Weekly
ISLAMIC VIEWPOINT
….সপ্তাহের সংবাদ পর্যালোচনা
১০৮ তম সংখ্যা । ১০ ডিসেম্বর, ২০২৩
এই সংখ্যায় থাকছে :
“আ.লীগ আমার পুরনো দল, মাঝখানে অন্য জায়গায় ছিলাম: শাহজাহান ওমর”
“হো চি মিনের ঘটনায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে ইউজিসি”
“মনোনয়ন বাতিল শুনে কেঁদেকেটে মেঝেতে গড়াগড়ি”
“নির্বাচনী আচরণবিধি নিয়ে ইসির ব্যাখ্যায় বিভ্রান্তি”
“ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকার রক্ষায় আইন হচ্ছে”
“নির্বাচনে বাইরের থাবা পড়েছে: সিইসি”
“আ.লীগ আমার পুরনো দল, মাঝখানে অন্য জায়গায় ছিলাম: শাহজাহান ওমর”
খবরঃ
জামিনে কারাগার থেকে বেরিয়ে আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর। নৌকা প্রতীকের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নও পান তিনি। ‘আপনি তো নতুন দলে জয়েন করেছেন। কেমন লাগছে?’ এমন প্রশ্নের জবাবে সুপ্রিমকোর্টের এই আইনজীবী বলেন, ‘এটা আমার পুরনো দল। মাঝখানে অন্য জায়গায় ছিলাম।’ https://www.jugantor.com/politics/748300/আ.লীগ-আমার-পুরনো-দল-মাঝখানে-অন্য-জায়গায়-ছিলাম-শাহজাহান-ওমর%C2%A0
মন্তব্যঃ
সম্প্রতি তৃণমূল বিএনপি, বিএনএম, কল্যান পার্টি সহ আরো কিছু রাজনৈতিক দল নিয়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। বিশেষ করে বিএনপির তৈমুর আলম ও কল্যান পার্টির সৈয়দ ইব্রাহিমকে বিএনপি গোষ্ঠীর পক্ষ থেকে জাতীয় বেঈমান, নব্য-মীরজাফর, নব্য-রাজাকার ইত্যাদি বলে আখ্যায়িত করা হচ্ছে। সর্বশেষ এই তালিকায় যুক্ত হয়েছে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান পদবি থেকে আওয়ামী লীগে যোগ দেওয়া শাহজাহান ওমর। তবে মজার ব্যাপার হল আওয়ামী লীগ ও বিএনপির অধিকাংশ কেন্দ্রীয় নেতা তাদের রাজনৈতিক জীবনের কোন না কোন সময়ে এরকম ‘পল্টি’ দেওয়ার অভিজ্ঞতা রয়েছে। ডান-বাম বিভিন্ন দিকে কিংবা দিক থেকে ডিগবাজি দেওয়ায় তারা সিদ্ধহস্ত। তারা যে অন্তর থেকে আসলে কোন দল করে তা তাদের ডিএনএ টেষ্ট করলেও হয়ত বের করা কষ্টকর হবে। বিগত ৪০-৫০ বছরে এরকম অসংখ্য ‘পল্টি’ দেশের জনগণ প্রত্যক্ষ করেছে। সেই হিসেবে এই রাজনীতিবিদরা সবাই জাতীয় বেঈমান ও নব্য-মীরজাফর এবং সেকুলার রাজনৈতিক দলগুলো মূলত বেঈমান আর বিশ্বাসঘাতকদের নিয়েই গঠিত! আমাদের জন্য এটি অত্যন্ত দুঃখজনক যে এইধরনের ‘পল্টিবাজ’ লোকদের হাতে দেশ ও জনগণের ভাগ্য জিম্মি হয়ে রয়েছে।
দেশের বর্তমান নীতিহীন যে ক্ষমতা ও স্বার্থের রাজনীতি তার জন্মদাত্রী হল সেকুলার রাষ্ট্রব্যবস্থা। বিএনপি আওয়ামী লীগ সহ দেশের সকল রাজনৈতিক দলগুলোর এই পথভ্রষ্ট সেকুলাররা বিশ্বাস করে “রাজনীতিতে শেষ বলে কোন কথা নেই” এবং এটা স্বীকার করতে তাদের নূন্যতম লাজলজ্জাও হয়না। এই রাজনীতিতে স্বার্থই শেষ কথা! স্বার্থের কারণে তারা দল পরিবর্তন করে, স্বার্থে আঘাত লাগলে কাউকে দল থেকে আজীবনের জন্য বহিষ্কার করে, প্রয়োজনে তাদেরকেই আবার বুকে টেনে নেয়! স্বার্থের জন্য তারা প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালীর সাথে বৈবাহিক সম্পর্ক করে আবার স্বার্থের জন্যেই তারা প্রতিপক্ষের কাছে দলীয় গোপন বিষয় প্রকাশ করে দেয়। এই নীতিহীন পথভ্রষ্টরা ক্ষমতা ও স্বার্থ হাসিলের জন্য একবার এক বিদেশী শক্তির সাথে আঁতাত করে- পূজা করে, আরেকবার অন্য বিদেশী শক্তির দারস্থ হয়। এরা ক্ষমতার জন্য বিদেশীদের কাছে দেশের কৌশলগত সম্পদ তুলে দেয়, জনগণের লাশের পাহাড় তৈরী করে, আবার