ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের ঢাকায় সফরকালীন সময়ে বাংলাদেশের জলসীমায় ৭৮-জন নাবিকসহ দুটি জাহাজ জব্দ করে ভারত কি বার্তা দিয়েছে?

بسم الله الرحمن الرحيم

প্রেস বিজ্ঞপ্তি

ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের ঢাকায় সফরকালীন সময়ে বাংলাদেশের জলসীমায় ৭৮জন নাবিকসহ দুটি জাহাজ জব্দ করে ভারত কি বার্তা দিয়েছে?

বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের টানাপোড়েনের মধ্যে গত ৯ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখ ঢাকায় সফরে আসে দেশটির পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। সফরের শুরুতেই দুপুরের দিকে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্র সচিব মো. জসীম উদ্দিনের সঙ্গে যখন বৈঠক করছিলেন তখন ভারতের কোস্ট গার্ড বাংলাদেশের জলসীমায় ঢুকে ৭৮-জন নাবিকসহ ‘এফবি মেঘনা-৫’ ও ‘এফবি লায়লা-২’ নামের দুটি জাহাজ জব্দ করে। নুন্যতম কূটনৈতিক সৌজন্যতাকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে ভারত এর মাধ্যমে আবারও তাদের অব্যাহত আধিপত্যবাদী আগ্রাসনমূলক পররাষ্ট্রনীতিকে প্রদর্শন করেছে। ভারতের এই জাতীয় কূটনৈতিক ভঙ্গি নতুন নয়, যার মাধ্যমে গত পাঁচ দশকে ভারত বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি সম্মানের পরিবর্তে অসম্মান, বন্ধুত্বের পরিবর্তে শত্রুতা পোষণ করে আসছে।  অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাইল ফিলিস্তিনে মুসলিমদের বিরুদ্ধে যেমন শত্রুতায় লিপ্ত, ঠিক একইভাবে হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র ভারতও এই অঞ্চলে মুসলিমদের সাথে শত্রুতা করে আসছে। আল্লাহ্ ﷻ বলেন, নিশ্চয়ই মুসলিমদের বিরুদ্ধে শত্রুতায় সকল মানুষের মধ্যে ইহুদী মুশরিকদেরকেই আপনি সর্বাধিক উগ্র পাবেন[সূরা আল-মায়িদাহ্‌: ৮২]। তাই দেশের সমগ্র মুসলিমগণ যখন ভারতকে শত্রুরাষ্ট্র ঘোষণা করে কূটনীতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবী জানাচ্ছে, সামরিক বাহিনীকে দুর্বল করতে ২০০৯ সালে ভারত ও হাসিনার ষড়যন্ত্রে সংঘটিত পিলখানা হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবী করছে; অথচ তখন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের ঐক্যবদ্ধ শক্তির উপর আস্থাশীল না হয়ে, ভারতের আস্থা অর্জন করতে চাইছে ও সম্পর্ক উন্নয়নে ভারতের পররাষ্ট্র সচিবকে আমন্ত্রণ জানিয়ে জনগণকে হতাশ করেছে।

অনেকে ভারতকে মোকাবেলায় আমেরিকার সাহায্যকে অনিবার্য মনে করে, ফলে তারা উপনিবেশবাদী শক্তি আমেরিকার সাথে বাংলাদেশের সামরিক সম্পর্ককে স্বাগত জানায়। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন, ১১ ডিসেম্বর, ২০২৪ তারিখ ১১তম বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপক্ষীয় সামরিক সংলাপ শুরু হয়েছে, যার মাধ্যমে আমেরিকা এদেশের ভূমি এবং সামরিক বাহিনীকে তার ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থের জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করতে তৎপর। আর ভারত হচ্ছে এই অঞ্চলে আমেরিকার কৌশলগত স্বার্থ রক্ষার চৌকিদার এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সামরিক জোট কোয়াডের (QUAD) সদস্য। চীনকে ঠেকাতে এবং আসন্ন ইসলামী ব্যবস্থার উত্থানকে প্রতিহত করতেই আমেরিকা ভারতকে এই কাজে নিয়োজিত করেছে। আল্লাহ্ ﷻ বলেন, মুমিনগণ যেন মুমিনগণ ছাড়া কাফিরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ না করে আর যে কেউ এরূপ করবে তার সাথে আল্লাহ্‌’ কোন সম্পর্কে থাকবে না [সূরা আলি-ইমরানঃ ২৮]। তাই ভারতকে মোকাবিলা করতে মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধ শক্তির উপর আস্থা না রেখে আমেরিকার সাহায্য গ্রহণ করা হবে আত্মঘাতী এবং ঈমানের পরিপন্থী।

