Weekly ISLAMIC VIEWPOINT 110

Weekly 

ISLAMIC VIEWPOINT

….সপ্তাহের সংবাদ পর্যালোচনা 

১১০ তম সংখ্যা । ৬ জানুয়ারী, ২০২৪

এই সংখ্যায় থাকছে :

 

“ঢাকায় আবার চলন্ত ট্রেনে আগুন, প্রাণ গেল চারজনের”

“সংঘর্ষ, সহিংসতা ও প্রাণহানিতে শেষ হলো নির্বাচনী প্রচারণা”

“১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ব্যবসায়ী এবারের নির্বাচনে, মন্ত্রীর বিদেশে হাজার কোটি টাকার সম্পদ”

“অন্তত ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির আশ্বাস সাকিবের”

“নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষিত আতশবাজির ঝলক”

“১৭০০ প্রাণ কেড়েছে ডেঙ্গু, ব্যবস্থা ছিল কেবল লোক-দেখানো”

“যৌনকর্মে নামতে বাধ্য হচ্ছে বৃটিশদের জন্য ক্রিসমাস জাম্পার তৈরি করা পোশাক কর্মী”

 

“ঢাকায় আবার চলন্ত ট্রেনে আগুন, প্রাণ গেল চারজনের”

খবরঃ

রাজধানীর গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুনে দুই নারী, এক শিশুসহ অন্তত চারজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাত ৯টার দিকে চলন্ত ট্রেনটিতে দুর্বৃত্তরা আগুন দেয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে ও ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, যশোরের বেনাপোল থেকে ট্রেনটি ঢাকায় আসছিল। সায়েদাবাদ এলাকা অতিক্রম করার সময় ওই ট্রেনে আগুন দেওয়া হয়। ট্রেনটি কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছানোর কিছুক্ষণ আগে গোপীবাগ এলাকায় থামানো হয়। আগুনে ট্রেনটির তিনটি কোচ পুড়ে গেছে। …এ নিয়ে গত ২৮ অক্টোবরের পর ট্রেনে আগুন ও নাশকতার ঘটনায় মোট নয়জনের মৃত্যু হলো। (https://www.prothomalo.com/bangladesh/pvcb1lb7fd)

মন্তব্যঃ

ক্ষমতার জন্য লাশের রাজনীতি করা আওয়ামী-বিএনপি গোষ্ঠীর পুরাতন কৌশল। প্রতিনিয়ত বাস, ট্রেন সহ বিভিন্ন যানবাহনে আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে এবং এর দায় এক দল অন্য দলের উপর চাপানোর চেষ্টা করছে। এসকল জ্বালাও-পোড়াও আর হত্যাকান্ড প্রকৃতপক্ষে কারা ঘটাচ্ছে তার ব্যাপারে জনগণ না জানলেও এই দুই দলের কোন এক দলই যে এই দুর্বৃত্তপনার সাথে জড়িত তা নিয়ে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। এসব ঘটনার জন্য হাসিনা সরকার বিএনপি গোষ্ঠীকে দায়বদ্ধ করে তাদেরকে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হিসেবে দেশে-বিদেশে প্রচার করেছে এবং বিএনপি গোষ্ঠী এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে পশ্চিমাদের নিকট ‘আন্তর্জাতিক তদন্ত’ দাবী করেছে। একপক্ষ মনে করে, যদি মানুষের লাশ পড়ে তাহলে সরকারের মসনদ কেঁপে উঠবে, সরকারের পতন হবে। আর আরেক পক্ষ মনে করে, মানুষ যদি আগুনে পুরে মারা যায় তাহলে বিরোধী পক্ষকে সন্ত্রাসী হিসেবে ট্যাগ লাগিয়ে ঘায়েল করা যাবে এবং দেশে-বিদেশে প্রচার করা যাবে তারা উন্নয়ন ও মানবতার শত্রু। প্রকৃতপক্ষে আওয়ামী-বিএনপি গোষ্ঠী মুখে জনগণের উন্নয়ন অথবা মুক্তির চমৎকার কথা বললেও তারা জনগণের জান-মালের কোন তোয়াক্কা করে না, এবং ক্ষমতা ছাড়া তাদের কাছে পবিত্র আর কিছু নাই। তাদের নিকট জনগণের আর কোন আশাই অবশিষ্ট নাই, বরং জনগণ ধরেই নিয়েছে এসব ঘটনার কোন বিচার হবে না, এসকল দুর্বৃত্তায়ন বন্ধ হবে না।

এসকল হত্যাকান্ড ও সম্পদ ধ্বংসের ব্যাপারে ইসলাম কী বলে? প্রথমে হত্যাকান্ডের ব্যাপারে আসা যাক। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা পবিত্র কুর‘আন-এ বলেন, “আর কেউ যদি কোন মুসলিমকে সজ্ঞানে হত্যা করে, তার প্রতিদান হল জাহান্নাম, যেখানে সে চিরস্থায়ী হবে। আল্লাহ্‌’র ক্রোধ ও অভিশাপ তার উপর পতিত হবে, আর তার জন্য জাহান্নামে রয়েছে চরম শাস্তি” (সূরা নিসা: ৯৩)। শুধু জাহান্নামের শাস্তিই নয়, খিলাফত রাষ্ট্রের বিচার-ব্যবস্থা এসকল হত্যাকান্ডের বিচার করবে। হত্যাকারীর শাস্তি হল মৃত্যুদন্ড। এমনকি একজন ব্যক্তির হত্যার সাথে যদি একাধিক ব্যক্তি বা কোন দল জড়িত থাকে তাহলে তাদের সবাইকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হবে। উমর (রা.) একটি হত্যাকান্ডের প্রেক্ষিতে আলী (রা.)-কে হত্যাকান্ডে অংশগ্রহণকারী একাধিক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে আলী (রা.) পাল্টা প্রশ্ন করলেন, “যদি কিছু লোক দলবদ্ধভাবে চুরি করে তাহলে কী আপনি সবার হাত কাটার নির্দেশ দিবেন না?” উমার (রা.) বললেন, “হ্যাঁ, আমি সবার হাত কাটার আদেশ দিব”। তখন আলী (রা.) বললেন, “হত্যাকান্ড (এবং এর শাস্তিও) অনূরূপ”। হত্যার আদেশদানকারী, পরিকল্পনাকারী ও হত্যাকান্ডে অংশগ্রহনকারী সবার উপর মৃত্যুদন্ডের শাস্তি কার্যকর করা হবে। এদের বাইরে অন্য কেউ যদি হত্যায় প্রত্যক্ষ কিংবা পরোক্ষভাবে ‘সাহায্য’ করে থাকে তাহলে তাদের শাস্তি হল আমৃত্যু কারাদন্ড। এর পাশাপাশি এসকল সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে যদি কারো কোন অঙ্গহানী ঘটে কিংবা আঘাতপ্রাপ্ত হয় তাহলে অপরাধীকে অনুরূপ অঙ্গহানী ও আঘাত প্রাপ্তির শাস্তি প্রদান করা হবে। আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, “আর আমি তাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছিলাম: প্রাণের বদলে প্রাণ, চোখের বদলে চোখ, নাকের বদলে নাক, কানের বদলে কান, দাঁতের বদলে দাঁত এবং জখমের বদলে অনুরূপ জখম। কিন্তু যদি কেউ ক্ষমা করে দেয় তাহলে তা (তার নিজের কৃত গুনাহের) কাফফারা হয়ে যাবে” (সূরা মায়েদাহ্‌: ৪৫)।

