Weekly ISLAMIC VIEWPOINT 96

Weekly 

ISLAMIC VIEWPOINT

….সপ্তাহের সংবাদ পর্যালোচনা 

৯৬ তম সংখ্যা । ২৫ জুলাই, ২০২৩

এই সংখ্যায় থাকছে:

 

“শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী দেখতে ব্যবসায়ীরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন: এফবিসিসিআই সভাপতি”

“প্রকৃত খেলাপি ঋণ চার লাখ কোটি টাকার বেশি”

“আসুন, বাংলাদেশের মানুষকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ করে দিই: উজরা জেয়া”

“মালি শান্তিরক্ষা মিশন থেকে ফিরছে ১৭০০ বাংলাদেশি”

 

“শেখ হাসিনাকে আবারও প্রধানমন্ত্রী দেখতে ব্যবসায়ীরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন: এফবিসিসিআই সভাপতি”

খবরঃ 

বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভবিষ্যতে আবারও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চেয়েছেন ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি মো. জসিমউদ্দিন। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, আমরা মনে করি আপনাকে আমাদের প্রয়োজন। আপনাকে আবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী থাকতে হবে। আমাদের জন্য, ব্যবসায়ীদের জন্য প্রধানমন্ত্রী থাকতে হবে। শনিবার ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ব্যবসায়ীদের ভূমিকা’ শীর্ষক এক সম্মেলনে বক্তব্য দেয়ার সময় জসিমউদ্দিন এ কথা জানান। সম্মেলনের শুরুতে স্বাগত বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিমউদ্দিন বলেন, ‘আপনি (প্রধানমন্ত্রী) যেভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে আসছেন ও আমাদের (ব্যবসায়ীদের) যে অবস্থান সৃষ্টি হয়েছে, সেটিকে ধরে রাখার জন্য আপনাকে (প্রধানমন্ত্রীকে) প্রয়োজন। অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআইয়ের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বলেন, আমি মনে করি সরকার ও বেসরকারি খাতের সমন্বিত প্রচেষ্টায় একটি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সক্ষম হব। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে দিতে পারবো সমৃদ্ধ সুন্দর বাংলাদেশ। বিশ্ব র‌্যাঙ্কিংয়ে নিজেদের অবস্থান করব আরও উন্নত। সে জন্য শেখ হাসিনার সরকার, বারবার দরকার।’ (https://mzamin.com/news.php?news=64762)

  

 

