হাসিনা সরকার তার দলের ‘রাজনৈতিক এলিট’ এবং কতিপয় পুঁজিপতিদের পদ্ধতিগত দুর্নীতিকে ‘হোয়াইট ওয়াশ’ করতে পুলিশের সাবেক আইজি বেনজির আহমেদকে বলির পাঁঠা বানিয়েছে

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

بسم الله الرحمن الرحيم

হাসিনা সরকার তার দলের ‘রাজনৈতিক এলিট এবং কতিপয় পুঁজিপতিদের পদ্ধতিগত দুর্নীতিকে ‘হোয়াইট ওয়াশ করতে পুলিশের সাবেক আইজি বেনজির আহমেদকে বলির পাঁঠা বানিয়েছে

বর্তমান সরকারের পেটোয়া বাহিনী পুলিশ এবং দুর্বৃত্ত বাহিনী RAB-এর সাবেক প্রধান বেনজির আহমেদ ও তার পরিবারের প্রায় হাজার কোটি টাকার সম্পদের বিবরণ সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। দেশের জনগণ তার এই সম্পদের ফিরিস্তি জেনে মোটেই আবাক হয়নি; বরং জনগণ অবাক হয়েছে এই মুহুর্তে কোন কারণে হাসিনা সরকার তার অনুগত এই গোলামকে বলির পাঁঠা বানালো। প্রকৃতপক্ষে, দুর্নীতিবাজ ও লুটেরাদের শিরোমণি (crown) হাসিনা তার সরকারের রাজনৈতিক এলিট এবং কতিপয় পুঁজিপতিদের পদ্ধতিগত দুর্নীতিকে ‘হোয়াইট ওয়াশ’ করতে কয়েক বছর পর পর ধারাবাহিকভাবে এই জাতীয় গোলামদেরকে বলির পাঠা বানায়। পঁচনশীল এই ধর্মনিরপেক্ষ শাসনের আশীর্বাদে আইনি লড়াইয়ের মাধ্যমে দায়মুক্তি নিয়ে তারা আবারও স্বাভাবিক জীবনে ফেরত এসে এই অবৈধ সম্পদ ভোগ করে। ‘ক্যাসিনো সম্রাট’ এবং ‘সাহেদ গং’ গ্রেপ্তার, এমপি পাপুল, তার স্ত্রী ও মেয়ের ৬১৭টি ব্যাংক হিসাব জব্দ, ইত্যাদি হলো এরকমই কিছু সস্তা নাটকের উদাহরণ, যা ব্যাপকভাবে প্রচার করে হাসিনা সরকার তার দুর্নীতির প্রকৃত চিত্রকে আড়াল করে। এবং প্রচার করে দুর্নীতিবাজ দলীয় বা অনুগত লোক হলেও সরকার তাদেরকে ছাড় দেয় না।

