আক্বীদাকে ‘বাহন’ হিসাবে পেয়ে এই আন্দোলন দ্রুত এক মুসলিম দেশ থেকে অন্য মুসলিম দেশে ছড়িয়ে পরে এবং এই দালালদের ভীত কাপিয়ে দেয়। বেনআলি ও হোসনি মোবারককে পশ্চিমারা শত চেষ্টা করেও যখন বাঁচাতে পারল না তখন তারা মুসলিম বিশ্বের উপর তাদের নিয়ন্ত্রন হারিয়ে ফেলার ভয়ে চরম মাত্রায় ভীত হয়ে পরে এবং এই আন্দোলনকে বানচাল করার জন্য অগ্রসর হয়। তাদের দালালের পতন হলেও যেন শাসনব্যবস্থা অক্ষুন্ন থাকে এবং দ্বিতীয় সারির দালালদের মাধ্যমে তাদের নিয়ন্ত্রন সুরক্ষিত থাকে তা নিশ্চিত করার জন্য উঠেপড়ে লাগে তারা। কিন্তু সিরিয়াতে তাদের সব পরিকল্পনাই যখন বিফল হয় এবং আন্দোলনকারীরা সিরিয়ার সামরিক বাহিনীর কিছু দলছুট সদস্যের সাহায্য নিয়ে ইসলামকে শাসন ব্যবস্থার একমাত্র ভিত্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলার দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে যায়, তখন ইতিহাসের এক জঘন্যতম গণহত্যা পরিচালনা করে সিরিয়ার কসাই আসাদকে রক্ষা করে আমেরিকা ও তার ইউরোপীয় মিত্ররা। এসময় পশ্চিমাদেরকে সবরকম সাহায্য করে অন্য দালাল শাসকরা, বিশেষ করে বিশ্বাসঘাতক এরদোগান। আরব-বসন্ত নাম পাওয়া এই অভূতপূর্ব ইসলামি-জাগরণকে যারাই আমেরিকা ও ইউরোপের তৈরী করা আন্দোলন বলতে চায় তারা মুসলিম উম্মাহর শত্রু, তারা মুসলিম উম্মাহর ইসলামি আকাঙ্খার মধ্যে কালীমা লেপন করতে চায় এবং বলতে চায় মুসলিমরা আসলে আমেরিকার ইচ্ছার দাস!
আমেরিকাকে যারা সর্বশক্তিমান মনে করে এবং বলে আমেরিকা চাইলে সবই পারে তাদের প্রতি জবাব হল আমেরিকা মুসলিম উম্মাহর মধ্যে তার প্রোথিত দালালদের সাহায্য ছাড়া অসহায়। রাজনীতিবিদ, বুদ্ধিজীবী ও সামরিক বাহিনীতে তার দালালদের সহায়তার কারণেই সে বিভিন্ন নিয়ন্ত্রনমূলক পদক্ষেপ নিতে পারে। বাংলাদেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটে সবাই মনে করছে আমেরিকা বিএনপির ত্রানকর্তার ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে, কিন্তু প্রকৃত সত্য হল এখানে বিএনপি হল সাহায্যকারী এবং আমেরিকা হল সাহায্য গ্রহনকারী। হাসিনার প্রায় দেড় যুগের জুলুমের শাসন ও ইসলামের বিরুদ্ধে তার দমন-পীড়নে অতিষ্ট হয়ে দেশের মুসলিমরা তার পতনের আশায় উন্মুখ হয়ে আছেন। বিএনপি এই জনআকাঙ্খার উপর ভিত্তি করে সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন তৎপরতা চালিয়ে প্রমান করার চেষ্টা করছে জনগন তাদের পক্ষে এবং আমেরিকার জন্য ক্ষেত্র প্রস্তুত করছে যেন সে এখানে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ পায়। জনগন যদি পশ্চিমাদের এই দালালগুলোকে বর্জন করে এবং একমাত্র সঠিক নেতৃত্ব হিসেবে ন্যায়নিষ্ঠ দল হিযবুত তাহরীর-এর রাজনৈতিক মতাদর্শের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হয় তাহলে দেশের উপর আমেরিকা ও অন্য পশ্চিমাদের সকল নিয়ন্ত্রণ তাসের ঘরের মত ভেঙ্গে পরবে।
– রিসাত আহমেদ
“আসন ভাগাভাগি শেষ, প্রচার শুরু”
খবরঃ
দিনভর নানা নাটকীয়তার পর অবশেষে ভোটের মাঠে জোট এবং আসন সমঝোতার বিষয়টি ১৭ তারিখে চূড়ান্ত হয়। শরিকদের জন্য ৩২ টি আসন ছেড়ে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এর মধ্যে ২৬টি জাতীয় পার্টিকে আর ছয়টি আসন, ১৪ দলের শরিক জাসদ, ওয়ার্কার্স পার্টি ও জাতীয় পার্টি-জেপিকে ছেড়ে দিয়েছে ক্ষমতাসীনরা। ১৮ তারিখে প্রতীক পেয়ে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা শুরু। (https://ekattor.tv/national/56071/ )
মন্তব্যঃ