মন্তব্যঃ

ব্যবসায়ীরা শেখ হাসিনার সরকারকে টিকিয়ে রাখতে সম্মত হয়েছে কারণ বিগত ১ দশকের বেশি সময় ধরে পুঁজিবাদী হাসিনা সরকার বাংলাদেশের পুঁজিপতি অভিজাত ব্যবসায়ীদের সবচেয়ে ভাল দেখভাল করেছে। দেশে গ্যাস, বিদ্যুৎ, নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্যের ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধি, শোষণমূলক করের বোঝা, ব্যাপক বেকারত্বসহ সরকারের ভঙ্গুর স্বাস্থ্যখাতের ফলে সৃষ্ট প্রাণঘাতী ডেঙ্গু পরিস্থিতির ফলে দেশের জনগণ চড়ামূল্য দিয়ে গেলেও হাসিনা সরকার পুঁজিপতি অভিজাতদের ব্যবসায়িক স্বার্থকে জনগণের উপর প্রাধান্য দিয়ে আসছে। ক্ষমতায় আরোহণের পর হাসিনা সরকার ২০১০ সালে দেশে বিদ্যুৎখাতে মহাপরিকল্পনা নামক “লুটেরা মডেল” বাস্তবায়ন করে নামে স্থানীয় পুঁজিপতিগোষ্ঠীকে রেন্টাল ও কুইক রেন্টাল বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের সুবিধাভোগী করে গত ১৪ বছরে ৯০ হাজার কোটি টাকা প্রদান করে। বিদ্যুৎখাতে ইনডেমনিটি আইনের পাশাপাশি তাদের আশীর্বাদপুষ্ট কুইক রেন্টালগোষ্ঠীদের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর মেয়াদ ২০২৬ সাল পর্যন্ত উন্নীত করে। এরপর হাসিনা সরকার তার সহযোগী ক্ষুদ্র পুঁজিপতিগোষ্ঠীকে জনগণের সম্পদ লুণ্ঠনের সুবিধা দেয়ার জন্য ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে পদ্ধতিগত লুটপাটের হাতিয়ারে পরিণত করে। দেশবাসী প্রত্যক্ষ করেছে, সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় কিভাবে এই দুর্বৃত্ত পুঁজিপতিগোষ্ঠী বেসিক ব্যাংকের ৪৫০০ কোটি টাকা, রাষ্ট্রায়ত্ত সোনালী ব্যাংকের ৪,৩৫৭ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংকের সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা এবং এবং সর্বশেষ ৩ ইসলামী ব্যাংক থেকে ৯৫০০ কোটি টাকা লুট করেছে। এতদসত্ত্বেও, হাসিনা সরকার তাদের মদদপুষ্ট ঋণখেলাপী ও ব্যাংক লুটেরাদের জন্য দায়মুক্তি আইন পাস করা সহ এসব লুটেরাদের ঋণ পরিশোধে সহায়তা দেয়ার জন্য তাদেরকে বেইল আউট স্কিম এবং তাদের ঋণ পুনঃনির্ধারণের (Loan Rescheduling) সুবিধা প্রদান করেছে। ব্যাংকের মালিকানা বদল করে দেশের ব্যাংকগুলোকে ৪০-৫০টি পরিবারের ও তাদের শিল্প গ্রুপের হাতে তুলে দিয়েছে। এসব ক্ষুদ্র পুঁজিপতিগোষ্ঠী কর্তৃক একের পর শেয়ার মার্কেট লুট এবং বন্ড বাজার ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ন্ত্রণের ঘটনা সবারই জানা। সরকার জনগণের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রমের মাধ্যমে উপার্জিত অর্থের উপর ব্যাপক হাড়ে ভ্যাট ও করের বোঝা চাপালেও পুঁজিপতিগোষ্ঠীর ব্যবসার চাকা সচল রাখার জন্য একের পর এক কর্পোরেট কর হার হ্রাস করেছে। এছাড়া সরকার আইএমএফ নির্দেশিত প্রেসক্রিপশন অনুসরণ করে গোটা জ্বালানি খাতকে বেসরকারিকরণ ও আমদানি নির্ভর করে ক্ষুদ্র এই পুঁজিপতিগোষ্ঠীর দিকে অর্থের একমুখী প্রবাহ নিশ্চিত করে তাদেরকে ব্যাপক উপকৃত করেছে। ৯৬ বিলিয়ন ডলারের বৈদেশিক ঋণনির্ভর মেগা প্রকল্পগুলো দেশকে ঋণের সাগরে ডুবিয়ে রাখলেও ক্ষুদ্র এই গোষ্ঠীর স্বার্থের ব্যাপক উন্নয়ন ঘটিয়েছে। অধিকন্তু, ক্ষয়িষ্ণু বৈদেশিক রিজার্ভ এবং ব্যাপক বৈদেশিক ঋণের বোঝার কারণে সরকার আমদানি ব্যয় মেটাতে হিমশিম খেলেও দেশীয় পুঁজিপতি অভিজাত শ্রেণীকে আজ অবধি ১৭ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক ঋণের সুবিধা দিয়েছে (দেখুনঃ বৈদেশিক ঋণ পরিশোধে চাপে পড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ! – শেয়ার বিজ, ২৫ অক্টোবর, ২০২২)। দেশের পুঁজিপতিগোষ্ঠীর জন্য হাসিনা সরকার প্রদত্ত নিরবিচ্ছিন্ন এসব সার্ভিসের লিস্ট অনেক লম্বা। ফলশ্রুতিতে এই পুঁজিপতি অভিজাত শ্রেণী যেকোন মূল্যে হাসিনা সরকারকে টিকিয়ে রাখতে চাইবে এটাই কি স্বাভাবিক নয়?