প্রয়োজনে এরাই জনগণের সামনে কাঁদো কাঁদো গলায় মিনতি করে। ক্ষমতার জন্য এরা বোরকা-হিজাব পরে জনগণের সামনে হাজির হয়, বিদেশী প্রভুদেরকে খুশি করার জন্য এরাই আবার হিজাবকে কটাক্ষ করে এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। এধরনের স্বার্থান্বেষী ব্যক্তিরা জনগণের জন্য অতিশয় বিপদজনক এবং এদের হাতে দেশের নেতৃত্ব থাকতে পারে না। এরা প্রাণঘাতি ভাইরাসের চেয়েও ক্ষতিকর কারণ তারা তাদের ধমনীর রক্তে কুফর ও বাতিলকে বয়ে বেড়ায়।
এর বিপরীতে ইসলামের মধ্যে রাজনীতি একটি চ্যালেঞ্জিং ও পৌরুষদীপ্ত কাজ যেখানে একজন রাজনীতিবিদের লক্ষ্য হল কুফর ও বাতিলকে পরাজিত করে রাজনীতির দৃশ্যপট থেকে বিতারিত করা। আবু বকর (রা.), ওমর (রা.), আলী (রা.)-দের মত সবচেয়ে সম্মানিত ও সাহসীরাই এই কাজে জড়িত হয়। সবচেয়ে ক্ষমতাধর জালিমও এরকম একজন মাত্র পৌরুষদীপ্ত ব্যক্তির ভয়ে ভীত থাকে; কারণ তিনি জালিমের রক্তচক্ষুর জবাবে রক্তচক্ষু প্রদর্শন করেন, জালিমের হুঙ্কারের জবাব তিনি হুঙ্কার প্রদান করেন; কারণ তিনি মনে করেন এই ক্ষণস্থায়ী পৃথিবীতে তিনি আল্লাহ্’র প্রতিনিধি যিনি আল্লাহ্’র সাথে ওয়াদাবদ্ধ হয়েছেন এই পৃথিবীকে কুফর ও বা’তিলমুক্ত করার জন্য। “মুমিনদের মধ্যে কিছু রয়েছে পৌরুষদীপ্ত ব্যক্তি (রিজা-ল) যারা আল্লাহ্’র সাথে তাদের কৃত ওয়াদা পূর্ণ করেছে।… আর তাদের কেউ কেউ ওয়াদা পূরণের প্রতিক্ষায় রয়েছে, যারা তাদের প্রতিজ্ঞা বিন্দুমাত্র পরিবর্তন করেনি (সূরা আল-আহযাব: ২৩)।
– রিসাত আহমেদ
“হো চি মিনের ঘটনায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে ইউজিসি”
খবরঃ
বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে উইমেনস ক্যারিয়ার কার্নিভ্যালে হো চি মিন ইসলামের যোগ দিতে না পারার ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি)। এ ঘটনার ব্যাখ্যা দিতে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়কে তিন দিন সময় দিয়েছে ইউজিসি। গত রোববার ইউজিসি এ ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়ে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি পাঠিয়েছে। ইউজিসি বলছে, ‘নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে হো চি মিন ইসলামকে “উইমেনস ক্যারিয়ার কার্নিভ্যাল–এক্সপ্লোর ইয়োর ফিউচার উইথ আস” অনুষ্ঠানে যোগদানের অনুমতি কেন প্রদান করা হয়নি এবং এ ধরনের ঘটনা বা চর্চার পুনরাবৃত্তি যেন ভবিষ্যতে আর না ঘটে, সে বিষয়ে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, সে বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের বক্তব্য তিন কর্মদিবসের মধ্যে পাঠাতে হবে।’ (prothomalo.com/education/higher-education/6gbbv1m603)
মন্তব্যঃ
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের মুখে ধ্বংসাত্মক “পশ্চিমা লিবারেল মূল্যবোধ” প্রচারের প্রচারক হো চি মিন বিশ্ববিদ্যালয়ে উইমেনস ক্যারিয়ার কার্নিভ্যালে বক্তব্য প্রদান করতে পারে নাই। হো চি মিন পুরুষ থেকে নারীতে রূপান্তরের শুধুমাত্র অস্ত্রোপচারের জন্য ১০ লাখ টাকা খরচ করেছে বলে দাবি করে। (বিস্তারিত জানতে দেখুনঃ অস্ত্রোপচার করে পুরুষ থেকে নারী হয়েছি, গোপন করার কিছু নেই: হো চি মিন ইসলাম, অক্টোবর ৮, ২০২৩ দৈনিক প্রথম আলো)। এছাড়াও, অস্ত্রোপচারের প্রস্তুতির খরচসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক ব্যয় মিলে এই প্রোজেক্টে খরচের পরিমাণ কোটি