বিএনপিগোষ্ঠীর নির্বাচন বর্জনের কারণে অনেকেরই আফসোস যে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হচ্ছে না! তারা বলতে চায় যদি একটা ভোট দিতে পারতাম! আমার ভোট দেয়ার পর যেই জিততো, যে যাই করতো কোন আফসোস থাকতো না, অন্তত ভোটটা তো সবাই চাইতো! বাস্তবতা থেকে এটি স্পষ্ট যে, গণতন্ত্র আসলে জনগণের বিষয়াদিকে খেলার প্রতিযোগিতা কিংবা ভাগবাটোয়ারার বস্তুতে পরিণত করে। ‘খেলা হবে’ স্লোগানের সাথে যদিও বলা হয় যে ফাইনাল খেলা হয় নির্বাচনের দিন কিন্তু আসলে স্বার্থ আর ক্ষমতার লড়াইয়ের মূল ফয়সালা আরও আগেই সম্পন্ন হয়ে যায়। স্রষ্টা বিবর্জিত এই ব্যবস্থায় অন্যসকল বিষয়ের মত জনগণের দেখাশোনা করা তথা রাজনীতি করা, জনগণের বিষয়াদির দায়িত্ব নেয়া তথা শাসন করার মূল অনুপ্রেরণাই হচ্ছে স্বার্থ হাসিল করা। ফলে স্বভাবতই পুরো গণতান্ত্রিক রাজনীতি একটি হার্ডকোর স্বার্থের খেলায় পরিণত হয়। এখানে ক্ষমতাবান বা শক্তিধররা জানে যে যেকোনভাবে ক্ষমতা পেয়ে গেলে তারা ইচ্ছামত আইন প্রণয়ন করতে পারে, ইচ্ছামত শাসন করতে পারে, নিজেদের স্বার্থ হাসিল করতে পারে। ফলে ক্ষুদ্র পুঁজিপতি এবং ক্ষমতাধরগোষ্ঠী বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই জনগণের ভোটের কাছে তাদের স্বার্থ সমর্পণ করার মত ঝুকি নিতে চায় না। গণতন্ত্র প্রদত্ত এই মানুষের আইন প্রণয়ন তথা শাসন করার স্বাধীনতা ক্ষুদ্র স্বার্থান্বেষীদের একটি শক্তিশালী নেক্সাস বা বলয় তৈরি করে। এই বলয় ভোটের আগেই নিজেদের ক্ষমতা প্রাপ্তি নিশ্চিত করে ফেলতে চায়। ফলে ভোট তথা জনগণের গুরুত্ব এখানে খুবই সঙ্কির্ণ হয়ে পড়ে। আমাদের দেশেতো ইতিমধ্যেই এটা অনেকটা শুধু নাগরিকত্বের টোকেনের মত হয়ে গেছে, এমনকি পশ্চিমা দেশগুলোতেও নানা উন্নতমানের ভোট ইঞ্জিনিয়ারিং হচ্ছে। এটা বিশ্বব্যাপী ওপেন সিক্রেট। ইতিমধ্যেই দেশের অনেকেই বলে সরকারের সবসময়ের সকল সিদ্ধাততেইতো মনে হয় জনগণ দেশে ভাড়া থাকে অন্তত ভোটের দরকার হলে তো আমরা একদিনের রাজা হতে পারতাম! তাদের আফসোস যে, আগে অন্তত আর যাই হোক আমরা একদিনের রাজা ছিলাম, এই সরকারতো এসে আমাদের সেই সুযোগও কেড়ে নিয়েছে!
গণতন্ত্র হচ্ছে মানুষকে আল্লাহ্র আসনে বসানোর প্রক্রিয়া। এই ঘৃণ্য গণতন্ত্রের মিথ্যা বিষবাস্পে আমরা কিভাবে এমন হতাশা ও নির্বুদ্ধিতায় আচ্ছন্ন হতে পারি? আমরা কি বুঝতে পারিনা যে এই গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচন সেটা অংশগ্রহণমূলক হোক কিংবা ভাগাভাগি-সমঝোতার হোক এটি কেবল আমাদের উপর জুলুম বাড়াবে এবং আমাদেরকে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র অসন্তোষ ও শাস্তির জন্য যোগ্য করে ফেলবে। আমরা কিভাবে ভুলে যেতে পারি যে আমাদের আছে ইসলাম। যা দেশের জনগণকে তথা মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারে। যাতে রয়েছে আমাদেরকে ক্ষুদ্র স্বার্থন্বেষী মহলের থাবা থেকে মুক্ত করে আল্লাহ্র স্বার্বভৌমত্ব তথা রহমতের দিকে নিয়ে যাওয়ার সকল উপকরণ। যিনি (সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা) সকল প্রয়োজনের উর্দ্ধে তিনি আমাদেরকে দিয়েছেন একটি পূর্ণাংগ শারিয়া, পূর্ণাংগ জীবন ব্যবস্থা যা প্রতিটি নাগরিকের অধিকার নিশ্চিত করে, সকল জুলুমকে দূরীভূত করে। সেই মহান রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে ওয়াদা দিয়েছেন যে, “তিনি তাদেরকে অবশ্যই খিলাফত দান করবেন যেমন তাদের পূর্ববর্তিদেরকে তিনি খিলাফত দান করেছিলেন” (সুরা নূর ৫৫)। তাই আমাদের এই বিশ্বাসে দৃঢ় হয়ে ইসলামের জন্য কাজ না করার কি কারণ থাকতে পারে? খেলা, ভাগবাটোয়ারা, সমঝোতা ইত্যাদির নোংরা গণতন্ত্র এবং এর প্রতারণামুলক নির্বাচনের নির্লজ্জ হিসাব-নিকাসের হাতে আমাদের ভাগ্য সপে না দিয়ে আমাদের শক্তি, জনগণের শক্তি, উম্মাহর শক্তিকে, কর্তৃত্বকে কেবলমাত্র ইসলামের জন্য সমর্পণ করতে হবে, খিলাফত ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করতে হবে। “বস্তুত সার্বভৌমত্ব ও শাসন কর্তৃত্ব আল্লাহ্ ছাড়া আর কারও জন্য নয়” (সুরা ইউসুফ ৪০)।
