প্রেস বিজ্ঞপ্তি
بسم الله الرحمن الرحيم
ধর্মনিরপেক্ষ শাসনব্যবস্থার নিপীড়ন থেকে মুক্ত করতে হলে রোহিঙ্গা মুসলিমদেরকে খিলাফতের ছায়াতলে নিয়ে আসতে হবে
হাসিনা সরকারের নির্দেশে দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি কক্সবাজার জেলার কুতুবপালং শরণার্থী শিবিরে রোহিঙ্গা মুসলিমদের তিন হাজারেরও বেশি দোকান বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে, যার ফলে অসহায় এসব উদ্বাস্তুদের নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য ও আয়ের উৎস ধ্বংস হয়ে গেছে। এবং, সেই শরণার্থী শিবিরে এক বিশাল অগ্নিকান্ডের দরুন হাজার হাজার শরণার্থী গৃহহীন হয়ে যাওয়ার দিনকয়েকের মধ্যেই এসব ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়! এমনকি, এই ধ্বংসযজ্ঞের পূর্বে, ১৩/১২/২০২১ তারিখে, সরকারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার এসব শিবিরে রোহিঙ্গা শিশুদের জন্য স্থাপিত হাজার হাজার ‘কমিউনিটি ও হোম’-ভিত্তিক বিদ্যালয় বন্ধ করে দেয়, যার কারণে প্রায় ৩০,০০০ শিশু শিক্ষা লাভের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এটা স্পষ্ট যে, এই অপরাধী শাসকগোষ্ঠী রোহিঙ্গা মুসলিমদেরকে স্বাবলম্বী হতে দেবে না। তারা এটাই চায় যে শরণার্থীরা যেন বেঁচে থাকার জন্য বিদেশি সাহায্যের উপর নির্ভরশীল থাকে। যেহেতু, রোহিঙ্গাদের জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তার পরিমান দিনদিন হ্রাস পাচ্ছে, সেহেতু এই অপরাধী সরকার তাদের বিদ্যমান দুর্ভোগকে ক্রমাগত বাড়িয়ে তুলছে। সাহায্য ও অনুদানের নামে এই রোহিঙ্গা সঙ্কট ইতিমধ্যেই তাদের জন্য বিশাল আর্থিক সুবিধা এনে দিয়েছে, যার বেশিরভাগই দরিদ্র শরণার্থীদের কাছে পৌঁছায় না। ধর্মনিরপেক্ষ-পুঁজিবাদী শাসকদের কাছে অধিক সংকটের মানে হচ্ছে আরও অধিক অর্থ উপার্জনের সুযোগ। তারা মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষার ব্যাপারে কোনো দায়বদ্ধতা অনুধাবন করে না। তারা কেবল লাভ বা ব্যক্তিগত সুবিধার মাপকাঠিতে সবকিছু বিচার করে।
এবং, রোহিঙ্গাদের মুসলিমদেরকে মানবিক সংকটের বিষয়ে পশ্চিমাদেশসমূহের নিন্দা জানানোর ঘটনা কোনো গুরুত্ব বহন করে না। কারণ, তারা তাদের অর্থনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য নিজেদের ভূ-খন্ডেও মুসলিম উদ্বাস্তুদের দুর্দশাকে ব্যবহার করে। অন্যান্য দেশের ক্ষেত্রে তারা এই সঙ্কটকে স্থায়ী হতে দেয়, কারণ এটিকে তারা এসব দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়াদিতে হস্তক্ষেপ করার অজুহাত হিসেবে কাজে লাগায়। অন্যথায়, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক বিশেষ দূত টম অ্যান্ড্রুজের মিয়ানমার সফরের পরপরই কিভাবে এই পশ্চিমা পুতুল সরকার রোহিঙ্গা মুসলিমদের জীবিকা ও শিক্ষার সুযোগ নষ্ট করার সাহস করতে পারে, যে কিনা বাংলাদেশে তার সফরের সময় হাসিনা সরকারকে শরণার্থীদের নিরাপত্তা ও জীবিকার সুযোগ নিশ্চিত করতে বলেছিল।
হে দেশবাসী! আমরা কখনই রোহিঙ্গা মুসলিমদের দুঃখ-দুর্দশা দূর করতে পারব না, যদি না আমরা এই ধর্মনিরপেক্ষ শাসনব্যবস্থার পাশাপাশি এর গর্ভ থেকে জন্মলাভ করা এসব নিষ্ঠুর শাসকদের কবল থেকে পরিত্রাণ লাভ করতে পারি। আল্লাহ্ আজ্জা ওয়া জ্বাল অসহায় মুসলিমদের সাহায্যে এগিয়ে আসাকে বাধ্যতামূলক করে দিয়েছেন: “আর যদি তারা দ্বীনের ব্যাপারে তোমাদের সাহায্য চায় তবে তাদেরকে সাহায্য করা তোমাদের অবশ্য কর্তব্য…” (আল-আনফাল: ৭২)। কিন্তু, হাসিনা সরকার আল্লাহ্ সুবহানাহু তা‘আলা’র নির্দেশ লঙ্ঘনেও পরোয়া করে না, কারণ তারা ইসলাম ও উম্মাহ্’র প্রতিনিধিত্ব করে না। তাই এসব দুর্বৃত্তরা রোহিঙ্গাদেরকে দুর্ভোগ থেকে মুক্তি না দিয়ে দিন দিন তাদের জীবনকে আরও দুর্বিষহ করে তুলছে।
হে প্রজ্ঞাসম্পন্ন ও দূরদর্শী ব্যক্তিবর্গ! জাতিসমূহের ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকান এবং দেখুন, আপনারা কি খিলাফত ছাড়া অন্যকোন সত্তা খুঁজে পান যেটি আন্তরিকভাবে মানবতার বিষয়সমূহ দেখাশোনা করেছে? এমনকি মুসলিমদের প্রতি সবচেয়ে শত্রুভাবাপন্ন ইহুদিরাও উসমানীয় খিলাফতের অধীনে শান্তিপূর্ণ আশ্রয় খুঁজে পেয়েছিল, ১৪৯২ সালে স্প্যানিশ আলহামরা ডিক্রি থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময়ে সুলতান দ্বিতীয় বায়েজিদ তার নৌবাহিনী নিয়ে তাদেরকে উদ্ধার করেছিলেন। সুতরাং, নবুয়্যতের আদলে খিলাফত রাশিদাহ্ রাষ্ট্র ফিরিয়ে আনার জন্য কঠোর পরিশ্রম করুন। ধর্মনিরপেক্ষ অত্যাচারের কবল থেকে মানবতাকে বাঁচাতে খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠা ব্যতিরেকে আর কোনো সমাধান নেই।
হিযবুত তাহ্রীর / উলাই’য়াহ্ বাংলাদেশ–এর মিডিয়া কার্যালয়