ভারতকে শত্রুরাষ্ট্র ঘোষণার দাবী তুলুন

হে দেশবাসী!

ভারতকে শত্রুরাষ্ট্র ঘোষণার দাবী তুলুন

  • অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্র ইসরাইল ফিলিস্তিনে মুসলিমদের বিরুদ্ধে যেমন শত্রুতায় লিপ্ত, ঠিক একইভাবে হিন্দুত্ববাদী রাষ্ট্র ভারতও এই অঞ্চলে মুসলিমদের সাথে শত্রুতা করছে
  • ভারত তার দালাল হাসিনার পতনের পর মরিয়া হয়ে বাংলাদেশে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি ও হস্তক্ষেপ করার সুযোগ তৈরির অপচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এই লক্ষ্যে সে উগ্র হিন্দুত্ববাদীগোষ্ঠী ইসকন (ISKON) সহ তার দালালগোষ্ঠীকে লেলিয়ে দিচ্ছে। সে সংখ্যালঘু নির্যাতনের নামে দেশে-বিদেশে অপপ্রচার চালিয়ে বাংলাদেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্র প্রমাণের অপচেষ্টায় লিপ্ত; এমনকি ভারতের শাসকগোষ্ঠী হিন্দুদের রক্ষায় বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী মোতায়েনেরও আহ্বান জানাচ্ছে
  • ভারত আমাদের সামরিক বাহিনীকে দুর্বল করতে ২০০৯ সালে বিশ্বাসঘাতক হাসিনার সহযোগীতায় পিলখানা ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করে এবং দেশের মেধাবী সেনাঅফিসারদের হত্যা করে। এছাড়া সে দশকের পর দশক ধরে আমাদের উপর পানি ও সীমান্ত আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে
  • ভারত কাশ্মীরে মুসলিমদের উপর গণহত্যা চালাচ্ছে, প্রতিনিয়ত ভারতে মসজিদে হামলা করে মুসলিমদের রক্তাক্ত করছে, এই অঞ্চলে মুসলিমদের সাত শত বছরের শাসনের ইতিহাসকে মুছে ফেলতে একের পর এক বিখ্যাত মসজিদসমূহ ভেঙ্গে মন্দির নির্মাণসহ ঐতিহাসিক স্মৃতি চিহ্নসমূহ পরিবর্তন করছে। সর্বোপরী, ভারত থেকে মুসলিমদেরকে উচ্ছেদ করতে নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইন (CAA) প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছে, যে আইনের মূল স্পিরিট হচ্ছে ভারতে মুসলিমদের নাগরিকত্ব অস্বীকার করা

আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন, “নিশ্চয়ই মুসলিমদের বিরুদ্ধে শত্রুতায় সকল মানুষের মধ্যে ইহুদী ও মুশরিকদেরকেই আপনি সর্বাধিক উগ্র পাবেন” [সূরা আল-মায়িদাহ : ৮২]

ভারতকে মোকাবিলায় উপনিবেশবাদী শক্তি

আমেরিকার আধিপত্য প্রত্যাখ্যান করুন

যারা ভারতকে মোকাবেলায় আমেরিকার সাহায্যকে অনিবার্য মনে করে, প্রকৃতপক্ষে, তাদের যেমন রাজনৈতিক সচেতনতার অভাব আছে এবং তেমনি জনগণের শক্তির উপর তাদের আস্থা নাই।