হে মুসলিমগণ, রাসূলুল্লাহ্ ﷺ বলেছেন, একমাত্র ইমাম (খলিফা) হচ্ছে সেই ঢাল, যার পেছনে তোমরা যুদ্ধ কর এবং নিজেদেরকে রক্ষা কর (সহীহ্ মুসলিম)। এই দেশে খিলাফত রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন হওয়ার পর, খলীফার নেতৃত্বে নির্যাতিত কাশ্মীর-ফিলিস্তিন-রোহিঙ্গা মুসলিমসহ সমগ্র মুসলিম উম্মাহ্ ঐক্যবদ্ধ হবে এবং প্রথম দিন থেকেই বাংলাদেশ একটি নেতৃত্বশীল রাষ্ট্রে পরিণত হবে। আর এখানে উল্লেখ্য, এই অঞ্চলের মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধ শক্তিই ভারতকে প্রতিহত করার জন্য যথেষ্ট এছাড়া, ভারত মুসলিম দেশসমূহ এবং তার শত্রুদের দ্বারা পরিবেষ্টিত। আসন্ন খিলাফত রাষ্ট্র পারমানবিক শক্তিসম্পন্ন পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, আফগানিস্তানসহ একে একে আশেপাশের সব মুসলিম দেশসমূহকে একীভুত করবে। এছাড়া, মুসলিমদের সাথে যুদ্ধরত নয় এমন দেশসমূহের সাথে কৌশলগত সম্পর্ক স্থাপন করবে। তাই আসন্ন খিলাফত কোন বিচ্ছিন্ন রাষ্ট্র হবে না, বরং এটি বিশ্বের বুকে নতুন পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হবে। ফলে পশ্চিমা উপনিবেশবাদী দেশসমূহ বিশেষ করে আমেরিকা-বৃটেন ও তাদের আঞ্চলিক চৌকিদার ভারত-ইসরাইল মুসলিমদের উপর আগ্রাসন চালানোর সাহস পাবে না। তাই, মুসলিম উম্মাহ্‌’র সুরক্ষা ও মর্যাদার একমাত্র ঢাল- নবুয়তের আদলে খিলাফত প্রতিষ্ঠায় হিযবুত তাহ্রীর-এর নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হউন এবং সামরিক বাহিনীতে কর্মরত আমাদের নিষ্ঠাবান সন্তানদের নিকট হিযবুত তাহ্রীর-কে নুসরাহ্‌ (ক্ষমতা) প্রদানের দাবী জানান।

﴿يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُوا اسْتَجِيبُوا لِلَّهِ وَلِلرَّسُولِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُحْيِيكُمْ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ يَحُولُ بَيْنَ الْمَرْءِ وَقَلْبِهِ وَأَنَّهُ إِلَيْهِ تُحْشَرُونَ

হে ঈমানদারগণ, তোমরা আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের সেই আহ্বানে সাড়া দাও যখন তোমাদেরকে এমনকিছুর দিকে আহ্বান করা হয় যা তোমাদের মধ্যে প্রাণের সঞ্চার করে [সূরা আল-আনফালঃ ২৪] ।

হিযবুত তাহ্রীর / উলাইয়াহ্বাংলাদেশএর মিডিয়া অফিস