কার্যত, পুঁজিপতিগোষ্ঠীর প্রতি নিজেদেরকে নিবেদিত (Devoted) রাখা ছাড়া পুঁজিবাদী ব্যবস্থার শাসকদের অন্যকোন উপায় নেই। তাই বিএনপিগোষ্ঠী ক্ষমতায় এলে তারাও একইভাবে এই গোষ্ঠীর নিরবিচ্ছিন্ন সেবা দিয়ে যাবে, যা ইতিপূর্বে তাদের শাসনামলে আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। কারণ এই ব্যবস্থায় রাজনীতিবিদরা দেশের সরকারী পদ পরিচালনার জন্য পুঁজিপতিগোষ্ঠীদের কর্তৃক নিয়োগকৃত কর্মচারী ছাড়া আর কিছুই নয়। পুঁজিবাদী ব্যবস্থায় পুঁজিপতিরাই প্রকৃত শাসক যারা তাদের কায়েমী স্বার্থের ভিত্তিতে দেশের রাজনৈতিক গতিপথকে প্রভাবিত করে। এই পুঁজিপতিগোষ্ঠীরা সেই সরকারকেই পৃষ্ঠপোষকতা ও সমর্থন করে যারা তাদের স্বার্থ পূরণে প্রতিশ্রুতবদ্ধ থাকে। ফলশ্রুতিতে শাসকরা ক্ষমতায় আরোহণ ও টিকে থাকার জন্য এই পুঁজিপতিগোষ্ঠীকে সিড়ি হিসেবে ব্যবহার করে এবং তাদের স্বার্থ পূরণ ও বাস্তবায়নে নিজেদেরকে নিবেদিত করে। বাংলাদেশে শেখ হাসিনা কিংবা হোয়াইট হাউস বা হাউস অফ কমন্সে অফিসিয়াল চেয়ারে বসে থাকা বাইডেন আর ঋষি সুনাক আমেরিকা এবং বৃটেনের প্রকৃত শাসক নয়। তারা সবাই পুঁজিপতি এলিট শ্রেণীর মাধ্যমেই নিয়োগকৃত ও তাদের স্বার্থ পূরণে নিবেদিত। জনগণের স্বার্থ তাদের কাছে লিপ সার্ভিস ছাড়া কিছুই না।

অন্যদিকে খিলাফত রাষ্ট্র শাসক ও পুঁজিপতিগোষ্ঠীর সমঝোতার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা কোন শাসনব্যবস্থা নয়, বরং এটি ইসলামী শরীয়াহর পূর্নাঙ্গ বাস্তবায়নের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা শাসনব্যবস্থা যেখানে আইন-কানুন হচ্ছে কুরআন ও সুন্নাহ হতে উদ্ভূত এবং অপরিবর্তনীয়। তাই কোন পুঁজিপতি বা ক্ষমতাশালীর পক্ষে এই শাসনব্যবস্থাকে নিজেদের কায়েমী স্বার্থে ব্যবহার করার কোন সুযোগ নেই কিংবা খলীফাকে প্রভাবিত করে আইন পরিবর্তন করার সুযোগ নেই। খলীফা ধনী-গরিব নির্বিশেষে সকলের অভিভাবকত্ব গ্রহণ করবেন এবং রাষ্ট্রের সকল নাগরিকদের জন্য সমান নাগরিক সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করবেন। খিলাফত রাষ্ট্রে সমাজের অভিজাত শ্রেণীর জন্য আলাদা কোনো স্থান থাকবে না ফলে দুর্নীতিবাজ ও অর্থলিপ্সুগোষ্ঠী ব্যক্তিরা এই ব্যবস্থার রাজনীতি ও শাসন ক্ষমতার প্রতি আকর্ষণ হারিয়ে ফেলবে, শাসক ও শাসনক্ষমতাকে প্রভাবিত করাতো দুরের বিষয়। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) চুরির অপরাধে কুরাইশদের একজন অভিজাত মাখজুমি মহিলার হাত কেটে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন, অথচ তিনি (সাঃ) দরিদ্র ও অভাবীদের অবকাশ দেয়ার জন্য বলেছিলেন: “বাধ্যকারী দুর্ভিক্ষে কোন হাত কাটা নেই” (আশ-শারখাশি আল-মাবসু‘ত-এ বর্ণনা করেন)। খিলাফত রাষ্ট্রে ব্যবসা-বাণিজ্য কোন অভিজাত শ্রেণী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হবে না কিংবা ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট প্রতিষ্ঠার সুযোগ থাকবে না কারণ ইসলামী কোম্পানী কাঠামো একজন ব্যক্তির পুঁজি সংগ্রহের সীমারেখা নিয়ন্ত্রণ করবে। এছাড়া খিলাফত রাষ্ট্র কোনভাবেই পুঁজিপতিগোষ্ঠীর লুটপাট ও সম্পদ পুঞ্জিভূত করার প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়া হিসেবে ব্যাংকিং ব্যবস্থাকে মেনে নেবে না। খিলাফত রাষ্ট্র রাজস্ব ও কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখবে এমন উদ্যোগ ও শিল্প স্থাপনে ইচ্ছুক সম্ভাবনাময় যেকোন নাগরিককে বায়তুল মাল থেকে সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করবে। অধিকন্তু, রাষ্ট্রের সকল নাগরিকদের জন্য উপযুক্ত ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ সৃষ্টি করবে যাতে অর্থনীতির সুফল ও সম্পদের প্রবাহ সমাজের সকল শ্রেণীর মধ্যে আবর্তিত হয়। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, “যেন সম্পদ শুধুমাত্র তোমাদের বিত্তশালীদের মধ্যেই আবর্তিত না হয়” (সুরা হাশর: ৭)।