  • ভারতকে মোকাবেলায় উপনিবেশবাদী শক্তি আমেরিকার সাহায্য কাম্য নয়, কারণ ভারত হচ্ছে এই অঞ্চলে আমেরিকার কৌশলগত স্বার্থ রক্ষার চৌকিদার এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলের সামরিক জোট কোয়াডের (QUAD) সদস্য। চীনকে ঠেকাতে এবং আসন্ন ইসলামী ব্যবস্থার উত্থানকে প্রতিহত করতেই আমেরিকা ভারতকে এই কাজে নিয়োজিত করেছে
  • ১৯৬৬ সালে আমেরিকার নিউইয়র্ক শহরে ইসকন প্রতিষ্ঠিত হয়। ৯/১১-এর পর ‘সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের’ নামে ‘ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধে’ ভারত আমেরিকার কৌশলগত স্বার্থ রক্ষার চৌকিদার হিসাবে আর্বিভূত হয় এবং এজাতীয় হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীকে সাম্প্রদায়িক রাজনীতির গুটি হিসেবে ব্যবহার করছে
  • আমেরিকা ভারতকে এই অঞ্চলে তার আঞ্চলিক চৌকিদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পাকিস্তানে তার দালাল শাসকগোষ্ঠীকে ব্যবহার করেছে এবং কাশ্মিরের স্বায়ত্তশাসন বাতিল করে ভারতের অধীনস্থ করার সমর্থন যুগিয়েছে
  • আমেরিকা অবৈধ ইহুদী রাষ্ট্রের এক নম্বর মদদ দাতা; আর ভারত হচ্ছে অভিশপ্ত ইহুদীগোষ্ঠীর গণহত্যার সহযোগী। তাই মুসলিমদের বিরুদ্ধে আমেরিকা-ভারতের মিত্রতা কখনও ছিন্ন হবার নয়। তাদেরকে মিত্র হিসেবে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা মুসলিমদের সতর্ক করেন

আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন, “হে মু’মিনগণ, তোমরা ইহুদী ও খৃস্টানদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না, তারা একে অপরের বন্ধু। আর তোমাদের মধ্যে যে তাদের সাথে বন্ধুত্ব করবে, সে নিশ্চয় তাদেরই একজন” [সূরা আল-মায়িদাহ : ৫১]।

মুসলিমদের সুরক্ষার একমাত্র ঢাল –

নেতৃত্বশীল রাষ্ট্র খিলাফত প্রতিষ্ঠা করতে

হিযবুত তাহ্‌রীর-এর সাথে ঐক্যবদ্ধ হউন

রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) বলেছেন, “একমাত্র ইমাম (খলিফা) হচ্ছে সেই ঢাল, যার পেছনে তোমরা যুদ্ধ কর এবং নিজেদেরকে রক্ষা কর” (সহীহ্ মুসলিম)।

  • মুসলিম উম্মাহ্’র প্রকৃত অভিভাবক খিলাফত ব্যবস্থার অনুপস্থিতির কারণেই মুসলিম উম্মাহ্ প্রকৃতপক্ষে নেতৃত্বহীন জাতিতে পরিণত হয়েছে এবং বিশ্বের বৃহৎ জাতিসত্তা হওয়া সত্ত্বেও সর্বত্র নির্যাতিত ও অপমানিত হচ্ছে
  • এই দেশে খিলাফত রাষ্ট্রের গোড়াপত্তন হওয়ার পর, খলীফার নেতৃত্বে নির্যাতিত কাশ্মীর-ফিলিস্তিন-রোহিঙ্গা মুসলিমসহ সমগ্র মুসলিম উম্মাহ্ ঐক্যবদ্ধ হবে এবং প্রথম দিন থেকেই বাংলাদেশ একটি নেতৃত্বশীল রাষ্ট্রে পরিণত হবে। আর এখানে উল্লেখ্য, এই অঞ্চলের মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধ শক্তিই ভারতকে প্রতিহত করার জন্য যথেষ্ট
  • ভারত মুসলিম দেশসমূহ এবং তার শত্রুদের দ্বারা পরিবেষ্টিত। আসন্ন খিলাফত রাষ্ট্র পারমানবিক শক্তিসম্পন্ন পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, আফগানিস্তানসহ একে একে আশেপাশের সব মুসলিম দেশসমূহকে একীভূত করবে, এবং চীনের সাথে কৌশলগত সম্পর্ক স্থাপন করে পশ্চিমা উপনিবেশবাদীগোষ্ঠী ও তাদের দোসর ভারতকে মোকাবেলা করবে
  • ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলসমূহ পশ্চিমাদেরকে তাদের অভিভাবক হিসেবে গ্রহণ করেছে। ফলে তারা খিলাফত রাষ্ট্রের অধীনে মুসলিম উম্মাহ্’র ঐক্য এবং মুসলিম ভূমিসমূহ একীভূত করাকে অসম্ভব মনে করে এবং এজাতীয় চিন্তাকে উগ্রবাদ হিসেবে অপপ্রচার করে। অথচ আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা বলেন, “হে মুসলিমগণ! তোমরা মুসলিমদের ছাড়া কাফিরদেরকে বন্ধুরূপে গ্রহণ করো না। তোমরা কি আল্লাহ্’র জন্য নিজেদের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট প্রমাণ যোগাড় করে দিতে চাও?” [সূরা আন-নিসা : ১৪৪]
  • ইসলামী বিধান অনুযায়ী ভারত একটি শত্রুরাষ্ট্র। তাই খিলাফত রাষ্ট্র ভারতকে শত্রুরাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করে তার সাথে সকল কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করবে। ফলে, ইসকনের মত উগ্র হিন্দুত্ববাদী গোষ্ঠীসহ দেশের অভ্যন্তরে থাকা সকল দালালগোষ্ঠীর সাথে ভারতের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে এবং ভারত দেশকে অস্থিতিশীল করার সুযোগ পাবে না