ইসলামে এসকল সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে বিধান এতটাই গুরুত্বপূর্ণ যে যদি কোন কারণে অপরাধী সনাক্ত করা না যায় তাহলে এসকল অঙ্গহানী ও আঘাতের জন্য ক্ষতিগ্রস্থকে এবং নিহতের ক্ষেত্রে তার পরিবারকে রাষ্ট্রের বাইতুল মাল থেকে রক্তপণ (দিয়্যাহ) প্রদান করা হবে; নিহতের দিয়্যাহ হল ১০০০ দিনার বা ৪.২৫ কেজি স্বর্ণমুদ্রা। আর সম্পদ ধ্বংসের শাস্তি হল অপরাধী সংঘটিত ক্ষতির দ্বিগুণ জরিমানা প্রদান করবে এবং এর পাশাপাশি সর্বোচ্চ তিন বছর পর্যন্ত কারাদন্ড ভোগ করবে। ইসলামী বিচারব্যবস্থায় অতিদ্রুত বিচার সম্পন্ন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে; ফলে, আসন্ন খিলাফত রাষ্ট্র যখন ইসলামের এই বিধানগুলো বাস্তবায়ন করবে তখন জনগণের জীবন ও সম্পদের উপর আক্রমন করার সাহস কোন দুর্বৃত্তেরই হবে না, সে কোন একক ব্যক্তি হোক কিংবা কোন সংঘবদ্ধ চক্র।

    –    রিসাত আহমেদ

“সংঘর্ষ, সহিংসতা ও প্রাণহানিতে শেষ হলো নির্বাচনী প্রচারণা”

খবরঃ

সারাদেশে সংঘর্ষ, সহিংসতা ও প্রাণহানির মাধ্যমে (৫ জানুয়ারি) সকাল ৮ টায় আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হয়েছে বাংলাদেশের ৭ জানুয়ারির সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীদের প্রচার কাজ। .. বিএনপিসহ ১৬ টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলবিহীন এই নির্বাচনে গত ৩ জানুয়ারি একদিনে সংর্ঘষের ঘটনায় ২ জনের মৃত্যু সংবাদ পাওয়া যায়। এছাড়া গত ৯ ডিসেম্বর থেকে সারাদেশে নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের হামলায় ৫ জনের প্রাণহাহির ঘটনা ঘটেছে।.. বিএনপিবিহীন “আসন ভাগাভাগির” এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ তার মিত্রদের ৩২ টি আসন ছেড়ে দিয়েছে।.. এছাড়া নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক করতে দলের নেতাদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হতেও আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে উৎসাহ দেওয়া হয়েছিলো। যার ফলে, এবারের সংসদ নির্বাচনে ৩৮২ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছিলো। সারাদেশে অধিকাংশ সংঘর্ষ হয়েছে আওয়ামী লীগের নৌকা প্রার্থী বনাম মনোনয়ন বঞ্চিত দলের স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে। (https://www.voabangla.com/a/7428704.html)

মন্তব্যঃ

বিএনপিগোষ্ঠীর বর্জনের কারণে ক্ষমতাসীন আওয়ামীগোষ্ঠীর পূর্ণাংগ নিয়ন্ত্রণে এই নির্বাচন। নির্বাচন কমিশনসহ অনেকেই ভেবেছিল এধরনের সাজানো নির্বাচনেতো আর স্বাভাবিক প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের মত সংঘাত হবে না। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল দেশজুড়ে আমি-ডামির মধ্যেও ব্যাপক সংঘাত শুরু হয়ে গেছে। পুলিশ হেডকোয়াটার্সের রিপোর্ট অনুযায়ী তফসিল ঘোষণার পর মাত্র ১৫ দিনে ৩৮০টি সংঘাতের ঘটনায় ৪০০ আহত এবং ৬ জন খুন হয়েছে। আমি-ডামির সবাই মূলত একই ঘরানার হলেও কেউই নির্বাচিত হয়ে আংগুল ফুলে কলাগাছ হওয়া এবং একচ্ছত্র ক্ষমতা পেয়ে যাওয়ার এই চমৎকার সুযোগ হাতছাড়া করতে চাচ্ছে না। যে যেভাবে পারছে, কেউ প্রশাসনের শক্তি নিজের পক্ষে ব্যবহার করার চেষ্টা করছে, কেউ আবার দলের সাংগঠনিক কাঠামো নিজের জন্য কিনে ফেলছে, কেউ আবার বিভিন্ন গুন্ডা বাহিনী ব্যবহার করছে। এভাবেই পুরো দেশে একটি সংঘাতময় পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। তাই স্যাংশনের ভয়, দল থেকে বহিষ্কারের ভয়, চাকুরিতে শাস্তির ভয় কোন কিছুই কাজ করছে না। কারণ এরা সবাই জানে বর্তমান শাসন ব্যবস্থায় অর্থ আর ক্ষমতা পেয়ে গেলে এসব ভীতি প্রদর্শনকারী, হুমকীদানকারী, দেশী কিংবা বিদেশী যেই হোক না কেন সবই ম্যানেজেবল।