    –    সিফাত নেওয়াজ

“প্রকৃত খেলাপি ঋণ চার লাখ কোটি টাকার বেশি”

খবরঃ

বাংলাদেশ ব্যাংক তিন মাস পরপর খেলাপি ঋণের যে হিসাব দেয়, তা যথাযথ নয় বলে মন্তব্য করেছেন একুশে পদকপ্রাপ্ত অর্থনীতিবিদ মইনুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, ব্যাংক খাতে প্রকৃত খেলাপি ঋণের পরিমাণ চার লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এর অর্ধেকের মতো বছরের পর বছর ধরে মামলায় ঝুলে আছে। অর্থাৎ যত দিন মামলাগুলো চলবে, তত দিন খেলাপি হিসেবে এগুলোকে গণ্য করা হবে না।  চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক এই শিক্ষক আরও বলেন, একইভাবে অবলোপন করা ৫৫ হাজার কোটি টাকাকেও খেলাপি হিসেবে দেখানো হয় না। এ দুটিকে যোগ করলে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় চার লাখ কোটি টাকার বেশি।  কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হিসাবে গত মার্চ পর্যন্ত খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ কোটি টাকা। (https://www.prothomalo.com/business/1kj91zehtu)

মন্তব্যঃ

ক্ষুদ্র পুঁজিপতিগোষ্ঠীর প্রতিনিধি তথাকথিত ব্যাংক মালিক এবং বড় বড় চিহ্নিত ঋণ খেলাপি কর্পোরেটদের স্বার্থে সরকার প্রতিনিয়ত প্রকৃত খেলাপি ঋণ পরিমাণ এবং সংখ্যা নিয়ে লুকোচুরি করে। এখানে, যে ৪ লাখ কোটি টাকার কথা বলা হচ্ছে তা কোন না কোনভাবে খেলাপী ঋণের শ্রেনীভুক্ত যদিও ব্যবসায়িরা বিদ্যমান আইনি কাঠামো (playing with the laws) ব্যবহার করে এই ঋণগুলোকে নন-খেলাপি হিসাবে দেখানোর সুযোগ পাচ্ছে। এছাড়াও বিদ্যমান ব্যাংক ঋণের একটি বড় অংশ মাত্র ২% ডাউন পেমেন্টের মাধ্যমে ১০ বছরের জন্য কৃত্রিমভাবে ঋণখেলাপির তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে (বিস্তারিত জানতে দেখুন: ছাড় দিয়ে বড় ঋণখেলাপিদের আড়ালে রাখা হচ্ছে, ডেইলি ষ্টার, জানুয়ারি ২৬, ২০২৩)। নামমাত্র ডাউন পেমেন্টের মাধ্যমে যারা ঋণ পুনঃতফসিল করেছে তাদের বেশীরভাগ চিহ্নিত ঋণ খেলাপি এবং রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী। এর মধ্যে অনেকে এক ব্যাংকের মালিক কিন্তু অন্য ব্যাংকের ঋণ খেলাপি। সুতরাং, এটা পরিষ্কারে খেলাপি ঋণ কমানোর ব্যাপারে সরকার বা তথাকথিত ব্যাংক মালিক পক্ষ কেউ খুব একটা আন্তরিক নয়। কারণ খেলাপির মাধ্যমে যে অর্থ লুটপাট হয় এটা তাদের অর্থ নয় বরং এই অর্থের প্রকৃত মালিক সাধারণ আমানতকারীগণ যারা নিরাপত্তার জন্য ব্যাংকে তাদের কষ্টে অর্জিত অর্থ জমা রাখে। তাই, ব্যাংক মালিকরা খেলাপি ঋণের প্রকৃত সংখ্যাকে কম দেখিয়ে ব্যাংকের পরিচালনা মুনাফা বেশি দেখায় যাতে তারা ব্যাংক থেকে অধিক লভ্যাংশ নিতে পারে। প্রকৃত, ব্যাংকিং ব্যবস্থা পুঁজিবাদি অর্থনৈতিক ব্যবস্থার এক অসাধারণ লুটপাটের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো যেখানে ক্ষুদ্র পুঁজিপতিরা সামান্য মূলধন বিনিয়োগ ও শাসকগোষ্ঠীর আর্শীবাদ নিয়ে ব্যাংক স্থাপনের মাধ্যমে সাধারণ জনগণের অর্থ লুটপাট করার অবারিত সুযোগ পায়। তাই, পুঁজিবাদিদের দাবি অনুযায়ি যে ব্যাংকিং ব্যাবস্থার জন্ম হয়েছিল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয়গুলো একত্রিত করে বড় বিনিয়োগের সুযোগ তৈরি করে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা। ব্যাংকিং ব্যবস্থা এই উদ্দেশ্য পূরণ করতে না পরলেও জনগণের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয়গুলো ক্ষুদ্র পুঁজিপতিগোষ্ঠীর নিকট পুঞ্জিভূত করতে কার্যকর ভূমিকা রাখছে।

