হাসিনা একদিকে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলী গণহত্যা বন্ধ করতে বিশ্বনেতাদের আহ্বান করছে, আর অন্যদিকে ইসরায়েলের মদদদাতা ক্রুসেডার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যৌথ বিমান মহড়া আয়োজন করে তার সরকারের মুনাফিকী চরিত্র প্রকাশ করেছে

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

بسم الله الرحمن الرحيم

হাসিনা একদিকে ফিলিস্তিনে ইসরায়েলী গণহত্যা বন্ধ করতে বিশ্বনেতাদের আহ্বান করছে, আর অন্যদিকে ইসরায়েলের মদদদাতা ক্রুসেডার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে যৌথ বিমান মহড়া আয়োজন করে তার সরকারের মুনাফিকী চরিত্র প্রকাশ করেছে;

আর আল্লাহ্সাক্ষ্য দিচ্ছেন যে, মুনাফিকরা অবশ্যই মিথ্যাবাদী” [সূরা আলমুনাফিকূনঃ ১]

 

১৯ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, বাংলাদেশ বিমান বাহিনী এবং অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্র ইসরায়েলের মদদদাতা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্রুসেডার বাহিনী প্যাসিফিক এয়ার ফোর্সের মধ্যে রাজধানীর কুর্মিটোলায় বিমান বাহিনীর ঘাঁটি ‘বঙ্গবন্ধু’-তে ১০ দিনের যৌথ মহড়া শুরু হয়েছে। এ মহড়ায় বিমান বাহিনীর ২৫০ জন সদস্য ছাড়াও অংশ নিচ্ছে সেনাবাহিনীর ৩০ জন এবং নৌবাহিনীর ৪০ জন। অথচ, ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪, মিউনিখ নিরাপত্তা সম্মেলনের সাইডলাইনে তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আনাদোলুকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে হাসিনা ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যা বন্ধে বিশ্বনেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। এভাবে হাসিনা সরকার মুসলিমদের সাথে প্রতিনিয়ত প্রতারণা ও বিশ্বাসঘাতকতা করছে। তার সরকার কাফির উপনিবেশবাদী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জনসম্মুখে তর্জন-গর্জন করে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে দেশের স্বার্থবিক্রির এজেন্ডাকে লুকানোর অপচেষ্টা করলেও, তাদের এই প্রতারণা এখন স্পষ্ট হয়ে উঠছে। ইতিমধ্যে, প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত আকসা ও জিসোমিয়া নামের দুটি চুক্তি সই করতে সরকার পদেক্ষেপ নিচ্ছে। নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আশীর্বাদ লাভের আশায় হাসিনা সরকার প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত আকসা ও জিসোমিয়া নামের দুটি চুক্তি সই করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিকট প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছিল। Acquisition and Cross- Servicing Agreement (ACSA) এবং General Security of Military Information Agreement (GSOMIA) মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক প্রণীত দুটো কৌশলগত চুক্তি। আকসা হচ্ছে লজিস্টিক সাপোর্ট সংক্রান্ত চুক্তি। অর্থাৎ উভয় দেশ একে অপরকে লজিস্টিক সাপোর্ট দিবে। যেমন মার্কিন কোনো বিমান বা জাহাজ চাইলে বাংলাদেশের বন্দর ব্যবহার করে এই চুক্তির আওতায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জ্বালানী নিতে পারবে। জিসোমিয়া চুক্তির অধীনে সামরিক গোয়েন্দা তথ্যের বিনিময় করবে। এভাবে হাসিনা সরকার যুক্তরাষ্ট্রের নব্য-উপনিবেশবাদী প্রকল্প ইন্দো-প্যাসিফিক স্ট্র্যাটেজিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে, যার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আঞ্চলিক শক্তি চীনকে প্রতিহত করা এবং মুসলিম উম্মাহ্‌’র রাজনৈতিক আকাঙ্খা খিলাফতের উত্থানকে মোকাবেলা করা। অথচ, কাফির-মুশরিকদের সাথে এসব সামরিক মহড়া ও সামরিক চুক্তির ব্যাপারে আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র সুস্পষ্ট নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। আল্লাহ্‌ বলেন, “যদি তারা তোমাদের উপর আধিপত্য বিস্তার করতে পারে, তাহলে তারা তোমাদের বিরুদ্ধে শত্রুতায় লিপ্ত  হবে, এবং তাদের হস্ত ও রসনাসমূহ প্রসারিত করে  তোমাদের ক্ষতি সাধন করবে, এবং তাদের আকাংখা তোমরা যেন কাফিরদের কাতারে শামিল হও [সূরা আল-মুমতাহিনা: ০২]।