ধর্মনিরপেক্ষ-গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মূল ভিত্তি হচ্ছে ধর্মকে রাজনীতি/সমাজ/রাষ্ট্র থেকে বিচ্ছিন্ন রাখা, অর্থাৎ রাজনীতি স্রষ্টার বিধানমতে পরিচালিত হবে না এবং রাজনীতি পরকালের জবাবদিহিতা বিচ্ছিন্ন। ফলে অগাধ সম্পদ অর্জন এবং অপরিসীম ক্ষমতার চর্চা করা হয়ে উঠে রাজনীতির অন্যতম উদ্দেশ্য, যা গণতান্ত্রিক নির্বাচনকে একটি যুদ্ধে পরিণত করে যেখানে জয়ই শেষ কথা, কিভাবে তা অর্জিত হলো তা বড় কথা নয়। আবার এখানে বিজয়ীর জন্য এক পেনডোরার বাক্স উন্মোচিত হয়ে যায়। হলফনামায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে যেমন দেখা গেল গত ১৫ বছরে কোন কোন এমপির সম্পদ ১৮০০ গুণের মতও বেড়েছে। তাই নৌকা-ধানের শীষ কিংবা নৌকা-ঈগল, ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় নির্বাচন মানেই হল নীতি আদর্শহীন এক হার্ডকোর ব্যবসার প্রতিযোগিতা। এতই লাভজনক যে, দেশের বড় বড় ব্যবসায়ী যেমন বেক্সিমকো গ্রুপ, হামীম গ্রুপ, যমুনা গ্রুপের মালিকেরা সরাসরি তাদের সময় ও অর্থ এই নির্বাচনে ব্যয় করছে।

রাজনীতিকে স্রষ্টা ও পরকাল বিবর্জিত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের নীতি হতে মুক্ত না করা গেলে এবং এটিকে আল্লাহ্‌’র আনুগত্য ও পরকারের জবাবদিহিতার ভিত্তির উপর দাড় না করানো গেলে শুধু নির্বাচন নয়, রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত কিংবা সংকটের সমাধান করা যাবে না। যেকোন মূল্যে জিততে চাওয়ার সংস্কৃতির পরিবর্তে এটিকে যেকোন মূল্যে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা’র সন্তুষ্টি অর্জনের সংস্কৃতিতে পরিণত করতে হবে। ইসলামী শাসন খিলাফতের ইতিহাসজুড়ে এমন অসংখ্য ঘটনা আছে যেখানে আল্লাহ্‌ভীতির বাস্তবিক উপস্থিতি ফুটে উঠে। খলিফা নির্বাচন প্রক্রিয়ায়ও এর ব্যাপক প্রভাব ছিল। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ)-এর মৃত্যুর পর খলিফা হিসেবে আবু বকর (রা.)-কে নির্বাচন করতে গিয়ে প্রথম পর্যায়ে উমর ও আবু উবাদাহ (রা.)-এর প্রার্থীতা প্রত্যাহার করাতে এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে দ্রুতই আনসারদের কর্তৃক আবু বকর (রা.)-কে নির্বাচিত করার বাইয়াত দেয়াতেও আল্লাহ্‌ভীতির প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। আল্লাহ্‌ভীতির এই বাস্তবিক উপস্থিতির কারণেই খলিফার পদ শুন্য হওয়ার পর জনগণের যথাযথ অংশগ্রহণের মাধ্যমে খলিফা নির্বাচন প্রক্রিয়া এমনকি মাত্র তিন দিনের মধ্যেই সম্পন্ন করা সম্ভব হয়।

    –    মোহাম্মদ তালহা হোসেন

“১৫ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ ব্যবসায়ী এবারের নির্বাচনে, মন্ত্রীর বিদেশে হাজার কোটি টাকার সম্পদ”

খবরঃ

বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচনে ভোটারদের আগ্রহ কমলেও ধনী-কোটিপতি আর ব্যবসায়ীদের প্রার্থীদের আগ্রহ বেড়েছে অনেক। গত ১৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবসায়ী অংশ নিচ্ছে সাতই জানুয়ারির নির্বাচনে। দ্বাদশ নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীদের দেয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে আর্ন্তজাতিক দুর্নীতি বিরোধী সংস্থা টিআইবি মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে বলছে, নির্বাচনে অংশ নেয়া প্রার্থীদের ২৭ ভাগই কোটিপতি। নাম গোপন রেখে এক মন্ত্রীর সম্পদের হিসাব তুলে ধরে টিআইবি বলছে, দেশের বাইরে ঐ মন্ত্রীর দুই হাজার ৩১২ কোটি টাকার সম্পদ থাকলেও তা প্রকাশ করা হয়নি হলফনামায়। (https://www.bbc.com/bengali/articles/c25yp48nn17o)

মন্তব্যঃ

জাতীয় নির্বাচনে কোটিপতি ব্যবসায়ী প্রার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি অথবা সংসদ সদস্যদের ৬৪%-ই পুঁজিপতি হওয়া বর্তমান পুঁজিবাদী-গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় মোটেও আশ্চর্যজনক কোনো ঘটনা নয়। প্রকৃতপক্ষে এই ব্যবস্থায় রাজনীতি একটি অতিলাভজনক বিনিয়োগ, যেখানে মাত্র কয়েক বছরে সম্পদকে পাহাড়সহ করে ফেলা যায়, যার নমূনা এবারের নির্বাচনের প্রার্থীদের হলফনামায় আমরা দেখতে পেয়েছি। এখানে সাংসদরা আইনপ্রণেতা হিসেবে ৫ বছরের জন্য সংসদ থেকে যেকোন প্রকার আইনপ্রণয়ন ও অনুমোদনের সুযোগ পায়, তাই স্বার্থান্বেষী কতিপয় পুঁজিপতি ও দুর্নীতিগ্রস্তরা এই রাজনীতিতে আকৃষ্ট হবে এটাই স্বাভাবিক। তাই আমরা দেখতে পাই, এসব পুঁজিপতিরা হয় নিজে সাংসদ হতে কিংবা পছন্দমতো প্রার্থী/দলকে ক্ষমতায় বসাতে ব্যাপক বিনিয়োগ করে, যাতে তাদের সুবিধামতো আইন পাস করানো যায়। যার ফলাফল হিসেবে বেক্সিমকো, বসুন্ধরা, প্রাণ, ভারতীয় আদানী গ্রুপের মত দেশী-বিদেশী পুঁজিপতির হাতেই এখন বাংলাদেশের ক্ষমতার মসনদ। বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ঋণ খেলাপির পরও আইন করে পুনরায় ব্যাংক থেকে ঋণ প্রদান, কুইক রেন্টালের নামে বিদ্যুৎ খাতকে পুঁজিপতিদের হাতে তুলে দেয়া, শুধুমাত্র আদানী গ্রুপের সাথে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ চুক্তিতে ২৫ বছরে ৭০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত গুণতে হবে, যা দিয়ে ৩ টি পদ্মা সেতু নির্মাণ সম্ভব, (https://www.prothomalo.com/opinion/column/v6l4maw8gm)। এই চিত্র শুধু আওয়ামীলীগের সময়কারই নয় বরং বিএনপি সরকারের সময়ও একই চিত্র দেখা যায়। স্বয়ং গণতন্ত্রের ধারক বাহক ব্রিটেন, আমেরিকাও এই চিত্রের বাইরে নয়। ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যবর্তী নির্বাচনের ফলাফলে নিজেদের সমর্থিত প্রার্থী আনতে ৮৮০ মিলিয়ন ডলার খরচ করেছেন দেশটির ধনকুবেররা। জো বাইডেনের ব্যক্তিগত শীর্ষ দাতাদের মধ্যে আছেন সুপার পিএসিএস গ্রুপ, ক্যাসিনো ম্যাগনেট শেল্ডন অ্যাডেলসন এবং প্যান এম সিস্টেমসের চেয়ারম্যান টিম মেলন। তাদের এই মিলিয়ন ডলার খরচ করার পিছনের উদ্দেশ্য হাসিল শুরু হয় জো বাইডেন ক্ষমতায় বসার পরই। পার্লামেন্টে বসে প্রতিটি আইন পাশের পিছনেই ছিলো এই কোম্পানীগুলোর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রভাব। এই হলো তথাকথিত গণতন্ত্রের প্রকৃত চেহারা।