পুঁজিবাদী ব্যাংক মূলত তিন ধরণের সেবা প্রদান করে থাকে। প্রথমত সুদ ভিত্তিক ঋণ, দ্বিতীয়ত অর্থ স্থানান্তর সেবা যেমনঃ চেক, ডেবিড কার্ড, এটিএম সেবা, তৃতীয়ত আমানত গ্রহণ। সুদভিত্তিক ঋণ ইসলামি শারীয়াহ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। সুতরাং, সুদভিত্তিক ঋণ নির্ভর কোন প্রতিষ্ঠান ইসলামী রাষ্ট্রে থাকতে পারবে না। বায়তুল মালের সংশ্লিষ্ট শাখা থেকে যাদের ঋণ প্রয়োজন তারা সুদমুক্ত ঋণ গ্রহণ করতে পারবে। পুঁজিবাদী ব্যাংকের মূল আয়ের উৎস সুদ। তাই সুদ আয় ব্যাতীত শুধুমাত্র অনান্য সেবা প্রদান করে ব্যাংকের পক্ষে টিকে থাকা সম্ভব নয়। জনগণের প্রতিনিধি হিসাবে খলিফা বায়তুল মালের একটি বিশেষ শাখার মাধ্যমে জনগণের জন্য ব্যাংকিং সেবা নিশ্চিত করবে।  ইসলামী অর্থনীতির একটি মুখ্য উদ্দেশ্য সম্পদের বন্টন। তাই রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসাবে বায়তুল মাল জনগণের মধ্যে সম্পদ যথাযথ বন্টনের জন্য যোগ্য নাগরিকদের সুদমুক্ত ঋণ প্রদান করবে। পুঁজিবাদী ব্যবস্থার মত ক্ষুদ্র পুঁজিপতিরা জনগণের অর্থ ঋণ হিসাবে গ্রহণ করে লুটপাটের কোন সুযোগ পাবে না বরং রাষ্ট্রের সম্পদ জনগণের মধ্যে সুষমভাবে বন্টনের ফলে আপামর জনসাধারণের অর্থনৈতিক অবস্থা উন্নত হবে এবং রাষ্ট্রের অর্থনীতি হবে সমৃদ্ধ।

    –    মোঃ সিরাজুল ইসলাম

“আসুন, বাংলাদেশের মানুষকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ করে দিই: উজরা জেয়া”

খবরঃ

বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোকে সহিংসতা পরিহার করে সত্যিকারের শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমর্থনের আহ্বান জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের বেসামরিক নিরাপত্তা, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারবিষয়ক আন্ডার সেক্রেটারি উজরা জেয়া। মার্কিন আন্ডার সেক্রেটারি বলেন, ‘আমি সহিংসতা প্রত্যাখ্যান করে সত্যিকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক, শান্তিপূর্ণ, অবাধ ও ন্যায্য গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমর্থন করতে সব পক্ষের আহ্বান জানাই।’ তিনি বলেন, ‘আসুন, আমরা বাংলাদেশের জনগণকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ করে দিই।’… (https://www.prothomalo.com/bangladesh/n1rx3nqhi5)

