প্রেস বিজ্ঞপ্তি
بسم الله الرحمن الرحيم
হাসিনা সরকার বৃটেনের সেবায়, রোহিঙ্গা মুসলিমদের গণহত্যাকারী মিয়ানমারের বৃটেন সমর্থিত জান্তা সরকারকে রক্ষায় প্রক্সি যুদ্ধে যুক্ত হচ্ছে
মিয়ানমারের রাখাইনে বিদ্রোহীগোষ্ঠী আরাকান আর্মির সঙ্গে মিয়ানমারের সামরিক জান্তার মধ্যে চলমান তীব্র লড়াইয়ের জেরে নিরাপদ আশ্রয়ে আবারও বাংলাদেশে পালিয়ে আসছে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) ও সেনাবাহিনীর শতাধিক সদস্য [দৈনিক জনকণ্ঠ, ১২ জুলাই, ২০২৪]। প্রতিনিয়ত পালিয়ে আসা খুনি জান্তা বাহিনীর সদস্যদের হাসিনা সরকার অনতিবিলম্বে ফেরত পাঠিয়ে জান্তা সরকারের সেনাবহরকে পূর্ণ করছে। ফলে বিদ্রোহীদের দমন করতে খুনি জান্তা বাহিনী (যাদের হাত রোহিঙ্গা মুসলিমদের রক্তে রঞ্জিত) আমাদের ভূমিকে “বাফার জোন” হিসেবে ব্যবহার করছে। এছাড়া, সেন্টমার্টিন থেকে অদূরে বাংলাদেশের জলসীমায় ভারী গোলাবারুদ ও মর্টার শেল বোঝাই করা জান্তা বাহিনীর তিনটি যুদ্ধজাহাজ অবস্থান করে দেশটির জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর জোট ‘আরাকান আর্মির’ বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে এবং এই জাহাজসমূহ থেকে ছোঁড়া ভারী গোলাবারুদ ও মর্টার শেলের শব্দে দ্বীপজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে [দৈনিক আমাদের সময়, জুন ১৪, ২৯২৪]। সেন্টমার্টিন দ্বীপ থেকে ট্রলারে করে ফেরার সময় মিয়ানমার থেকে ছোড়া গুলিতে আলী জোহার নামে এক যুবক গুলিবিদ্ধ হয়েছেন [যমুনা টিভি, জুন ১৩, ২০২৪]। ১৬ জুন, ২০২৪ আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর), বাংলাদেশ-এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মিয়ানমারে চলমান অভ্যন্তরীণ সংঘর্ষের প্রেক্ষিতে মিয়ানমার সামরিক বাহিনী রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মির বিরুদ্ধে যৌথ অপারেশন পরিচালনা করছে। মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী এবং আরাকান আর্মির এই সংঘর্ষের কারণে সীমান্তবর্তী নাফ নদী এবং নদী সংলগ্ন মোহনা এলাকায় বাংলাদেশী বোটের উপর অনাকাঙ্খিত গুলিবর্ষনের ঘটনা ঘটে। এই পরিস্থিতিতে সরকার জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত সেন্টমার্টিনসহ আশেপাশের সমুদ্র এলাকায় সামরিক বাহিনী মোতায়েন না করে গুরুত্বপূর্ণ সেন্টমার্টিন দ্বীপের সাথে মূল ভূখণ্ডের সকল যাতায়ত ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে ফেলে এবং দ্বীপের বাসিন্দাদের অবরুদ্ধ করে ফেলে। যার ফলে সেখানে ঔষধসহ তীব্র খাদ্য সংকট দেখা দেয়। প্রকৃতপক্ষে, সরকার মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহীগোষ্ঠীকে দমন করতে জান্তা সরকারের নৌবাহিনীর জন্য বাফার জোন সৃষ্টি করতেই এই পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। সামরিক ও নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের সমালোচনার মুখে সরকার মিয়ানমারের জাহাজের গতিবিধি পর্যবেক্ষন করতে নামকাওয়াস্তে নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ড প্রেরণ করে, ফলে এখন পর্যন্ত সেন্টমার্টিন দ্বীপ বিচ্ছিন্ন রয়েছে এবং জনগণের স্বাভাবিক চলাচল পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয় নাই। এভাবে হাসিনা তার প্রভু বৃটেনের সেবায় রোহিঙ্গা মুসলিমদের গণহত্যাকারী মিয়ানমারের ব্রিটিশ জান্তা সরকারকে রক্ষায় প্রক্সি যুদ্ধে যুক্ত হয়েছে এবং মুসলিম উম্মাহ্’র সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করছে।