টাকার বেশি বলে অনুমান করা যায়। সাধারণ পরিবারে বড় হওয়া একজন নার্সের পক্ষে এই বিপুল পরিমাণের অর্থের যোগান দেয়া কোনভাবে স্বাভাবিক নয়। একজন সাধারণ মানুষও জানে এই বিপুল চিকিৎসা ব্যায়ের উৎস কি। অস্ত্রোপচারের পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাথে হো চি মিনের একান্ত সাক্ষাৎকার তাকে নিয়ে আগামী দিনে পশ্চিমা কাফিরদের গভীর ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত বহন করে। (বিস্তারিত জানতে দেখুনঃ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ট্রান্সজেন্ডার হো চি মিনের সাক্ষাৎ, অক্টোবর ১০, ২০২৩, সময় টিভি)। পশ্চিমারা হো চি মিন প্রোজেক্টেকে আমাদের সমাজে তাদের ঘৃণ্য ট্রান্স-জেন্ডারিজমকে প্রোমোট করার জন্য ব্যবহার করতে চাচ্ছিল। উইমেনস ক্যারিয়ার কার্নিভ্যালে তাকে বক্তব্য প্রদানের সুযোগ প্রদান করা ছিল তাদের সেই গভীর ষড়যন্ত্রের একটি অংশ মাত্র। বিপুল অর্থ ব্যায়ের এই প্রোজেক্টের ভারডুবি দেখে পশ্চিমা উপনিবেশবাদিদের বুদ্ধিবৃত্তিক দাস তথাকথিত নারীবাদি ও ধর্মনিরপেক্ষ শাসকগোষ্ঠী সমোস্বরে চিৎকার শুরু করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে ব্যাখ্যা তলব তারই একটি অংশ মাত্র।
পশ্চিমাদের লিবারেল চিন্তার ব্যক্তি স্বাধীনতা থেকে জেন্ডারিজমের সূচনা লাভ করে যার মূল প্রতিপাদ্য বিষয় একজন ব্যক্তি তার ইচ্ছা অনুযায়ি তার লিঙ্গগত পরিচয় নির্ধারণ করবে। বিষয়টি এতটাই তরল যে একজন ব্যক্তি সকালে নিজেকে পুরুষ আবার বিকেলে নিজেকে নারী দাবি করতে পারেন। যার ফলে এই চিন্তার ব্যক্তিরা প্রতিনিয়ত এক ধরণের পরিচয় সংকট ও বিভ্রান্তির মধ্যে থাকে যা তাদের মানসিক রোগের ঝুকির মধ্যে ঠেলে দেয়। (বিস্তারিত জানতে দেখুনঃ Lesbians, Gays Suffer More Mental Health Issues, Drug Use Problems: Survey, June 14, 2023, usnews.com)। সর্বোপরি পশ্চিমা লিবারেল মূল্যবোধের ব্যক্তি স্বাধীনতা থেকে উৎসারিত ট্রান্স জেন্ডারিজম একটি মানব বিধ্বংসি বিভ্রান্ত চিন্তা যা একটি সমাজকে স্থায়ী সংকটের মধ্যে ঠেলে দেয়। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা-এর আদেশ অমান্য করে সমকামিতা একটি চূড়ান্ত সীমালঙ্গন। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, “আমি লূত (আ.)-কে প্রেরণ করেছিলাম। যখন তিনি তাঁর সম্প্রদায়কে বললেন, তোমরা চরম অশ্লীলতা ও নির্লজ্জতার কাজ করছ যা তোমাদের পূর্বে সারা বিশ্বে কেউ কখনো করেনি। তোমরা কামপ্রবৃত্তি পূরণ করার জন্য মেয়েদের কাছে না গিয়ে পুরুষদের কাছে যাচ্ছ। প্রকৃতপক্ষে তোমরা সীমালঙ্ঘনকারী জাতি” (সুরা আল-আ‘রাফ: ৮০-৮১)।
শুধুমাত্র এই সকল সীমালঙ্গনকারীকে প্রত্যাখান করাই যথেষ্ট নয় বরং আমাদেরকে তাদের পৃষ্ঠপোষক পশ্চিমা উপনিবেশবাদী এবং তাদের বুদ্ধিবৃত্তিক ও রাজনৈতিক দোসরদের প্রত্যাখ্যান করতে হবে।
– মোঃ সিরাজুল ইসলাম
“মনোনয়ন বাতিল শুনে কেঁদেকেটে মেঝেতে গড়াগড়ি”
খবরঃ
তিনবার ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে জামানত হারানো আবদুল আলী বেপারী এবার প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মানিকগঞ্জ-১ (ঘিওর, দৌলতপুর ও শিবালয়) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছিলেন। আজ রোববার দুপুরে যাচাই–বাছাই শেষে তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার। এরপর আবদুল আলী রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের বারান্দার কান্নায় ভেঙে পড়েন। গড়াগড়ি করে কান্না করে।… (https://www.prothomalo.com/bangladesh/district/aotpuvtwc9)