হে দেশবাসী, ব্রিটিশ আমল থেকেই উত্তরাধিকার সুত্রে বর্তমান ধর্মনিরপেক্ষ শাসকগোষ্ঠী কাফির-উপনিবেশবাদীদের দালাল এবং তারা প্রকৃতপক্ষে, দেশ ও মুসলিমদের শত্রু। আপনারা প্রত্যক্ষ করেছেন, বিএনপিগোষ্ঠী প্রতিনিয়ত গণতন্ত্র উদ্ধার ও হাসিনা বিরোধী ধোয়া তুলে যুক্তরাষ্ট্রের উপনিবেশবাদী প্রকল্প থেকে জনগণের দৃষ্টিকে আড়াল করার অপচেষ্টা চালিয়ে আসছে। তাই আপনাদের উচিত এসব ধর্মনিরপেক্ষ দালালগোষ্ঠীকে সম্পূর্ণ প্রত্যাখ্যান করা, কারণ তারা দেশের স্বার্থ রক্ষা করে না এবং মুসলিমদেরকেও প্রতিনিধিত্ব করে না। উপনিবেশবাদীগোষ্ঠীর কবল থেকে আপনাদেরকে মুক্তি পেতে হলে খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠায় হিযবুত তাহ্রীর-এর নিষ্ঠাবান রাজনীতিবিদদের সাথে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে এবং রাসূলুল্লাহ্‌ (সাঃ) কর্তৃক প্রদত্ত সুসংবাদ বাস্তবায়নের পথে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি ﷺ বলেছেন, “আবারও ফিরে আসবে খিলাফতের শাসন নব্যুয়তের আদলে (মুসনাদে আহমদ)।

হে মুহাম্মদ বিন কাশিমের উত্তরসূরী নিষ্ঠাবান সামরিক অফিসারগণ! আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা বলেন, “কেউ সম্মান-সুখ্যাতি চাইলে (আল্লাহ্-কে উপেক্ষা করে তা লাভ করা যাবে না), সে জেনে নিক যাবতীয় সম্মান-সুখ্যাতির অধিকারী হলেন আল্লাহ্ [সূরা ফাতিরঃ ১০]। আপনারা জানেন, ক্রুসেডার যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর হাত মুসলিমদের রক্তে রঞ্জিত। এই বাহিনীর সাথে আপনাদের মহড়ার মাধ্যমে বর্তমান দালাল শাসকগোষ্ঠী আপনাদের “Sword of Honor”কে “Sword of Humiliation” এ পরিণত করছে। আপনারা নিশ্চয়ই ভুলে যাননি, আপনাদের পূর্বসূরীরা তাদের তরবারী দিয়ে এই অঞ্চলকে মুক্ত করে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে নিয়ে এসেছিলো। আর এখন দালাল শাসকগোষ্ঠীর সহযোগিতায় কাফিরগোষ্ঠী ক্রমাগত আপনাদের উপর নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করছে এবং আপনাদেরকে বিশ্বব্যাপী তাদের স্বার্থরক্ষার কুফর যুদ্ধের জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করছে। তাই আপনাদের উচিত এই দালাল শাসকগোষ্ঠীকে অপসারণ করে হিযবুত তাহ্রীর-এর নেতৃত্বে খিলাফত পুনঃপ্রতিষ্ঠায় অগ্রগামী হওয়া, এবং এই লক্ষ্যে হিযবুত তাহ্রীর-কে নুসরাহ্‌ (ক্ষমতা) প্রদান করা। এর মাধ্যমে প্রকৃতপক্ষে আপনাদের “Sword of Honor” সুরক্ষিত হবে এবং  আপনারাও আল্লাহ্‌ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা কর্তৃক প্রদত্ত সম্মান ও গৌরব অর্জন করতে পারবেন।

﴿إِلاَّ تَنفِرُوا يُعَذِّبْكُمْ عَذَابًا أَلِيمًا وَيَسْتَبْدِلْ قَوْمًا غَيْرَكُمْ وَلاَ تَضُرُّوهُ شَيْئًا وَاللَّهُ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيرٌ

“তোমরা যদি অভিযানে বের না হও, তাহলে তোমাদেরকে ভয়াবহ শাস্তি দেয়া হবে, আর তোমাদের স্থলে অন্য সম্প্রদায়কে আনা হবে (অথচ) তোমরা তাঁর কোনই ক্ষতি করতে পারবে না। আল্লাহ্ সকল বিষয়ে সর্বশক্তিমান। [আত-তওবাঃ ৩৯]

 

হিযবুত তাহ্রীর / উলাই‘য়াহ্‌ বাংলাদেশএর মিডিয়া অফিস