মন্তব্যঃ

বাংলাদেশের মানুষকে প্রকৃতই সিদ্ধান্ত নেওয়ার সুযোগ করে দিলে ‘উজরা জেয়া’-র মত উপনিবেশবাদী রাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের এখানে এসে সিদ্ধান্ত দেয়া তো দূরে থাক, মুসলিমদের প্রতি কৃত অপরাধের জন্য এখানে প্রবেশ করাই তার জন্য অসম্ভব ছিল। বাংলাদেশের শাসক ও বিরোধীগোষ্ঠী প্রকাশ্যে ও গোপনে তাদের পদলেহন করায় বিষয়টির বহিঃপ্রকাশ ঘটছে না। ৯০% মুসলিমের দেশ বাংলাদেশের মানুষ ইরাক-আফগানিস্তান-সিরিয়াসহ বিভিন্ন দেশে তাদের মারাত্মক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের কারণে আমেরিকাকে প্রচন্ড ঘৃণার চোখে দেখে। বাংলাদেশের জনগণ হাসিনা সরকারের দুঃশাসন হতে মুক্তির জন্য মরিয়া হয়ে আছে, মার্কিনীরা এই প্রেক্ষাপটকে কাজে লাগিয়ে এদেশের মুসলিমদের সাথে তাদের দুরত্ব কমানোর চেষ্টা করছে, যাতে এদেশকে তারা তাদের ঘৃণ্য ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করতে পারে। এই ধুর্ত মার্কিনীরা তাদের ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটিজি বাস্তবায়নের জন্য মূলত এই অঞ্চলে এত পঁয়তারা চালাচ্ছে। সেই লক্ষ্যে এখানে তাদের রচিত তথাকথিত রাজনৈতিক ব্যবস্থা ‘গণতন্ত্র’ প্রতিষ্ঠায় তারা বদ্ধপরিকর। যার মাধ্যমে তারা জনগণকে বাধ্য করতে চায় তাদের অনুগত দালালদের মধ্যে থেকে কাউকে জনগণ যেন শাসক হিসেবে বেছে নেয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে ৭৮ বছরে তিন কোটি বেসামরিক মানুষকে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে হত্যার জন্য দায়ী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যখন মানবাধিকারের কথা বলে তখন তাদের কথায় মোটেই আশ্বস্ত অনুভব করার কিছু নেই। এমনকি বাংলাদেশের বর্তমান শাসক দল অত্যাচারী আওয়ামী লীগ সরকারের ২০০৮ সালে ক্ষমতায় আরোহণেও এই মার্কিন শকুনের হাত ছিল, যেটা শেখ হাসিনা নিজেই স্বীকার করেছে (‘এই সরকার একটি সমঝোতার সরকার’)। গত ১৪ বছর ধরে এই মার্কিনীরাই হাসিনা সরকারের সমস্ত স্বৈরশাসনকে বৈধতা দিয়ে আসছে। এ সরকার ও মার্কিনিরা সম্মিলিতভাবে এখানে তথাকথিত সন্ত্রাস দমনের নামে ও ইসলামোফোবিয়া তৈরীর মাধ্যমে ইসলাম দমনে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করছে, এই লক্ষ্যে তারা RABসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে ট্রেনিং ও সহায়তা প্রদান করেছে যা শেখ হাসিনা RAB-এর কতিপয় কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে স্যাংশনের পর বলেছে। তাই এদের গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের মিষ্টি কথার আড়ালে প্রকৃতপক্ষেই রয়েছে ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে ভয়ংকর ঘৃণা-ষড়যন্ত্র-অত্যাচারের চেহারা।

এই ঘৃণ্য শকুনদের কথায় প্রকৃত বাস্তবতা উপলব্ধি করা জরুরী। তাদের কথার মায়াজালে পড়ে তাদের চাপিয়ে দেয়া নির্বাচনের ফাঁদে পা দেয়াও মুসলিম জনগণের জন্য সমীচীন নয়। বরং তাদেরকে ও এদেশে তাদের অনুগত গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার রাজনৈতিক দলগুলোতে অংশগ্রহণ কিংবা সমর্থন প্রত্যাহার জরুরী। এরা যতই আমাদের নিকট বন্ধু বেশে আগমন করুক, কোনক্রমেই তাদেরকে গ্রহণ করা যাবেনা। কারণ সর্বজ্ঞানী আল্লাহ আল-আলিম (সুবহানাহু ওয়া তা’আলা) এই সম্পর্কে আমাদেরকে হুশিয়ার করেন। তিনি বলেন, “হে মু’মিনগণ! তোমরা ইয়াহুদী ও খৃষ্টানদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করনা, তারা পরস্পর বন্ধু; আর তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে নিশ্চয়ই সে তাদেরই মধ্যে গণ্য হবে; নিশ্চয়ই আল্লাহ অত্যাচারী সম্প্রদায়কে সুপথ প্রদর্শন করেননা” (আল-মায়েদাঃ ৫১)। এদের সাথে প্রকৃত আচরণ হবে ইসলামী খিলাফত শাসন ব্যবস্থার অধীনে তাদেরকে পদানত করে ইসলামের শাসন কর্তৃত্বের অধীনে শাসিত হতে বাধ্য করা। ইসলামী খিলাফত হচ্ছে একমাত্র রাষ্ট্র যেটা মার্কিনীদেরকে কর দিতে বাধ্য করেছিল। ১৭৯৪ সালে জর্জ ওয়াশিংটনের ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে তারা যখন খিলাফতের নৌবাহিনীর সাথে যুদ্ধে পরাজিত হয় তখন তারা ‘বারবারি চুক্তি’ (Barbery Treaty) করতে বাধ্য হয়। এই চুক্তি অনুযায়ী তারা আটলান্টিক ও ভূমধ্যসাগরে তাদের জাহাজ চলাচলের জন্য এককালীন ৬,৪২,০০০ মার্কিন ডলার মূল্যমানের স্বর্ন এবং বার্ষিক ১২,০০০ মার্কিন ডলার সমমূল্য মানের স্বর্ন দিতে বাধ্য হয়। এই বর্ষ হিসাব করা হত খ্রিস্টীয় ক্যলেন্ডারের পরিবর্তে হিজরী ক্যলেন্ডারে।