– মোহাম্মদ তালহা হোসেন
“শতকোটি টাকার ‘তালগাছ কৌশল’ ব্যর্থ, এবার আসছে হাজার কোটির বজ্রনিরোধক দণ্ড”
খবরঃ
১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে সারাদেশে ৪০ লাখ তালগাছ লাগানোর উদ্যোগ নেওয়ার সময় বলা হয়েছিল, এতে বজ্রপাতে মানুষের মৃত্যু কমবে। কিন্তু ৪ বছর পর দেখা যায়, তালগাছ কৌশল ব্যর্থ হয়েছে। বজ্রপাতে প্রাণহানি কমাতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর এবার ১ হাজার ৩২১ কোটি টাকার একটি প্রকল্প নিয়ে আসছে। এর আওতায় বসানো হবে বজ্রনিরোধক দণ্ড (লাইটনিং অ্যারেস্টার), বানানো হবে আশ্রয়কেন্দ্র। কৃষি মন্ত্রণালয়ও একই কাজে ২৩১ কোটি ব্যয়ে আরেকটি প্রকল্প নিচ্ছে। ওদিকে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরও (এলজিইডি) সাড়ে চার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ের একটি প্রকল্পের একাংশ দিয়ে বজ্রনিরোধক দণ্ড বসাচ্ছে। এর আগে আবহাওয়া অধিদপ্তর ২০১৮ সালে বজ্রপাতের আগাম সংকেত দিতে ৬২ কোটি টাকা ব্যয়ে আটটি জায়গায় লাইটনিং ডিটেকশন সেন্সর (সংকেত-ব্যবস্থা) বসিয়েছিল, যা এখন কাজে লাগছে না। (https://www.prothomalo.com/bangladesh/pnl0dfpi9o)
মন্তব্যঃ
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর, কৃষি মন্ত্রণালয় ও স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের এসকল প্রকল্প দেখলে যে কারো মনে হতে পারে বজ্রপাতে নিহত হওয়া এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সমস্যা। বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ২৪৬ জন মানুষ বজ্রপাতে মারা যায়। বজ্রপাতে নিহত ব্যক্তিদের (যাদের অধিকাংশই হতদরিদ্র কৃষক/শ্রমিক বা জেলে) জন্য সরকারের যেন এতই দরদ যে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করে ত্রীমুখী প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে! সরকার কী এতই জন-দরদী? মানুষের জীবন রক্ষা করা তাদের কাছে এতই গুরুত্পূর্ণ?
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ২০২১ সালে বাংলাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৩১,৫৭৮ জন মানুষ নিহত হয়েছেন। দেশে প্রতিবছর গড়ে প্রায় ২২,০০০ মানুষ সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। সড়কে এই মৃত্যুর মিছিলের প্রধান কারণ হল অনভিজ্ঞ ড্রাইভার আর অপরিকল্পিত অন্ধ-বাঁক ও ইন্টারসেক্শন; অথচ সরকার ড্রাইভারদের দক্ষতা নিশ্চিত না করেই টাকার বিনিময়ে দেদারসে ড্রাইভিং লাইসেন্স দিয়ে যাচ্ছে। ডেঙ্গুতে প্রতিবছর গড়ে দেড় হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। অথচ মশা নিধনে কোন কার্যকর পদক্ষেপ না নিয়ে জনগনের উপর দোষ চাপানো হচ্ছে। মানুষের জীবনকে মূল্যহীন বানিয়ে ফেলা সরকার প্রতিনিয়তই গুলি করে মানুষ মারছে। কিন্তু বছরে দুয়েক’শ হতদরিদ্র কৃষক/শ্রমিক বা জেলে বজ্রপাতের মত দৈব ঘটনায় নিহত হয় বলে এত বিশাল অঙ্কের অর্থ ব্যয়ে প্রকল্প হাতে নেওয়ার মধ্যে মানুষের জীবন রক্ষার কোন সম্পর্ক আছে তা মনে করার কোন কারণ নেই। এসব প্রকল্পের প্রেক্ষিতে বুয়েটের পানি ও বন্যা ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের পরিচালক সাইফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বজ্রপাতে প্রাণহানি ঠেকাতে যেসব অবৈজ্ঞানিক পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে, তা দেখে আমি হতাশ। এ ধরনের চিন্তা তাদের মাথায় কীভাবে যে আসে!?’ মূলত: এসকল প্রকল্প হল জনগনের কষ্টার্জিত অর্থকে লোপাট করার আইনগত উপায়, যেখানে জবাবদিহিতার কোন অস্তিত্বই নেই। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেন, “মুনাফিকের চিহ্ন তিনটি: …. তার কাছে কোন কিছু আমানত রাখা হলে তা খেয়ানত করে” (সহীহ আল-বুখারী)। ধর্মনিরপেক্ষ শাসন ব্যবস্থার কারণে এই সকল নিকৃষ্ট খেয়ানতকারীদের হাতে পড়েছে দেশের জনগনের সম্পদ ও অন্যান্য সকল কিছুর কর্তৃত্ব। এসব হরিলুট দেখে ব্যক্তিকে দোষ দিয়ে লাভ নেই, ব্যবস্থা পরিবর্তন করতে হবে।
– রিসাত আহমেদ
“এই নৌকা নূহ নবীর নৌকা: শেখ হাসিনা”
খবরঃ
হযরত শাহজালাল (র)-এর মাজার জিয়ারত শেষে সিলেটের আলিয়া মাদ্রাসা মাঠের নির্বাচনী জনসভায় শেখ হাসিনা বলেছে, “এ নৌকা নূহ নবীর নৌকা। এ নৌকায় কিন্তু মানবজাতিকে রক্ষা করেছেন আল্লাহ্ রাব্বুল আলামিন। এই নৌকায় ভোট দিয়ে এদেশের মানুষ স্বাধীনতা পেয়েছে। আবার নৌকা যখন ক্ষমতায় এসেছে মানুষের আর্থ-সামাজিক উন্নতি হয়েছে।” (https://www.youtube.com/watch?v=pk-SM7vIXRc)
মন্তব্যঃ
রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেন, “মুনাফিকের চিহ্ন তিনটি: কথা বললে মিথ্যা বলে; ওয়াদা করলে তা ভঙ্গ করে; এবং তার কাছে কোন কিছু আমানত রাখা হলে তা খেয়ানত করে” (সহীহ আল-বুখারী)। দেশের সবচেয়ে বড় মিথ্যুক কে? দেশের সবচেয়ে বড় ওয়াদা ভঙ্গকারী কে? দেশের সবচেয়ে বড় আমানত-খেয়ানতকারী কে? জনগনের কাছে এই তিনটি প্রশ্ন করা হলে একটি মাত্র উত্তরই আসবে। এই তিন গুণের সমন্বয় এত সুষ্পষ্টভাবে অন্য কারো মধ্যেই বিদ্যমান নেই। এ যেন এক অনন্য নজির! সুতরাং সেই অনন্য গুণের অধিকারীর কাছ থেকে প্রতিনিয়ত নিত্যনতুন প্রতারণাপূর্ণ বক্তব্য আসবে সেটাই কী স্বাভাবিক নয়?
নিশ্চিত ভাবেই নূহ (আঃ) আল্লাহ্’র প্রেরিত প্রথম রাসূল ও একজন সম্মানিত নবী। নূহ (আঃ) যখন তার জাতিকে আল্লাহ্’র একত্ববাদের দিকে আহ্বান করেন এবং আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা-কেই একমাত্র ইলাহ হিসেবে গ্রহণ করার জন্য আহ্বান করেন তখন তার জাতির নেতৃস্থানীয়রা তা মানতে অস্বীকৃতি জানায়। তিনি (নূহ) বললেন, “হে আমার প্রভূ! আমি তাদেরকে রাত-দিন আপনার দিকে আহ্বান করেছি।… নিশ্চয়ই, যখনি আমি তাদেরকে আহ্বান করেছি তারা কানে আঙ্গুল দিয়েছে, পর্দা দিয়ে নিজেদেরকে আমার থেকে আড়াল করেছে, তারা কুফরের মধ্যে অটল থেকেছে এবং বারংবার ঔদ্ধত্ব ও অহংকার প্রদর্শন করেছে। আমি তাদেরকে আহ্বান করেছি প্রকাশ্যে। জনসম্মুখে আর গোপনেও।…. কিন্তু তারা আমার বিরুদ্ধে এক বিশাল ষড়যন্ত্র করল।… তারাতো অসংখ্য মানুষকে পথভ্রষ্ঠ করেই ফেলেছে, সুতরাং এই (নেতৃস্থানীয়) যালিমদের পথভ্রষ্ঠতাকে আপনি আরো বাড়িয়ে দিন।” আর এ কারণেই আমি তাদেরকে ডুবিয়ে দিয়েছিলাম আর তাদের জন্য আমি প্রস্তুত রেখেছি লেলিহান আগুনের শাস্তি (সূরা নূহ: ৫, ৭-৯, ২২, ২৪-২৫)।