১৭৬০ শতকের দিকে কিছু আমেরিকান এলিট গ্রুপ ব্রিটিশ কলোনিয়ালিস্টদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময় সাধারণ জনগণকে সন্তুষ্ট রেখে নিজেদের পুঁজিবাদী আধিপত্য বজায় রাখার জন্য গণতন্ত্রকে জনগণের শাসন বলে উপস্থাপন করে। কারণ গণতন্ত্রের তাত্ত্বিক রূপ দেখিয়ে, ভোটাধিকার এবং নিজের পছন্দমত শাসক নির্বাচনের কথা বলে সহজেই মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণীকে নীরব এবং আজ্ঞাবহ রাখা যাবে, আর অন্যদিকে গণতন্ত্র প্রদত্ত সার্বভৌমত্ব ক্ষমতা মানুষের, এই সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে শাসকগোষ্ঠী বা গুটিকয়েক পুঁজিপতিরা সম্পদ কুক্ষিগত করতে পছন্দমতো আইন প্রণয়ন করতে পারবে। আধুনিক আমেরিকার Founding Fathers-দের মধ্যে জর্জ ওয়াশিংটন, জন হেনকুক, বেঞ্জামিন ফ্রাংকলিন প্রত্যেকেই ছিলেন তখনকার সময়ের ধনকুবের যারা তাদের স্বার্থরক্ষায় Aristocracy কেই Democracy নামের মোড়কে পুরো বিশ্বকে উপস্থাপন করেছে। অর্থাৎ গণতন্ত্রের সৃষ্টিই যেহেতু এলিট শ্রেণীর স্বার্থরক্ষায় তাই পুঁজিবাদী-গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার চূড়ান্ত গন্তব্যই হলো সার্বভৌমত্ব এবং কর্তৃত্ব উভয়ই থাকবে পুঁজিপতি শ্রেণীর হাতে।

সুতরাং আমাদের সমস্যাগুলোর প্রকৃত সমাধান পেতে হলে এমন জীবনব্যবস্থাকে আনতে হবে যেখানে সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী স্বার্থান্বেষী মানুষ নয় বরং পুরো মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা। আর সেই জীবনব্যবস্থা হচ্ছে ইসলাম, যেখানে সার্বভৌম ক্ষমতা  শুধুমাত্র আল্লাহ্‌’র এবং কর্তৃত্ব হলো জনগণের। ইসলামী রাষ্ট্র তথা খিলাফতে জনগণ তাদের এই কর্তৃত্ব খলিফার (রাষ্ট্র প্রধান) নিকট এই শর্তে প্রদান করে যে, তিনি জনগণকে আল্লাহ্‌ প্রদত্ত বিধান দ্বারা শাসন করবেন এবং জনগণ তাকে মান্য করবে। সুতরাং এখানে খলিফার নিজের বা কোন গোষ্ঠীর সুবিধার্থে ক্ষুদ্র একটি আইন প্রণয়নেরও ক্ষমতা নাই। এবং এর ব্যত্যয় ঘটলে তিনি ক্ষমতাচ্যুত হবেন এবং শাসকদের বিচারের জন্য নির্ধারিত ‘মাহ্‌কামাতুল মাযালিম’ আদালতে তাকে বিচারের সম্মুখীন হতে হবে। এজন্যই ১৪০০ বছরের খিলাফতের ইতিহাসে আমরা উমর (রা.)-এর মতো শাসক দেখতে পাই যিনি তার সরকারী কাজে ব্যবহৃত বাতি পর্যন্তও তার ব্যক্তিগত কাজে ব্যবহার করতেন না। যিনি মাসের শেষে খারাজ সংগ্রহ করার সময় বিভিন্ন জায়গার ওয়ালীদের পেটে খোঁচা মেড়ে দেখতেন যে জনগণের সম্পদ লুট করে খেয়ে তাদের পেটে ভুড়ি হয়েছে কিনা।

    –    নুহা ইসলাম

“অন্তত ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির আশ্বাস সাকিবের”

খবরঃ

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে মাগুরা–১ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী সাকিব আল হাসান আশ্বাস দিয়ে বলেন, নির্বাচিত হলে তিনি জেলার বেকার সমস্যা সমাধানে অন্ততপক্ষে ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ওয়ার্ল্ড ক্লাস ক্রিকেট একাডেমি গড়ে তোলা, ফ্রি ওয়াই–ফাই জোন তৈরি ও কৃষি খাতের আধুনিকায়ন করার উদ্যোগ গ্রহণ করবেন। সাকিব বলেন, ‘মাগুরা কৃষিপ্রধান একটি ছোট জেলা। এখানে শিল্পের বিপ্লব ঘটেনি। প্রসার খুব কম। কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্যোগ নিতে পারি। যদিও সেটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ; কিন্তু নির্বাচিত হলে সেই চ্যালেঞ্জ নিতে পারব।’ (www.prothomalo.com/bangladesh/district/mvax7tatjm)

