সীমান্ত আগ্রাসন, জনগণের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দেশকে নেতৃত্বশীল রাষ্ট্রে পরিণত করতে হবে

بسم الله الرحمن الرحيم

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

সীমান্ত আগ্রাসন, জনগণের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় দেশকে নেতৃত্বশীল রাষ্ট্রে পরিণত করতে হবে

তথাকথিত আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করে সীমান্তব্যাপী কাঁটা তারের বেড়া নির্মাণ এবং ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ-এর ছত্রছায়ায় দেশের অভ্যন্তরে ঢুকে গাছ ও ধান কেটে ফেলার ঘটনাসমূহ এদেশের জনগণের প্রতি ভারতের অব্যাহত শত্রুতা নীতির প্রতিফলন। ভারতের প্রকৃত উদ্দেশ্য হচ্ছে এই মুসলিম ভূখন্ডকে অস্থিতিশীল এবং নতজানু রাখা। কিন্তু, আমরা দেখতে পেয়েছি, আমাদের সীমান্ত রক্ষায় নিয়োজিত মুসলিম সৈনিক এবং জনগণ মিলে ঈমানের বলে বলিয়ান হয়ে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুললো। রাসূলুল্লাহ্‌ বলেছেন, আল্লাহর পথে একদিন সীমান্ত পাহারা দেয়া দুনিয়া এর মধ্যকার সবকিছু থেকে উত্তম (বুখারী: ২৮৯২; মিশকাত: ৩৭৯১)। এই সৈনিক-জনতার প্রতিরোধের মুখে পরাজিত রাজা দাহিরের উত্তরসূরী হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র ভারতের কাপুরুষ সৈনিকরা পিছু হটতে বাধ্য হলো। মুসলিম ভূখণ্ডের নিরাপত্তা যে শুধুমাত্র ইসলামের মাধ্যমে রক্ষিত হবে, এই ঘটনা তার এক অনন্য নজির। আর এই কারণেই ভারত এদেশে ইসলামের পুনঃজাগরণকে ভয় পায় এবং ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে শত্রুতা অব্যাহত রাখে। আল্লাহ্‌ ﷻ বলেন, সামান্য কষ্ট দেয়া ছাড়া তারা তোমাদের কোনই ক্ষতি করতে পারবে না আর যদি তারা তোমাদের সাথে যুদ্ধ করে, তবে তারা পৃষ্ঠ প্রদর্শন করবে; তারপর তারা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে না [সূরা আলি ইমরানঃ ১১১]।

বিস্ময়ের ব্যাপার হচ্ছে,  এদেশের মুসলিম সৈনিক-জনতা যখন “আল্লাহু আকবর” ধ্বনিতে এসব কাপুরুষ শত্রু সৈনিকদের সম্মুখে দাঁড়িয়েছে এবং একজন বৃদ্ধ মুসলিম নাগরিক যখন শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও মুসলিম ভূখণ্ড রক্ষার প্রতিজ্ঞা করছেন, তখন এদেশের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলসমূহের মুখ থেকে এই সীমান্ত আগ্রাসনের বিরুদ্ধে একটি নিন্দা পর্যন্তও বের হয়নি। কারণ এসব দালাল শাসকগোষ্ঠী জনগণের ঈমান ও আবেগ-অনুভুতিকে ধারন করে না। আপনারা প্রত্যক্ষ করেছেন, ভারতের সেনাপ্রধান আমাদের দেশে দ্রুত নির্বাচন দাবী করেছে এবং আমাদের সেনাবাহিনী নিয়ে অনাকাঙ্ক্ষিত মন্তব্য করে আমাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার দুঃসাহস দেখিয়েছে। কিন্তু আমেরিকার দালাল বর্তমান রাজনীতিক ও বুদ্ধিজীবিরা এর প্রতিবাদ করে নাই। কারণ তারা জানে, এই অঞ্চলে ভারত আমেরিকার স্বার্থরক্ষার চৌকিদার। তাই আপনারা আরও প্রত্যক্ষ করেছেন, বাংলাদেশে যত দ্রুত সম্ভব গণতন্ত্র গণতান্ত্রিক নির্বাচন দেখতে চায় ভারতযুক্তরাষ্ট্র (প্রথম আলো, ১৭ জানুয়ারী, ২০২৫)। প্রশ্ন হচ্ছে, কীভাবে এই দালালগোষ্ঠী এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষিত হবে?