হে মুসলিমগণ, আপনারা নিশ্চয়ই অনুধাবন করছেন, ভারতকে মোকাবিলা করতে এদেশের সাহসী জনগণ ঐক্যবদ্ধ। কিন্তু নতজানু রাজনীতিবিদদের পক্ষে নিছক ফাঁকা বুলি দেয়া ছাড়া ভারতের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করার মত সাহস নাই। নিশ্চয়ই আপনারা প্রত্যক্ষ করেছেন, তারা ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য ভারতের সমর্থন লাভের আশায় ভারতের হিন্দুত্ববাদী শাসকদের প্রণাম করে আসে। যেখানে আল্লাহ্ সুবহানাহু ওয়া তা’আলা মুশরিকগোষ্ঠীকে মুসলিমদের শত্রু হিসেবে গণ্য করেছেন, সেখানে ‘প্রতিবেশী পাল্টানো যায় না’, ‘ভারতের সাথে সম্পর্ক হবে ন্যায্যতা ও সম্মানের ভিত্তিতে’ – তাদের এজাতীয় খোঁড়া যুক্তি গ্রহণযোগ্য নয়। তাই, এসব নতজানু রাজনীতিবিদদের রাজনৈতিক সার্কাসের দিকে না তাকিয়ে, আমাদেরকে সামরিক বাহিনীতে কর্মরত আমাদের সন্তানদের দিকে তাকাতে হবে। নেতৃত্বশীল রাষ্ট্র – খিলাফত প্রতিষ্ঠায় হিযবুত তাহ্‌রীর-এর নিকট শাসন ক্ষমতা হস্তান্তর করতে তাদের নিকট জোর দাবী জানাতে হবে।

আপনাদের এই সাহসী সন্তানদের হাতেই রয়েছে ক্ষমতার চাবি। তারা যেভাবে আপনাদের পক্ষে অবস্থান নিয়ে ভারতের দালাল হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছে, তারাই পারে আপনাদের আকাঙ্খা পূরণ করতে। এছাড়া, সামরিক অফিসারগণও খিলাফত প্রতিষ্ঠার পক্ষে ইতিবাচক, তারা আপনাদের পক্ষ হতে খিলাফত প্রতিষ্ঠার জোরালো দাবী দেখতে চায়। আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, সা’দ বিন মুয়াজ (রা.)-এর নেতৃত্বে সামরিক বাহিনীর নুসরাহ্’র মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ) মদিনায় প্রথম ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন। এটাই খিলাফত প্রতিষ্ঠায় রাসূলুল্লাহ্ (সাঃ)-এর নির্দেশিত পদ্ধতি।

“তোমাদের মধ্যে যারা ঈমান আনে এবং সৎকর্ম (সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ) করে, আল্লাহ্ তাদেরকে ওয়াদা দিয়েছেন যে, তাদেরকে অবশ্যই পৃথিবীতে শাসনকর্তৃত্ব দান করবেন” [সূরা আন-নূর : ৫৫]।

শুক্রবার, ০৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ

০৪ জমাদিউস সানী, ১৪৪৬ হিজরী

হিযবুত তাহ্‌রীর, উলাই’য়াহ্ বাংলাদেশ