মন্তব্যঃ
গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় পার্লামেন্টের মেম্বার হওয়া মানে ছোটখাটো একজন প্রভু হওয়া। তারপর সেই প্রভুত্ব করার সুযোগ কাজে লাগিয়ে জনগণের সম্পদ লুটপাট করা। এ কারণে এমপি হোক বা না হোক যাত্রাপালার নর্তকী থেকে শুরু করে আমলা, ব্যবসায়ী, অভিনেতা, ক্রিকেটারসহ সকল সুযোগ সন্ধানীর দল এই পথে লাইন ধরেছে। সবাই এমপি হতে চায়! না হলেও নিদেন পক্ষে একটা এমপি মনোনয়ন চায়! এতে যদি কোনদিন এমপি নামক সোনার হরিণ রূপী পদ পাওয়া যায়! আবার এমপি হোক বা না হোক নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে যেতে হবে অক্লান্তভাবে। ‘রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ’ বলতে একটা কথা আছে না! এটা না করলে তো ‘রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ’ হুমকির মুখে পড়বে! এই কারণে যুগের পর যুগ ধরে আওয়ামী বিরোধী রাজনীতি করে শেষ বয়সে এসে অনেকেই দেখা যাচ্ছে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দিতে। এতে যদি পাওয়া যায় সামান্য প্রভুত্ব করার অধিকার! লুটপাটের উৎসবে যোগদানের সুযোগ! এ কারণে মনোনয়ন না পেলে মনের দুঃখে হোক, অভিনয় করে হোক, কান্নার ভান করে হোক, মেঝেতে একটু গড়াগড়িত করা যেতেই পারে! এটাই হল ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক রাজনীতিবিদদের চরিত্র! যারা রাজনীতি নামক মহান দায়িত্ব যা নবী-রাসূলগণ করতেন, এটিকে কৌতুক ও হাস্যরস বানিয়ে দিয়েছে! কাউকে কাউকে রূপান্তরিত করেছে নির্বোধ অক্ষম যালিমের পদলেহনকারী নগণ্য পশুতে। রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, “কেয়ামতের পূর্বে প্রতারণার বছর সমূহ আসবে।… তখন রুয়াইবিদারা সরব হবে। সাহাবাগণ (রা.) বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ্, “রুয়াইবিদা কি?” তিনি বললেন, সে সকল নির্বোধ ও অযোগ্য শাসক যারা জনগণের ব্যাপারে কথা বলবে”। আফসোস! এসকল নিকৃষ্ট ও নির্বোধ জোকারের দল আমাদের বর্তমান কিংবা ভবিষ্যতের আইন প্রণেতা কিংবা শাসক, অথচ “আইন প্রণয়নের অধিকার শুধুমাত্র আল্লাহ্’র” (সূরা ইউসূফ: ৪০)।
তাই এসকল নির্বোধ রাজনীতিবিদদের থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে আমাদের দরকার একটা সুষ্ঠু নির্বাচন নয়, বরং একটা সুষ্ঠু রাজনৈতিক পরিবেশ। যেখানে ক্ষমতা লাভ করাকে রাজনীতির পুরস্কার হিসেবে দেখা হয় না। রাজনীতি হয় জনগণকে দেখাশোনা করার মহান দায়িত্ব। যে দায়িত্ব নবীগণের উত্তরসূরী নিষ্ঠাবান মুসলিমগণ কাঁধে তুলে নিয়ে থাকেন। ইসলামী খিলাফত ব্যবস্থা যখন প্রতিষ্ঠিত নেই তখন এই রাজনীতির লক্ষ্য হচ্ছে গণতান্ত্রিক শাসকদের পতন ঘটিয়ে খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠা করা; আর ইসলামী খিলাফত ব্যবস্থার অধীনে এই রাজনীতির লক্ষ্য খলিফাদেরকে জবাবদিহিতা করার মাধ্যমে। এখানে রাজনীতি কিংবা শাসনের পুরস্কার একমাত্র আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা’আলার নিকট থেকেই নেওয়া হয়।
– মোঃ জহিরুল ইসলাম
“নির্বাচনী আচরণবিধি নিয়ে ইসির ব্যাখ্যায় বিভ্রান্তি”
খবরঃ