    –    মোঃ জহিরুল ইসলাম

“মালি শান্তিরক্ষা মিশন থেকে ফিরছে ১৭০০ বাংলাদেশি”

খবরঃ

মালিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দায়িত্বে থাকা ১ হাজার ৭০০ বাংলাদেশি শান্তিরক্ষী চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে দেশে ফেরত আসবে। গত ৬ জুলাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত মুখপাত্র মোহাম্মদ রফিকুল আলম এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, গত ৩০ জুন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে সর্বসম্মতভাবে রেজুলেশন ২৬৯০ পাস হয়। এ রেজুলেশনের মাধ্যমে কার্যত মালিতে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনের ম্যান্ডেট বাতিল এবং মালি মিশন থেকে সব শান্তিরক্ষী প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

(https://www.banglainsider.com/inside-bangladesh/144998/ )

মন্তব্যঃ

যেকোন দেশের সামরিক বা নিরাপত্তা বাহিনীর কাজ করার ম্যান্ডেট কিংবা দায়িত্ব প্রাপ্তির ব্যপ্তি হচ্ছে সেই দেশকে বহিঃশত্রু ও আভ্যন্তরীণ উভয় দিক থেকে নিরাপদ রাখা। আর এই ম্যান্ডেট মূলত আসে সেই দেশের জনগণ হতে এবং জনগণের পক্ষে এই ম্যন্ডেট যায় শাসকের কাছে। অর্থাৎ দেশের শাসকের কমান্ডে সেই দেশের সামরিক বা নিরাপত্তা বাহিনী গঠিত হয় সেই দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য। অথচ দেখা যাচ্ছে আমাদের এই নিরাপত্তা বাহিনী জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের ম্যান্ডেটে চলে গেল? এদিকে অনেকে বলছে এভাবে মিশন বন্ধ হতে থাকলে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হব! কেউ কেউ এমনও বলছে এই শান্তি মিশনই নাকি আমাদের বাহিনীর যোগ্যতা ও মর্যাদার প্রমাণ বহন করে! অন্যদিকে কিছু সংগঠন ও গোষ্ঠী আছে যারা বাংলাদেশের সেনাবাহিনী ও র‍্যাবকে মানবাধিকার ইস্যুতে জাতিসংঘের শান্তি মিশন থেকে বাদ দেয়ার আহ্বান করছে! এসব প্রেক্ষাপটে সামনে আসা প্রথম মূল প্রশ্ন হচ্ছে আমরা দেশের জনগণ কি দেশের জন্য বিদেশী মুদ্রা আয় করার জন্য একটি ভাড়াটে বাহিনী হিসেবে কাজ করার জন্য আমাদের সামরিক বাহিনী তৈরি করেছি? নিশ্চয়ই তা নয়, কোন স্বাভাবিক দেশই তা করে না। বরং স্বাভাবিকভাবেই যেকোন দেশের জনগণ যেকোন মূল্যে সেই দেশের বাহিনীর সকল চাহিদা পূরণ করে। আমাদেরও যথেষ্ট আয় ও সামর্থ আছে একটি শক্তিশালী বাহিনী তৈরি করার এবং সেই বাহিনীর সদস্যদেরকে অর্থনৈতিকভাবে নিশ্চিন্ত রাখার। দ্বিতীয় প্রশ্ন, দেশের জনগণ কি জাতিসংঘ যে আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য এই শান্তি মিশন তৈরি করেছে তার সাথে ঐক্যমত্য হয়েছে? নিশ্চয়ই তা নয় বরং দেশের জনগণের আদর্শ ইসলামের সাথে জাতিসংঘের আদর্শ বিপরীত ও সাংঘর্ষিক। কারণ জাতিসংঘ গঠিত হয়েছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী বিশ্বে আমেরিকার নেতৃত্বের নব্য-উপনিবেশবাদী বিশ্বে পশ্চিমাদের স্বার্থ রক্ষার উদ্দেশ্যে। জাতিসংঘের নাম দিয়েছিলেন তৎকালীন আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি রুসভেল্ট। আর এটির চার্টার বা আদর্শ গৃহিত হয়েছিল মূলত ১৯৪১ সালের ১৪ আগস্ট অনুষ্ঠিত আমেরিকা ও বৃটেনের রুসভেল্ট ও উইনস্টন চার্চিলের মধ্যকার আলোচনায় তাদের পারস্পরিক স্বার্থ ও আদর্শিক ঐক্যমত্যের ভিত্তিতে। (সূত্রঃ https://www.un.org/en/about-us/history-of-the-un/preparatory-years ) আর আদর্শ কি তা আরও স্পষ্ট হয়ে উঠে যখন আমরা দেখি যে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর প্রথম মিশন ছিল ফিলিস্তিনে যার উদ্দেশ্য ছিল ইসরাইল রাষ্ট্রকে নিরাপত্তা সহযোগিতা দেয়া, আর দ্বিতীয় মিশন পাঠানো হয়েছিল কাশ্মীরে ভারতীয় বাহিনীকে সহযোগিতা করার জন্য। ( সূত্রঃ https://peacekeeping.un.org/en/our-history ) অর্থাৎ ইতিহাস ও আজকের বাস্তবতায় এটি স্পষ্ট যে জাতিসংঘ ও এর শান্তিরক্ষী বাহিনী মূলত বিশ্বজুড়ে উপনিবেশবাদী দেশগুলোর প্রভাব প্রতিপত্তি টিকিয়ে রাখার জন্য এবং তাদেরকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে এমন আদর্শ যেমন ইসলাম যাতে শক্তিশালী হতে না পারে তা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে। জাতিসংঘ এবং এর নিয়ন্ত্রণকারী পশ্চিমাদেশগুলো মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলগুলোকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অকার্যকর দেশে বিভক্ত করে রাখার জন্য এই শান্তি মিশনগুলোকে ব্যবহার করছে।