মন্তব্যঃ

দেশের সমাজ ও রাজনীতিতে যে পঁচা-দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়েছে তার উৎস হল স্যেকুলারিজম বা ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ নামক ‘ডাস্টবিন’। ক্রিকেট খেলে পরিচিতি পাওয়া সাকিব এই স্যেকুলার ডাস্টবিনের রাজনীতিতে নাম লিখিয়ে আশ্বাস দিয়েছে সে সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হলে মাগুরা-১ আসনে অন্তত ১০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করবে! কী হাস্যকর আশ্বাস! কী জ্বলজ্যান্ত প্রতারণা! শুধু সাকিব নয়, কিংবা শুধু আওয়ামী লীগ নয়, দেশের সকল এমপি পদপ্রার্থী সবসময়েই এই প্রতারণা করে আসছে। এলাকার উন্নয়ন, রাস্তা করে দেয়া, চাকুরী দেয়া, শিক্ষার উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন, অপরাধ-চাঁদাবাজি-মাদক নির্মূল, দারিদ্র বিমোচনের প্রতিশ্রুতি এমপি প্রার্থীরা হরহামেশা দিয়ে থাকে; কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, এগুলোর কোনটিই এমপির কাজ নয়, এগুলোর প্রতিটির জন্য বিশেষায়িত সরকারী বিভাগ রয়েছে। দেশের বিদ্যমান আইন আনুযায়ী একজন এমপি টিআর, কাবিখা ও এককালীন থোক-বরাদ্ধের ২-৪ কোটি টাকা সরকারীভাবে বরাদ্ধ পায়। নির্বাচনের আগে যেসকল প্রদিশ্রুতি তারা দেয় তা এই টাকা দিয়ে পূরণ করা অসম্ভব, এবং এই টাকার কাজও সেটি নয়। এই প্রতারক রাজনীতিবিদেরা নিজেরাও সেটা জানে, তারপরও জন-আবেগকে প্রভাবিত করার জন্য তারা এই চাক্ষুষ ধোঁকা ও প্রতারণার আশ্রয় নেয়। মূলত: একজন এমপির কাজ হল সংসদের আইন-প্রণয়ন কাজে অংশগ্রহণ করে জনগণের জন্য ‘হালাল-হারাম’ নির্ধারণ করে দেয়া। এজন্যই পুরো বিশ্বব্যাপী সংসদ-সদস্যরা Lawmaker বা আইনপ্রণেতা এবং ‘লর্ড’ নামে পরিচিত। এই লর্ডশিপের জন্যই দেশের সকল ‘আউট-ল’-দের ধারাবাহিকতায় সাকিবও রাজনীতিতে এসেছে।

রাস্তা করে দেয়া, কর্মসংস্থান তৈরী ও চাকুরী দেয়া, শিক্ষার উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবার উন্নয়ন, দারিদ্র বিমোচন এগুলো রাষ্ট্রের পলিসি বা নীতির উপর নির্ভর করে, কোন এমপির ব্যক্তিগত ইচ্ছা-অনিচ্ছার উপর নির্ভর করে না। আর বর্তমান ধর্মনিরপেক্ষ-গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় রাষ্ট্রীয় পলিসি হলো সকল নাগরিক সেবা, সকল গণমালিকানাধীন সম্পদ ও অধিকাংশ লাভজনক ব্যবসায়িক খাতগুলোকে কিছু মুষ্ঠিমেয় ব্যক্তির হাতে কুক্ষিগত করে ফেলা। এর ফলে জনগণ হয় বঞ্চিত হয় অথবা এগুলোর জন্য চড়া দাম দিতে হয়। অপরাধ-চাঁদাবাজি-মাদক নির্মূল করার জন্য দেশে নিরাপত্তা বাহিনী রয়েছে, বরং এমপিরাই এগুলোর গডফাদার যাদের ছত্রছাঁয়ায় এসকল অপরাধ সংঘটিত হয়। রাজনীতিতে নাম লিখিয়েই সাকিব, ফেরদৌসরা যে প্রতারণাপূর্ণ আশ্বাস দিয়ে চলেছে তা তারা তাদের জননী ও নেত্রী হাসিনা ওয়াজেদের কাছ থেকেই শিখেছে। দশ টাকা চাল ও ঘরে ঘরে চাকুরির প্রতিশ্রুতি দেয়া শেখ হাসিনা এখন ভুলেও সে কথা মুখে আনে না; বরং কেউ স্মরণ করিয়ে দিলে তার দিকে সে বন্দুকের নল তাক করে!

যালিম বা অত্যাচারী শাসক তার ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার জন্য তিনটি উপাদানকে ব্যবহার করে, যা রাজনীতি ও সমাজ গবেষকদের কাছে ‘ক্ষমতার তিন মুখোশ’ নামেও পরিচিত। প্রথমত: আইন তৈরী করে বৈধতা আদায় কিংবা বিরোধিতা দমন; দ্বিতীয়ত: নীতি-নৈতিকতা বিবর্জিত ভাড়াটে ‘বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়’ দিয়ে জনমতকে প্রভাবিত করা; এবং তৃতীয়ত: নানান অপ্রাসঙ্গিক ও তুচ্ছ বিষয় কিংবা ইস্যুকে সামনে এনে মূল সমস্যাকে আড়াল করা। সাকিব, ফেরদৌস, মাশরাফি, মমতাজরা হল হাসিনা সরকারের ক্ষমতার তৃতীয় মুখোশ বা উপাদানের তুচ্ছ ঘুঁটি। এরকম হাজারো অপ্রাসঙ্গিক ও তুচ্ছ উপাদান জনগণের চোখের সামনে ছুঁড়ে দিয়ে একজন অপবিত্র জাদুকরের মত শেখ হাসিনা জনগণের চোখে ধুলো দিয়ে তাদেরকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে যেন জনগণ তাদের দুর্দশার মূল কারণটা দেখতে না পায়। মহান আল্লাহ্‌ বলেন, “আর তারাও তাদের চক্রান্ত করেছিল, কিন্তু তাদের চক্রান্তের সীমা আল্লাহ্‌’র জানা আছে। সুতরাং তোমরা মনে করো না যে (তাদের চক্রান্তের কারণে) আল্লাহ্ তার ওয়াদা পূরণে ব্যর্থ হয়ে যাবেন! নিশ্চয়ই আল্লাহ্‌ হলেন আযিযুন যুনতিক্বাম (পরাক্রমশালী প্রতিশোধগ্রহণকারী) (সূরা ইব্রাহিম: ৪৬-৪৭)।

    –    রিসাত আহমেদ

“নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষিত আতশবাজির ঝলক”

খবরঃ

পুলিশের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে রাজধানীবাসী মেতে উঠেছিল ইংরেজি নতুন বছর ২০২৪-কে বরণ করতে। পটকা আর আতশবাজির ঝলকে রঙিন হয়ে উঠেছিল ঢাকার আকাশ। ছাদে ছাদে বারবিকিউ পার্টি থেকে শুরু করে, ফানুস উড়ানো, নাচে-গানে ছিল উৎসবমুখর পরিবেশ। ছিল মদের ছড়াছড়ি। অথচ আগে থেকেই থার্টি ফাস্ট নাইটকে ঘিরে ডিএমপি’র তরফ থেকে দেয়া হয়েছিল ১৩ নির্দেশনা। নির্দেশনার তোয়াক্কা না করেই নগরবাসী নিজেদের মতো করে নতুন বছরকে বরণ করে নিয়েছে। (mzamin.com/article.php?mzamin=256943)