যারা মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন, তারা এখন নির্বাচনী প্রচার চালাতে পারবেন কি না, সেটি নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরী হয়েছে। গত রোববার সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেছিলেন, নির্বাচনী আচরণবিধিমালা প্রয়োগের সময় এখনো আসেনি। নির্বাচনে প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার পর আচরণবিধিমালা প্রযোজ্য হবে। এখন লাঙ্গল, নৌকা বা নির্বাচনী প্রতীক নিয়ে প্রচার চালাতে কোনো রাজনৈতিক দলের বাধা নেই। অথচ, আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঘটনায় ৬২ জন প্রার্থীকে শোকজ ও সতর্ক করা হয়েছে। (https://www.prothomalo.com/politics/6o00n9zup6)
মন্তব্যঃ
সিইসির বক্তব্য সঠিক হলে ৬২ জন প্রার্থীকে আচরণবিধি লঙ্ঘনের জন্য কেন শোকজ করা হয়েছে? আর শোকজ করা আইনসম্মত হলে সিইসির বক্তব্য কী নির্দেশ করে? কে আসলে ঠিক? বাস্তব সত্য হল, মানুষকে যখন বৈধ-অবৈধ নির্ধারণের ক্ষমতা দেওয়া হয় তখন এধরণের বিপরীতমুখী ও সাংঘর্ষিক পরিস্থিতি তৈরী হবেই, এমনকি কেউ নিঃস্বার্থভাবে চেষ্টা করলেও এর উল্টোটি ঘটবে না। আর বর্তমান সেক্যুলার রাজনীতিতে অংশগ্রহণকারী সবার মূল লক্ষ্যই হল স্বার্থ হাসিল, সেটা ব্যক্তিগত, দলীয় কিংবা বিদেশী প্রভূদেরই হোক। ফলে, এই ব্যবস্থার মধ্যে আইন-কানুন ও বিধি-বিধানকে সবাই নিজের অনুকূলে রাখার জন্য মরিয়া হয়ে যায়। আইনকানুন ও বিধিবিধানকে অনুকূলে রাখার জন্য প্রয়োজনে তারা তা সুবিধামত পরিবর্তন করে নেয় কিংবা বিদ্যমান আইনের মনগড়া ব্যাখ্যা হাজির করে। বাংলাদেশের সংবিধান নিয়ে যত আলোচনা যত বিতর্ক এর সবই এই কারণে সৃষ্ট। শুধু সংবিধান নয়; দেশের উচ্চ আদালতে বা নিম্ন আদালতে চলমান সকল মামলা, সরকারী প্রশাসন বিধিমালা, অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীগুলোর ক্ষমতা ও কার্যপরিধি কিংবা নাগরিক সেবা, সবখানেই বৈধ-অবৈধ নির্ধারণে চলছে এই মনগড়া “ব্যাখ্যার” খেলা।
এসকল ব্যাখ্যা যারা দিচ্ছেন তারা কোন ক্ষমতাবলে এসব করছেন? আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা কি তাদেরকে এসব করার অনুমতি দিয়ে কোন আয়াত নাযিল করেছেন? আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা পবিত্র কুর‘আন-এ এসকল লোকদের জন্য সতর্ক বার্তা দিয়ে বলেন: “তোমরা এর কিছুকে নিজেদের জন্য বৈধ আর কিছুকে অবৈধ করে নিয়েছ। (এই কাজের স্বপক্ষে) তোমাদের কাছে কী আল্লাহ্’র পক্ষ থেকে অবতীর্ণ কোন দলীল রয়েছে? (সূরা ইউনূস: ৫৯)।
আর যারা এই পথভ্রষ্ট সেক্যুলারদের এসব মনগড়া ব্যাখ্যাকে জানপ্রাণ দিয়ে মান্য করার চেষ্টা করেন তাদের জন্য আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা পবিত্র কুর‘আন-এ বলেন: “আল্লাহ্-কে বাদ দিয়ে তারা (ইহুদি ও খ্রিস্টানরা) তাদের পাদ্রী ও ধর্মযাজকদেরকে তাদের রব (পালনকর্তা) হিসেবে মেনে নিয়েছে (সূরা আত-তাওবা: ৩১)। ইহুদি ও খ্রিস্টানরা যদিও মহাবিশ্বের সৃষ্টিকর্তা হিসেবে আল্লাহ্-কে স্বীকার করত, কিন্তু তাদের পাদ্রী ও ধর্মযাজকরা তাদের জন্য মনগড়া বিধান তৈরী করত; কোনটি বৈধ আর কোনটি অবৈধ তা নির্ধারণ করে দিত এবং ইহুদি ও খ্রিস্টানরা সেই মনগড়া বিধানগুলোকে দৈনন্দিন কাজকর্মে বৈধ-অবৈধের ভিত্তি হিসেবে জানপ্রাণ দিয়ে মান্য করত। আর এটাকেই আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা পাদ্রী ও ধর্মযাজকদেরকে তাদের রব (পালনকর্তা) হিসেবে মেনে নেওয়া বলে অভিহিত করেছেন। আমাদেরকেও সিদ্ধান্ত নিতে হবে আমাদের রব (পালনকর্তা) হিসেবে আমরা কাকে নিব; আল্লাহ্ আল-আযীমকে নাকি এইসকল পথভ্রষ্ট সেক্যুলারদেরকে!
