হাসিনা ও তার পরিষদবর্গ ক্ষমতায় টিকে থাকতে খোদাদ্রোহী ফিরাউনের কায়দায় জনগণকে শাসন করছে “আর ফেরাউনের অপকৌশল কেবল তার ধ্বংসই ডেকে এনেছিল” [সূরা গাফিরঃ ৩৭]

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

بسم الله الرحمن الرحيم

হাসিনা ও তার পরিষদবর্গ ক্ষমতায় টিকে থাকতে খোদাদ্রোহী ফিরাউনের কায়দায় জনগণকে শাসন করছে

“আর ফেরাউনের অপকৌশল কেবল তার ধ্বংসই ডেকে এনেছিল [সূরা গাফিরঃ ৩৭]

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সরকারী চাকুরীতে কোটাসংস্কার (বিদ্যমান ৫৬% কোটা কমিয়ে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগের) দাবীকে দমন করতে হাসিনার নির্দেশে তার দলীয় ক্যাডার ও নিরাপত্তা বাহিনী দেশব্যাপী লোহার রড, লাঠিসোটা, দেশীয় অস্ত্র ও গোলা-বারুদ নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে, বর্বোরোচিত হামলা চালায়। এই হামলায় শত শত শিক্ষার্থী রক্তাক্ত হয়, বিশেষ করে নারী শিক্ষার্থীরা হাসিনার দলীয় ক্যাডারদের দ্বারা ব্যাপক হারে লাঞ্চিত হয়। আহত শিক্ষার্থীরা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে পুলিশের নীরব ভুমিকায় হাসপাতালের জরুরী বিভাগে তারা আহতদের উপর পুনঃরায় হামালা চালায়, ফলে অনেকেই চিকিৎসা না নিয়ে জীবন বাঁচাতে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে আসে। এই নির্মম হামলার প্রতিবাদে দেশব্যাপী স্কুল, কলেজ ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরাও রাস্তায় নেমে আসে এবং সর্বস্তরের জনগণ ক্ষোভে ফেটে পড়ে। এই প্রতিবাদ-বিক্ষোভকে নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়ে সরকার দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (BGB) মোতায়েন করে, ইন্টারনেট ব্ল্যাক আউট এবং কারফিউ জারী করে জনগণকে জিম্মি করে ফেলে। হাসিনার দলীয় ক্যাডারদের আক্রমন থেকে জনগণ তাদের সন্তানদের রক্ষায় প্রতিরোধ গড়ে তুললে নিরাপত্তা বাহিনী নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে, স্নাইপার রাইফেল দিয়ে নির্বিচারে বহু মানুষকে হত্যা করে, এমনকি এই হামলায় তারা জাতিসংঘের কুখ্যাত মিশনে ব্যবহৃত হেলিকপ্টার ও সাজোয়া ট্যাঙ্ক ব্যবহার করে। এমনকি হেলিকপ্টার থেকে ছোড়া গুলিতে বিল্ডিংয়ের ছাদে একটি শিশুর মাথায় আঘাত প্রাপ্ত হয় এবং অবশেষে সে ঢাকা মেডিক্যাল হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় মারা যায়। ফিরাউন বলল, “আমরা তাদের সন্তানদের হত্যা করব এবং নারীদের জীবিত রাখব; এবং নিশ্চয়ই, আমরা তাদেরকে দমন করতে সক্ষম[সূরা আল-আরাফঃ ১২৭]।

