প্রেস বিজ্ঞপ্তি
بسم الله الرحمن الرحيم
মনে রাখতে হবে, যুক্তরাষ্ট্র একটি উপনিবেশবাদী দেশ; তার ট্যারিফ নীতির কাছে আত্মসমর্পন করলে দেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে!
বিশ্বব্যাপী পুজিবাদের ফেরিওয়ালা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পুঁজিবাদের অন্যতম দর্শন মুক্তবাজার অর্থনীতি ও তার তৈরি তথাকথিত বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (WTO)-এর নিয়মকানুনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে বিশ্বব্যাপী “শুল্ক ঝড়” সৃষ্টি করেছে। এর মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হয়েছে যে পুঁজিবাদী ব্যবস্থা অমানবিক ও শোষণমূলক। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার যুক্তরাষ্ট্রের শুল্কনীতির জবাবে নতজানু নীতি অবলম্বন করেছে। তারা ইতিপূর্বে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা ও এলএনজি আমদানিসহ ২৫টি ব্যয়বহুল বোয়িং বিমান ক্রয়ের আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যদিও অনেক দেশ বোয়িংয়ের দুর্বল পারফরম্যান্সের কারণে তাদের অর্ডার বাতিল করছে। এবং তারা তথাকথিত ‘non-disclosure agreement (NDA)’-এর মাধ্যমে জনগণকে অন্ধকারে রেখে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে একের পর এক বৈঠক করে যাচ্ছে। কারণ দেশের সচেতন জনগণ ও নিষ্ঠাবান রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীরা জানেন, যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে ভু-রাজনৈতিক ঘুঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে চায় এবং এই অঞ্চলে তার উপনিবেশবাদী প্রকল্পসমূহ বাস্তবায়ন করতে মরিয়া। আল্লাহ্ ﷻ বলেন, “আর তারা যদি তোমাদের উপর আধিপত্য বিস্তার করতে পারে তবে তারা হবে তোমাদের শত্রু এবং তারা তাদের হস্ত ও রসনা প্রসারিত করে তোমাদের অনিষ্ট সাধন করবে…” [সূরা আল-মুমতাহিনা: ০২]
পুঁজিবাদী অর্থনীতিবিদগণ রাজনৈতিক অর্থনীতির (political economy) জ্ঞান অর্জন করলেও তারা এতটাই নির্বোধ যে যুক্তরাষ্ট্রের ট্যারিফ নীতিকে কেবল অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখে এবং এই নীতিকে মোকাবিলায় অর্থনৈতিক কার্যকারণ ছাড়া অন্য কোন সমাধান খুঁজে পায় না। যুক্তরাষ্ট্রের এই অমানবিক শুল্ক নীতির একটি জবাব হিসেবে অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশের জ্বালানী খাত থেকে মার্কিন কোম্পানিসমূহকে উচ্ছেদ করলে মার্কিনীরা উপযুক্ত জবাব পেতো। অথচ এই বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ বাণিজ্য ঘাটতির হিসাবের মধ্যেই স্থান পায় নাই। ক্ষমতালোভী বিএনপি গোষ্ঠী যুক্তরাষ্ট্রের ট্যারিফ মোকাবিলায় সরকারকে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস দিয়ে জনগণের সাথে প্রতারণা করেছে। যেখানে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের উপর আধিপত্যের হাত প্রসারিত করছে, তখন কেউ কেউ মার্কিন কূটনীতিককে জামদানি শাড়ি উপহার দিতে লজ্জাবোধ করে নাই। আমরা হিযবুত তাহ্রীর–এর পক্ষ থেকে অন্তর্বর্তী সরকারকে সতর্ক করতে চাই: যুক্তরাষ্ট্র একটি উপনিবেশবাদী দেশ, তার সাথে দেশের স্বার্থ বিরোধী যে কোন চুক্তি সম্পাদন করা থেকে বিরত থাকুন। এবং, যুক্তরাষ্ট্রের উপর বাণিজ্যসহ যেকোন নির্ভরতা পরিহার করতে এই সুযোগকে কাজে লাগান।
প্রিয় দেশবাসী, রাজনৈতিকভাবে সচেতন ব্যক্তিগণ জানেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার পুঁজিবাদী উপনিবেশবাদী নীতির কারণে বিশ্ব অর্থনীতিকে বার বার মন্দার দিকে ঠেলে দিয়েছে। এখন সে বিশ্বে তার একক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে বাণিজ্য যুদ্ধ ঘোষণা করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের একক বাণিজ্য নীতি ও নতুন ট্যারিফ বিশ্ব বাণিজ্যের জন্য হুমকি [ড. মোয়াজ্জেম, গবেষণা পরিচালক, সিপিডি]। এখন নিশ্চয়ই বর্তমান অর্থনীতিবিদগণের মুক্তবাজার অর্থনীতির ‘utopia’ আর বুঝতে বাকি নাই।
একমাত্র খিলাফত ব্যবস্থা দেশের অর্থনীতিকে স্বনির্ভর করবে এবং এফ.ডি.আই (FDI) নির্ভর পরনির্ভরশীল অর্থনৈতিক নীতিমালার পরিবর্তন ঘটাবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উপনিবেশবাদী প্রতিষ্ঠান আই.এম.এফ-বিশ্বব্যাংককে এদেশ থেকে উচ্ছেদ করে ইসলামের ভিত্তিতে নেতৃত্বশীল অর্থনীতি প্রবর্তন করবে, এবং বিশ্বকে একটি সুশীতল অর্থনীতির ছায়াতলে নিয়ে আসবে। আপনারা জানেন, হিযবুত তাহ্রীর ইতিপূর্বে বিভিন্ন স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক সম্মেলন করে খিলাফত রাষ্ট্রের নেতৃত্বশীল অর্থনীতির ম্যানিফেস্টো প্রদান করেছে। তাই হিযবুত তাহ্রীর-এর নিষ্ঠাবান ও দূরদর্শী নেতৃত্বের সাথে ঐক্যবদ্ধ হয়ে খিলাফত প্রতিষ্ঠায় এগিয়ে আসুন। আল্লাহ্ ﷻ বলেন:
﴿وَلَوْ أَنَّ أَهْلَ الْقُرَى آمَنُوا وَاتَّقَوْا لَفَتَحْنَا عَلَيْهِمْ بَرَكَاتٍ مِنْ السَّمَاءِ وَالأَرْضِ وَلَكِنْ كَذَّبُوا فَأَخَذْنَاهُمْ بِمَا كَانُوا يَكْسِبُونَ﴾
“আর যদি জনপদের অধিবাসীরা ঈমান আনত এবং তাক্বওয়া অবলম্বন করত তাহলে আমি তাদের জন্য আকাশ ও পৃথিবীর বরকতের দ্বারসমূহ উন্মুক্ত করে দিতাম।” [সূরা আল-আ’রাফ: ৯৬]
হিযবুত তাহ্রীর, উলাই‘য়াহ্ বাংলাদেশ–এর মিডিয়া অফিস