– রিসাত আহমেদ
“ট্রান্সজেন্ডারদের অধিকার রক্ষায় আইন হচ্ছে”
খবরঃ
সমাজে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়নি। পরিবারে নেই গ্রহণযোগ্যতা। শিক্ষা, স্বাস্থ্য এমনকি মৃত্যুর পর সৎকারেও তাদের নিয়ে দেখা যায় জটিলতা—এমন অবস্থায় ট্রান্সজেন্ডার জনগোষ্ঠীর জন্য অধিকার সুরক্ষা আইন হচ্ছে। ৫৩টি ধারা সংবলিত এই আইনের খসড়া তৈরি করেছে সরকারের সমাজসেবা অধিদপ্তর, সার্বিক সহযোগিতায় আছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। (https://www.ittefaq.com.bd/666291/ট্রান্সজেন্ডারদের-অধিকার-রক্ষায়-আইন-হচ্ছে)
মন্তব্যঃ
ট্রাঞ্জেন্ডারদেরকে একটি জেন্ডার হিসেবে স্বীকৃতি দিবে এই আইন। একটি সমাজে ও বিশ্বে যখন নারী ও পুরুষ কেন্দ্রীক একটি সামাজিক ব্যবস্থা সুপ্রতিষ্ঠিত তখন পশ্চিমা বিশ্ব তাদের লিবারেল জীবন দর্শনের উৎকর্ষ সাধনের প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে এই ট্রান্স বা লিংগ রুপান্তর বা জেন্ডার ডাইভারসিটির ধারণা নিয়ে আসে। পশ্চিমা সভ্যতার মূলভিত্তি স্যেকুলারিজম মানুষকে সকল বিষয়ে স্বাধীনতা দেয়। তাদের ব্যক্তি স্বাধীনতার পবিত্রতা রক্ষার্থে তারা মানুষের লিংগ পরিচয়কেও স্রষ্টার উপর ছেড়ে দিতে নারাজ। তারা মানুষকে তার বাস্তবিক লিংগ যাই হোক না কেন তার ইচ্ছামত একটি জেন্ডার নির্ধারণের স্বাধীনতা প্রদান করে। এরই আইনগত বৈধতা দিবে এই আইন। ফলে একজন নারী চাইলে তাকে পুরুষ এবং পুরুষ চাইলে নিজেকে নারী হিসেবে ঘোষণা করে তার অধিকার রক্ষায় রাষ্ট্রের কাছ থেকে আইনী সুরক্ষা পাবে। ব্যক্তি স্বাধীনতার বাস্তবায়নের ফলেই পশ্চিমা বিশ্বে অফিসিয়ালি এখন জেন্ডার দুইটা নয়। এই ব্যক্তি স্বাধীনতার কারণেই পশ্চিমারা একসময় lesbian, gay, bisexual এদেরকে বৈধতা দেয়, পরে Transgendered কে বৈধতা দেয়। এরপর জেন্ডারের সংখ্যায় আর কোন বাধা থাকলো না। তাদের একসময়ের LGB অধিকার আন্দোলন এখন LGBTQQIAAP…. এ পরিণত হয়েছে।
পশ্চিমারা যে আন্তর্জাতিক আইন, কনভেনশন ও প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করে পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ইত্যাদিকে সারাবিশ্বে রফতানি করেছে, ঠিক একই পদ্ধতিতে তারা ট্রান্স অধিকার তথা সমকামিতার অধিকারকে সারাবিশ্বে ছড়িয়ে দিচ্ছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস ট্রান্স অধিকার তথা সমকামিতার অধিকারকে মানবাধিকার হিসেবে ঘোষণা করেছে। তারা বলতে চায় যেসব দেশে ট্রান্স অধিকার তথা সমকামিতার অধিকার নেই সেসব দেশে আসলে মানবাধিকার নেই। তারা মুসলিম বিশ্বের পশ্চিমা নির্ভর স্যেকুলার সরকারগুলোকে দিয়ে প্রথমে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মানবাধিকার বা নারী অধিকার আইন এবং কনভেনশন সই করিয়ে নেয় এবং পরবর্তীতে এগুলোকে ব্যবহার করে ট্রান্স অধিকার তথা সমকামিতার অধিকারকে পুশ করে। বাংলাদেশ যেহেতু জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন International Covenant on Civil and Political Rights (ICCPR) এবং the Convention on the Elimination of All Forms of Discrimination against Women (CEDAW) সই করেছে, সেহেতু এখন তারা ট্রাঞ্জেন্ডার অধিকার আইনের জন্য পুশ করছে। দেশের সেক্যুলার নতজানু সরকার এজন্যই এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