এই মুনাফিক মুখে ইসলামের নানান শব্দ উচ্চারন করলেও নূহ (আঃ)-এর মত যারা যমিনে আল্লাহ্’র বিধান বাস্তবায়ন করার জন্য রাত-দিন অক্লান্ত পারশ্রম করে খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আহ্বান করছেন তাদেরকে সে ‘জঙ্গি’ ও ‘সন্ত্রাসী’ আখ্যা দিয়ে তাদের উপর জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। আল্লাহ্’র শাস্তির ওয়াদাকে অবিশ্বাস করে নূহ (আঃ) এর জাতির নেতৃস্থানীয় জালিমরা যেভাবে মরুর বুকে জাহাজ নির্মান করতে দেখে ঠাট্টা ও তাচ্ছিল্য করেছিল, এই মুনাফিকও ঠিক তেমনি করে খিলাফতের ব্যাপারে আল্লাহ্’র ওয়াদা ও রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর প্রদত্ত সুসংবাদকে অবিশ্বাস ও অস্বীকার করে খিলাফতের দাওয়াহ বহনকারীদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে ও ক্রমাগত ষড়যন্ত্র করছে। নূহ (আঃ)-এর এক সন্তান যেভাবে তার নিজের শক্তি-সামর্থের উপর ভরসা করে আল্লাহ্’র বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল, এই মুনাফিকও ঠিক তেমনিভাবে তার অনুগত পাইক-পেয়াদা ও বিদেশী প্রভূদের উপর নির্ভর করে খিলাফত পুন:প্রতিষ্ঠাকে ঠেঁকিয়ে দিতে চায়! তবে, নিশ্চিতভাবেই তার পরিণতি নূহ (আঃ) এর সেই অবাধ্য ও আল্লাহদ্রোহী সন্তানের মতই হবে। আর আখিরাতের শাস্তির ব্যাপারে আল্লাহ্ আল-ক্বাহ্হার বলেন: “নিশ্চয়ই মুনাফিকদের আবাস হবে জাহান্নামের সবচেয়ে গভীরতম (ভয়ঙ্করতম) স্থানে, এবং তারা সেখানে কোন সাহায্যকারীই পাবে না! (সূরা আন-নিসা: ১৪৫)।
– রেজওয়ান আহমেদ
“আবির হাসান, ভারতীয় সামরিক একাডেমি থেকে স্নাতক হওয়া প্রথম বাংলাদেশি”
খবরঃ
মোহাম্মদ আবির হাসান (২৩), বাংলাদেশের প্রথম অফিসার ক্যাডেট হিসেবে ইন্ডিয়ান মিলিটারি একাডেমি থেকে স্নাতক হওয়ার এই কৃতিত্ব অর্জন করেছেন। হাসান ১২টি বন্ধুত্বপূর্ণ দেশের ২৯ জনের মধ্যে একজন যারা ভারতীয় একাডেমি থেকে স্নাতক হয়েছেন।… অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা বাংলাদেশ হাইকমিশনের ডিফেন্স অ্যাটাশে ব্রিগেডিয়ার মোহাম্মদ হাফিজ-উর-রহমান এটিকে “আমাদের দেশের জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়” বলে অভিহিত করেছেন। তিনি আরও বলেন, “তিনি [হাসান] আইএমএ থেকে স্নাতক হওয়া প্রথম বাংলাদেশী। এই ঘটনা ভারতের সাথে আমাদের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক জোরদার করার ক্ষেত্রে আরেকটি পদক্ষেপ হিসেবে প্রমাণিত হবে। আমরা আশাবাদী যে ভবিষ্যতে এমন আরও ক্যাডেট থাকবে,” (অনুবাদকৃত)। (https://www.tbsnews.net/bangladesh/abir-hassan-first-bangladeshi-graduate-indian-military-academy-754654)
মন্তব্যঃ
ভারতীয় সামরিক একাডেমি থেকে স্নাতক হয়ে দেশের মিলিটারিতে যোগদান করা কোন বিবেচনাতেই গর্বের বিষয় নয়। বরঞ্চ একজন মুসলিম সামরিক অফিসারের মুশরিকদের হাতে ট্রেইনআপ হওয়া নিঃসন্দেহে অপমানজনক এবং বিপদজনক বিষয়। এই বিষয়কে বর্তমান হাসিনা সরকার গর্বের কিংবা গৌরবের বিষয় বলে প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে মূলত এক গভীর দেশ-বিরোধী এবং ইসলামবিরোধী ষড়যন্ত্রকে আড়াল করার চেষ্টা করছে। ২০০৮ সালে ক্ষমতা আসার পর থেকেই হাসিনা সরকার আমাদের সেনাবাহিনীকে দুর্বল করতে একের পর এক ভয়ানক এবং ধ্বংসাত্মক ষড়যন্ত্রমূলক পদক্ষেপ নিয়ে আসছে। কেননা, সেনাবাহিনী হচ্ছে উম্মাহ্র সেই আস্থার জায়গা যা উম্মাহ্কে হাসিনা সরকারের জুলুম এবং পশ্চিমা কাফিরদের কবল থেকে রক্ষা করতে পারে। শুরুতে পিলখানা হত্যাকান্ড, পরবর্তীতে বিডিআরকে দূর্বল করতে সেনাবাহিনীর চেইন অব কমান্ড থেকে আলাদা করে নতুনভাবে বিজিবি নামে সংস্কার করা, ভারতের মত প্রমাণিত মুশরিক শত্রু রাষ্ট্রকে প্রাণের বন্ধু বলে বাংলাদেশের সামরিক স্ট্র্যাটেজি পরিবর্তনের চেষ্টা করা, সেনাবাহিনীর মধ্যে বিদ্যমান ইসলামি মূল্যবোধকে নষ্ট করতে ভারত-আমেরিকা-ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর সংস্পর্শে পশ্চিমা-কুফর সেক্যুলার সংস্কৃতি প্রবেশ করানো, ইত্যাদি।
