প্রেস বিজ্ঞপ্তি
بسم الله الرحمن الرحيم
মসজিদ আল–আকসা এবং ইবাদতরত মুসলিমদের উপর ইহুদী বাহিনীর আক্রমনের প্রতিবাদে হিযবুত তাহ্রীর/উলাইয়াহ্ বাংলাদেশের বিক্ষোভ সমাবেশ
হিযবুত তাহ্রীর/উলাই‘য়াহ্ বাংলাদেশ আজ (২২শে এপ্রিল, ২০২২) শুক্রবার বাদ জুমু‘আ ঢাকা ও চট্টগ্রামের বিভিন্ন মসজিদ প্রাঙ্গণে মসজিদ আল-আকসা এবং সেখানে নামায ও ইতিকাফরত মুসলিমদের উপর ইহুদী বাহিনীর বর্বরোচিত আক্রমনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে। যার শিরোনাম ছিল: “হে মুসলিমগণ! আল–আকসা মসজিদকে মুক্ত করতে খিলাফত রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করুন”।
সমাবেশে বক্তাগণ ইহুদী বাহিনীর বর্বরতা ও নৃশংসতার চিত্র তুলে ধরে বলেন: ফজরের নামাজের পর মসজিদ আল-আকসায় তারা ন্যাক্কারজনকভাবে হামলা চালায়। পবিত্র রমযান মাস এবং ইসলাম ও পবিত্রতা লঙ্ঘন করে কাপুরুষ সৈন্যরা নামাযরত ও ‘ইতিকাফ-এ বসা মুসলিম এবং বিশ্বস্ত প্রহরীদের উপর নিষ্ঠুরভাবে হামলা চালায় ও তাদেরকে অবমাননা করে। তারা শতাধিক মানুষকে আহত করে, কয়েকশত মুসলিমকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যায়, মসজিদের জানালা চুরমার করে, নামায আদায়কারীদের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ভেঙ্গে দেয়, এমনকি পবিত্র নারীদের লাঞ্ছিত করার এবং বুট দিয়ে জায়নামাজকে পদদলিত করার স্পর্ধা দেখায়।
বক্তাগণ মুসলিম বিশ্বের দালাল শাসকদের বিশ্বাসঘাতকতাকে তুলে ধরে বলেন: ইহুদী রাষ্ট্রের সাথে এসব দালাল শাসকদের সম্পর্ক স্বাভাবিকীকরণ প্রক্রিয়া যতই অগ্রসর হচ্ছে ইহুদীদের কর্তৃক মসজিদ আল-আকসা এবং ইবাদতরত মুসলিমদের উপর আক্রমনের ঘটনা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। এসবের মাধ্যমে বিশ্বাসঘাতক শাসকেরা আল-আকসা ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে ঘৃণ্য ইহুদিদের শত্রুতাকে তীব্রতর করার সুযোগ করে দিচ্ছে, যাতে তারা এই পবিত্র মসজিদকে বিভক্ত করে নিজেদের অপবিত্র অবস্থান নিশ্চিত করতে পারে। আরব আমিরাত, বাহরাইন, সুদান, মরক্কোর দালাল শাসকেরা ইহুদী সত্তার সাথে ইতিমধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করেছে, গত মার্চে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোগান অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগকে জাঁকজমক ও উদযাপনের মাধ্যমে স্বাগত জানায়। সে মধ্যপ্রাচ্যে নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য ইসরাইল-তুরস্ক সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে আখ্যা দেয়। বাংলাদেশের হাসিনা সরকারও এই দৌড়ে পিছিয়ে নেই, বাংলাদেশী পাসপোর্ট থেকে ‘একসেপ্ট ইসরাইল’ শব্দ দুটি বাদ দেয়া, অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্রের কাপুরুষ সৈন্যদের সাথে সামরিক মহড়ায় যোগ দেয়ার জন্য আমাদের সামরিক বাহিনীর মুসলিম অফিসার ও সৈন্যদেরকে প্রেরণ করা যার সুস্পষ্ট উদাহরণ।
ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে এধরণের ধৃষ্টতাপূর্ণ অপরাধের ক্ষেত্রে কি ধরণের প্রতিক্রিয়া হওয়া উচিত তা বলতে গিয়ে বক্তাগণ বলেন: এই বরকতময় মাসে আমাদের প্রথম কেবলা ও রাসূলুল্লাহ্ ﷺ-এর ইসরা-মিরাজের স্থান আল-আকসা’র পবিত্রতা লঙ্ঘন এবং পবিত্র নারীদের উপর নিষ্ঠুরভাবে আক্রমনের মতো ভয়ঙ্কর অপরাধ নিশ্চয়ই এই ইহুদী রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা এবং মুসলিমদের শত্রুদের বিরুদ্ধে সমস্ত ফ্রন্ট উন্মুক্ত করার জন্য যথেষ্ট ছিল। ইসলামী উম্মাহ্’র গৌরবময় ইতিহাসে এর চেয়ে অনেক কম মাত্রার অপরাধও চুক্তি ভাঙ্গার এবং সামরিক বাহিনী প্রেরণের জন্য যথেষ্ট ছিল। মক্কা বিজয়ের অভিযান কি সেই ব্যক্তির কাতর আহবানে সাড়া দেয়া ব্যতীত অন্য কিছু ছিল, যে আল্লাহ’র রাসূলকে ﷺ ডেকে বলেছিল, “তারা আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েছে, আমাদেরকে হত্যা করেছে, যখন আমরা রুকু ও সিজদায় রত ছিলাম”? বর্তমান তুরস্কের আমোরিয়াম অঞ্চলে বিজয় অভিযান কি একজন মুসলিম নারীর কান্নার প্রতিক্রিয়া ছাড়া অন্যকিছু ছিল, যে চিৎকার করে সাহায্যের আবেদন করে বলেছিল, “কোথায় হে মু’তাসিম …?”
পরিশেষে বক্তাগণ আল–আকসাকে মুক্ত করার একমাত্র পথ ইসলামী রাষ্ট্র খিলাফতে রাশিদাহ্ প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে বলেন: হে মুসলিমগণ, আপনারা আর কতকাল খিলাফত প্রতিষ্ঠা না করে থাকবেন, যার নেতৃত্বে মুসলিম সামরিক বাহিনী আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা’র ইচ্ছায় এই অবৈধ ইহুদি রাষ্ট্র এবং এর মদদদাতা থাকা সাম্রাজ্যবাদী মার্কিন-ব্রিটিশসহ পশ্চিমা কুফর রাষ্ট্রসমূহকে পরাভূত করবে এবং আল-আকসাকে মুক্ত করবে; স্মরণীয় সেই দিবস মুসলিম বাহিনীর তাক্ববীর ধ্বনি দ্বারা প্রকম্পিত হবে। এটি একটি সত্য ওয়াদা, যা সত্যবাদী এবং বিশ্বস্ত রাসূলুল্লাহ ﷺ কর্তৃক উচ্চারিত হয়েছে: “তোমরা ইহুদিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করবে এবং তাদেরকে হত্যা করবে, যতক্ষণ না একটি পাথরও বলবে: এখানে এসো হে মুসলিম, এখানে একজন ইহুদি (আমার পিছনে লুকিয়ে আছে), তাকে হত্যা কর”।
হিযবুত তাহ্রীর / উলাই’য়াহ্ বাংলাদেশ–এর মিডিয়া কার্যালয়