بسم الله الرحمن الرحيم
প্রেস বিজ্ঞপ্তি
মার্চ ফর খিলাফত” র্যালিতে বর্বর পুলিশী হামলার মাধ্যমে মার্কিন–ভারতের দালাল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান এবং তাদের প্রভুদের প্রতি আনুগত্য স্পষ্ট করেছে
কুর‘আন নাযিলের মাস রমযানে কুর‘আন-সুন্নাহ্ ভিত্তিক শাসনব্যবস্থা- নবুয়তের আদলে খিলাফত প্রতিষ্ঠার দাবীতে “মার্চ ফর খিলাফত” র্যালিতে শান্তিপূর্ণভাবে অংশগ্রহণকারী হাজার হাজার রোজাদার মুসলিমদের উপর কোন কথাবার্তা ছাড়াই হঠাৎ বর্বর হামলা চালিয়ে মার্কিন-ভারতের দালাল অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সমগ্র জনগণের অন্তরে রক্তক্ষরণ করেছে। এই নজিরবিহীন হামলা ফিলিস্তিন ভূমিতে আল-আকসা মসজিদের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের উপর অভিশপ্ত ইহুদিগোষ্ঠীর ধারাবাহিক বর্বর হামলার দৃষ্টান্তকে স্মরণ করিয়ে দিয়েছে। দেশের সর্বস্তরের মুসলিমগণ অনুভব করছে, খিলাফত ব্যবস্থার অনুপস্থিতিতে মুসলিম উম্মাহ্ এতিম এবং কতটা অভিভাবকহীন! অসংখ্য রোজাদার মুসল্লিদের আহত ও গ্রেপ্তারের পাশাপাশি দুটি বিষয় এদেশের ইসলামপ্রিয় মুসলিমদের হৃদয়ে চরম আঘাত করেছে। একটি হচ্ছে, দুর্বৃত্ত নিরাপত্তা বাহিনীর সাউন্ড গ্রেনেডের হামলায় আহত দুইজনকে দ্রুত চিকিৎসার জন্য রিক্সা করে আরও দুইজন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে গেলে সেখান থেকে আহতসহ এই চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আরেকটি হচ্ছে, যখন পুলিশী হামলায় একজন মুসল্লি মাটিতে পড়ে যায় তখন রহস্যজনকভাবে একজন রিক্সাওয়ালা পুলিশের পাশাপাশি তাকে লাঠি দিয়ে পিটাতে থাকে যা দেখে সেনা সদস্যরা তাকে আটক করে ডিবি পুলিশে সোপর্দ করে এবং তথাকথিত বিপ্লবী উপদেষ্টা সরাসরি গিয়ে ঐ দুর্বৃত্ত ব্যক্তিকে ডিবি হেফাজত থেকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। এই ঘটনা যখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয় তখন ঐ সন্ত্রাসীকে হিরো আখ্যা দিয়ে ঐ উপদেষ্টা ফেসবুক পোস্ট দেয়। তবে আমরা এসব নির্বোধ দালালদেরকে সতর্ক করতে চাই, তারা যাতে যালিম হাসিনা থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে। এবং আমরা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, হিযবুত তাহ্রীর হচ্ছে মেধাবী ও সাহসী তরুণ সমাজসহ সমাজের সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে গভীরভাবে প্রোথিত এবং রাষ্ট্রের ক্ষমতার অধিকারী ব্যক্তিবর্গ এই দলকে সমর্থন করে। তাই তারা যদি সংশোধিত না হয় তাহলে আমরা তাদেরকে হুশিয়ার করে দিতে চাই, “হাসিনা গেছে যে পথে, দালালরা যাবে সে পথে”। আল্লাহ্ ﷻ বলেন, “আর যারা তওবা (অনুসুচনা ও সংশোধন) করে না, তাহলে তারাই যালিম” [সূরাঃ আল-হুজুরাতঃ ১১]৷
নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের উদ্দেশ্যে আমরা বলতে চাই, রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন, “আল্লাহ্’র অবাধ্য হয়ে কোন আনুগত্য নেই। আনুগত্য কেবল হক কাজে” [বুখারী ও মুসলিম]। তিনি ﷺ আরও বলেছেন, “যে ব্যক্তি (শাসক) আল্লাহ্’র অবাধ্য, তার প্রতি কোন আনুগত্য নাই” [মুসনাদে আহমাদ]। অর্থাৎ আল্লাহ্’র হুকুমের বিরুদ্ধে গিয়ে শাসকদের আনুগত্য করা নিষেধ। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, খিলাফতে রাশিদাহ্ এবং খোলাফায়ে রাশেদীন আবু বকর (রাঃ), ওমর (রাঃ), উসমান (রাঃ), আলী (রাঃ) মুসলিমদের কাছে বিতর্কহীন এবং প্রাণের চেয়ে প্রিয়। তাহলে আপনারা নিজেকে প্রশ্ন করুন, খিলাফতে রাশিদাহ্এর দাবীকে দমন করা কতটা গর্হিত কাজ। আর আপনাদেরকে আমরা অবগত করতে চাই, হিযবুত তাহ্রীর-এর নেতৃত্বে খিলাফত প্রতিষ্ঠিত হওয়া আল্লাহ্ ইচ্ছায় সময়ের ব্যাপার মাত্র। তাই আপনাদের মধ্যে যারা অনুশোচনা করে খিলাফত প্রতিষ্ঠার রাজনৈতিক কর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানী এবং তাদের উপর হামলা বন্ধ না করেন, তাদেরকে ভুলে যাওয়া হবে না। খিলাফতের অধীনে আপনাদেরকে কঠিন বিচারের সম্মুখীন করা হবে, আর যদি আপনারা দুনিয়া ত্যাগও করেন, তখন আল্লাহ্ ﷻ কর্তৃক ভয়াবহ শাস্তিতো রয়েছেই। “তারা আরো বলবে, ‘হে আমাদের রব! আমরা আমাদের প্রধান (boss) ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আনুগত্য করেছিলাম এবং তারা আমাদেরকে পথভ্রষ্ট করেছিল’” [সূরা আযহাবঃ ৬৭]। “পথভ্রস্ট অনুসারীরা কাঁদবে, ‘যদি আমরা দ্বিতীয়বার পৃথিবীতে যাবার সুযোগ পেতাম তবে আমরা তাদেরকে অস্বীকার করতাম, যেমন তারা আমাদের অস্বীকার করেছে।’ এভাবেই আল্লাহ্ তাদের কার্যাবলীকে তাদের পরিতাপরূপে দেখাবেন। আর তারা কখনোই আগুন থেকে বের হতে পারবে না” [সূরা বাকারাঃ ১৬৭]। নিশ্চয়ই আপনারা পতিত যালিম হাসিনার অনুগত দুর্বৃত্ত বাহিনীর দুর্ভাগ্যকে ভুলে যাননি।
হে সামরিক বাহিনীতে কর্মরত মুসলিম উম্মাহ্’র নিষ্ঠাবান সন্তানগণ! রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন, “নিশ্চয়ই ইমাম (খলিফা) হলেন একটি ঢাল যার অধীনে তোমরা যুদ্ধ কর এবং যার সাহায্যে নিজেদের রক্ষা কর” (সহীহ্ মুসলিম)। আপনারা নিশ্চয়ই বর্বরোচিত হামলার এই দিনটির সাক্ষী হয়েছেন, কারণ আপনাদের সহকর্মীরাও মাঠে ছিল। এই নির্বোধ দালালদের অধীনে মুসলিম উম্মাহ্’র রক্ত ও সার্বভৌমত্ব নিরাপদ নয়। তারা জনগণের নিরাপত্তা দিতে প্রতিনিয়ত ব্যর্থ হচ্ছে, অথচ মার্কিন-ভারতকে তুষ্ট করতে রোজাদার মুসলিমদের রক্ত ঝরাতে তারা ব্যর্থ হয় নাই! আপনারা হচ্ছেন মুসলিম উম্মাহ্’র সন্তান যাদের হাতে রয়েছে সামরিক ক্ষমতা, যার মাধ্যমে আপনারা মুসলিমদেরকে এই যুলুম থেকে চিরতরে মুক্ত করতে সক্ষম। আজকের এই “মার্চ ফর খিলাফত”-এর মাধ্যমে ইসলামপ্রিয় জনগণ আপনাদের প্রতি যে দাবী জানিয়েছে, তাদের সেই দাবীর প্রতি সাড়া দিয়ে খিলাফত প্রতিষ্ঠায় হিযবুত তাহ্রীর-কে নুসরাহ্ (ক্ষমতা) প্রদান করুন। আপনারা আপনাদের পূর্বসূরী সা’দ বিন মোয়াজ (রাঃ)-এর পদাঙ্ক অনুসরণ করুন। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, যখন মদিনায় সা’দ বিন মোয়াজের নেতৃত্বে সামরিক বাহিনী কাফির নেতা আব্দুল্লাহ্ ইবনে উবাই থেকে সমর্থন ও পাহারা প্রত্যাহার করে রাসূলুল্লাহ্ ﷺ-কে প্রটোকল দিয়েছিল, তখন ক্ষমতাহীন আব্দুল্লাহ্ ইবনে উবাই ক্ষমতা হারিয়ে উৎসুক দর্শকে পরিণত হয়েছিল। প্রকৃতপক্ষে, ইসলামের বিজয়েই জনগণ ঐক্যবদ্ধ হবে এবং প্রকৃত তাক্ববীর ধ্বনি উৎযাপন করবে।
“হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের সেই আহ্বানে সাড়া দাও, যখন তোমাদেরকে এমনকিছুর দিকে আহ্বান করা হয় যা তোমাদের মধ্যে প্রাণের সঞ্চার করে” [সূরা আল-আনফাল: ২৪]।
হিযবুত তাহ্রীর / উলাই‘য়াহ্ বাংলাদেশ–এর মিডিয়া অফিস