অথচ, আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, “এবং কিছুতেই আল্লাহ্ মুসলিমদের উপর কাফিরদের কর্তৃত্বের পথ মেনে নিবেন না” (সূরা-নিসাঃ ১৪১)। তারা একে বলে দ্বিপাক্ষিক সহোযোগিতা অথচ রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, “আমরা মুশরিকদের কাছ থেকে সাহায্য চাই না” (ইবনে মাজাহ), “তোমরা মুশরিকদের আগুন থেকে আলোর সন্ধান করোনা”। আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূল (সাঃ) এর এই নিষেধাজ্ঞা, যাতে কাফেররা আমাদের উপর আধিপত্য বিস্তার করতে না পারে। আর শাসকগোষ্ঠী এই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাখান করছে যাতে কাফেররা আমাদের উপর আধিপত্য বিস্তার করতে পারে। দ্বিতীয়ত, শাসকগোষ্ঠী মুসলিম সেনাবাহিনীর মধ্যেকার ভাতৃত্বের বন্ধন দুর্বল করতে চায়। মুসলিম ঊম্মাহ্’র একজন সক্ষম এবং সাহসী সন্তান যখন মিলিটারি একাডেমিতে প্রশিক্ষণরত থাকে, তখন তার সাথে প্রশিক্ষণরত থাকা তার অন্য মুসলিম ভাইদের সাথে এক দৃঢ় ভ্রাতৃত্বের বন্ধন গড়ে ঊঠে যা প্রকৃতপক্ষে সেনাবাহিনীর মধ্যেকার ঐক্যকে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত করে। কিন্তু, একজন মুসলিম যদি মুশরিকদের সাথে প্রশিক্ষণরত অবস্থায় থাকে তাহলে এ ব্যাপারে আল্লাহ্’র সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা রয়েছে: “মুমিনগণ যেন মুমিনদের ছাড়া কাফিরদের বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে। যারা এরূপ করবে আল্লাহ্’র সাথে তাদের কোন সম্পর্ক থাকবে না” (সূরা আলি-ইমরানঃ ২৮)। তৃতীয়ত, একজন সেনা-অফিসার যে পরিবেশ কিংবা গন্ডির মধ্যে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত হয় তার একটা প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষ প্রভাব তার সমগ্র সামরিক জীবনের উপর বিস্তার করে। এখন ইন্ডিয়ান সেনাবাহিনী যার মূল মাইন্ডসেট “সেবা পরম ধর্ম” আর যুদ্ধের মাইন্ডসেট “ভারত মাতা কি জয়”। সেই সেনাবাহিনী থেকে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত একজন মুসলিম অফিসারের মাইন্ডসেট কি কখনো বাংলাদেশের মুসলিম সেনাবাহিনীর মাইন্ডসেট “চির উন্নত মম শির” এর মত পুরুষদিপ্ত কিছু হবে কিংবা মুসলিম ভূমির প্রতি তার কমিটমেন্ট কি দৃঢ় হবে? (সর্বোপরি) সেনাবাহিনী একটা অঞ্চলের মূল ক্ষমতার স্তম্ভ। কোন অঞ্চল কার অধীনে (কুফর না ইসলাম) থাকবে তা নির্ধারিত হয় উক্ত অঞ্চলের সেনাবাহিনী কাকে সাপোর্ট এবং নিরাপত্তা দিচ্ছে তার উপর। মুসলিম সেনাবাহিনী যাতে কুফর জীবনব্যবস্থাকে ছুঁড়ে ফেলে ইসলামকে প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন না দেখে তাই তাদেরকে খোদ কুফর সংস্কৃতি এবং প্রশিক্ষণ কাঠামোতে গড়ে তুলতে এই দালাল শাসকগোষ্ঠী তাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যাতে মুসলিম সন্তানেরা কাফেরদের কোলে লালিত-পালিত হয়ে কামাল আতার্তুক (আল্লাহ্’র লান’ত) এর মত ইসলাম এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধেই অবস্থান নেয়। ইসলামের অধীনে ফিরে দুনিয়ায় আবার বিজয়ী শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে না পারে।
– আসাদুল্লাহ্ নাঈম
“বহুজাতিক কোম্পানির কর্মকর্তা থেকে জঙ্গি নেতা”
খবরঃ