মন্তব্যঃ

পুলিশ-প্রশাসন কি আদৌ নিষেধাজ্ঞা যাতে উপেক্ষিত না হয় তার জন্য কোন পদক্ষেপ নিয়েছিল? না। বরং, প্রশাসন এই আয়োজনের অনুষঙ্গগুলোর প্রাপ্যতা নিশ্চিত করার বিষয়ে সকল প্রকার সহযোগিতা করেছে। দেশে আতশবাজি উৎপাদন এবং বিপণন নিষিদ্ধ হলেও পুলিশ-প্রশাসনের নাকের ডগায় আতশবাজি ও পটকার সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে। এক্ষেত্রে অসাধারণ দক্ষ এক সরবরাহ ব্যবস্থা প্রত্যক্ষ করা হয়। এরকম দক্ষ সরবরাহ ব্যবস্থা যদি নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের ক্ষেত্রেও পাওয়া যেত তা হলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যদ্রব্যের মূল্য লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পেতনা। প্রশাসনের প্রত্যক্ষ সহযোগীতা ব্যতীত এরকম দক্ষ সরবরাহ ব্যবস্থা নিশ্চিত করা সম্ভব না। পূর্বের বছরগুলোরমত এই বছরও প্রসাশনের সহায়তায় তারকা মানের হোটেলগুলোতে ছিল মদ-ডিজে পার্টিসহ সকল ধরণের বেলাল্লাপনার আয়োজন। অন্যদিকে, সংবাদপত্র-টিভি মিডিয়াগুলোতে কিভাবে নতুন বছরকে বরণ করতে হবে এবং এটা পালন না করলে একজন ব্যাক্তিকে সমাজে অচল হিসাবে চিত্রায়িত করার প্রচারণাতো লাগামহীনভাবে চলছিলই। এত আয়োজনের পরেও তথাকথিত নিষেধাজ্ঞা প্রদান শুধু অবাস্তবই নয় বরং হাস্যকর আত্মপ্রবঞ্চনা। যার ফলাফল নতুন বছর বরণ করার নামে বেলাল্লাপনা, নারী নির্যাতন, অগ্নিকান্ডের মত ঘটনা প্রতিবছর ক্রমবর্ধমান হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কেন প্রশাসন কোন কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করলো না। কারণ এই রাষ্ট্রের ভিত্তি এবং এই উৎসবগুলোর ভিত্তি একই ধর্মনিরপেক্ষ চিন্তার উপর প্রতিষ্ঠিত, যেখানে ভোগবাদ তথা ইন্দ্রিয় সুখকে সর্বোচ্চকরণকে জীবনের উদ্দেশ্য হিসেবে নির্ধারণ করা হয়েছে। তাই এসব সংস্কৃতির প্রতি সরকার যতটা সহানুভূতিশীল ঠিক ততটাই কঠোর ইসলামী চিন্তা ও সংস্কৃতির প্রচারমূলক আয়োজনগুলোর ব্যাপারে। এমনকি সরকার আয়োজক হিসাবেও সালমান খান, ক্যাটরিনার মত বিদেশী নর্তক-নর্তকীদের দিয়ে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে, যেখানে মন্ত্রী-এমপি এবং প্রশাসনের বড়কর্তাদের বাঁধভাঁঙা উল্লাস দেখা গেছে, দেখা গেছে মঞ্চে জায়গা না পেয়ে মন্ত্রীকে মাটিতে বসে পড়তে।

শুধু আইন বা নিষেধাজ্ঞা প্রদানের মাধ্যমে সমাজের মানুষকে কোন মন্দ কাজ (ফাহিশা) থেকে দূরে রাখা সম্ভব নয়, এর জন্য কতিপয় পদক্ষেপ জরুরী। প্রথমত, মন্দ বিষয়টির বুদ্ধিবৃত্তিক অসাড়তা ও এটি যে ঈমান পরিপন্থী তা জনগণকে বুঝাতে হবে। দ্বিতীয়ত, মন্দ বিষয়টি পালনের উপাদানগুলোর (বর্ষবরণের ক্ষেত্রে যেমনঃ মদ, আতশবাজি, ফানুস) প্রাপ্যতার সকল পথ/উপায়কে রুদ্ধ করতে হবে। তৃতীয়ত, মন্দ কাজের প্রকার অনুযায়ী যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। এই সবগুলো কাজের মূল দায়িত্ব শাসকের। কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষ শাসকগোষ্ঠী কখনোই তা করবে না, কারণ তারা নিজেরাই সকল মন্দ কাজের মূল উৎস ভোগবাদী চিন্তায় বুঁদ হয়ে আছে। একমাত্র ইসলামী আক্বীদার (জীবনের উদ্দেশ্য আল্লাহ্‌’র সন্তুষ্টি) ভিত্তিতে খিলাফত রাষ্ট্রই আমাদের ঈমানকে এবং আমাদেরকে পশ্চিমা ভোগবাদী সংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে রক্ষা করবে। খিলাফত রাষ্ট্র শুধুমাত্র কিছু বিধি-নিষেধ ও কঠোর আইন দ্বারা পরিচালিত রাষ্ট্র নয়, বরং এটি তাক্বওয়ার (আল্লাহ্‌ভীরুতা) উপর প্রতিষ্ঠিত একটি রাষ্ট্র। এখানে জনগণ শুধুমাত্র আইনের ভয়ে ফাহিশা থেকে দূরে থাকবে না, বরং এগুলোকে ভ্রান্ত জেনে এবং আল্লাহ্‌ভীতির কারণে ত্যাগ করবে। খিলাফত সরকার ইসলামী মহামূল্যবান  চিন্তাগুলোকে সঠিকভাবে প্রচার করার জন্য রাষ্ট্রীয় কাঠামোকে যেমন ব্যবহার করবে, ‍ঠিক তেমনি ইসলামী চিন্তার সাথে সাংঘর্ষিক যেকোন চিন্তা, দর্শন কিংবা আচার-আচরনগুলো হতে সমাজকে সুরক্ষা দিবে। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বলেছেন, “নিশ্চয়ই ইমাম বা খলিফা হচ্ছে অভিভাবক, তিনি জনগণের তত্ত্বাবধানের ব্যাপারে দায়িত্বশীল” (সহীহ্‌ বুখারী)।