সচেতন জনগণ ভাল করেই জানেন, হাসিনা সরকার ব্যাংক লুটেরাদের অর্থ যোগান দিতে হাজার হাজার কোটি টাকা ছাপিয়ে পরোক্ষভাবে জনগণের উপর এর বোঝা আরোপ করেছে এবং তাদের শেষরক্ষা করতে ব্যাংকগুলোকে একত্রীকরণের পদক্ষেপ নিয়েছে। ‘রাজপুত্র’ সজীব জয়ের ডিজিটাল চুরি এবং বাষট্টি বিলিয়ন ডলারের দুর্নীতি সামাজিক মাধ্যমে ‘টক অব দ্যা টাউন’ হলেও তার কোন সদুত্তর এখনও মিলে নাই। ‘সামান্য’ এক সামিট গ্রুপের কর্ণধার আজিজ খানের নাম হাসিনা সরকারের আমলের বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খাতের ব্যাপক লুটপাটের কল্যানে সিঙ্গাপুরের শীর্ষ বিলিয়নিয়ারদের তালিকায় উঠে এসেছে, ফোর্বসের হিসাব অনুযায়ী সিঙ্গাপুরে যার অন্তত ১.১২ বিলিয়ন ডলারের সম্পদ রয়েছে। শেখ পরিবারের ক্যাশিয়ার হিসেবে খ্যাত দেশের ব্যাংকখাত লুটপাটের পোস্টারবয় এস আলমের বিরুদ্ধে ব্যাংক লুট ও সিঙ্গাপুরে অন্তত ১ বিলিয়ন ডলার পাচারের সংবাদ প্রকাশিত হলেও দেশের সেক্যুলার লর্ড সুপ্রীমকোর্টের চেম্বার আদালত এস আলমের তদন্ত স্থগিত করে আদেশ প্রদান করে। আর পানামা পেপার্স ডকুমেন্টস এবং সুইস ব্যাংকের প্রতিবেদনে যাদের নাম আছে তারাতো ধরাছোঁয়ার বাইরে। এসব পদ্ধতিগত দুর্নীতির উদাহরণ ‘ন্যুনতম কিন্তু শেষ নয়’। বাস্তবতা হলো দুর্নীতি হচ্ছে বিদ্যমান স্রষ্টা বিবর্জিত ধর্মনিরপেক্ষ ব্যবস্থার অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং দুর্নীতিগ্রস্থ শাসক ও পুঁজিপতিগোষ্ঠী তৈরির কারখানা। কারণ এই আদর্শ মানুষকে সর্বোচ্চ পার্থিব সুবিধা অর্জনের প্রতি মোহাচ্ছন্ন করে এবং পরকালের বিচার দিবসকে তার চিন্তা থেকে বিতারিত করে, অর্থাৎ ‘দুনিয়াটা মস্ত বড়, খাও দাও পূর্তি কর’। আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, “প্রাচুর্যের প্রতিযোগিতা তোমাদেরকে মোহাচ্ছন্ন রাখে, যতক্ষণ না তোমরা কবর পর্যন্ত পৌঁছে যাও [আত-তাকাসুরঃ ১-২]।

          হে দেশবাসী, এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের একমাত্র উপায় হচ্ছে, সমাজ থেকে ধর্মনিরপেক্ষ চিন্তা সমূলে উৎপাটন করা এবং  খিলাফত শাসন ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা। খিলাফত শাসনব্যবস্থায় সকল আইন-কানুন আল্লাহ্’র আদেশ-নিষেধের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়; ফলে কোন শাসক যেমন আইন করে তার লুটপাটকে বৈধতা দিতে পারে না, ঠিক তেমনি কারো অপরাধ থেকে তাকে দায়মুক্তি ও শাস্তি থেকে অব্যাহতিও দিতে পারে না। মক্কার সম্ভ্রান্ত ও প্রভাবশালী বানু মাখযুম গোত্রের একজন মহিলা চুরির অপরাধে অভিযুক্ত ও দোষী সাব্যস্ত হলে মুসলিমদের কেউ কেউ শাস্তি হিসেবে তার হাত না কাটার সুপারিশ নিয়ে রাসলুল্লাহ্ ﷺ-এর নিকট হাজির হলে রাসলুল্লাহ্ ﷺ প্রচন্ড রাগান্বিত হয়ে বলেন: “তুমি কী আমার কাছে এমন বিষয়ে সুপারিশ করতে এসেছ যেখানে আল্লাহ্র বিধান প্রযোজ্য?” “তোমাদের পূর্বের অনেক জাতিকে আল্লাহ্ ধ্বংস করে দিয়েছেন এই কারণে যে তারা তাদের সম্ভ্রান্ত ও ধনীরা চুরি (অপরাধ) করলে মাফ করে দিত, কিন্তু কোন গরীব অপরাধ করলে তার উপর আল্লাহ্র নির্ধারিত শাস্তি কার্যকর করত। আল্লাহ্র কসম! যদি আমার মেয়ে ফাতিমার বিরুদ্ধেও চুরির অভিযোগ প্রমাণিত হত তাহলে আমি তার হাতও কেটে দিতাম” (বুখারী, নাসাঈ ও ইবনে মাজাহ্)।

 

 

হিযবুত তাহ্‌রীর / উলাই‘য়াহ্‌ বাংলাদেশ-এর মিডিয়া অফিস