হে দেশবাসী! আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন, হাসিনা সরকার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের কর্মসংস্থান দিতে পারে না, কিন্তু কোটা সংস্কারসহ চাকুরী সংক্রান্ত যেকোন দাবী বর্বরোচিতভাবে দমন করে; সড়ক নিরাপদ করতে ব্যর্থ হলেও, নিরাপদ সড়কের দাবীতে আন্দোলনরত ছাত্রছাত্রীদের নির্মমভাবে দমন করতে ব্যর্থ হয় না; সীমান্ত রক্ষায় বিজিবিকে নিষ্ক্রিয় রেখেছে, অথচ জনগণের আন্দোলন দমনে তাদেরকে ব্যবহার করছে; ইসলাম বিদ্বেষীদের আক্রমণ থেকে মুসলিমদের ঈমান আক্বিদা রক্ষা না করলেও, আলেম-উলামা ও তৌহিদী জনতার উপর নির্বিচারে গুলি চালিয়েছে; শিক্ষকদের বেতন-ভাতা দিতে পারে নাই, কিন্তু তাদেরকে পিপার স্প্রে ও বেধড়ক মারধর করে বাড়ি পাঠিয়ে দিয়েছে, জনগণের রুটি-রুজির ব্যবস্থা করে নাই, বরং জীবিকার তাগিদে রাজধানীতে আসা অটোরিক্সা চালকদের উপর গোলাবারুদ দিয়ে হামলা চালিয়েছে; জনগণ থেকে ক্যাপাসিটি চার্জের জন্য বাড়তি বিদ্যুৎ বিল আদায় করে, কিন্তু লোডশেডিংয়ের প্রতিবাদ করলে, বিদ্যুৎ বন্ধ করে শাস্তি প্রদানের হুমকি দেয়; হাসিনা জনগণের দুঃখ–দুর্দশা নিয়ে প্রতিনিয়ত তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করেছে; হাসিনা মুখে বলে সে জনগণের সেবক, অথচ আচরণে দাম্ভিকতা প্রদর্শন করে জনগণের সাথে শত্রুতায় লিপ্ত হয়। সর্বোপরি, হাসিনা খোদাদ্রোহী ফিরাউনের মতই নিজেকে দেশের মালিক মনে করে। আর ফিরাউন তার সম্প্রদায়ের মধ্যে ঘোষণা করে বলল, ‘হে আমার সম্প্রদায়! মিসর রাজ্য কি আমার নয়? আর নদীগুলো আমার পাদদেশে প্রবাহিত; তোমরা কি দেখছ না?’” [আয-যুখরুফঃ ৫১]।

হে দেশবাসী! আপনারা প্রত্যক্ষ করেছেন, হাসিনা তার শাসনকে চিরস্থায়ী করতে দেশের জনগণকে বিভক্ত করে একটি গোষ্ঠীকে সুবিধা দিয়ে তাদের পক্ষে নেয় এবং বৃহত্তর জনগোষ্ঠীকে যুলুম করে। সে প্রতিনিয়ত জনগণের মধ্যে ঘৃণা সৃষ্টি করে এক পক্ষকে অন্য পক্ষের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেয় এবং দেশে ফ্যাঁসাদ ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করে জনগণের উপর উপর যুলুম চাপিয়ে দিচ্ছে, গুম-খুন, মামলা-হামলার মাধ্যমে কোন কোন জনপদকে পুরুষ শূন্য করেছে। নিশ্চয়ই ফিরাউন দেশে নিজেকে পরাক্রমশালী করে তুলল এবং সেখানকার অধিবাসীবৃন্দকে বিভিন্ন শ্রেণীতে বিভক্ত করে তাদের একটি শ্রেণীর উপর যুলুম করেছিল, তাদের পুত্রদেরকে সে হত্যা করত এবং নারীদেরকে সে জীবিত রাখত নিঃসন্দেহে, সে ছিল বিপর্যয় সৃষ্টিকারী [আল-কাসাসঃ ৪]।

হে সামরিক বাহিনীর নিষ্ঠাবান অফিসারগণ! আপনারা লক্ষ্য করেছেন, কীভাবে নিরস্ত্র তরুণরা নির্ভীকভাবে বুকের তাজা রক্ত দিয়ে হাসিনার যুলুম-অত্যাচারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে। অথচ, আপনাদের হাতে সামরিক ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও আপনারা কি করছেন? দুর্নীতিগ্রস্থ হাসিনা সরকার দেশের অর্থনীতি ও মানুষের রুটি-রুজি ধ্বংস করেছে, ক্ষমতায় টিকে থাকতে দেশের স্বার্থ উপনিবেশবাদী গোষ্ঠীর কাছে বিক্রি করছে এবং প্রতিনিয়ত ফিতনা-ফ্যাঁসাদ করে ক্ষমতায় টিকে আছে। আমরা আপনাদেরকে সতর্ক করতে চাই, যদি আপনারা হাসিনা সরকারের ফিরাউনী কমান্ড অনুসরণ করেন, তবে আপনাদেরকে ফিরাউনের সৈনিকদের মত পরিণতি বরণ করতে হবে। অতঃপর ফিরাউন তার সৈন্যবাহিনীসহ তাদের পিছনে ছুটল, তারপর সমুদ্র তাদেরকে সম্পূর্ণরূপে নিমজ্জিত করল [সূরা তাহাঃ ৭৮]। তাই আপনাদের প্রতি আমাদের আহ্বান, এই যুলুম-অত্যাচার থেকে জনগণকে চিরতরে মুক্তির লক্ষ্যে হাসিনা সরকারকে অপসারণ করে নব্যুয়তের আদলে খিলাফত প্রতিষ্ঠায় হিযবুত তাহ্রীর-কে নুসরাহ্‌ নুসরাহ্‌ প্রদান করুন।

 

 

 

 

হিযবুত তাহ্রীর / উলাই‘য়াহ্‌ বাংলাদেশএর মিডিয়া অফিস