بسم الله الرحمن الرحيم
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
হে দেশবাসী, উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকন (ISKCON) হলো ভারতের প্রক্সি। ইসকনকে নিষিদ্ধসহ ভারতের সাথে সকল কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবী তুলতে হবে
মুশরিক রাষ্ট্র ভারতের প্রক্সি উগ্র হিন্দুত্ববাদীগোষ্ঠী ইসকনের নেতাকে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকান্ডের কারণে গ্রেপ্তারকে কেন্দ্র করে তার সমর্থকেরা আদালত চত্বরে ব্যাপক সংখ্যক নিরাপত্তাবাহিনীর উপস্থিতির মধ্যে নজিরবিহীন এক বিশৃঙ্খলা ও ত্রাসের সৃষ্টি করে। এমনকি তারা আদালত চত্বরের মসজিদে হামলা ও ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ড চালিয়েছে, যেভাবে ভারতে হিন্দুত্ববাদীরা মসজিদে হামলা চালায়। এক পর্যায়ে প্রকাশ্য দিবালোকে সাইফুল ইসলাম আলিফ (৩৫) নামের একজন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে তার চেম্বার থেকে জোরপুর্বক ধরে নিয়ে জবাই করে হত্যা করার দুঃসাহসের দৃষ্টান্ত স্থাপন করে। সাইফুল ইসলামের মা আর্তনাদ করে বলেছেন, “আমার তাহাজ্জুদগুজার ছেলেকে কিভাবে গলাকেটে হত্যা করল ওরা” (নয়াদিগন্ত, ২৬ নভেম্বর, ২০২৪)। দেশের ধর্মনিরপেক্ষ-গণতান্ত্রিক রাজনীতিবিদ ও গণমাধ্যমসমূহ নৈতিকভাবে এমন দেউলিয়া যে, তারা সত্য ঘটনাকে প্রকাশ করতে পর্যন্ত ইতস্তত বোধ করেছে! পরবর্তীতে স্যোশাল মিডিয়ায় এই নৃশংসতা প্রকাশিত হয়ে গেলে, দেশের মূলধারার গণমাধ্যম তারপরও প্রকৃত ঘটনাকে আড়াল করেছে- তারা বলেছে, পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষের কারণে এই আইনজীবীর মৃত্যু ঘটে। এই ঘটনার মাধ্যমে প্রতীয়মান হয়, মুশরিক রাষ্ট্র ভারত অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্রের মত মুসলিমদের উপর নৃশংসতার হস্তকে তার বর্ডার ক্রস করে এইদেশ পর্যন্ত প্রসারিত করতে তার অন্যতম প্রক্সি বাহিনী ইসকনকে ব্যবহার করছে। আল্লাহ্ ﷻ বলেন, “নিশ্চয়ই মুসলিমদের বিরুদ্ধে শক্রতায় সকল মানুষের মধ্যে ইহুদী ও মুশরিকদেরকেই আপনি সর্বাধিক উগ্র পাবেন” [সূরা আল-মায়িদাহ্: ৮২]।
দেশের নতজানু রাজনৈতিক দলসমূহ ভারত ও তার প্রক্সি ইসকনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের প্রস্তাব না করে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের ভয় দেখিয়ে দেশব্যাপী মুসলিমদেরকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। বরং, তাদের দাসসূলভ মনোভাব ও সংযম নীতি কারণেই ভারত আমাদের দেশের উপর তার আগ্রাসনের মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি করছে। ভারত প্রতিনিয়ত ‘সংখ্যালঘু’র উপর আক্রমনের তকমা লাগিয়ে এদেশের মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী অপপ্রচার চালিয়ে যাচ্ছে। ভারতের এই অপপ্রচারকে ধর্মনিরপেক্ষ-গণতান্ত্রিক দালালগোষ্ঠী রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা না করে ঐ তকমাকেই এদেশের ইসলামপ্রিয় জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহার করছে। ফলে ৯০% মুসলিম অধ্যুষিত এই ভূখণ্ডে মুসলিমরাই অভিভাবকহীন সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছে। এইভাবে ধর্মনিরপেক্ষ-গণতান্ত্রিক দালালগোষ্ঠী ভারতের কৃপা লাভের প্রত্যাশায় মুসলিমদেরকে ত্যাগ করছে, মুসলিমদের রক্তকে অবজ্ঞা করছে, ইসলাম ও মুসলিমদের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছে। অথচ রাসূলুল্লাহ্ ﷺ মুসলিমদের মর্যাদা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তাওয়াফরত অবস্থায় পবিত্র কাবাকে লক্ষ্য করে বলেন, “…নিশ্চয়ই সেই সত্তার শপথ, যার হাতে মুহাম্মদের প্রাণ! আল্লাহ্’র নিকট একজন মুসলিমের পবিত্রতা, সম্পদ ও রক্ত তোমার (কা‘বার) পবিত্রতার চেয়েও অধিক মর্যাদাবান” (ইবনে মাজাহ্)। হে দেশবাসী, ভারতের সাথে সুসম্পর্ক বজায় রেখে শুধু উগ্র হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ইসকন-কে নিষিদ্ধ করলে বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন হবে না। তাই ভারতকে শত্রুরাষ্ট্র ঘোষণা করে ভারতের সাথে সকল কূটনীতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবী তুলতে হবে।
প্রিয় দেশবাসী, আপনারা প্রত্যক্ষ করেছেন, ঠিক এই সময়ে যখন ভারতের একটি মসজিদে উগ্র হিন্দুবাদীরা হামলা করে বহু মুসলিমকে হতাহত করেছে, তখন দেশের ধর্মনিরপেক্ষ-গণতান্ত্রিক শক্তি ন্যুনতম নিন্দা জানাতেও ব্যর্থ হয়েছে। অথচ তারাই ভারতকে বিশ্বের সর্ববৃহৎ গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে প্রশংসা করতে কোন কৃপনতা করে না। অন্যদিকে, এদেশের ইসলামী জাতীয়তাবাদের পতাকাবাহীরা ভারতকে মোকাবিলায় আমেরিকার সাথে বন্ধুত্বকে অনিবার্য মনে করে। অথচ ভারত অত্র অঞ্চলে পশ্চিমাদের স্বার্থরক্ষায় চৌকিদারের ভূমিকা পালন করছে এবং ভারত ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে আমেরিকার সামরিক জোট ‘QUAD’-এর সদস্য। আর আমেরিকা হচ্ছে অভিশপ্ত ইহুদীগোষ্ঠীর একনম্বর মদদ দাতা। অতএব, দালাল গোষ্ঠীর নতজানু নীতি এবং আমেরিকার মদদের ভারতের মত অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক বিভক্তিতে জর্জরিত ও ভঙ্গুর রাষ্ট্র এদেশের মুসলিমদের উপর হস্তক্ষেপ করার সুযোগ পাচ্ছে। হে মুসলিমগণ, আর কোন দৃষ্টান্ত উপস্থিত হলে আপনাদের সামনে বর্তমান ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক রাজনীতির মুখোশ উন্মোচিত হবে! আল্লাহ্ ﷻ বলেন, “হে মু‘মিনগণ, তোমরা ইহুদী ও নাসারাদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তারা একে অপরের বন্ধু। আর তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে নিশ্চয় তাদেরই একজন” [সূরা আল-মায়িদাহ্: ১২০]।
হে মুসলিমগণ, রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন, “একমাত্র ইমাম (খলিফা) হচ্ছে সে ঢাল, যার পেছনে তোমরা যুদ্ধ কর এবং তোমরা নিজেকে রক্ষা কর” (মুসলিম)। মুসলিম উম্মাহ্’র প্রকৃত অভিভাবক খিলাফত ব্যবস্থার অনুপস্থিতির কারণেই মুসলিম উম্মাহ্ প্রকৃতপক্ষে রাষ্ট্রহীন ইয়াতিম জাতিতে পরিণত হয়েছে এবং বিশ্বের বৃহৎ জাতি হওয়া সত্ত্বেও সর্বত্র নির্যাতিত ও অপমানিত হচ্ছে। তাই আপনাদের এই ঢাল-নবুয়তের আদলে খিলাফত ফিরিয়ে আনতে আপনারদেরকে হিযবুত