নিষিদ্ধঘোষিত জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরীর বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ নেতা ও এপ্রিল মাসে অনুষ্ঠিত অনলাইন সমাবেশে বক্তব্য রাখা র্শীষ নেতা ইমতিয়াজ সেলিম ওরফে ইমাদুল আমিনকে (৪১) গ্রেফতার করেছে ডিএমপির কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্স-ন্যাশনাল ক্রাইমের (সিটিসিসি) ইন্টেলিজেন্স অ্যানালাইসিস বিভাগ। … সর্বশেষ চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ‘জালিম হাসিনা এবং ঔপনিবেশবাদী মার্কিনীদের কবল থেকে মুক্তির উপায়’ বিষয়ক অনলাইন সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনটি লেবাননভিত্তিক একটি আইটিউব চ্যানেলে প্রচার করা হয়। সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য সংগঠনটির সদস্যরা রাজধানীসহ সারাদেশে পোস্টারিং এবং অনলাইনে প্রচার-প্রচারণা চালায়।.. প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ইমতিয়াজ সেলিম সিটিটিসিকে জানিয়েছেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিবিএ ও ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগ থেকে মাস্টার্স সম্পন্ন করেন। বর্তমানে রাজধানীর বনানীতে একটি মাল্টি ন্যাশনাল কোম্পানির বিক্রয় বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করছিলেন। দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গিবাদের সঙ্গে জড়িত ইমতিয়াজ মার্শাল আর্টে ব্ল্যাক বেল্টধারী। বাংলাদেশ জাতীয় কারাতে ফেডারেশনের তালিকাভুক্ত প্রশিক্ষক ও আন্তর্জাতিক রেফারি। এছাড়া তিনি জাপান কারাতে অ্যাসোসিয়েশনের লাইসেন্সধারী প্রশিক্ষক। (https://www.jagonews24.com/national/news/907879)
মন্তব্যঃ
যুগে যুগে নিষ্ঠাবান রাজনীতিবিদ, যারা কুফর ব্যবস্থার পরিবর্তন চেয়েছে ও এর জন্য শ্রম দিয়েছে, তাদেরকে তৎকালীন শাসকরা তাদের ক্ষমতার জন্য বিপদজনক মনে করেছে। আসহাবে কাহাফের সম্মানিত যুবকদেরকে যেমন তৎকালীন রোমের শাসকগণ বিপদজনক মনে করত, তেমনি নবী-রাসূলগণকেও তাদের যুগের শাসকরা ভয় পেত। ফলস্বরূপ তারা তাদেরকে কোন রকম যৌক্তিক কারণ ছাড়াই রাষ্ট্রদ্রোহী, ধর্মদ্রোহী, জাদুকর ইত্যাদি নামে নামকরণ করত ও দমন-নিপীড়ন চালাত। আজকের যুগের সেই নামকরণ রূপান্তরিত হয়ে হয়েছে ‘জঙ্গি’ কিংবা ‘সন্ত্রাসী’। তারপর সেই পুরনো জেল-জুলুম-গুম ও হত্যা। দেশে দেশে নিষ্ঠাবান রাজনীতিবিদদের উপর এই সেকুলার কুফর ব্যবস্থার ধারক ও বাহক বর্তমান শাসকেরা এগুলো চালিয়ে যাচ্ছে। তারা ‘জঙ্গি’ ট্যাগ লাগিয়ে বলছে এ সকল রাজনীতিবিদগণ নাকি জাতির জন্য ও দেশের জন্য বিপদজনক! অথচ তারা আল-কুদস ও এর আশেপাশের নিপীড়িত জনগণকে মুক্ত করার রাজনীতি করে! এদেশের জনগণকে মার্কিন উপনিবেশবাদ এবং সরকারের যুলুমের শাসনের কবল থেকে মুক্ত করার রাজনীতি করে! তারা রাজনীতিকে ‘ব্যবসা’ হিসেবে না দেখে ‘ইবাদত’ হিসেবে দেখে! তারা নবী রাসূলগণের দেখানো পথে সৎকাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ তথা সকল মুনকারের জননী বর্তমান কুফর ধর্মনিরপেক্ষ-পুঁজিবাদী ব্যবস্থা পরিবর্তনের ‘সিয়াসা’ বা রাজনীতি করে। এই রাজনীতি কিভাবে দেশের জন্য বিপদজনক হয়? আর বিপরীতক্রমে আওয়ামী-বিএনপিগোষ্ঠীর ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি ও রাজনীতিবিদ যারা আইনদাতা হিসেবে সৃষ্টিকর্তার ক্ষমতাকে অস্বীকার করার গণতান্ত্রিক সিস্টেমে বিশ্বাস করে, আল-কুদসে ইহুদিদের বৈধতাকে মেনে নিয়ে যারা গোপনে ও প্রকাশ্যে তাদের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখে, নিজ দেশের নদীসমূহ, বন্দর, খনিজ ও অন্যান্য মূল্যবান সম্পদসমূহ লুণ্ঠনে মার্কিন বা ব্রিটিশ উপনিবেশবাদীদের ডেকে আনে, তারপর তাদের সাথে লুন্ঠিত সম্পদ ভাগ-যোগ করে নিজেদের পকেট ভরে, ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে কাফিরদের যুদ্ধে এতই নিবেদিতপ্রাণ যে তারা ঘুমায় না, এরা কীভাবে রাজনীতিবিদ বলেই গণ্য হয়, বরং এরাইতো প্রকৃত দেশদ্রোহী ও বিপদজনক!