হে দেশবাসী! ইতিপূর্বে আপনারা প্রত্যক্ষ করেছেন, হাসিনা সরকার অভ্যন্তরীণ যুদ্ধে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গা মুসলিমদের পুশব্যাক করে, কিন্তু বিদ্রোহীগোষ্ঠীর আক্রমণে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা মুসলিম হত্যাকারী সেনা-বিজিপি সদস্যদের পুশব্যাক না করে আশ্রয় প্রদান করে। নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের পরামর্শ ও তথাকথিত আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী তাদের যুদ্ধবন্দী হিসেবে গণ্য করে জান্তা সরকারের উপর রোহিঙ্গা প্রত্যাবর্সনের চাপ তৈরি করে নাই, বরং এই খুনি বাহিনীকে ফুল দিয়ে বরণ করে জামাই আদর করে। এবং বিলম্ব না করে তাদেরকে নিজ দেশে ফেরত পাঠিয়ে জান্তা সরকারের সেনাবহরকে পূর্ণ করতে সাহায্য করে। আল্লাহ্ ﷺ বলেন, “হে ঈমানদারগণ, তোমাদের সীমান্তবর্তী কাফিরদের সাথে যুদ্ধ কর এবং তারা যেন তোমাদের মধ্যে কঠোরতা খুঁজে পায়। আর জেনে রাখ, আল্লাহ্ ন্যায়নিষ্ঠদের সাথে আছেন [সুরা আত-তওবাঃ ১২৩]। এইভাবে, হাসিনা সরকার বৃটেনের সেবায়, বৃটেন সমর্থিত জান্তা সরকারের সাহায্যে দেশের সার্বভৌমত্বকে লঙ্ঘন করছে এবং আমাদের রোহিঙ্গা মুসলিম ভাইবোনদের স্বার্থকে ত্যাগ করেছে।
হে দেশবাসী, আপনারা জানেন, আরাকান রাজ্যের বাসিন্দা রোহিঙ্গা মুসলিমদেরকে জাতিগতভাবে নির্মূল করার উদ্দেশ্যে মিয়ানমারের ব্রিটিশ জান্তা সরকার দশকের দশক ধরে পদ্ধতিগতভাবে হামলা, উগ্র বৌদ্ধভিক্ষুদের দ্বারা ধর্মীয় সংঘাত তৈরি, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগ, রোহিঙ্গা পুরুষদের হত্যা, শিশুদের জবাই, নারীদের ধর্ষণ, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগ এবং লুঠতরাজ চালিয়ে তাদেরকে ব্যাপকহারে বাস্তুচ্যুত করে। আর হাসিনা সরকার আশ্রয়ের নামে লাখ লাখ রোহিঙ্গা মুসলিমদেরকে কাটাতারের বেড়ায় আবদ্ধ করে মিয়ানমার জান্তা সরকারকে তাদের প্রতিরোধ থেকে রক্ষা করছে। আল্লাহ্ ﷻ-এর ইচ্ছায় মূর্খ এই বৌদ্ধ জাতি এখন নিজেরাই জাতিগত দ্বন্দ্বে লিপ্ত এবং মার্কিনীদের ভূ-রাজনৈতিক কৌশলের বেড়াজালে আক্রান্ত। “আর তোমাদের প্রতি যে বিপর্যয় আপতিত হয়, তা তোমাদের কৃতকর্মেরই ফল” [আশ-শূরাঃ ৩০]। আর কাফির-মুশরিকদের স্বার্থের দ্বন্দ্ব ও জনগণের ক্ষোভে বিশ্বাসঘাতক হাসিনার গদিও পতনের দ্বারপ্রান্তে।
হে দেশবাসী! আল্লাহ্ ﷺ এসব নির্বোধ শাসকদের হাতে দেশের জনগণের জান-মালের দায়িত্ব অর্পণ করতে নিষেধ করেছেন, “আর তোমরা নির্বোধ (নেতৃত্ব)-দের হাতে তোমাদের ধন–সম্পদ (দায়িত্ব) অর্পণ করো না” [সুরা নিসাঃ ৫]। আর মার্কিন দালাল বিএনপিগোষ্ঠী আরাকান আর্মির সাথে সম্পর্ক স্থাপন করার যে প্রস্তাবনা হাজির করছে তা মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থকে এগিয়ে নিবে। রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেন, “ইমাম (খলিফা) হচ্ছেন রক্ষাকবজ যার অধীনে তোমরা যুদ্ধ কর এবং নিজেদের রক্ষা কর” (সহীহ্ মুসলিম)। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা ও রোহিঙ্গা মুসলিমদের পুনর্বাসন করার একমাত্র উপায় হচ্ছে আরাকানকে পুনরায় আমাদের ভূমির সাথে একীভূত করা। তাই অনতিবিলম্বে আপনাদেরকে হিযবুত তাহ্রীর-এর নেতৃত্বে নব্যুয়তের আদলে খিলাফত প্রতিষ্ঠার কাজে অগ্রগামী হতে হবে এবং এই লক্ষ্যে হিযবুত তাহ্রীর-কে নুসরাহ্ (ক্ষমতা) প্রদান করতে সামরিক অফিসারদের নিকট জোর দাবী জানাতে হবে।
﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَجِيبُوا لِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُحْيِيكُمْ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ يَحُولُ بَيْنَ الْمَرْءِ وَقَلْبِهِ وَأَنَّهُ إِلَيْهِ تُحْشَرُونَ﴾
“হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহ্ এবং তাঁর রাসূলের সেই আহ্বানে সাড়া দাও যেই আহ্বান তোমাদেরকে প্রাণবন্ত (Vitality) করে। আর জেনে রাখ, আল্লাহ্ একজন ব্যক্তি ও তার হৃদয়ের মাঝে অবস্থান করছেন এবং তাঁর কাছেই তোমাদের সকলকে সমবেত করা হবে [আল-আনফালঃ ২৪]।
হিযবুত তাহ্রীর / উলাই‘য়াহ্ বাংলাদেশ–এর মিডিয়া অফিস