সেক্যুলারিজম উদ্ভুত পশ্চিমা এই জেন্ডারিজমের বিষবাস্প ইতিমধ্যে পশ্চিমা সামাজিক পারিবারিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে৷ সেক্যুলারিজম উদ্ভুত শাসনব্যবস্থা গণতন্ত্র ইতিমধ্যে আমাদের রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে, পুঁজিবাদী অর্থনৈতিক ব্যবস্থা আমাদের অর্থনীতিকে ধ্বংস করেছে। এখন তারা এই জেন্ডারিজম তথা জেন্ডার স্বাধীনতার মাধ্যমে আমাদের আবহমান শান্তিপূর্ণ ইসলামী পারিবারিক কাঠামোকে ধ্বংস করে দিতে চায়। এই ট্রাঞ্জেন্ডার আইনের মাধ্যমে পুরুষ লিংগের ব্যক্তিরা নারীদের মাঝে, রুমে, গন্ডিতে ঢুকার আইনগত অধিকার পাবে। এর মাধ্যমে উত্তরাধিকার ব্যবস্থাপনা, পারিবারিক ব্যবস্থাপনা সবই ভেংগে পড়বে, সকল ক্ষেত্রে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে।
ইসলামে মানুষের পরিচয় কেবল নারী অথবা পুরুষ। আল্লাহ্ সুবহানাহু অ তা’আলা বলেন, “এবং পুরুষরা নারীদের মত নয়” (সূরা আলি-ইমরান: ৩৬)। এবং এই পরিচয় নির্ধারিত হয় শুধুমাত্র বাস্তবিক শারীরিক অবস্থার ভিত্তিতে, কারো ব্যক্তিগত ইচ্ছা-অনিচ্ছা বা পছন্দ-অপছন্দ ইত্যাদির ভিত্তিতে নয়। যদি কেউ হিজড়ার মত কোন প্রতিবন্ধিতা নিয়ে জন্ম নেয় তাহলে খলিফা বিশ্বস্থ দক্ষ ডাক্তার দ্বারা তার শারীরিক পরীক্ষা করার ব্যবস্থা করে তাকে নারী অথবা পুরুষ হিসেবে ঘোষণা করবেন। ইসলামে ট্রান্সজেন্ডারের ধারনা হারাম। ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেন, “রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) ভর্তসনা করেছেন সেসব পুরুষকে যারা নারীদের অনুকরণ করে এবং সেসব নারীকে যারা পুরুষদের অনুকরণ করে”। এমন স্পষ্ট সত্য ও স্বাভাবিক সমাধান দিয়েছে ইসলাম। এর ব্যতিক্রম যেকোন কিছু শুধু অযৌক্তিক ও অবাস্তবই নয় বরং চরম দূষিত ও ধ্বংসাত্মক।
– মোহাম্মদ তালহা হোসেন
“নির্বাচনে বাইরের থাবা পড়েছে: সিইসি”
খবরঃ
প্রধান নির্বাচন কমিশনার বলেন, ‘দুর্ভাগ্যজনক হলো আমাদের নির্বাচনে বাইরে থেকে থাবা বা হাত এসে পড়েছে। তারা আধিপত্য বিস্তার করে রেখেছে। আমাদের অর্থনীতি, আমাদের ভবিষ্যৎ, আমাদের অনেক কিছু রক্ষা করতে হলে নির্বাচন সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য করতে হবে।’ (https://www.newsbangla24.com/news/236217/ )
মন্তব্যঃ