    –    মোঃ সিরাজুল ইসলাম

“১৭০০ প্রাণ কেড়েছে ডেঙ্গু, ব্যবস্থা ছিল কেবল লোক-দেখানো”

খবরঃ

দেশে বিদায়ী বছরে ডেঙ্গুর সংক্রমণে মানুষ ব্যাপক আতঙ্কে ছিলেন। ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা ছিল খুবই ঢিলেঢালা। অনেকটা লোক-দেখানো। ডেঙ্গুতে একদিনে সর্বোচ্চ ২৪ জনের মৃত্যু হয় ১৫ই নভেম্বর। প্রায় ১৭শ’ মানুষের প্রাণহানি হয়েছে বিদায়ী বছরে। এক বছরে ৩ লাখ ২০ হাজারের বেশি ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। ২০০০ সালে দেশে ডেঙ্গু আসার পর এবছরই সর্বোচ্চ মৃত্যু হয়েছে দেশে।…. (https://mzamin.com/news.php?news=90094)

মন্তব্যঃ

প্রকৃতপক্ষে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা যে শাসকশ্রেণী, কতিপয় পুঁজিপতি ও উপনিবেশবাদীগোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষার শাসনব্যবস্থা এটা বর্তমানে সুস্পষ্ট হয়ে গেছে। এখানে জনগণের জন্য যা করা হয় তা মূলতঃ ‘লোক দেখানো’। এখানে শাসকশ্রেণী শুধুমাত্র তার ‘রাজনৈতিক ভবিষ্যতের’ জন্য জনগণের সমস্যা যতটুকু সমাধান করা দরকার, ঠিক ততটুকুই করে। আর কাজ না করেও যদি তারা কোন প্রতারণামূলক পদ্ধতি বেছে নিতে পারে আর জনগণও যদি তা মেনে নেয়, তাহলে তো আর কোন সমস্যাই নেই। জনগণের সমস্যাসমূহ সমাধান করুক বা না করুক, দিনশেষে যদি জনগণকে বুঝাতে পারে শাসক তাদের জন্য ‘কিছু একটা’ করেছে, তাহলে সে সফল শাসক। এ কারণে দেখা যায় বর্তমানে শাসকগণ কাজের চেয়ে প্রচার-প্রোপাগান্ডা ও গলাবাজিতে বেশি বিশ্বাসী। এবং এক্ষেত্রে কুখ্যাত হিটলার মন্ত্রী গোয়েবোলসীয় তত্ত্ব অনুসারে তারা সত্য মিথ্যার কোন ধার ধারে না। এই কারণে, আমরা দেখি বাংলাদেশের বর্তমান হাসিনা সরকার দেশের জনগণকে চিকিৎসাব্যবস্থার চরম দুরবস্থা, অভাব ও দরিদ্রের মাঝে নিপতিত করেও কয়েকটা ফ্লাইওভার, রাস্তা ও সেতু বানিয়ে এগুলোর প্রচারে ভাসিয়ে দিয়ে তার অক্ষমতা ঢেকে রাখতে চায়। যেকোনো বক্তৃতায় সে ও তার অনুসারীদেরকে দেখা যায়, গল্পের কুমিরের নিকট শিয়ালের এক বাচ্চা বারবার প্রদর্শনের মত বারবার ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এগুলোর ফিরিস্তি নিয়ে আসে। এই ‘লোক দেখানো’ তথা ‘লোক ঠকানো’ রোগে শুধুমাত্র শাসকরাই যে আক্রান্ত হয়েছে সেটা নয়, বরং উপর থেকে নিচ পর্যন্ত সর্বক্ষেত্রে প্রশাসনে কিংবা অন্য কোন জায়গায় দায়িত্বরত লোকজনও আক্রান্ত। তাই সমগ্র ব্যবস্থাটাই যেখানে ‘লোক দেখানো’ রোগে আক্রান্ত সেখানে ডেঙ্গু, করোনা ইত্যাদি নিয়ে লোক দেখানো অকার্যকর পদক্ষেপ গ্রহন করাতো নিতান্তই স্বাভাবিক ব্যাপার।

অন্যদিকে ইসলামী শাসনব্যবস্থা ‘খিলাফত’ এর মধ্যে শাসকগণ ক্ষমতাপ্রাপ্তিকে আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা কর্তৃক অর্পিত দায়িত্ব হিসেবে দেখেন। এখানে রাষ্ট্রের শাসকের অবস্থান ‘রাজা’ হিসেবে নয়, বরং অভিভাবক হিসেবে। একজন পরিবারের অভিভাবক পিতা যেমন তার পরিবারের প্রত্যেক সদস্যদের ভালো-মন্দ দেখার জন্য দায়িত্বশীল, তেমনি রাষ্ট্রের শাসক ও তার শাসনাধীনে প্রত্যেকটি মানুষের জন্যও তিনি দায়িত্বশীল। এখানে শাসন ক্ষমতার সাথে ব্যক্তির রাজনৈতিক ভবিষ্যতের কোন সম্পর্ক নাই। এখানে রাজনীতি বা জনগণের দেখাশোনা করার পুরস্কার কেবলমাত্র আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র নিকট থেকে নেওয়া হয়। এ রাজনীতিতে সবচেয়ে সফল হলেন নবীগণ। নবীগণের মধ্যে এমন নবীও ছিল যাদের শাসন ক্ষমতা পাননি। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ)-এর সম্মানিত সাহাবাদের মধ্যেও ইয়াসির (রাঃ)-এর মত এমন রাজনীতিবিদ ছিলেন, যারা ইসলামের বিজয়ের পূর্বে মৃত্যুবরণ করেও (শাহাদাত লাভে) সফল হয়েছিলেন। এই শাসন ব্যবস্থায় বরং এটাও দেখা যায়, ওমর (রাঃ), আবু বকর (রাঃ), ওমর বিন আব্দুল আজিজ (রহঃ) এর মত শাসকগণের সম্পদ ক্ষমতা প্রাপ্তির পর শূন্যের কাছাকাছি নেমে এসেছিল। তাই এখানে ক্ষমতা প্রাপ্তির সাথে যেহেতু স্বার্থের সম্পর্ক নাই, বরং ক্ষমতার সাথে সম্পর্ক হল আল্লাহ্‌’র সন্তুষ্টি অর্জনের, তাই এ শাসনব্যবস্থায় শাসকগণের লোক দেখানো কর্মকাণ্ডের কোন প্রয়োজন পড়ে না।

    –    মোঃ জহিরুল ইসলাম

“যৌনকর্মে নামতে বাধ্য হচ্ছে বৃটিশদের জন্য ক্রিসমাস জাম্পার তৈরি করা পোশাক কর্মী”