তাহ্রীর-এর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। হে মুসলিমগণ, ভারতের প্রতি নতজানু এই দালালগোষ্ঠীর নিকট আপনাদের দাবী ও আর্তনাদ জানিয়ে কোন লাভ নাই। আপনাদের দাবী জানাতে হবে, সামরিক বাহিনীতে কর্মরত আপনাদের সন্তানদের নিকট, যাদের হাতে রয়েছে ক্ষমতার চাবি। তারা যেভাবে আপনাদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে ভারতের দালাল হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে, তারাই পারে আপনাদের আকাঙ্খা পূরণে খিলাফত প্রতিষ্ঠায় হিযবুত তাহ্রীর নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর করতে। সামরিক অফিসারগণও খিলাফত প্রতিষ্ঠার পক্ষে ইতিবাচক, তারা আপনাদের পক্ষ হতে খিলাফত প্রতিষ্ঠার জোরালো দাবী দেখতে চায়। তাই তাদের বরাবর আপনারা জোর দাবী জানান, যেন তারা খিলাফত প্রতিষ্ঠায় হিযবুত তাহ্রীর-কে নুসরাহ্ প্রদান করে। একমাত্র খিলাফত রাষ্ট্রই পারবে ভারতের এই হস্তকে রুদ্ধ করতে এবং অত্র অঞ্চলে স্থিতিশীলতা ফিরিয়ে আনতে।
হে সামরিক বাহিনীর নিষ্ঠাবান অফিসারগণ! আপনারা নিশ্চয়ই আপনাদের মহান দ্বীনের কারণে সম্মানবোধ করেন। আল্লাহ্ ﷻ বলেন, “তোমরাই সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি, তোমাদেরকে উদ্ভব ঘটানো হয়েছে মানবজাতির জন্য। তোমরা সৎকাজে নির্দেশ দিবে, অসৎকাজে নিষেধ করবে এবং আল্লাহ্’র উপর দৃঢ় ঈমান রাখবে” [সূরা আলি-ইমরানঃ ১১০]। এই শ্রেষ্ঠত্বের কারণে, আপনাদের পুর্বসূরী উমাইয়া খিলাফতের বীর সেনাপতি মোহাম্মদ বিন কাসিম ৭১২ সালে মাত্র ১৭ বছর বয়সে তৎকালীন অত্যাচারী রাজা দাহিরকে পরাজিত করে সিন্ধু জয় করে এত্র অঞ্চলের জনগণকে জুলুম থেকে মুক্ত করেন। তাহলে আপনারা কেন আপনাদের হাতের নাগালে মুসলিম ভাই-বোনদের সাহায্যে এগিয়ে আসতে পারছেন না? আপনারা কেন পিলখানায় ভারতের ষড়যন্ত্র থেকে আপনাদের সহকর্মীদের রক্তকে ও নিজের প্রতিষ্ঠানকে সুরক্ষা করতে পারেন নাই? আপনাদের মধ্যে সাহসী সৈনিক থাকলেও কেন আপনারা দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে এগিয়ে আসতে পারছেন না এবং ভারতকে সমুচিত জবাব দিতে পারছেন না? আপনারা প্রত্যাশা করেছিলেন, বিপ্লবোত্তর বাংলাদেশে দালালীর রাজনীতির অবসান হবে এবং পিলখানা ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার হবে, কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি প্রত্যক্ষ করে জনগণের মত নিশ্চয়ই আপনারাও প্রতারিত বোধ করছেন। এর মূল কারণ হচ্ছে, পশ্চিমাদের দালাল ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক গোষ্ঠী যারা আপনাদেরকে উপনিবেশবাদের শৃঙ্খল পরিয়ে রেখেছে এবং তারাই পশ্চিমা উপনিবেশবাদী ও তাদের আঞ্চলিক দোসরদের ফার্স্ট লাইন অফ ডিফেন্স। তারাই খিলাফত প্রতিষ্ঠার পথে প্রধান বাধা। তাই আপনাদেরকে এই বাধা অতিক্রম করে আপনাদের আত্মমর্যাদা ও সম্মানকে ফিরিয়ে আনতে হবে এবং খিলাফত প্রতিষ্ঠায় হিযবুত তাহ্রীর-এর নিকট নুসরাহ প্রদান (ক্ষমতা হস্তান্তর) করতে হবে।
﴿… وَكَانَ حَقًّا عَلَيْنَا نَصْرُ الْمُؤْمِنِينَ﴾
“… এবং মু‘মিনদেরকে সাহায্য করা আমার (আল্লাহ্র) দায়িত্ব” [সূরা আর-রুমঃ ৪৭]।
হিযবুত তাহ্রীর / উলাই‘য়াহ্ বাংলাদেশ–এর মিডিয়া অফিস