আল্লাহ্-কে বাদ দিয়ে আইন প্রণয়ন ও শাসনের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা কিছু মানুষের হাতে তুলে দেয়ার ব্যবস্থা হচ্ছে গণতন্ত্র আর এতে নির্বাচন হচ্ছে কোন গোষ্ঠী এই একচ্ছত্র শাসন ক্ষমতা অর্জন করবে তা ঠিক করার অফিসিয়াল প্রক্রিয়া। গণতন্ত্রে শাসন করার আইনের মত শাসক নিয়োগের প্রক্রিয়াও মনগড়াভাবে পরিবর্তন করা যায়। যেহেতু এখানে কোন স্থির শারিয়া নাই, কিভাবে নির্বাচন হবে, নির্বাচনকালীন আইন-কানুন কি হবে এসবই প্রতিযোগী গোষ্ঠীগুলো নিজের সুবিধা অনুযায়ী চায়। নির্বাচন প্রক্রিয়া নিয়ে মতবিরোধ ও নির্বাচনী কর্মকান্ড সব মিলে একেকটি নির্বাচন যেন একেকটি যুদ্ধ। এই যুদ্ধ জয়ের জন্য উভয় গোষ্ঠী নিজেদের শক্তি বাড়ানোর জন্য দেশী-বিদেশী ক্ষমতাধর শক্তিগুলোর সাথে জোট গড়তে থাকে। এই হার্ডকোর স্বার্থের প্রতিযোগিতাই জনগণকে দেশী-বিদেশী শক্তির কাছে অবরুদ্ধ করে ফেলে।
যদিও বলা হয়ে থাকে গণতন্ত্রে জনগণ তার জন্য শাসক নিয়োগ করতে পারে, প্রকৃত বাস্তবতায় কোন গোষ্ঠী ক্ষমতায় আসবে তা নির্ধারিত হয় প্রতিদ্বন্দ্বী গ্রুপগুলোর শক্তির ব্যালেন্সের উপর। বাংলাদেশের নির্বাচনকে সামনে নিয়ে প্রতিবারই আওয়ামী গোষ্ঠী তার দেশী-বিদেশী পার্টনারদের নিয়ে একই রকম আরেকটি ব্লক বিএনপি গোষ্ঠীর মুখোমুখি হয়। ফলে এসব নির্বাচনে জনগণের কোন ভুমিকা থাকে না কিন্তু বিদেশী উপনিবেশবাদী দেশগুলোর থাকে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণ। তারা গণতন্ত্রের ছায়ায় আমাদের উপর নিজেদের স্বার্থের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হয়। এভাবেই গণতন্ত্র ও কলোনিয়ালিজম একে অপরের সাথে হাত মিলিয়ে চলে। তাই এই ব্যবস্থার নির্বাচন জনগণের ম্যান্ডেট নেয়ার জন্য নয়, বরং এর মূল উপযোগিতা উপনিবেশবাদী বিদেশীদের প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণের জন্য তাদের পছন্দের দালাল শাসক নিযুক্ত করার জন্য।
ইসলামী ব্যবস্থা ছাড়া অন্যকোন কিছুই গণতন্ত্র এবং গণতান্ত্রিক নির্বাচনের এই শৃঙ্খল থেকে আমাদের মুক্ত করতে পারবে না। ইসলামে খলিফা নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার শর্ত হচ্ছে এই যে তিনি জনগণ কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত। নিয়োগপ্রাপ্ত খলিফার সাথে প্রতিটি নাগরিকের আলাদা আলাদা বায়াত বা চুক্তি সম্পাদিত হয় এই শর্তে যে খলিফা তার নাগরিককে ইসলাম দিয়ে শাসন করবে এবং ইসলাম প্রদত্ত সকল অধিকার দিবে আর নাগরিকগণ খলিফার আনুগত্য করবে। আমাদের এই ভুমির নিরাপত্তা এখানকার মুসলিমদের হাতে আছে কারণ আমাদের আছে একটি শক্তিশালী মুসলিম সেনাবাহিনী। এই সেনাবাহিনী যেই খলিফাকে নিয়োগ করবে সেই খলিফাকে জনগণের নেতৃস্থানীয় অংশ এবং সাধারণ জনগণ বায়াত দেয়ার মাধ্যমে শক্তিশালী করবে। এই ব্যবস্থাটি অবশ্যই পূর্ণাঙ্গভাবে দেশী-বিদেশী স্বার্থান্বেষী মহলের প্রভাবমুক্ত হবে। খলিফার উপর অন্যকোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠী যদি প্রভাব বিস্তার করে ফেলে তাহলে তিনি খলিফা হওয়ার যোগ্যতা হারিয়ে ফেলবেন। “এবং কিছুতেই আল্লাহ্ মু’মিনদের উপর কাফিরদের কর্তৃত্বকে মেনে নিবেন না” (সুরা নিসা ১৪১)।
– মোহাম্মদ তালহা হোসেন