খবরঃ

দিনের বেলা পোশাক শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন তিনি। কিন্তু মূল্যস্ফীতির কারণে যেভাবে জীবনযাপনের ব্যয় বাড়ছে তাতে রাতের বেলা যৌনকর্মী হিসেবে কাজ করার কোনো বিকল্প নেই রুবির কাছে। (www.theguardian.com/global-development/2023/dec/23/woman-making-christmas-jumpers-for-uk-turns-to-sex-work-to-pay-bills)

মন্তব্যঃ

এই ভয়াবহ অবস্থার অন্যতম কারণ- শিল্পটি কোন স্বাভাবিক শিল্প নয়, এটি একটি কলোনিয়াল শিল্প। তথাকথিত এই শিল্পকে আমাদের মত দেশে পশ্চিমারা পাঠিয়েছে মূলত সস্তা দামে আমাদের মূল্যবান মানবসম্পদকে তাদের কাজে লাগানোর জন্য। এই খাতের কাঁচামাল, মেশিন পত্র, ক্যেমিকেল প্রায় সবকিছুই আমদানি করতে হয়। এর উৎপাদিত পণ্যের বাজারের উপরও উদ্যোক্তাদের কোন নিয়ন্ত্রণ নেই। এধরনের পরনির্ভরশীল শিল্পকে স্বাভাবিকভাবে শিল্পই বলা যায় না। এরকম শিল্পখাত তৈরির জন্য নানা অস্বাভাবিক সহযোগিতা লাগে, যা পশ্চিমা দেশগুলোর প্রয়োজনে দেশের দালাল শাসকরা গত প্রায় চার দশক জুড়ে করে গেছেন। মাস্টার এলসি দেখিয়ে ব্যাক টু ব্যাক এলসি খুলে কাচামাল আমদানির জন্য সহজ ঋণ প্রদান, বিনা শুল্কে মেশিনারি, কাপড় সূতা ইত্যাদি আমদানি করতে দেয়া, সহজ শর্তে ঋণ প্রদান, ক্যাশ ইন্সেন্টিভ প্রদান, জমি প্রদান, ট্যাক্স হলিডে ইত্যাদি নানা সুবিধা পেয়েছে এই খাত। যেখানে দেশীয় কাচামালনির্ভর খাত এবং দেশের মানুষের জরুরি প্রয়োজনীয় পণ্যের অনেক শিল্পই এমন সুবিধা পায়নি। এমনকি বিশ্বব্যাংকের পরামর্শে আদমজী পাটকল বন্ধ করে সে জমি তৈরি পোশাক সংশ্লিষ্ট শিল্পের জন্য দেয়া হয়েছে। সরকারের সেরকম সহযোগিতা না পাওয়ায় কৃষিখাত থেকে অনেক কৃষক ও শ্রমিক গার্মেন্টস শিল্পে এসে কাজ করতে বাধ্য হয়।

পশ্চিমা ক্রেতারা নানারকম কমপ্লায়েন্সের কথা বলে আমাদের দেশের শিল্প মালিকদের দিয়ে মোটা অংকের টাকা খরচ করিয়ে নানা বিদেশি সুরক্ষা পণ্য ও সার্টিফিকেট কেনালেও তারা শ্রমিকদের বেশি বেতনের বন্দোবস্ত করাতে তেমন কোন কার্যকর উদ্যোগ নেয় না; বরং তারা তাদের অস্বাভাবিক কম ক্রয়মূল্যাদেশ নিশ্চিতে বেশী আগ্রহী। যার কারণে সরকারের সুবিধাভোগী কতিপয়ের বাইরে এখাতের সাধারণ শিল্পোউদ্যোক্তারা লোকসানে তাদের কারখানা পরিচালিত করছেন এবং তাদের ব্যাংক ঋণের দায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে।

আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা মুমিনদের উপর কাফেরদের নিয়ন্ত্রণকে নিষিদ্ধ করেছেন। “এবং কিছুতেই আল্লাহ্‌ মুসলিমদের উপর কাফিরদের কর্তৃত্বের পথ মেনে নিবেন না” (সূরা-নিসাঃ ১৪১)। তাই খিলাফত ব্যবস্থায় এধরনের অস্বাভাবিক কলোনিয়াল শিল্প থাকবে না। একটি আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতির ভিত্তি গড়ে তুলতে খিলাফত রাষ্ট্র কৃষিখাতে ব্যাপক মনোযোগী হবে। কৃষকদেরকে সুদমুক্ত ঋণ প্রদানসহ স্বল্পমূল্যে সার, বীজ, সেচ, উন্নত প্রযুক্তি সহায়তা ইত্যাদি দেয়া হবে। কৃষিপন্যের বাজার সিন্ডিকেট ও ফড়িয়া মুক্ত হবে এবং কৃষকের পন্য সংরক্ষণ ও বাজারজাতকরণের জন্য সহযোগিতা করা হবে। খিলাফতের শিল্প হবে সমর ভিত্তিক শিল্প। যেহেতু আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা জিহাদের জন্য সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেয়াকে ফরজ করেছেন, সেহেতু খলিফা দ্রুততম সময়ে ব্যাপক পরিমানে ভারী শিল্প স্থাপন করবেন। নিজস্ব প্রাকৃতিক ও সিন্থেটিক কাচামালের উপর ভিত্তি করে নানা পন্যের শিল্প স্থাপিত হবে। খিলাফত রাষ্ট্রকে পশ্চিমাদের বাজারের উপর মুখাপেক্ষী থাকতে হবে না, কারণ পুরো মুসলিম বিশ্বের বাজারকে আভ্যন্তরীণ বাজার হিসেবে দেখা হবে। এবং খিলাফতের জনগণের ক্রয়ক্ষমতাও হবে অনেক বেশী। এসব কারণে খিলাফত রাষ্ট্রের প্রতিটি কর্মক্ষম ব্যক্তির উপযুক্ত কর্মসংস্থান থাকবে। কুর‘আন-সুন্নাহ্‌’র আলোকে হিযবুত তাহ্‌রীর কর্তৃক প্রণীত খিলাফত রাষ্ট্রে খসড়া সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৫৩ অনুযায়ী রাষ্ট্র প্রতিটি নাগরিকের কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রাপ্তির নিশ্চয়তা দিবে। এবং অনুচ্ছেদ ১২৫ অনুযায়ী প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক চাহিদা পূরণের নিশ্চয়তাও দেয় খিলাফত রাষ্ট্র। রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) বলেন, “ইমাম/খলিফা হচ্ছেন অভিভাবক এবং তিনি তার নাগরিকদের বিষয়ে দায়িত্বশীল” (বুখারী)।

    –    মোহাম্মদ তালহা হোসেন