যাইহোক, আশার কথা হল, এই উম্মত তাদের জঙ্গি তত্ত্বকে আর বিশ্বাস করে না। এবং এ সকল জঙ্গি ধরার অভিযানকে উম্মত এখন নাটক হিসেবে দেখে। আর নির্বোধ ও জালেম শাসকদেরকে অভিসম্পদ করে। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও তাদের দালালদেরকে ঘৃণা করে। এই ঘৃণাসমূহ ইতিমধ্যে উম্মতের নিষ্ঠাবান সন্তানদের একটা অংশকে সত্যনিষ্ঠ দল হিযবুত তাহরীর এর সাথে একত্রিত হয়ে এই সেক্যুলার কুফর সিস্টেম পরিবর্তন করে আল্লাহ্’র (সুবহানাহু ওয়া তা’আলা) আদেশে ইসলামী শাসনব্যবস্থা ‘খিলাফত’ প্রতিষ্ঠায় অনুপ্রাণিত করেছে। এবং এই উম্মতের বাকি অংশও অতি দ্রুত এর সাথে একত্রিত হচ্ছে।
– মোঃ জহিরুল ইসলাম
“আইএমএফ ও এডিবির ঋণে বেড়েছে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ”
খবরঃ
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) ঋণের কিস্তির অর্থ পাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ বেড়েছে। মোট রিজার্ভ বেড়ে এখন হয়েছে ২ হাজার ৫৮২ কোটি ডলার বা ২৫ দশমিক ৮২ বিলিয়ন ডলার। আইএমএফ বাংলাদেশের জন্য রিজার্ভের লক্ষ্যমাত্রা কার্যত কমিয়েছে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ বাড়লেও দীর্ঘ সময় ধরে যে ডলার–সংকট চলছে, তা এখনো কাটেনি। ডলারের যে আনুষ্ঠানিক দর, ব্যাংকগুলো তার চেয়ে বেশি দামে মার্কিন এই মুদ্রা কিনছে। ফলে আমদানিকারকদেরও বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা মনে করেন, ডলারের এই দামের প্রভাব আমদানি করা পণ্যের মূল্যে দেখা যাচ্ছে। (https://www.prothomalo.com/business/bank/xu4n3f6tez)
মন্তব্যঃ
বৈদেশিক ঋণ পেয়ে বৈদেশিক রিজার্ভ বাড়াতে পেরে সরকারসহ বিভিন্ন মহল খুব খুশি কারণ এতে ডলার সংকট পুরোপুরি না ফুরালেও ‘স্বস্তি ফিরেছে’ কিছুটা। মূলত, সংকট মোকাবেলার জন্য আরও আরও ডলার সগ্রহ করা প্রয়োজন তা হোক রেমিটেন্স, রফতানি, পর্যটন, বৈদেশিক বিনিয়োগ বা বৈদেশিক ঋণ থেকে। কিন্তু আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি যে এগুলো প্রতিটির-ই নিজ নিজ স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি সামাজিক অথবা অর্থনৈতিক সমস্যা রয়েছে? যেমন আমরা কি কখনো ভেবে দেখেছি রেমিটেন্স যোদ্ধারা পারিবারিক জীবনে কতটা সুখী? কিংবা, সুদ সহ ঋণ ফেরত দিতে মাথাপিছু কী পরিমাণ ঋণ পরিশোধ করতে হবে? অথবা, অনাগত সন্তান কী পরিমাণ মাথাপিছু ঋণ নিয়ে জন্ম গ্রহণ করবে?
বাস্তবে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ানো কোন দেশের অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য যথেষ্ট নয়, বরং বৈদেশিক বাণিজ্য ও বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ একটি দেশের জন্য একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। অর্থাৎ একটি দেশ নিজের স্বকীয়তা বজায় রেখে দেশটির ভিশন ও লক্ষ্য (Objective) অনুযায়ী বৈদেশিক বাণিজ্য করবে। সেক্ষেত্রে, খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন আসতে পারে, তাহলে একটি দেশ টিকে থাকবে কি করে? এক্ষেত্রে, ডলার তথা বৈদেশিক মুদ্রা প্রয়োজন হয় বৈদেশিক লেনদেন এর জন্য, আর এ লেনদেনে ঘাটতি হলেই বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমতে থাকে, যা পরনির্ভর অর্থনীতির একটি মূল সমস্যা। প্রকৃত পক্ষে, একটি দেশের টিকে থাকার জন্য স্বনির্ভর অর্থনীতি শুধু মাত্র গুরুত্বপূর্ণ নয় বরং বাঞ্ছনীয়। আর, একটি দেশের পরাশক্তি হয়ে উঠার জন্য আদর্শ (Ideology) থাকাটা যেমন একটি পূর্বশর্ত তেমনি স্বনির্ভর অর্থনীতি থাকাটিও একটি পূর্বশর্ত।
স্বনির্ভর অর্থনীতি গড়ে তোলার জন্য ইসলাম একটি ব্যতিক্রমধর্মী ও কার্যকর সমাধান প্রদান করে। এলক্ষ্যে কৃষিকাজে ব্যাপক জোর দেয়, যেমন, কৃষি জমি পর পর তিন ফসল আবাদ না করলে তা হস্তান্তর করতে বাধ্য করা হবে, সরকারি খরচে সেচের ব্যবস্থা করা হবে, সমুদ্রে জেলেদের নিরাপত্তা প্রদান করা হবে। সমরাস্ত্র ভিত্তিক ভারি শিল্প গড়ে তোলা হবে, কৃষি কাচামাল ভিত্তিক মাঝারি ও শিল্প-সহায়ক হালকা শিল্প গড়ে তোলা হবে। নিজস্ব ব্যাবস্থাপনায় খনিজ সম্পদ আহরণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ ও বিপণন করতে হবে। রপ্তানির ক্ষেত্রে স্বর্ণ ও রুপা ভিত্তিক দ্বিধাতু-মুদ্রা গ্রহণ করা হবে। ইসলাম একটি অনন্য অর্থনৈতিক ব্যবস্থা প্রদান করে যা অচিরেই একটি দেশকে পরাশক্তিদের অর্থনৈতিক গ্রাস থেকে বেরিয়ে নিজেই একটি আন্তর্জাতিক পরাশক্তিতে (Supper Power) রুপান্তরিত করতে সক্ষম।
– আব্দুল্লাহ্ আল-শামস