তাই মুসলিম অধ্যুষিত এদেশের জনগণের নিরাপত্তা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় এই দেশকে ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে একটি নেতৃত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। কারণ আদর্শিক রাষ্ট্র ছাড়া একটি রাষ্ট্র কোন কার্যকর রাষ্ট্র হতে পারে না, বরং সেই রাষ্ট্রটি উপনিবেশবাদীদের প্রক্সি হিসেবেই ব্যবহৃত হয়। ইসলামের আক্বীদার ভিত্তিতেই আমাদের পররাষ্ট্র ও সামরিক নীতি পরিচালিত হতে হবে। ভারতকে কার্যকরভাবে মোকাবেলা করতে হিযবুত তাহ্রীর কর্তৃক কুর‘আন-সুন্নাহ্‌ এর ভিত্তিতে প্রণীত খিলাফত রাষ্ট্রের সংবিধান (খসড়া) অনুযায়ী কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হলোঃ

এক, পনের বছর বয়স্ক বা তদূর্ধ্ব প্রতিটি মুসলিম পুরুষের জন্য জিহাদ-এর প্রস্তুতিমূলক সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক (অনুচ্ছেদঃ ৬২)। ফলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনগণ আমাদের সামরিক বাহিনীর সাথে সীমান্ত রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারবে।

দুই, সংবিধানের অনুচ্ছেদ ১৮৯ (৩) মোতাবেক, মার্কিন-ব্রিটেন ও তাদের আঞ্চলিক দোসর ভারতের সাথে আমাদের সম্পর্ক সম্ভাব্য যুদ্ধাবস্থা হিসেবে বিবেচিত হবে। তাদের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য সকল সতর্কতা গ্রহণ করতে হবে এবং তাদের সাথে আমাদের কোনরূপ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের অনুমতি নেই। যতক্ষণ না তাদের সাথে প্রকৃতপক্ষেই যুদ্ধের সূচনা হয় ততক্ষণ পর্যন্ত তাদের নাগরিকগণ আমাদের রাষ্ট্রে পাসপোর্ট ও ভিসার মাধ্যমে প্রবেশ করতে পারবে যা প্রতিটি ব্যক্তির প্রতিটি ভ্রমণের জন্য সীমাবদ্ধ থাকবে।

তিন, সংবিধানের ১৮৯ (২) ধারা মোতাবেক, চীনের সাথে অর্থনৈতিক, বাণিজ্য, সাংস্কৃতিক অথবা বন্ধুত্বের চুক্তি অব্যাহত থাকতে পারে এবং তাদের সাথে চুক্তির শর্তানুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেতে পারে।

চার, সংবিধানের ১৯৫ (১) ধারা মোতাবেক বিশ্বে বর্তমান মুসলিম রাষ্ট্রসমূহকে অভিন্ন রাষ্ট্র হিসেবে বিবেচনা করে তাদেরকে একত্রিত করার সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। ফলে মুসলিমরা একটি শক্তিশালী জাতিতে পরিণত হবে।

হে দেশবাসী, তথাকথিত সংস্কার বা নির্বাচনী সার্কাস কোনটাই আপনাদের ভাগ্যের পরিবর্তন করবে না। তাই হিযবুত তাহ্রীর-এর নেতৃত্বে খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সর্বশক্তি নিয়োগ করুন। এই লক্ষ্যে সামরিক বাহিনীতে কর্মরত আপনাদের সন্তানদের নিকট এই দাবী তুলুন যাতে তারা ইসলামী নেতৃত্বশীল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় হিযবুত তাহ্রীর-এর নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর করে।

﴿هُوَ الَّذِي أَرْسَلَ رَسُولَهُ بِالْهُدَى وَدِينِ الْحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّينِ كُلِّهِ وَكَفَى بِاللَّهِ شَهِيدًا

তিনি তাঁর রাসূলকে পথনির্দেশ এবং সত্য দ্বীনসহ প্রেরণ করেছেন, যাতে একে অন্য সকল দ্বীনের উপর জয়যুক্ত করেন। সাক্ষী হিসাবে আল্লাহ্‌ যথেষ্ট” [সূরা আল-ফাত্‌হঃ ২৮]।

হিযবুত তাহ্রীর / উলাইয়াহ্বাংলাদেশএর মিডিয়া অফিস