অথচ দেশের বর্তমান শাসকরা আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোকে দেশের মানুষের জান, মাল ও ইসলাম সুরক্ষার ম্যান্ডেট দ্বারা পরিচালনা না করে বরং এর উল্টো আমাদেরকে দুর্বল ও নির্ভরশীল করে রাখতে চাওয়া জাতিসংঘ এবং তার সুবিধাভোগী ইসলামবিরোধী পশ্চিমা কাফেরগোষ্ঠী তথা জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ম্যান্ডেটে সোপর্দ করেছে! এটি দেশের জনগণ এবং সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সাথে স্পষ্ট বিশ্বাসঘাতকতা। তাই বিশ্বাসঘাতক এই সরকার এবং কাফেরদের বন্ধুত্বে প্রতিযোগিতায় এই সরকারকে হারাতে চাওয়া বিরোধীগোষ্ঠী কারও প্রতিই বিশ্বস্ত থাকা আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর ম্যান্ডেটের সাথে সাংঘর্ষিক। বরং এই বাহিনীগুলোর ম্যান্ডেট হচ্ছে তাদের নিজেদের ও দেশের জনগণের বিশ্বাস ও আদর্শ ইসলামের ভিত্তিতে খিলাফত রাষ্ট্র গঠন করা এবং খলিফার নেতৃত্বে দেশকে নিরাপদ রাখা ও সারাবিশ্বে ইসলামকে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য কাজ করা। খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করতে থাকা নিষ্ঠাবান রাজনৈতিক দল হিযবুত তাহ্‌রীর কর্তৃক কুরআন-সুন্নাহ্‌’র আলোকে প্রণীত খিলাফত রাষ্ট্রের খসড়া সংবিধানের ধারা ৬৯ অনুযায়ী, “সেনাবাহিনীকে অস্ত্র, যন্ত্রপাতি, সকল জোগান দ্রব্য এবং অন্য যাকিছু প্রয়োজন সবকিছু সরবরাহ করা বাধ্যতামূলক, যা এটিকে একটি ইসলামী সেনাবাহিনী হিসাবে তার মিশন পরিচালনা করতে সক্ষম করে গড়ে তোলে”

    –    মোহাম্মদ তালহা হোসেন